পটচিত্র: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
বাক্যবাগীশ (আলোচনা | অবদান) সম্পাদনা সারাংশ নেই ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা |
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল অ্যাপ সম্পাদনা |
||
১১ নং লাইন: | ১১ নং লাইন: | ||
== ইতিহাস == |
== ইতিহাস == |
||
বৈদ্যুতিক মাধ্যমের সূত্রপাতের ফলে বাংলার প্রাচীন প্রথাগুলির বেশিরভাগ অবলুপ্ত হয়ে পড়লেও পটচিত্রের ক্ষেত্রে এটি সত্যি নয়। পটচিত্রের সমৃদ্ধ ইতিহাস আছে। গ্রামীণ বাংলায় পটুয়ারাই দীঘদিন যাবৎ পট তৈরী করে এসেছেন। এই পটুয়ারা চিত্রকর জাতিভূক্ত। এই পটুয়ারা পেশাদার শিল্পজাতি যারা তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য ছবি আঁকতেন ও সংগীত পরিবেশন করে থাকেন। সংগীতের বিষয়বস্তু পৌরাণিক, সমসাময়িক বা লোকজ বিষয়ের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। |
|||
প্রজন্মান্তরে, গ্রাম থেকে গ্রামে এই পটুয়ারা তাঁদের পট নিয়ে গিয়ে কখনও মঙ্গলকাব্য বা বিষয়ানুগ অন্য কোন সগীত পরীবেশন করেন খাদ্য বা অর্থের |
প্রজন্মান্তরে, গ্রাম থেকে গ্রামে এই পটুয়ারা তাঁদের পট নিয়ে গিয়ে কখনও মঙ্গলকাব্য বা বিষয়ানুগ অন্য কোন সগীত পরীবেশন করেন খাদ্য বা অর্থের বিনিময়ে। |
||
[[চিত্র:Bagalamukhi Patachitra.JPG|thumbnail|Bagalamukhi Patachitra]] |
[[চিত্র:Bagalamukhi Patachitra.JPG|thumbnail|Bagalamukhi Patachitra]] |
||
== পটচিত্রের বিভিন্ন রূপভেদ== |
== পটচিত্রের বিভিন্ন রূপভেদ== |
১৭:১০, ৪ মে ২০১৮ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
পটচিত্র (ইংরেজি - Patachitra) পট বা বস্ত্রের উপর আঁকা একপ্রকার লোকচিত্র। এটি প্রাচীন বাংলার (বাংলা ভাষাভাষী অধ্যুষিত অঞ্চল) অন্যতম সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। প্রাচীনকালে যখন কোন রীতিসিদ্ধ শিল্পকলার অস্তিত্ব ছিলনা তখন এই পটশিল্পই বাংলার শিল্পকলার ঐতিহ্যের বাহক ছিল। যারা পটচিত্র অঙ্কন করেন তাদেরকে সেযুগে এবং এযুগেও পটুয়া বলা হয়।
পট
পট শব্দের প্রকৃত অর্থ হল কাপড়। শব্দটি সংস্কৃত "পট্ট" থেকে এসেছে। বর্তমানে এই শব্দটিকে ছবি, ছবি আঁকার মোটা কাপড় বা কাগজের খন্ড ইত্যাদি অর্থেও ব্যবহার করা হয়। পটের উপর তুলির সাহায্যে রং লাগিয়ে বস্তুর রূপ ফুটিয়ে তোলাই পট চিত্রের মূলকথা ।এতে কাহিনী ধারাবাহিক ভাবে চিত্রিত হতে থাকে । অন্তত আড়াই হাজার বছর ধরে পটচিত্র এ উপমহাদেশের শিল্প জনজীবনের আনন্দের উৎস, শিক্ষার উপকরণ এবং ধর্মীয় আচরণের অংশ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে এসেছে ।বাংলাদেশের পটচিত্রের মধ্যে গাজীর পট ও কালীঘাটের পট উল্লেখযোগ্য । পট মূলত দুই ধরনের রয়েছে। যথা:
- জড়ানো পট: এ ধরনের পট ১৫-৩০ ফুট লম্বা এবং ২-৩ ফুট চওড়া হয়।
- চৌকা পট: এগুলোর আকার ছোট হয়।
