এ. এন. এম. নূরুজ্জামান: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
RockyMasum (আলোচনা | অবদান)
প্রুভইট দিয়ে তথ্যসূত্র সম্পাদনা করা হয়েছে
ট্যাগ: প্রুভইট সম্পাদনা
সম্প্রসারণ
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{কাজ চলছে|date=অক্টোবর ২০১৮}}
{{তথ্যছক ব্যক্তি
{{তথ্যছক ব্যক্তি
| name = এ. এন. এম নূরুজ্জামান
| name = এ. এন. এম নূরুজ্জামান
৩০ নং লাইন: ২৯ নং লাইন:
| awards= [[বীর উত্তম]]
| awards= [[বীর উত্তম]]
}}
}}
'''ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ. এন. এম নূরুজ্জামান''' (১৯৩৮-১৯৯৩) সামরিক কর্মকর্তা ও মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার ছিলেন।<ref name="prothom">{{সংবাদ উদ্ধৃতি |ইউআরএল=http://archive.prothom-alo.com/detail/date/2012-10-14/news/297716%2520%25E0%25A6%25A6%25E0%25A7%2588%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%2595%2520%25E0%25A6%25AA%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25B0%25E0%25A6%25A5%25E0%25A6%25AE%2520%25E0%25A6%2586%25E0%25A6%25B2%25E0%25A7%258B:%2520%25E0%25A6%25A4%25E0%25A7%258B%25E0%25A6%25AE%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A6%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B0%2520%25E0%25A6%258F%2520%25E0%25A6%258B%25E0%25A6%25A3%2520%25E0%25A6%25B6%25E0%25A7%258B%25E0%25A6%25A7%2520%25E0%25A6%25B9%25E0%25A6%25AC%25E0%25A7%2587%2520%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25BE |শিরোনাম=তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না |সংগ্রহের-তারিখ=2018-10-16}}</ref> স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর উত্তম খেতাব প্রদান করে।<ref name="bangla">{{ওয়েব উদ্ধৃতি |ইউআরএল=http://bn.banglapedia.org/index.php?title=%E0%A6%A8%E0%A7%82%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8,_%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%97%E0%A7%87%E0%A6%A1%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%B0_%E0%A6%9C%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%B2_%E0%A6%8F.%E0%A6%8F%E0%A6%A8.%E0%A6%8F%E0%A6%AE |শিরোনাম=নূরুজ্জামান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ.এন.এম |ওয়েবসাইট=bn.banglapedia.org |সংগ্রহের-তারিখ=১৬ অক্টোবর ২০১৮}}</ref>
'''ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ. এন. এম নূরুজ্জামান''' (১৯৩৮-১৯৯৩) সামরিক কর্মকর্তা ও মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার ছিলেন।<ref name="prothom">{{সংবাদ উদ্ধৃতি |ইউআরএল=http://archive.prothom-alo.com/detail/date/2012-10-14/news/297716%2520%25E0%25A6%25A6%25E0%25A7%2588%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%2595%2520%25E0%25A6%25AA%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25B0%25E0%25A6%25A5%25E0%25A6%25AE%2520%25E0%25A6%2586%25E0%25A6%25B2%25E0%25A7%258B:%2520%25E0%25A6%25A4%25E0%25A7%258B%25E0%25A6%25AE%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A6%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B0%2520%25E0%25A6%258F%2520%25E0%25A6%258B%25E0%25A6%25A3%2520%25E0%25A6%25B6%25E0%25A7%258B%25E0%25A6%25A7%2520%25E0%25A6%25B9%25E0%25A6%25AC%25E0%25A7%2587%2520%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25BE |শিরোনাম=তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না |সংগ্রহের-তারিখ=2018-10-16}}</ref> তিনি ১০টি সাব-সেক্টর নিয়ে গঠিত ৩নং সেক্টরের 'সেক্টর কমান্ডার' হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে তাঁর অসম সাহসিকতার জন্য [[বাংলাদেশ]] সরকার তাঁকে [[বীর উত্তম]] খেতাব প্রদান করে।<ref name="bangla">{{ওয়েব উদ্ধৃতি |ইউআরএল=http://bn.banglapedia.org/index.php?title=%E0%A6%A8%E0%A7%82%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8,_%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%97%E0%A7%87%E0%A6%A1%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%B0_%E0%A6%9C%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%B2_%E0%A6%8F.%E0%A6%8F%E0%A6%A8.%E0%A6%8F%E0%A6%AE |শিরোনাম=নূরুজ্জামান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ.এন.এম |ওয়েবসাইট=bn.banglapedia.org |সংগ্রহের-তারিখ=১৬ অক্টোবর ২০১৮}}</ref><ref>[http://www.dailykalerkantho.com/print_news.php?pub_no=366&cat_id=3&menu_id=83&news_type_id=1&index=17 দৈনিক কালের কন্ঠ]</ref>


