উপসর্গ (ব্যাকরণ): সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
→খাঁটি বাংলা উপসর্গ: বিষয়বস্তু যোগ |
পরিষ্করণ ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
‘উপসর্গ’ কথাটির মূল অর্থ ‘উপসৃষ্ট’। এর কাজ হলো নতুন শব্দ গঠন করা। উপসর্গের নিজস্ব কোন অর্থ নেই, তবে এগুলো অন্য শব্দের সাথে যুক্ত হয়ে বিশেষ অর্থ প্রকাশ করে থাকে। মনে রাখতে উপসর্গ সব সময় মূল শব্দের পূর্বে যুক্ত হয়। |
|||
‘তাপ’ (বিশেষ্য পদ) তৎসম পদ । |
|||
‘তাপ’ অর্থ উষ্ণতা বা |
|||
‘তাপ’ (বিশেষ্য পদ) তৎসম পদ। ‘তাপ’ অর্থ উষ্ণতা বা উত্তাপ। এর পূর্বে ‘প্র’ বা ‘অনু’ যুক্ত হয়ে যথাক্রমে প্রতাপ (প্র+তাপ) যার অর্থ পরাক্রান্ত বা বীরত্ব। অনুতাপ (অনু+ তাপ) যার অর্থ অনুশোচনা বা আফসোস ইত্যাদি নতুন শব্দ গঠিত হয়েছে এবং ‘তাপ’ শব্দের অর্থের পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। আবার ‘প্র’ বা ‘অনু’ এর নিজস্ব কোন অর্থ নেই বা এগুলো স্বাধীনভাবে কোন বাক্যেও ব্যবহৃত হতে পারে না। তাই ভাষাবিদগণ এরূপ অব্যয়সূচক শব্দ বা শব্দাংশের নাম দিয়েছেন 'উপসর্গ'। যেমন- ‘হার’ একটি শব্দ। এর সাথে উপ, আ, প্র, বি উপসর্গ যুক্ত হয়ে যথাক্রমে উপহার, আহার, প্রহার, বিহার শব্দ গঠিত হয়েছে। এভাবে উপসর্গের সাহায্যে নতুন নতুন শব্দ গঠন করে বাংলা ভাষার শব্দ সম্ভার সমৃদ্ধি লাভ করেছে। অতএব, '''কতকগুলো অব্যয় নামবাচক বা কৃদান্ত শব্দের পূর্বে যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে এবং অর্থের পরির্বতন সাধন করে, এগুলোকে উপসর্গ বলে।''' |
|||
উত্তাপ । এর পূর্বে ‘প্র’ বা |
|||
‘অনু’ যুক্ত হয়ে যথাক্রমে |
|||
[[সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়|ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের]] মতে, “সংস্কৃতে কতগুলো অব্যয় শব্দ আছে, এগুলো ধাতুর পূর্বে বসে এবং ধাতুর মূল ক্রিয়ার গতি নির্দেশ করে এর অর্থের প্রসারণ, সঙ্কোচন বা অন্য পরিবর্তন আনয়ন করে দেয়। এরূপ অব্যয় শব্দকে উপসর্গ বলে।” |
|||
প্রতাপ (প্র+তাপ) যার অর্থ |
|||
পরাক্রান্ত বা বীরত্ব । |
|||
[[মুহাম্মদ এনামুল হক| ড. মুহাম্মদ এনামুল হকের]] মতে, “যেসব অব্যয় শব্দ কৃদান্ত বা নামপদের পূর্বে বসে শব্দগুলোর অর্থের সংকোচন, সম্প্রসারণ বা অন্য কোন পরিবর্তন সাধন করে, ঐ সব অব্যয় শব্দকে বাংলা ভাষায় উপসর্গ বলে।” |
|||
অনুতাপ (অনু+ তাপ) যার অর্থ |
|||
অনুশোচনা বা আফসোস |
|||
[[অশোক মুখোপাধ্যায়|অশোক মুখোপাধ্যায়ের]] মতে, “বাংলা ভাষায় কিছু অব্যয় আছে যারা ধাতু বা শব্দের আগে যুক্ত হয়ে তাদের অর্থ বদল করে দেয়। এদেরই বলা হয় উপসর্গ।” |
|||
ইত্যাদি নতুন শব্দ গঠিত |
|||
হয়েছে এবং ‘তাপ’ শব্দের |
|||
অর্থের পরিবর্তন সাধিত |