কাপড়ের উপর গোবর ও আঠার প্রলেপ দিয়ে প্রথমে একটি জমিন তৈরি করা হয়। সেই জমিনের উপর তুলি দিয়ে বিভিন্ন চিত্র অঙ্কিত হয়।
পটের প্রকারভেদে
বিষয়বৈচিত্র অনুসারে সংগৃহীত পটগুলিকে বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে;যেমন-চকসুদন পট, যমপট, সাহেবপট, কালিঘাটপট, গাজিপট, সত্যপীড়েরপট, পাবুজীপট ইত্যাদি। সাধারণভাবে পটকে ছয়ভাগে বিভক্ত করা যায়। সেগুলি হল - বিষয়নিরপেক্ষ, রাজনৈতিক, ঐতিহাসিক, ধমীয়, সামাজীক এবং পরীবেশগত। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে বিষয়নিরপেক্ষ পটগুলির মধ্যে যে কোনও ধরনের নর ও নারীর ছবি অথবা শিল্পচিত্র দেখা যায়। এবং সামাজিক পট বলতে বোঝায় সামজিক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য যে পটচিত্র গুলি অন্কণ করা হ্য় সেইগুলি। যেমন পাল্স পোলিও টীকাকরণ অভিযান, ম্যালেরিয়া দূরীকরণ, সাম্প্রদায়িক সম্পৃতী, বৃক্ষরোপন, এড্স সন্মন্ধীয় সচেতনতা বৃদ্ধি, মানবাধীকার ও নারীনিগ্রহ বিরোধী সচেতনতা বৃদ্ধি সঙ্ক্রান্ত পটচিত্রগুলি।
ইতিহাস
বৈদ্যুতিক মাধ্যমের সূত্রপাতের ফলে বাংলার প্রাচীন প্রথাগুলির বেশিরভাগ অবলুপ্ত হয়ে পড়লেও পটচিত্রের ক্ষেত্রে এটি সত্যি নয়। পটচিত্রের সমৃদ্ধ ইতিহাস আছে। গ্রামীণ বাংলায় পটুয়ারাই দীঘদিন যাবৎ পট তৈরী করে এসেছেন। এই পটুয়ারা চিত্রকর জাতিভূক্ত। এই পটুয়ারা পেশাদার শিল্পজাতি যারা তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য ছবি আঁকতেন ও সংগীত পরিবেশন করে থাকেন। সংগীতের বিষয়বস্তু পৌরাণিক, সমসাময়িক বা লোকজ বিষয়ের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। প্রজন্মান্তরে, গ্রাম থেকে গ্রামে এই পটুয়ারা তাঁদের পট নিয়ে গিয়ে কখনও মঙ্গলকাব্য বা বিষয়ানুগ অন্য কোন সগীত পরীবেশন করেন খাদ্য বা অর্থের বিনিময়ে।
পটচিত্রের বিভিন্ন রূপভেদ
বাংলায় পটচিত্রের বিভিন্ন রূপকল্প দেখা যায়। যথা-
পৌরানিক পট
পৌরানিক বিভিন্ন গল্প ও গাথা এই পটের উপজীব্য। সেগুলি হল রাবন বধ, সিতা হরণ, রাজা হরিশ্চন্দ্র, কৃষ্ণলীলা, দূর্গালীলা, সাবিত্রী-সত্যবান, মনসা মঙ্গল, চন্ডীমঙ্গল, ধর্মমঙ্গল, আনন্দ মঙ্গল ইত্যাদি।
ঐতিহাসিক পট
ঐতিহাসিক পটের উপজীব্য যা এর নাম থেকেই প্রকাশিত তা হল ঐতিহাসিক ঘটনাবলী। যেমন- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, আজাদ্ হিন্দ্ বাহিনী ও নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু, আণবিক বোমাবর্ষণ
অঙ্কন পদ্ধতি
জমিন তৈরির পড় অঙ্কনকাজ শুরু হয়। এক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশজ রংয়ের ব্যবহার উল্লেকযোগ্য; যেমন: ইটের গুঁড়া, কাজল, লাল সিঁদুর, সাদা খড়ি, আলতা, কাঠ-কয়লা ইত্যাদি। পটটিকে কয়েকটি অংশে ভাগ করে কাজ করা হয় এবং রংয়ের প্রকারের মধ্যে লাল, নীল, হলুদ, গোলাপী, বাদামী, সাদা এবং কালো ব্যবহৃত হয়।