আইয়ুব খান: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Fayaz Rahman (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
Fayaz Rahman (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
৮৫ নং লাইন: ৮৫ নং লাইন:
| death_place = ইসলামাবাদ
| death_place = ইসলামাবাদ
| death_cause = হৃদরোগ
| death_cause = হৃদরোগ
| resting_place = রেহান, হরিপুর
| resting_place = রেহানা, হরিপুর
| resting_place_coordinates =
| resting_place_coordinates =
| citizenship = <br>{{PAK}}<br>{{small|(১৯৪৭-৭৪)}}
| citizenship = <br>{{PAK}}<br>{{small|(১৯৪৭-৭৪)}}
১১১ নং লাইন: ১১১ নং লাইন:
| committees =
| committees =
| portfolio =
| portfolio =
| awards ={{small|[[File:Order of Pakistan.png|25px]] [[Nishan-e-Pakistan|Nishan-i-Pakistan]]}}<br />{{small|[[File:Yellow Crescent, Symbol of Islam.png|15px]] [[Hilal-i-Pakistan]]}}<br />{{small|[[File:MY Darjah Utama Seri Mahkota Negara (Crown of the Realm) - DMN.svg|25px]] [[Order of the Crown of the Realm|Order of the Crown]]}}
| awards ={{small|[[File:Order of Pakistan.png|25px]] নিশান--পাকিস্তান}}<br />{{small|[[File:Yellow Crescent, Symbol of Islam.png|15px]] হিলাল--পাকিস্তান}}<br />{{small|[[File:MY Darjah Utama Seri Mahkota Negara (Crown of the Realm) - DMN.svg|25px]] অর্ডার অব দ্যা ক্রাউন}}
| blank1 =
| blank1 =
| data1 =
| data1 =
১২৯ নং লাইন: ১২৯ নং লাইন:
| allegiance =
| allegiance =
| branch = {{army|British India}}<br />{{small|(১৯২৮-৪৭)}}<br>{{army|PAK}}<br>{{small|(১৯৪৭-৫৮)}}
| branch = {{army|British India}}<br />{{small|(১৯২৮-৪৭)}}<br>{{army|PAK}}<br>{{small|(১৯৪৭-৫৮)}}
| serviceyears = 1928–58
| serviceyears = ১৯২৮-৫৮
| rank = জেনারেল
| rank = জেনারেল
| unit = পাঞ্জাব রেজিমেন্ট
| unit = পাঞ্জাব রেজিমেন্ট
১৫৩ নং লাইন: ১৫৩ নং লাইন:
| footnotes =
| footnotes =
}}
}}
'''মোহাম্মাদ আইয়ুব খান''' (১৪ইমে ১৯০৭ - ১৯শে এপ্রিল ১৯৭৪) পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন উর্ধ্বতন অধিকারিক ছিলেন। ১৯৫৮ সালে পাকিস্তানের শাসনভার নিজের হাতে তুলে নেওয়ার পর থেকে আইয়ুব প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে বৈরীপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। ১৯৫৮ সালের ৭ই অক্টোবর রাষ্ট্রপতি ইস্কান্দার মির্জা সমগ্র পাকিস্তানে সামরিক আইন জারি করেন এবং সেনাবাহিনীর তৎকালীন সর্বাধিনায়ক লেফটেন্যান্ট-জেনারেল আইয়ুব খানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের পদে নিযুক্ত করেন তিনি; ২৭শে অক্টোবর আইয়ুব মির্জাকে রাষ্ট্রপতির পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করে নিজে রাষ্ট্রপতির পদে আসীন হন। [[ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান|১৯৬৯ সালে পূর্ব পাকিস্তানের গণঅভ্যুত্থানের মুখে]] আইয়ুব তার ১১ বছরের রাষ্ট্রপতিত্বের অবসান ঘটান পদটি থেকে পদত্যাগ করে।<ref name="Pakistan Herald.com">{{cite web |url=http://www.pakistanherald.com/newprofile.aspx?hofid=1180 |title=Muhammad Ayub Khan the Second President of Pakistan |publisher=Pakistan Herald.com |accessdate=16 November 2011 |deadurl=yes |archiveurl=https://web.archive.org/web/20120317055424/http://www.pakistanherald.com/newprofile.aspx?hofid=1180 |archivedate=17 March 2012 }}, Retrieved 25 August 2015</ref>
জেনারেল '''মোহাম্মদ আইয়ুব খান''' ({{lang-ur|{{Nastaliq|محمد ایوب خان}}}}; [[মে ১৪]], [[১৯০৭]] – [[এপ্রিল ১৯]], [[১৯৭৪]]) পাকিস্তানের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তিনি [[১৯৫৮]] হতে[[১৯৬৯]] খ্রীস্টাব্দ পর্যন্ত [[পাকিস্তান|পাকিস্তানের]] সামরিক শাসক ও পরে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন।<ref name=soc/> [[৭ অক্টোবর]], ১৯৫৮ সালে পাকিস্তানের তদানীন্তন প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল [[ইস্কান্দার মীর্জা]] সংবিধান বিলুপ্ত ঘোষণা করেন এবং দেশে সামরিক আইন জারি করেন। এভাবে ১৯৫৬ সালের সংবিধান বাতিল হয় এবং সকল রাজনৈতিক কর্মকান্ড নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়। তৎকালীন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল মুহাম্মদ আইয়ুব খান প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিযুক্ত হন। সকল ক্ষমতা নিজ হাতে তুলে নেবার তিন সপ্তাহ পরেই ইস্কান্দার মীর্জাকে সরে যেতে হয়। আইয়ুব খান [[২৭ অক্টোবর]],১৯৫৮ সালে নিজেকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন।<ref name=soc>[http://www.socialnewsbd.com/%E0%A6%AB%E0%A6%BF%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E0%A6%A1-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%B2-%E0%A6%86%E0%A6%87%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A7%81%E0%A6%AC-%E0%A6%96%E0%A6%BE%E0%A6%A8/ ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান]</ref><ref name="Pakistan Herald.com">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=http://www.pakistanherald.com/newprofile.aspx?hofid=1180 |title=Muhammad Ayub Khan the Second President of Pakistan |publisher=Pakistan Herald.com |accessdate=মার্চ ২৪, ২০১৩}}</ref> [[১৯৬৫]] সালে তিনি ফিল্ড মার্শাল খেতাব গ্রহণ করেন।<ref name="Story of Pakistan, Part-3">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|title=Martial Law Under Field Marshal Ayub Khan [1958–62]|url=http://www.storyofpakistan.com/articletext.asp?artid=A065|publisher=Story of Pakistan, Part-3}}</ref> তার শাসনকালকে উন্নয়নের দশক হিসাবে অবিহিত করা হয়। তার একটি বইয়ের নাম হলো 'ফ্রেন্ড নট মাস্টার'। তিনি ছিলেন স্বঘোষিত ফিল্ড মার্শাল।
[[উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান|উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে]] তাঁর পতন ঘটে এবং তিনি জেনারেল [[ইয়াহিয়া খান|ইয়াহিয়া খানের]] কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।


