উইকিপিডিয়া: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
[অপরীক্ষিত সংশোধন][অপরীক্ষিত সংশোধন]
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
AS Antu (আলোচনা | অবদান)
'''সবুজ ঝিনুক (Green Mussel) চাষ, সম্ভাবনার আরেক নাম:''
AS Antu (আলোচনা | অবদান)
সবুজ ঝিনুক (Green Mussel) চাষ, সম্ভাবনার আরেক নাম,
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[চিত্র:সবুজ ঝিনুক চাষ নিয়ে গবেষণা.png|থাম্ব|বাংলাদেশে সবুজ ঝিনুকের চাষ পদ্ধতির উন্নয়ন ও বিস্তারের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলার রেজুখাল, মহেশখালী, কুতুবদিয়া চ্যানেলের প্রতিটিতে ৫টি রিসার্চ স্টেশন ও নাফ নদীতে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন “চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়” ]]
'''সবুজ ঝিনুক (Green Mussel) চাষ, সম্ভাবনার আরেক নাম:'''
<big>'''সবুজ ঝিনুক (Green Mussel) চাষ, সম্ভাবনার আরেক নাম:''</big>
বাংলাদেশের রয়েছে বিশাল সমুদ্রসীমা ও বিশাল উৎপাদনক্ষম উপকূলীয় এলাকা যা মাৎস্যসম্পদের উৎপাদন আরো বৃদ্ধিতে রাখতে পারে অকল্পনীয় ভূমিকা। উপকূলীয় এলাকায় বাগদা চিংড়ীর চাষ যেমন বাংলাদেশের জন্য বয়ে এনেছে সাফল্য তেমনি যুগোপযোগী সাফল্য বয়ে আনতে পারে সবুজ ঝিনুক (Green mussel) এর চাষ।
বাংলাদেশের রয়েছে বিশাল সমুদ্রসীমা ও বিশাল উৎপাদনক্ষম উপকূলীয় এলাকা যা মাৎস্যসম্পদের উৎপাদন আরো বৃদ্ধিতে রাখতে পারে অকল্পনীয় ভূমিকা। উপকূলীয় এলাকায় বাগদা চিংড়ীর চাষ যেমন বাংলাদেশের জন্য বয়ে এনেছে সাফল্য তেমনি যুগোপযোগী সাফল্য বয়ে আনতে পারে সবুজ ঝিনুক (Green mussel) এর চাষ।
সবুজ ঝিনুক (Green mussel) Mytilidae গোত্রের একপ্রকারের ঝিনুক যার বৈজ্ঞানিক নাম Perna viridis । এদেরকে প্রধানত ভারত-মহাসাগরীয় অঞ্চলের ক্রান্তীয় ও উপকূলীয় এলাকায় পাওয়া যায়। এদের খোলসে সবুজ ও মিশ্র বাদামী রঙের রেখা থাকে। এদের দুইটি পরস্পর যুক্ত ডিম্বাকৃতির খোলস থাকে এবং দৈর্ঘ্যে সাধারণত ১০০ থেকে ১৫০ মিমি হয়ে থাকে। সবুজ ঝিনুক প্রধানত (Green mussel) ছাঁকন পদ্ধতিতে (Filter feeding) প্রাকৃতিক খাবার যেমন ফাইটোপ্ল্যাংক্টন বা জুয়োপ্ল্যাংক্টন এবং অন্যান্য জৈবকণা খেয়ে জীবণধারণ করে। এরা পরিবেশের বিভিন্ন প্রভাবক যেমন তাপমাত্রা, লবণাক্ততা, প্রাকৃতিক খাবারের প্রাচুর্যতা ইত্যাদির প্রভাবে বছরের বিভিন্ন সময় যেমন বসন্তের শুরুর দিকে এবং শরতের শেষের দিকে ডিম দিয়ে থাকে (Rajagopal et al. 1998)। এদের মাংস ও খোলসের চাহিদা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এদের চাষ খুব জনপ্রিয় করে তুলেছে।
সবুজ ঝিনুক (Green mussel) Mytilidae গোত্রের একপ্রকারের ঝিনুক যার বৈজ্ঞানিক নাম Perna viridis । এদেরকে প্রধানত ভারত-মহাসাগরীয় অঞ্চলের ক্রান্তীয় ও উপকূলীয় এলাকায় পাওয়া যায়। এদের খোলসে সবুজ ও মিশ্র বাদামী রঙের রেখা থাকে। এদের দুইটি পরস্পর যুক্ত ডিম্বাকৃতির খোলস থাকে এবং দৈর্ঘ্যে সাধারণত ১০০ থেকে ১৫০ মিমি হয়ে থাকে। সবুজ ঝিনুক প্রধানত (Green mussel) ছাঁকন পদ্ধতিতে (Filter feeding) প্রাকৃতিক খাবার যেমন ফাইটোপ্ল্যাংক্টন বা জুয়োপ্ল্যাংক্টন এবং অন্যান্য জৈবকণা খেয়ে জীবণধারণ করে। এরা পরিবেশের বিভিন্ন প্রভাবক যেমন তাপমাত্রা, লবণাক্ততা, প্রাকৃতিক খাবারের প্রাচুর্যতা ইত্যাদির প্রভাবে বছরের বিভিন্ন সময় যেমন বসন্তের শুরুর দিকে এবং শরতের শেষের দিকে ডিম দিয়ে থাকে (Rajagopal et al. 1998)। এদের মাংস ও খোলসের চাহিদা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এদের চাষ খুব জনপ্রিয় করে তুলেছে।