== জন্ম ও শিক্ষাজীবন ==
== জন্ম ও শিক্ষাজীবন ==
নূরুজ্জামান ১৯৩৮ সালের ডিসেম্বর মাসে নরসিংদী জেলার [[রায়পুরা উপজেলা]]র সায়দাবাদ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আবু আহাম্মদ ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা এবং মাতা লুৎফুন্নেছা। সুনামগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে তিনি ম্যাট্রিকুলেশন এবং সিলেট মুরারী চাঁদ কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। তিনি [[ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়]] থেকে ১৯৫৯ সালে ইতিহাস বিষয়ে বি (সম্মান) ডিগ্রি লাভ করেন। স্নাতকোত্তর অধ্যয়ন কালে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমীতে গ্রাজুয়েশন কোর্সে যোগ দেন তিনি।
এ.এন.এম. নূরুজ্জামান [[১৯৩৮]] সালের ডিসেম্বর মাসে [[নরসিংদী জেলা|নরসিংদী জেলার]] রায়পুরা থানাধীন সায়দাবাদ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবার নাম আবু আহাম্মদ এবং মায়ের নাম লুৎফুননেছা। বাবার চাকুরী সূত্রে দেশের বিভিন্ন স্থানে তাঁর শৈশব কেটেছে নূরুজ্জামানের। স্কুল জীবন কেটেছে [[মাদারীপুর জেলা|মাদারীপুর]] ইসলামিয়া হাইস্কুল, [[কুমিল্লা জেলা|কুমিল্লা]] ইউসুফ স্কুল, [[শেরপুর জেলা|শেরপুর]] ভিক্টোরিয়া একাডেমি ও [[সুনামগঞ্জ জেলা|সুনামগঞ্জ]] সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে। সুনামগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিকুলেশন এবং [[সিলেট জেলা|সিলেট]] এম.সি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে [[১৯৫৬]] সালে [[ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়|ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে]] ভর্তি হন। ছাত্র জীবনে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এস.এম এ্যাথলেটিক সেক্রেটারী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে [[১৯৫৯]] সালে ইতিহাসে অনার্সসহ স্নাতক পাস করেন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি |শিরোনাম= একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ |শেষাংশ= |প্রথমাংশ= |লেখক-সংযোগ= |coauthors= |বছর=জুন ২০১২ |প্রকাশক= জনতা ব্যাংক লিমিটেড |অবস্থান= |আইএসবিএন= 9789843351449|পাতা= ৫০|পাতাসমূহ= |সংগ্রহের-তারিখ= |ইউআরএল=}}</ref>


== কর্মজীবন ==
== কর্মজীবন ==
তিনি ১৯৬০ সালের অক্টোবর মাসে সেকেন্ড [[লেফটেন্যান্ট]] হিসেবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে চাকুরিরত অবস্থায় তিনি যশোর, ঢাকা ও চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টে কর্মরত ছিলেন। সময়ে তিনি [[ক্যাপ্টেন]] পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৯৬৮ সালে তিনি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় অভিযুক্ত হন এবং ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে অন্তরীণ রাখা হয়। ৩৫ জন আসামীর মধ্যে তিনি ছিলেন ২৮ নং অভিযুক্ত ব্যক্তি। [[ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান]] ফলে সরকার আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করলে ওই বছরেই অর্থাৎ ১৯৬৯ সালে তিনি নিঃশর্ত মুক্তি লাভ করেন এবং চাকরিতে পুনর্বহাল হন।
স্নাতকোত্তর পর্যায়ের ছাত্রাবস্থায় তিনি [[পাকিস্তান]] মিলিটারি একাডেমীতে 'গ্রাজুয়েট কোর্স' এ যোগ দেন। [[১৯৬০]] সালের অক্টোবর মাসে সেকেন্ড লেফট্যানেন্ট হিসেবে কমিশন লাভ করেন। কশিমন প্রাপ্তির পর তিনি [[যশোর জেলা|যশোর]], [[ঢাকা]][[চট্টগ্রাম জেলা|চট্টগ্রাম]] ক্যান্টনমেন্টে কর্মরত ছিলেন। [[আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা|আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায়]] আসামী হিসেবে [[১৯৬৮]] সালেই তাঁকে বন্দী অবস্থায় ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে আসা হয়। তীব্র গণআন্দোলনের মুখে [[১৯৬৯]] সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মামলা থেকে নিঃশর্ত মুক্তি পান তিনি।


== মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা ==
== মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা ==
[[১৯৭১]] সালের [[মার্চ ২৫|২৫ মার্চের]] পর [[ঢাকা]] থেকে অসংখ্য বাঙালি ইপিআর-আনসার-পুলিশ নরসিংদী জেলায় যান। এ এন এম নূরুজ্জামান নরসিংদীতে তাঁদের একাংশকে সংগঠিত করে কয়েক স্থানে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধ করেন। এসব যুদ্ধে তিনি নেতৃত্ব দেন।
১৪-১৫ এপ্রিল নরসিংদীর পতন হয়। এরপর তিনি [[ভারত|ভারতে]] যান। ১৭ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয় এবং ক্রমে মুক্তিযুদ্ধের জন্য সাংগঠনিক কাঠামো গড়ে উঠতে থাকে। মুক্তিবাহিনীর সাংগঠনিক কাঠামো গড়ে ওঠার পর ৩ নম্বর সেক্টরের সহকারী সেক্টর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পান এ এন এম নূরুজ্জামান। সেক্টর কমান্ডার মেজর [[কে এম শফিউল্লাহ]] (বীর উত্তম, পরে সেনাপ্রধান ও মেজর জেনারেল) আগস্ট মাসে নিয়মিত মুক্তিবাহিনীর জন্য একটি ব্রিগেড গঠনের দায়িত্ব পান। তখন এ এন এম নূরুজ্জামান ৩ নম্বর সেক্টরের সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব পান। তিনি অত্যন্ত দক্ষতা, বিচক্ষণতা ও সাহসিকতার সঙ্গে এ দায়িত্ব পালন করেন। তিন নম্বর সেক্টরের আওতাধীন এলাকা ছিল হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর জেলা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নারায়ণগঞ্জ জেলার অংশবিশেষ এলাকা। এ এন এম নূরুজ্জামানের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ পরিচালনায় ৩ নম্বর সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অসংখ্য অপারেশন করেন। তাঁর সার্বিক নেতৃত্বে বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি সরাসরি যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এর মধ্যে আখাউড়ার যুদ্ধ অন্যতম। মুক্তিযুদ্ধকালে [[ঢাকা]]-[[চট্টগ্রাম]]-[[সিলেট জেলা|সিলেটের]] মধ্যে রেল যোগাযোগের জন্য আখাউড়া রেলজংশন ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর অবস্থান [[ভারত]]-[[বাংলাদেশ]] সীমান্ত থেকে তিন কিলোমিটার দূরে। ওপারে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলা। আখাউড়া থেকে আগরতলা সড়কপথে সংযুক্ত। আখাউড়ার বিভিন্ন স্থানে ছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রতিরক্ষা অবস্থান। মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায়ে মুক্তি ও মিত্র বাহিনী যৌথভাবে সেখানে আক্রমণ করে। কয়েক দিন ধরে সেখানে যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে এ এন এম নূরুজ্জামানের নেতৃত্বে তিন নম্বর সেক্টরের এক দল মুক্তিযোদ্ধা অংশ নেন। নিয়মিত মুক্তিবাহিনীর এস ফোর্সের একদল (১১ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট) মুক্তিযোদ্ধা আখাউড়ার উত্তর দিকে ব্লকিং পজিশন তৈরি করেন। এর ফলে সীমান্তসংলগ্ন সড়ক ও রেলপথ পাকিস্তানিদের জন্য রুদ্ধ হয়ে যায়। এস ফোর্সের আরেক দল (দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট) মুক্তিযোদ্ধা একই দিক থেকে আক্রমণ পরিচালনা করেন। এ এন এম নূরুজ্জামানের নেতৃত্বে ৩ নম্বর সেক্টরের এক দল মুক্তিযোদ্ধা আগরতলা এয়ারফিল্ডের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থান নিয়ে পাকিস্তানিদের ওপর আক্রমণ চালান। ৩০ নভেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর সকাল পর্যন্ত আখাউড়ায় ভয়াবহ যুদ্ধ চলে। দুপুরে আখাউড়া মুক্ত হয়।<ref>[http://archive.prothom-alo.com/detail/date/2012-10-14/news/297716 দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না" | তারিখ: ১৪-১০-২০১২]</ref> এ.এন.এম. নূরুজ্জামান বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি সক্রিয়াভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং ৩নং সেক্টরে সেক্টর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তিনি [[বীর উত্তম]] খেতাবে ভূষিত হন।<ref>[http://www.amardeshonline.com/pages/details/2009/12/16/9655 দৈনিক আমার দেশ]</ref><ref>{{বই উদ্ধৃতি |শিরোনাম= একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা (দ্বিতীয় খন্ড)|শেষাংশ= |প্রথমাংশ= |লেখক-সংযোগ= |coauthors= |বছর=মার্চ ২০১৩ |প্রকাশক= প্রথমা প্রকাশন |অবস্থান= |আইএসবিএন= 9789849025375|পাতা= ৪০|পাতাসমূহ= |সংগ্রহের-তারিখ= |ইউআরএল=}}</ref> [[১৯৭৫]] সালের পট পরিবর্তনের পর তাঁর চাকুরী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে ন্যস্ত করা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চাকুরীকালীন তিনি অস্ট্রেলিয়া, ফিলিপাইন, সেনেগাল, কানাডা ও সুইডেনে কর্মরত ছিলেন।