আইয়ুব খানের জন্ম হয়েছিলো উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের হরিপুর জেলায়। ১৯২৬ সালে তরুণ আইয়ুব ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা গড়ার কারিগর 'রয়েল মিলিটারি কলেজ' তে অধ্যায়ন করার সুযোগ পেয়ে যান যেটি ইংল্যান্ডের বার্কশায়ারের স্যান্ডহার্স্টে অবস্থিত ছিলো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আইয়ুব কর্নেল ছিলেন, ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হলে আইয়ুব নবগঠিত পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন ভারপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার হিসেবে। স্বাধীন পাকিস্তানে আইয়ুব প্রথমে পূর্ব পাকিস্তানে নিয়োগ পেয়েছিলেন ১৪তম পদাতিক ডিভিশনের অধিনায়ক হিসেবে, এরপর খুব দ্রুত উপরে ওঠেন তিনি; ১৯৫১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়কের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হন আইয়ুব।<ref name="countrystudies">{{cite web|url=http://www.countrystudies.us/pakistan/18.htm|title= Ayub Khan in US Country Studies |publisher=US State Department|accessdate=16 November 2011}}, Retrieved 25 August 2015</ref> ১৯৫৩ সাল থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত তিনি দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন; আইয়ুব এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী ফিরোজ খান প্রশাসনের বিরুদ্ধে ইস্কান্দার মির্জার জারি করা সামরিক আইনের পক্ষে ছিলেন।<ref name="Story of Pakistan, part-II">{{cite web|title=Ouster of President Iskander Mirza|url=http://www.storyofpakistan.com/articletext.asp?artid=A117|publisher=Story of Pakistan, part-II}}, Retrieved 27 August 2015</ref> ইস্কান্দার মির্জাই মূলত আইয়ুব খানের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রপতিত্ব নিশ্চিত করেছিলেন।<ref name="Story of Pakistan, part-II"/><ref name="Story of Pakistan, Part-1">{{cite web|title=Field Marshal Ayub Khan Becomes President [1962–1969]|url=http://www.storyofpakistan.com/articletext.asp?artid=A067|publisher=Story of Pakistan, Part-1}}, Retrieved 25 August 2015</ref><ref>{{cite web |url=http://pkpolitics.com/2011/05/25/kal-tak-25-may-2011/ |title=Kal Tak – 25 May 2011 &#124; Pakistan Politics |publisher=Pkpolitics.com |date= |accessdate=9 December 2012 |archive-url=https://web.archive.org/web/20130509011515/http://pkpolitics.com/2011/05/25/kal-tak-25-may-2011/ |archive-date=9 May 2013 |dead-url=yes }}</ref>
== জীবনী ==
১৪ই মে, ১৯০৭ এ আইয়ুব খান হরিপুরে এক পশতুন গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন। আইয়ুবের পিতা মীর দাদ খান বৃটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক অশ্বারোহী রেজিমেন্টের রিসালদার মেজর ছিলেন। আইয়ুব [[আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়|আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে]] ভর্তি হলেও রাজকীয় সেনা একাডেমি স্যান্ডহার্স্ট এ সুযোগ পেয়ে যান এবং লেখাপড়া শেষ না করেই স্যান্ডহার্স্টে যোগ দেন। কৃতিত্বের কারণে তাকে অফিসার হিসেবে ১৪ পাঞ্জাব রেজিমেন্টে নিয়োগ দেয়া হয়।