১৬:৪৫, ২৮ জুন ২০১৮ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

বাংলাদেশে সবুজ ঝিনুকের চাষ পদ্ধতির উন্নয়ন ও বিস্তারের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলার রেজুখাল, মহেশখালী, কুতুবদিয়া চ্যানেলের প্রতিটিতে ৫টি রিসার্চ স্টেশন ও নাফ নদীতে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন “চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়”

'সবুজ ঝিনুক (Green Mussel) চাষ, সম্ভাবনার আরেক নাম: বাংলাদেশের রয়েছে বিশাল সমুদ্রসীমা ও বিশাল উৎপাদনক্ষম উপকূলীয় এলাকা যা মাৎস্যসম্পদের উৎপাদন আরো বৃদ্ধিতে রাখতে পারে অকল্পনীয় ভূমিকা। উপকূলীয় এলাকায় বাগদা চিংড়ীর চাষ যেমন বাংলাদেশের জন্য বয়ে এনেছে সাফল্য তেমনি যুগোপযোগী সাফল্য বয়ে আনতে পারে সবুজ ঝিনুক (Green mussel) এর চাষ। সবুজ ঝিনুক (Green mussel) Mytilidae গোত্রের একপ্রকারের ঝিনুক যার বৈজ্ঞানিক নাম Perna viridis । এদেরকে প্রধানত ভারত-মহাসাগরীয় অঞ্চলের ক্রান্তীয় ও উপকূলীয় এলাকায় পাওয়া যায়। এদের খোলসে সবুজ ও মিশ্র বাদামী রঙের রেখা থাকে। এদের দুইটি পরস্পর যুক্ত ডিম্বাকৃতির খোলস থাকে এবং দৈর্ঘ্যে সাধারণত ১০০ থেকে ১৫০ মিমি হয়ে থাকে। সবুজ ঝিনুক প্রধানত (Green mussel) ছাঁকন পদ্ধতিতে (Filter feeding) প্রাকৃতিক খাবার যেমন ফাইটোপ্ল্যাংক্টন বা জুয়োপ্ল্যাংক্টন এবং অন্যান্য জৈবকণা খেয়ে জীবণধারণ করে। এরা পরিবেশের বিভিন্ন প্রভাবক যেমন তাপমাত্রা, লবণাক্ততা, প্রাকৃতিক খাবারের প্রাচুর্যতা ইত্যাদির প্রভাবে বছরের বিভিন্ন সময় যেমন বসন্তের শুরুর দিকে এবং শরতের শেষের দিকে ডিম দিয়ে থাকে (Rajagopal et al. 1998)। এদের মাংস ও খোলসের চাহিদা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এদের চাষ খুব জনপ্রিয় করে তুলেছে। যদিও বাংলাদেশে সবুজ ঝিনুক (Green mussel) চাষ এখনো ততটা প্রচলিত হয়ে ওঠেনি কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যেমনঃ চীন, সিঙ্গাপুর, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড ও ভারত এ সুল্ভ প্রোটিনের উৎস হিসেবে সবুজ ঝিনুক (Green mussel) এর চাষ খুবই প্রচলিত। এমনকি সিঙ্গাপুর এর মতো একটি উন্নত দেশের মাৎস্য সম্পদ উৎপাদন এর প্রায় ৭০.৪ শতাংশ জুড়েই রয়েছে সবুজ ঝিনুক (Green mussel) । থাইল্যান্ড হলো বিশ্বে সবুজ ঝিনুক (Green mussel) এর দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎপাদক।