== পুরস্কার ও সম্মাননা ==
==তথ্যসূত্র==
* [[বীর উত্তম]]

== তথ্যসূত্র ==
{{সূত্র তালিকা}}
{{সূত্র তালিকা}}


== বহিঃসংযোগ ==
* [http://www.gunijan.org/GjProfDetails_action.php?GjProfId=234 গুণীজন]
{{বাংলাদেশের বীর উত্তম}}
{{বাংলাদেশের বীর উত্তম}}

[[বিষয়শ্রেণী:১৯৩৮-এ জন্ম]]
[[বিষয়শ্রেণী:১৯৯৩-এ মৃত্যু]]
[[বিষয়শ্রেণী:সেক্টর কমান্ডার]]
[[বিষয়শ্রেণী:বীর উত্তম]]
[[বিষয়শ্রেণী:বীর উত্তম]]
[[বিষয়শ্রেণী:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী]]

১৭:২১, ১৬ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

এ. এন. এম নূরুজ্জামান
জন্মডিসেম্বর ১৯৩৮
মৃত্যু১৬ মার্চ ১৯৯৩
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব বাংলাদেশ
পেশাবাংলাদেশ সেনাবাহিনী
পরিচিতির কারণবীর উত্তম
পুরস্কারবীর উত্তম

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ. এন. এম নূরুজ্জামান (১৯৩৮-১৯৯৩) সামরিক কর্মকর্তা ও মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার ছিলেন।[১] তিনি ১০টি সাব-সেক্টর নিয়ে গঠিত ৩নং সেক্টরের 'সেক্টর কমান্ডার' হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে তাঁর অসম সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে বীর উত্তম খেতাব প্রদান করে।[২][৩]

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

এ.এন.এম. নূরুজ্জামান ১৯৩৮ সালের ডিসেম্বর মাসে নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানাধীন সায়দাবাদ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবার নাম আবু আহাম্মদ এবং মায়ের নাম লুৎফুননেছা। বাবার চাকুরী সূত্রে দেশের বিভিন্ন স্থানে তাঁর শৈশব কেটেছে নূরুজ্জামানের। স্কুল জীবন কেটেছে মাদারীপুর ইসলামিয়া হাইস্কুল, কুমিল্লা ইউসুফ স্কুল, শেরপুর ভিক্টোরিয়া একাডেমি ও সুনামগঞ্জ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে। সুনামগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিকুলেশন এবং সিলেট এম.সি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৫৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ছাত্র জীবনে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এস.এম এ্যাথলেটিক সেক্রেটারী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৯ সালে ইতিহাসে অনার্সসহ স্নাতক পাস করেন।[৪]