আইয়ুব দেশের সরকার প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়কের পদে লেঃ জেনারেল [[মুহাম্মদ মুসা খান]]কে নিযুক্ত করেছিলেন। আইয়ুব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো জোরদার করা সহ প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর আধুনিকায়নে মনোযোগ দিয়েছিলেন। আইয়ুব তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের ঘোর বিরোধী ছিলেন। তিনি পেশোয়ারে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় একটি বিমান ঘাঁটি গড়ে তুলেছিলেন যেখানে যুক্তরাষ্ট্র বিমান বাহিনীর বৈমানিকেরা বিমান চালাতো এবং পাকিস্তানি বিমান বাহিনীর আধুনিকায়নে তারা অনেক সাহায্য করেছিলো।<ref>"Story of Pakistan, Part-1"/, Retrieved 25 August 2015</ref> চীনের সঙ্গেও আইয়ুব সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলেন, ১৯৬২ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক চরম বৈরিতার দিকে যায় যে বছরে ভারত চীনের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী এক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিলো। ১৯৬৫ সালে আইয়ুব সরকার ভারতের সঙ্গে একটি বড় ধরণের যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার পরিকল্পনা করেছিলো যেটি ঐতিহাসিকভাবে [[ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ১৯৬৫]] নামে পরিচিতি পেয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্র এবং পুঁজিবাদী অর্থনীতির একজন গোঁড়া সমর্থক আইয়ুব পাকিস্তানেও যুক্তরাষ্ট্রর মত অর্থনৈতিক ব্যবস্থা চালু করার প্রয়াস চালিয়েছিলেন।
১৯৫১ সালের ১৭ জানুয়ারি আইয়ুব খান পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৫৪ সালে বগুড়ার মোহাম্মদ আলির মন্ত্রীসভায় আইয়ুব প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ৭ অক্টোবর ১৯৫৮ ইস্কান্দর মির্জা মার্শাল ল' জারি করলে আইয়ুব খান প্রধান সেনা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পান।<ref name=soc/> ২৭শে অক্টোবর ১৯৫৮ ইস্কান্দর মির্জাকে বিনা রক্তপাতে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করেন। ক্ষমতায় বসে স্বপ্রণীত একটি "গণতান্ত্রিক" পদ্ধতি চালু করেন এবং নিজের ক্ষমতা আরো পোক্ত করেন। ১৯৬৩ সালে ফাতিমা জিন্নাহর সাথে প্রতিদ্বদ্বিতা করে ৬১% ভোটে জিতে তিনি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।