সবুজ ঝিনুক (Green mussel) চাষের জনপ্রিয়তার কারণঃ  এদের বৃদ্ধি খুব দ্রুত হয়  এদের মাংস বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উপাদেয় খাদ্য  এদের খোলস চুন উৎপাদন, মাছ ও পোলট্রির খাবারে ক্যালসিয়াম এর উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।  প্রাকৃতিক উৎস হতেই বীজ পাওয়া যায়।  সারাবছর জুড়েই এদের কৃত্রিম প্রজনন ঘটানো এবং বীজ উৎপাদন সম্ভব।  সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাবারের উপর নির্ভরশীল।  উপকূলীয় এলাকায় চাষযোগ্য  খুব অল্প সময়েই বাজারজাত করা যায়।  অধিক ঘনত্বে চাষ করা যায়।  প্রযুক্তিগত খরচ অন্যান্য চাষের তুলনায় কম।  বিশ্বজুড়ে চাহিদা থাকায় রপ্তানির হার বেশি।

বাংলাদেশে সবুজ ঝিনুক (Green mussel) চাষের সম্ভাবনাঃ  প্রায় ২০ লক্ষ উপজাতি জনগোষ্ঠীর নিয়মিত খাবার হিসেবে আমিষের চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখবে।  এদের খোলস মাছ ও পোলট্রি খাদ্যে ক্যালসিয়ামের উৎস হিসেবে ও চুন তৈরিতে কাজে আসবে।  উপকূলীয় এলাকার প্রাকৃতিক জলসম্পদের লাভজনক ব্যবহার নিশ্চিত হবে।  বেকার জনগোষ্টীর নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।  রপ্তানি চাহিদা অনেক বেশি হওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যমে অর্থনীতিতে ভুমিকা রাখবে।  জাটকা এবং অবৈধভাবে মাছ ও চিংড়ীর পোনা আহরণকারীদের বিকল্প কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।  সবুজ ঝিনুক (Green mussel) এর বিলুপ্তি রোধ করতে ভূমিকা রাখবে।  দেশের মাৎস্যসম্পদ উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