কর্মজীবন

স্নাতকোত্তর পর্যায়ের ছাত্রাবস্থায় তিনি পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমীতে 'গ্রাজুয়েট কোর্স' এ যোগ দেন। ১৯৬০ সালের অক্টোবর মাসে সেকেন্ড লেফট্যানেন্ট হিসেবে কমিশন লাভ করেন। কশিমন প্রাপ্তির পর তিনি যশোর, ঢাকাচট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টে কর্মরত ছিলেন। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় আসামী হিসেবে ১৯৬৮ সালেই তাঁকে বন্দী অবস্থায় ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে আসা হয়। তীব্র গণআন্দোলনের মুখে ১৯৬৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মামলা থেকে নিঃশর্ত মুক্তি পান তিনি।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পর ঢাকা থেকে অসংখ্য বাঙালি ইপিআর-আনসার-পুলিশ নরসিংদী জেলায় যান। এ এন এম নূরুজ্জামান নরসিংদীতে তাঁদের একাংশকে সংগঠিত করে কয়েক স্থানে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধ করেন। এসব যুদ্ধে তিনি নেতৃত্ব দেন। ১৪-১৫ এপ্রিল নরসিংদীর পতন হয়। এরপর তিনি ভারতে যান। ১৭ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয় এবং ক্রমে মুক্তিযুদ্ধের জন্য সাংগঠনিক কাঠামো গড়ে উঠতে থাকে। মুক্তিবাহিনীর সাংগঠনিক কাঠামো গড়ে ওঠার পর ৩ নম্বর সেক্টরের সহকারী সেক্টর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পান এ এন এম নূরুজ্জামান। সেক্টর কমান্ডার মেজর কে এম শফিউল্লাহ (বীর উত্তম, পরে সেনাপ্রধান ও মেজর জেনারেল) আগস্ট মাসে নিয়মিত মুক্তিবাহিনীর জন্য একটি ব্রিগেড গঠনের দায়িত্ব পান। তখন এ এন এম নূরুজ্জামান ৩ নম্বর সেক্টরের সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব পান। তিনি অত্যন্ত দক্ষতা, বিচক্ষণতা ও সাহসিকতার সঙ্গে এ দায়িত্ব পালন করেন। তিন নম্বর সেক্টরের আওতাধীন এলাকা ছিল হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর জেলা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নারায়ণগঞ্জ জেলার অংশবিশেষ এলাকা। এ এন এম নূরুজ্জামানের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ পরিচালনায় ৩ নম্বর সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অসংখ্য অপারেশন করেন। তাঁর সার্বিক নেতৃত্বে বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি সরাসরি যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এর মধ্যে আখাউড়ার যুদ্ধ অন্যতম। মুক্তিযুদ্ধকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেটের মধ্যে রেল যোগাযোগের জন্য আখাউড়া রেলজংশন ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর অবস্থান ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে তিন কিলোমিটার দূরে। ওপারে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলা। আখাউড়া থেকে আগরতলা সড়কপথে সংযুক্ত। আখাউড়ার বিভিন্ন স্থানে ছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রতিরক্ষা অবস্থান। মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায়ে মুক্তি ও মিত্র বাহিনী যৌথভাবে সেখানে আক্রমণ করে। কয়েক দিন ধরে সেখানে যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে এ এন এম নূরুজ্জামানের নেতৃত্বে তিন নম্বর সেক্টরের এক দল মুক্তিযোদ্ধা অংশ নেন। নিয়মিত মুক্তিবাহিনীর এস ফোর্সের একদল (১১ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট) মুক্তিযোদ্ধা আখাউড়ার উত্তর দিকে ব্লকিং পজিশন তৈরি করেন। এর ফলে সীমান্তসংলগ্ন সড়ক ও রেলপথ পাকিস্তানিদের জন্য রুদ্ধ হয়ে যায়। এস ফোর্সের আরেক দল (দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট) মুক্তিযোদ্ধা একই দিক থেকে আক্রমণ পরিচালনা করেন। এ এন এম নূরুজ্জামানের নেতৃত্বে ৩ নম্বর সেক্টরের এক দল মুক্তিযোদ্ধা আগরতলা এয়ারফিল্ডের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থান নিয়ে পাকিস্তানিদের ওপর আক্রমণ চালান। ৩০ নভেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর সকাল পর্যন্ত আখাউড়ায় ভয়াবহ যুদ্ধ চলে। দুপুরে আখাউড়া মুক্ত হয়।[৫] এ.এন.এম. নূরুজ্জামান বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি সক্রিয়াভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং ৩নং সেক্টরে সেক্টর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তিনি বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত হন।[৬][৭] ১৯৭৫ সালের পট পরিবর্তনের পর তাঁর চাকুরী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে ন্যস্ত করা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চাকুরীকালীন তিনি অস্ট্রেলিয়া, ফিলিপাইন, সেনেগাল, কানাডা ও সুইডেনে কর্মরত ছিলেন।

পুরস্কার ও সম্মাননা

তথ্যসূত্র

  1. "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১০-১৬ 
  2. "নূরুজ্জামান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ.এন.এম"bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ১৬ অক্টোবর ২০১৮ 
  3. দৈনিক কালের কন্ঠ
  4. একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ৫০। আইএসবিএন 9789843351449 
  5. দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না" | তারিখ: ১৪-১০-২০১২
  6. দৈনিক আমার দেশ
  7. একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা (দ্বিতীয় খন্ড)। প্রথমা প্রকাশন। মার্চ ২০১৩। পৃষ্ঠা ৪০। আইএসবিএন 9789849025375 

বহিঃসংযোগ