১৯৬৫ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আইয়ুবের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে [[ফাতেমা জিন্নাহ]] দাঁড়িয়েছিলেন, যদিও আইয়ুব খান পুনরায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬৭ সালে পশ্চিম পাকিস্তানে জুলফিকার আলী ভুট্টোর নেতৃত্বে এবং পূর্ব পাকিস্তানে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে অনেক বিক্ষোভ এবং মিছিল হয় এবং ১৯৬৯ সালে পূর্ব পাকিস্তানে এক বড় ধরণের আন্দোলন হয়েছিলো। তার নির্দেশে বহু মানুষকে গ্রেফতারও করা হয়েছিলো। ১৯৭৪ সালে আইয়ুব দীর্ঘ রোগ ভোগের পর দেহত্যাগ করেন।
ক্ষমতা গ্রহণের পর আইয়ুব খান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করেন এবং সোভিয়েত ইউনিয়নবিরোধী ভূমিকা গ্রহণ করেন। ১৯৬০ সালে ভারতের সাথে সিন্ধুনদের পানিবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় আইয়ুব সরকারের তত্ত্বাবধানে। পরবর্তীতে আইয়ুব চীনের সাথেও পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নত করেন। ভারতের সাথে পাকিস্তানের সম্পর্ক মূলত অবনত হয় এবং ১৯৬৫ সালে ইন্দো-পাক যুদ্ধ হয় গুজরাটের কচ্ছের রান সীমান্ত নিয়ে। এ যুদ্ধ তাসখন্দ ঘোষণার মধ্য দিয়ে নিষ্পন্ন হয়। যুদ্ধের পরিণতি পাকিস্তানের রাজনৈতিক মহলে বিরূপ প্রভাব ফেলে এবং জুলফিকার আলি ভূট্টো পশ্চিম পাকিস্তানে আইয়ুবের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবিভূর্ত হন। পূর্ব পাকিস্তানে স্বায়ত্বশাসনের তীব্র দাবি উত্থাপিত হয় [[শেখ মুজিবর রহমান|শেখ মুজিবর রহমানের]] নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে।


ঐতিহাসিকভাবে আইয়ুব খানের শাসনামল অখণ্ড পাকিস্তানের শেষ এবং সবচেয়ে সফল দশক হিসেবে পরিগণিত হয়; তার শাসনামলে পাকিস্তানে নতুন শিল্প কল-কারখানা, নতুন সড়ক, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, যানবাহনসহ অনেক প্রাথমিক এবং উচ্চ বিদ্যালয় গড়ে তোলা হয়েছিলো। পূর্ব পাকিস্তানের আহসানুল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজকে আইয়ুব সরকার 'ইস্ট পাকিস্তান ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং এ্যান্ড কলেজ'এ নতুন নামকরণ করে যেটি পরে ১৯৭২ সালে 'বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং এ্যান্ড কলেজ' বা সংক্ষেপে বুয়েট নামে পরিবর্তিত হয়।<ref name="Story of Pakistan, Part-3">{{cite web|title=Martial Law Under Field Marshal Ayub Khan [1958–62]|url=http://www.storyofpakistan.com/articletext.asp?artid=A065|publisher=Story of Pakistan, Part-3}}, Retrieved 25 August 2015</ref><ref>[http://www.dawn.com/news/1293604/what-they-never-tell-us-about-ayub-khans-regime Dawn daily, Aug 2015 article and review]</ref
২৫ মার্চ ১৯৬৯ আইয়ুব খান গণদাবীর মুখে তদানীন্তন সেনাপ্রধান ইয়াহিয়া খানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে বাধ্য হন।<ref name=soc/> ১৯ এপ্রিল ১৯৭৪ এ আইয়ুব খান মৃত্যুবরণ করেন। তার বিরুদ্ধে স্বৈরাচার, জনগণের অধিকার লুণ্ঠন ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।