বাংলাদেশে গবেষণাঃ বাংলাদেশে সবুজ ঝিনুকের চাষ পদ্ধতির উন্নয়ন ও বিস্তারের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলার রেজুখাল, মহেশখালী, কুতুবদিয়া চ্যানেলের প্রতিটিতে ৫টি রিসার্চ স্টেশন ও নাফ নদীতে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন “চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়” এর মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান (বিভাগ-মেরিন বায়ো-রিসোর্স সায়েন্স ) ড. মোঃ আসাদুজ্জামান ও সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান (বিভাগ-ফিশারিজ রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট) ড. মোঃ শেখ আহমাদ আল নাহিদ। এ গবেষণা প্রকল্পের সাথে আরো যুক্ত রয়েছেন মেরিন বায়ো-রিসোর্স সায়েন্স বিভাগের প্রভাষক মিস সুমী আক্তার, জনাব মোঃ আবরার শাকিল ও মিস নাঈমা ফেরদৌসী হক তাছাড়া মাস্টার্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা। প্রায় দেড় বছর মেয়াদী এ গবেষণা প্রকল্প কাজ করে যাচ্ছে সবুজ ঝিনুকের বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ, প্রজনন, চাষ উপযোগী জায়গা ও পরিবেশ নির্বাচন, গড় মৃত্যুহার সহ আরো নানামুখী বিষয় নিয়ে। এ গবেষণা প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো আমাদের দেশে ব্লু-ইকোনমি (Blue-economy) এর সর্বত্তোম উন্নতি সাধন করা ও বাংলাদেশে সবুজ ঝিনুক (Green mussel) চাষের সমূহ উন্নয়ন সাধন করে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেয়া অদূর ভবিষ্যতে। চাষ উপযোগী জায়গার বৈশিষ্ট্যঃ  স্প্যাট সংযুক্ত হওয়ার জন্য উপযুক্ত জায়গা বা অবলম্বন।  পানির গভীরতা সর্বনিম্ন ১ মিটার (ভাটার সময়)  পানির লবণাক্ততা ২৭-৩৫ পিপিটি (Aypa 1990)  স্রোতের গতি কম থাকা বাঞ্চনীয়  শিকারী প্রাণির কবলমুক্ত ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ দ্বারা কম প্রভাবিত এলাকা।  তাপমাত্রা ২৫.৩০ থেকে ৩৪.৬০ সেলসিয়াস (Rajagopal et al. 1998)।  প্রাকৃতিক খাবারের প্রাচুর্যতা। চাষ পদ্ধতিঃ

সবুজ ঝিনুক (Green mussel) প্রধানত নিমজ্জিত বা ভাসমান ভেলায় (Raft), খাঁচায়, লং লাইন (Long-line) বা সরাসরি তলদেশে (On bottom) চাষ করা যায়। তাছাড়া বিভিন্ন রকম অবকাঠামো নির্মাণ করেও এদের চাষ করা হয়। প্রধানত প্রাকৃতিক উৎস হতে স্প্যাট (Spat ২-৫ সপ্তাহ বয়স, ০.২৫-০.৩ মিমি; যে অবস্থায় বীজগুলো কোন কাঠামোতে সংযুক্ত হয়) সংগ্রহ করা হয়। সংগ্রহ করার পর বীজগুলোকে উপযুক্ত জায়গায় নিয়ে স্থাপন করা হয় এবং প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ করা হয়। ১২ থেকে ১৫ মাসের মধ্যে এরা বাজারজাতকরণের উপযোগী (৩৫-৪০ মিমি) হয়ে ওঠে। পানির প্রায় ২ মিটার গভীরে তাপমাত্রা ও লবণাক্ততার ক্রমপরিবর্তন কম হওয়ার কারণে সর্বোচ্চ বৃদ্ধি পরিলক্ষিত হয়েছে। স্বল্প আয়তনের আমাদের এই দেশের রয়েছে বিশাল সমুদ্রসীমা ও উৎপাদনক্ষম উপকূলীয় এলাকা যার অধিকাংশ অংশেরই সঠিক ব্যবহার এখনো নিশ্চিত হয়নি। সবুজ ঝিনুক (Green mussel) চাষ এমনই এক সম্ভাবনার নাম যা আমাদের ব্লু ইকোনমি (Blue-economy) কে আরো সচল করে উপকূলীয় এলাকাসমূহকে গড়ে তুলতে পারে অর্থনীতির এক বিশাল চালিকাশক্তি হিসেবে। অবদান রাখতে পারে আমাদের মাৎস্যসম্পদ উৎপাদন আরো বৃদ্ধি করতে। হয়ে উঠতে পারে আমাদের বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান ও উপকূলীয় দরিদ্র মানুষের আর্থিক সচ্ছলতার চাবিকাঠি। অন্তর সরকার email: antorsarkar1@gmail.com “চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়”