|||
হয়েছে । আবার ‘প্র’ বা ‘অনু’ |
|||
এর নিজস্ব কোন অর্থ নেই |
|||
বা এগুলো স্বাধীনভাবে |
|||
কোন বাক্যেও ব্যবহৃত হতে |
|||
পারে না । তাই |
|||
ভাষাবিদগণ এরূপ অব্যয়সূচক |
|||
শব্দ বা শব্দাংশের নাম |
|||
দিয়েছেন উপসর্গ । |
|||
‘উপসর্গ’ কথাটির মূল অর্থ |
|||
‘উপসৃষ্ট’ । এর কাজ হলো নতুন |
|||
শব্দ গঠন করা । উপসর্গের |
|||
নিজস্ব কোন অর্থ নেই, তবে |
|||
এগুলো অন্য শব্দের সাথে |
|||
যুক্ত হয়ে বিশেষ অর্থ প্রকাশ |
|||
করে থাকে । মনে রাখতে |
|||
উপসর্গ সব সময় মূল শব্দের পূর্বে |
|||
যুক্ত হয় । যেমন- ‘হার’ একটি |
|||
শব্দ । এর সাথে উপ, আ, প্র, বি |
|||
উপসর্গ যুক্ত হয়ে যথাক্রমে |
|||
উপহার, আহার, প্রহার, |
|||
বিহার শব্দ গঠিত হয়েছে । |
|||
এভাবে উপসর্গের |
|||
সাহায্যে নতুন নতুন শব্দ গঠন |
|||
করে বাংলা ভাষার শব্দ |
|||
সম্ভার সমৃদ্ধি লাভ করেছে |
|||
। |
|||
অতএব, কতকগুলো অব্যয় |
|||
নামবাচক বা কৃদান্ত শব্দের |
|||
পূর্বে যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন |
|||
করে এবং অর্থের পরির্বতন |
|||
সাধন করে, এগুলোকে উপসর্গ |
|||
বলে । |
|||
ড. সুনীতিকুমার |
|||
চট্টোপাধ্যায়ের মতে, |
|||
“সংস্কৃতে কতগুলো অব্যয় শব্দ |
|||
আছে, এগুলো ধাতুর পূর্বে |
|||
বসে এবং ধাতুর মূল ক্রিয়ার |
|||
গতি নির্দেশ করে এর |
|||
অর্থের প্রসারণ, সঙ্কোচন |
|||
বা অন্য পরিবর্তন আনয়ন করে |
|||
দেয় । এরূপ অব্যয় শব্দকে |
|||
উপসর্গ বলে ।” |
|||
ড. মুহাম্মদ এনামুল হকের |
|||
মতে, “যেসব অব্যয় শব্দ কৃদান্ত |
|||
বা নামপদের পূর্বে বসে |
|||
শব্দগুলোর অর্থের সংকোচন, |
|||
সম্প্রসারণ বা অন্য কোন |
|||
পরিবর্তন সাধন করে, ঐ সব |
|||
অব্যয় শব্দকে বাংলা |
|||
ভাষায় উপসর্গ বলে ।” |
|||
অশোক মুখোপাধ্যায়ের |
|||
মতে, “বাংলা ভাষায় |
|||
কিছু অব্যয় আছে যারা ধাতু |
|||
বা শব্দের আগে যুক্ত হয়ে |
|||
তাদের অর্থ বদল করে দেয় । |
|||
এদেরই বলা হয় উপসর্গ ।” |
|||
== উপসর্গের প্রকারভেদ == |
== উপসর্গের প্রকারভেদ == |
১৬:১৬, ১২ মে ২০১৮ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
‘উপসর্গ’ কথাটির মূল অর্থ ‘উপসৃষ্ট’। এর কাজ হলো নতুন শব্দ গঠন করা। উপসর্গের নিজস্ব কোন অর্থ নেই, তবে এগুলো অন্য শব্দের সাথে যুক্ত হয়ে বিশেষ অর্থ প্রকাশ করে থাকে। মনে রাখতে উপসর্গ সব সময় মূল শব্দের পূর্বে যুক্ত হয়।