== তথ্যসূত্র ==
== তথ্যসূত্র ==

১০:১৫, ১০ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

আইয়ুব খান
ایوب خان
চিত্র:রাষ্ট্রপতি আইয়ুব খান.jpg
আইয়ুব খান (১৯০৭–৭৪)
পাকিস্তানের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি
কাজের মেয়াদ
২৭ অক্টোবর ১৯৫৮ – ২৫ মার্চ ১৯৬৯
পূর্বসূরীইস্কান্দার মির্জা
উত্তরসূরীইয়াহিয়া খান
প্রতিরক্ষামন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
২৮ অক্টোবর ১৯৫৮ – ২১ অক্টোবর ১৯৬৬
ডেপুটিপ্রতিরক্ষা সচিব
See list
  • মোঃ খুরশিদ (১৯৫৮-৫৯)
    এস ফিদা হুসেন (১৯৫৯-৬১)
    নাযির আহমেদ (১৯৬১-৬৫)
পূর্বসূরীআইয়ুব খুহরু
উত্তরসূরীভাইস এ্যাডমিরাল আফজাল রহমান খান
কাজের মেয়াদ
২৪ অক্টোবর ১৯৫৪ – ১১ আগস্ট ১৯৫৫
প্রধানমন্ত্রীমোহাম্মদ আলী বগুড়া
ডেপুটিআকতার হোসেন
(প্রতিরক্ষা সচিব)
পূর্বসূরীমোহাম্মদ আলী বগুড়া
উত্তরসূরীচৌধুরী মহাম্মাদ আলী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
২৩ মার্চ ১৯৬৫ – ১৭ আগস্ট ১৯৬৫
ডেপুটিপ্রতিরক্ষা সচিব
পূর্বসূরীখান হাবিবুল্লাহ খান
উত্তরসূরীচৌধুরী আলী আকবর খান
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়ক
কাজের মেয়াদ
২৩ জানুয়ারী ১৯৫১ – ২৬ অক্টোবর ১৯৫৮
ডেপুটিজেনারেল স্টাফ প্রধান
See list
  • মেজর জেনারেল ইউসুফ খান (১৯৫১-৫৩)
    মেজর-জেনারেল মিয়া হায়াত উদ্দীন (১৯৫৩-৫৫)
    মেজর-জেনারেল শের আলী খান পতৌদী (1955-57)
    মেজর জেনারেল ইয়াহিয়া খান (১৯৫৭-৫৮)
পূর্বসূরীজেনারেল ডগলাস গ্রেসি
উত্তরসূরীজেনারেল মুহাম্মদ মুসা খান
প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক
কাজের মেয়াদ
৭ অক্টোবর ১৯৫৮ – ২৭ অক্টোবর ১৯৫৮
রাষ্ট্রপতিইস্কান্দার মির্জা
পূর্বসূরীনতুন পদ
উত্তরসূরীইয়াহিয়া খান
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মমহাম্মাদ আইয়ুব খান
(১৯০৭-০৫-১৪)১৪ মে ১৯০৭
রেহানা, হরিপুর জেলা, উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ
মৃত্যু১৯ এপ্রিল ১৯৭৪(1974-04-19) (বয়স ৬৬)
ইসলামাবাদ
মৃত্যুর কারণহৃদরোগ
সমাধিস্থলরেহানা, হরিপুর
নাগরিকত্ব
 পাকিস্তান
(১৯৪৭-৭৪)
পুরস্কার নিশান-ই-পাকিস্তান
হিলাল-ই-পাকিস্তান
অর্ডার অব দ্যা ক্রাউন
সামরিক পরিষেবা
শাখা ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনী
(১৯২৮-৪৭)
 পাকিস্তান সেনাবাহিনী
(১৯৪৭-৫৮)
কাজের মেয়াদ১৯২৮-৫৮
পদজেনারেল
ইউনিটপাঞ্জাব রেজিমেন্ট
যুদ্ধদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ

মোহাম্মাদ আইয়ুব খান (১৪ইমে ১৯০৭ - ১৯শে এপ্রিল ১৯৭৪) পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন উর্ধ্বতন অধিকারিক ছিলেন। ১৯৫৮ সালে পাকিস্তানের শাসনভার নিজের হাতে তুলে নেওয়ার পর থেকে আইয়ুব প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে বৈরীপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। ১৯৫৮ সালের ৭ই অক্টোবর রাষ্ট্রপতি ইস্কান্দার মির্জা সমগ্র পাকিস্তানে সামরিক আইন জারি করেন এবং সেনাবাহিনীর তৎকালীন সর্বাধিনায়ক লেফটেন্যান্ট-জেনারেল আইয়ুব খানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের পদে নিযুক্ত করেন তিনি; ২৭শে অক্টোবর আইয়ুব মির্জাকে রাষ্ট্রপতির পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করে নিজে রাষ্ট্রপতির পদে আসীন হন। ১৯৬৯ সালে পূর্ব পাকিস্তানের গণঅভ্যুত্থানের মুখে আইয়ুব তার ১১ বছরের রাষ্ট্রপতিত্বের অবসান ঘটান পদটি থেকে পদত্যাগ করে।[১]

আইয়ুব খানের জন্ম হয়েছিলো উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের হরিপুর জেলায়। ১৯২৬ সালে তরুণ আইয়ুব ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা গড়ার কারিগর 'রয়েল মিলিটারি কলেজ' তে অধ্যায়ন করার সুযোগ পেয়ে যান যেটি ইংল্যান্ডের বার্কশায়ারের স্যান্ডহার্স্টে অবস্থিত ছিলো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আইয়ুব কর্নেল ছিলেন, ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হলে আইয়ুব নবগঠিত পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন ভারপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার হিসেবে। স্বাধীন পাকিস্তানে আইয়ুব প্রথমে পূর্ব পাকিস্তানে নিয়োগ পেয়েছিলেন ১৪তম পদাতিক ডিভিশনের অধিনায়ক হিসেবে, এরপর খুব দ্রুত উপরে ওঠেন তিনি; ১৯৫১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়কের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হন আইয়ুব।[২] ১৯৫৩ সাল থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত তিনি দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন; আইয়ুব এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী ফিরোজ খান প্রশাসনের বিরুদ্ধে ইস্কান্দার মির্জার জারি করা সামরিক আইনের পক্ষে ছিলেন।[৩] ইস্কান্দার মির্জাই মূলত আইয়ুব খানের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রপতিত্ব নিশ্চিত করেছিলেন।[৩][৪][৫]

আইয়ুব দেশের সরকার প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়কের পদে লেঃ জেনারেল মুহাম্মদ মুসা খানকে নিযুক্ত করেছিলেন। আইয়ুব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো জোরদার করা সহ প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর আধুনিকায়নে মনোযোগ দিয়েছিলেন। আইয়ুব তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের ঘোর বিরোধী ছিলেন। তিনি পেশোয়ারে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় একটি বিমান ঘাঁটি গড়ে তুলেছিলেন যেখানে যুক্তরাষ্ট্র বিমান বাহিনীর বৈমানিকেরা বিমান চালাতো এবং পাকিস্তানি বিমান বাহিনীর আধুনিকায়নে তারা অনেক সাহায্য করেছিলো।[৬] চীনের সঙ্গেও আইয়ুব সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলেন, ১৯৬২ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক চরম বৈরিতার দিকে যায় যে বছরে ভারত চীনের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী এক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিলো। ১৯৬৫ সালে আইয়ুব সরকার ভারতের সঙ্গে একটি বড় ধরণের যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার পরিকল্পনা করেছিলো যেটি ঐতিহাসিকভাবে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ১৯৬৫ নামে পরিচিতি পেয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্র এবং পুঁজিবাদী অর্থনীতির একজন গোঁড়া সমর্থক আইয়ুব পাকিস্তানেও যুক্তরাষ্ট্রর মত অর্থনৈতিক ব্যবস্থা চালু করার প্রয়াস চালিয়েছিলেন।

১৯৬৫ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আইয়ুবের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ফাতেমা জিন্নাহ দাঁড়িয়েছিলেন, যদিও আইয়ুব খান পুনরায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬৭ সালে পশ্চিম পাকিস্তানে জুলফিকার আলী ভুট্টোর নেতৃত্বে এবং পূর্ব পাকিস্তানে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে অনেক বিক্ষোভ এবং মিছিল হয় এবং ১৯৬৯ সালে পূর্ব পাকিস্তানে এক বড় ধরণের আন্দোলন হয়েছিলো। তার নির্দেশে বহু মানুষকে গ্রেফতারও করা হয়েছিলো। ১৯৭৪ সালে আইয়ুব দীর্ঘ রোগ ভোগের পর দেহত্যাগ করেন।

ঐতিহাসিকভাবে আইয়ুব খানের শাসনামল অখণ্ড পাকিস্তানের শেষ এবং সবচেয়ে সফল দশক হিসেবে পরিগণিত হয়; তার শাসনামলে পাকিস্তানে নতুন শিল্প কল-কারখানা, নতুন সড়ক, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, যানবাহনসহ অনেক প্রাথমিক এবং উচ্চ বিদ্যালয় গড়ে তোলা হয়েছিলো। পূর্ব পাকিস্তানের আহসানুল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজকে আইয়ুব সরকার 'ইস্ট পাকিস্তান ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং এ্যান্ড কলেজ'এ নতুন নামকরণ করে যেটি পরে ১৯৭২ সালে 'বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং এ্যান্ড কলেজ' বা সংক্ষেপে বুয়েট নামে পরিবর্তিত হয়।[৭]<ref>Dawn daily, Aug 2015 article and review</ref

তথ্যসূত্র

  1. "Muhammad Ayub Khan the Second President of Pakistan"। Pakistan Herald.com। ১৭ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ নভেম্বর ২০১১ , Retrieved 25 August 2015
  2. "Ayub Khan in US Country Studies"। US State Department। সংগ্রহের তারিখ ১৬ নভেম্বর ২০১১ , Retrieved 25 August 2015
  3. "Ouster of President Iskander Mirza"। Story of Pakistan, part-II। , Retrieved 27 August 2015
  4. "Field Marshal Ayub Khan Becomes President [1962–1969]"। Story of Pakistan, Part-1। , Retrieved 25 August 2015
  5. "Kal Tak – 25 May 2011 | Pakistan Politics"। Pkpolitics.com। ৯ মে ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ ডিসেম্বর ২০১২ 
  6. "Story of Pakistan, Part-1"/, Retrieved 25 August 2015
  7. "Martial Law Under Field Marshal Ayub Khan [1958–62]"। Story of Pakistan, Part-3। , Retrieved 25 August 2015

বহিঃসংযোগ

সামরিক দপ্তর
পূর্বসূরী
জেনারেল ডগলাস গ্রেসী
সেনা সর্বাধিনায়ক
১৯৫১–১৯৫৮
উত্তরসূরী
জেনারেল মুসা খান
রাজনৈতিক দপ্তর
পূর্বসূরী
মোহাম্মদ আলী
প্রতিরক্ষামন্ত্রী
১৯৫৪–১৯৫৫
উত্তরসূরী
চৌধুরী মোহাম্মদ আলী
পূর্বসূরী
ইস্কান্দার মীর্জা
রাষ্ট্রপতি
১৯৫৮-১৯৬৯
উত্তরসূরী
ইয়াহিয়া খান
প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক
১৯৫৮-১৯৫৯

টেমপ্লেট:Martial Law Administrators of Pakistan