‘তাপ’ (বিশেষ্য পদ) তৎসম পদ। ‘তাপ’ অর্থ উষ্ণতা বা উত্তাপ। এর পূর্বে ‘প্র’ বা ‘অনু’ যুক্ত হয়ে যথাক্রমে প্রতাপ (প্র+তাপ) যার অর্থ পরাক্রান্ত বা বীরত্ব। অনুতাপ (অনু+ তাপ) যার অর্থ অনুশোচনা বা আফসোস ইত্যাদি নতুন শব্দ গঠিত হয়েছে এবং ‘তাপ’ শব্দের অর্থের পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। আবার ‘প্র’ বা ‘অনু’ এর নিজস্ব কোন অর্থ নেই বা এগুলো স্বাধীনভাবে কোন বাক্যেও ব্যবহৃত হতে পারে না। তাই ভাষাবিদগণ এরূপ অব্যয়সূচক শব্দ বা শব্দাংশের নাম দিয়েছেন 'উপসর্গ'। যেমন- ‘হার’ একটি শব্দ। এর সাথে উপ, আ, প্র, বি উপসর্গ যুক্ত হয়ে যথাক্রমে উপহার, আহার, প্রহার, বিহার শব্দ গঠিত হয়েছে। এভাবে উপসর্গের সাহায্যে নতুন নতুন শব্দ গঠন করে বাংলা ভাষার শব্দ সম্ভার সমৃদ্ধি লাভ করেছে। অতএব, কতকগুলো অব্যয় নামবাচক বা কৃদান্ত শব্দের পূর্বে যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে এবং অর্থের পরির্বতন সাধন করে, এগুলোকে উপসর্গ বলে।
ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে, “সংস্কৃতে কতগুলো অব্যয় শব্দ আছে, এগুলো ধাতুর পূর্বে বসে এবং ধাতুর মূল ক্রিয়ার গতি নির্দেশ করে এর অর্থের প্রসারণ, সঙ্কোচন বা অন্য পরিবর্তন আনয়ন করে দেয়। এরূপ অব্যয় শব্দকে উপসর্গ বলে।”
ড. মুহাম্মদ এনামুল হকের মতে, “যেসব অব্যয় শব্দ কৃদান্ত বা নামপদের পূর্বে বসে শব্দগুলোর অর্থের সংকোচন, সম্প্রসারণ বা অন্য কোন পরিবর্তন সাধন করে, ঐ সব অব্যয় শব্দকে বাংলা ভাষায় উপসর্গ বলে।”
অশোক মুখোপাধ্যায়ের মতে, “বাংলা ভাষায় কিছু অব্যয় আছে যারা ধাতু বা শব্দের আগে যুক্ত হয়ে তাদের অর্থ বদল করে দেয়। এদেরই বলা হয় উপসর্গ।”
উপসর্গের প্রকারভেদ
উপসর্গ সাধারণত তিন প্রকার।
সংস্কৃত উপসর্গ
বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত সংস্কৃত উপসর্গ বিশটি; যথা- প্র, প্ররা, অপ, সম্, নি, অব, অনু, নির্, দুর্, বি, অধি, সু, উৎ, পরি, প্রতি, অভি, অতি, অপি, উপ, আ।
খাঁটি বাংলা উপসর্গ
বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত খাঁটি বাংলা উপসর্গ একুশটি; যথা- অ, অঘা, অজ, অনা, আ, আড়্, আন্, আব্, ইতি, উন্ (উনু, উনা), কদ্, কু, নি, পাতি, বি, ভর, রাম, স, সা, সু, হা।
আ, সু, বি, নি— এই চারটি উপসর্গ সংস্কৃত ভাষায়ও পাওয়া যায়। ব্যবহারের ওপর নির্ভর করে এই চারটি উপসর্গ বাংলা না সংস্কৃত তা নির্ধারণ করা হয়। বাংলা উপসর্গ সর্বদাই বাংলা শব্দের আগে এবং সংস্কৃত উপসর্গ সর্বদাই সংস্কৃত শব্দের আগে বসে।
বিদেশী উপসর্গ
আরবি, ফারসি, ইংরেজি ও উর্দু- হিন্দি— এইসব ভাষার উপসর্গ বাংলা ভাষায় প্রচলিত রয়েছে। যেমন—
ফার্সি উপসর্গের উদাহরণ- কার্, সে (তিন), দর্, না, নিম্, ফি, বর, ব, বদ্, বে, কম্, দস্ত (নিজ) ইত্যাদি।
আরবি উপসর্গের উদাহরণ- আম্, খাস, লা, গর্, বাজে, খয়ের (শাব্দিক অর্থ- ভালো; উদাহরণ- খয়ের খাঁ; শাব্দিক অর্থ- মঙ্গলাকাঙ্ক্ষী; বাগধারায়- তোষামোদকারী) ইত্যাদি।
ইংরেজি উপসর্গের উদাহরণ- ফুল, সাব, হাফ, হেড।
উর্দু - হিন্দি উপসর্গ - হর।