বঙ্গাব্দ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
[অপরীক্ষিত সংশোধন][অপরীক্ষিত সংশোধন]
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Jatak (আলোচনা | অবদান)
নিবন্ধ সমপূর্ণকরণ
Jatak (আলোচনা | অবদান)
৬১ নং লাইন: ৬১ নং লাইন:
শহুরে মানুষরা বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে সাম্প্রতিক কালে পহেলা বৈশাখকে একটি সার্বজনীন ধর্মনিরপেক্ষ উৎসবের রূপ দিতে সচেষ্ট এবং অনেকখানি সফলও বলা যায় । পারস্যের [[নওরোজ| নওরোজের]] মতো বাংলা নববর্ষও সার্বজনীন উৎসবের মর্যাদায় এগিয়ে যাচ্ছে ।
শহুরে মানুষরা বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে সাম্প্রতিক কালে পহেলা বৈশাখকে একটি সার্বজনীন ধর্মনিরপেক্ষ উৎসবের রূপ দিতে সচেষ্ট এবং অনেকখানি সফলও বলা যায় । পারস্যের [[নওরোজ| নওরোজের]] মতো বাংলা নববর্ষও সার্বজনীন উৎসবের মর্যাদায় এগিয়ে যাচ্ছে ।
==সহযোগী বর্ষপঞ্জী==
==সহযোগী বর্ষপঞ্জী==
বাংলা সন ওতপ্রোতভাবে হিন্দু সৌর পঞ্জিকার সাথে সম্পর্কিত যেটা আবার সূর্য সিদ্ধান্তের উপর নির্ভরশীল । হিন্দু সৌর পঞ্জিও শুরু হয় মধ্য এপ্রিলে । বাংলাদেশ এবং পশ্চিম বঙ্গের বাইরে [[আসাম, [[কেরালা]],[[ মনিপুর]], [[নেপাল]], [[উড়িষ্যা]], [[পাঞ্জাব]], [[তামিলনাড়ু]] এবং [[ত্রিপুরায়]] এই বর্ষপঞ্জির প্রথম দিনকেই নতুন বর্ষের শুরু হিসেবে উদযাপন করা হয় । নববর্ষ আবার “[[মেসা সংক্রান্তি]]” হিসেবেও পরিচিত ।
বাংলা সন ওতপ্রোতভাবে হিন্দু সৌর পঞ্জিকার সাথে সম্পর্কিত যেটা আবার সূর্য সিদ্ধান্তের উপর নির্ভরশীল । হিন্দু সৌর পঞ্জিও শুরু হয় মধ্য এপ্রিলে । বাংলাদেশ এবং পশ্চিম বঙ্গের বাইরে [[আসাম]], [[কেরালা]],[[ মনিপুর]], [[নেপাল]], [[উড়িষ্যা]], [[পাঞ্জাব]], [[তামিলনাড়ু]] এবং [[ত্রিপুরায়]] এই বর্ষপঞ্জির প্রথম দিনকেই নতুন বর্ষের শুরু হিসেবে উদযাপন করা হয় । নববর্ষ আবার “[[মেসা সংক্রান্তি]]” হিসেবেও পরিচিত ।

¬
==তথ্য সূত্র==
==তথ্য সূত্র==
[http://en.wikipedia.org/wiki/Bengali_calendar ইংরেজী উইকিপিডিয়া ]
[http://en.wikipedia.org/wiki/Bengali_calendar ইংরেজী উইকিপিডিয়া ]

০৩:৫৯, ২৮ এপ্রিল ২০০৮ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

বাংলা সন বা বঙ্গাব্দ ভারতবর্ষে মোগল সম্রাট আকবর প্রবর্তিত সৌরপঞ্জিকা ভিত্তিক বর্ষপঞ্জি। হিজরী সনের সঙ্গে এই সনের পার্থক্য হলো হিজরী সন চন্দ্র ভিত্তিক এবং বাংলা সন সূর্যভিত্তিক। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সৌরদিন গণনা শুরু হয়। পৃথিবী সূর্যের চারদিকে একবার ঘুরে আসতে মোট ৩৬৫ দিন কয়েক ঘন্টা সময়ের প্রয়োজন হয়। এই সময়টাই এক সৌর বছর। গ্রেগরিয়ান সনের মতো বাংলা সনেও মোট ১২ মাস। এগুলো হল ‌ বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ়, শ্রাবণ, ভাদ্র, আশ্বিন, কার্তিক, অগ্রহায়ন, পৌষ, মাঘ, ফাল্গুনচৈত্র। আকাশে তারকা মণ্ডলীর সাপেক্ষে সূর্যের অবস্থানের ভিত্তিতে বাংলা সনের মাসের হিসাব হয়ে থাকে। যেমন যে সময় জুড়ে সূর্য বিশাখা তারা মন্ডলে থাকে সে মাসের নাম বৈশাখ।


বাংলা সন বা বঙ্গাব্দ সৌরপঞ্জিকা ভিত্তিক বর্ষপঞ্জি। বাংলাদেশ এবং পূর্ব ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসামত্রিপুরা অঞ্চলে এই বর্ষপঞ্জি ব্যবহৃত হয় । বাংলা সন শুরু হয় পহেলা বৈশাখ বা বৈশাখ মাসের প্রথম দিনে যে দিনটি ইংরেজী বর্ষপঞ্জির ১৫ এপ্রিল (ভারতে) অথবা ১৪ এপ্রিল এ (বাংলাদেশে) ।

বর্তমানে বাংলা সন হলো ১৪১৫ । বাংলা সন সব সময়ই গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জির চেয়ে ৫৯৩ বছর কম ।

ইতিহাস

মধ্যযুগে বাংলা সনের প্রচলনের আগে কৃষি ও ভুমি কর বা খাজনা আদায় হতো ইসলামিক হিজরী বর্ষপঞ্জি অনুসারে । হিজরী বর্ষপঞ্জি চান্দ্রমাস নির্ভর বলে সব সময় কৃষি কর্মকান্ড অর্থ বর্ষের সাথে মিলতো না । তাতে কৃষিজীবিদের ফসলহীন ঋতুতে কর বা খাজনা দেবার জন্য বাধ্য করা হতো । এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য মহান মুগল সম্রাট আকবর (শাসনকাল ১৫৫৬ খৃষ্টাব্দ হতে ১৬০৫ খৃষ্টাব্দ) বর্ষপঞ্জি সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহন করেন । প্রথিতযশা বুদ্ধিজীবি ও রাজকীয় জ্যের্তিবিদ আমীর ফতেউল্লাহ সিরাজী চান্দ্রমাস নির্ভর হিজরী বর্ষপঞ্জি এবং সৌরমাস নির্ভর হিন্দু বর্ষপঞ্জি গবেষণা করে একটি নতুন বর্ষপঞ্জি প্রস্তাব করেন । এর ফলেই সূচনা হলো বাংলা বর্ষপঞ্জির বা বাংলা সনের । বাংলা সনের সূচনা হয় ফসল তোলার সময়ে যখন কৃষকরা অর্থনৈতিকভাবে বছরের অন্য সময়ের চাইতে সচ্ছল থাকে । নতুন বর্ষপঞ্জি প্রথম দিকে ফসলী সন হিসেবে পরিচিত ছিল ।

ফসলী সনের প্রবর্তন হয়েছিল ১০ মার্চ / ১১ মার্চ ১৫৮৪ খৃষ্টাব্দে । কিন্তু তারিখ গণনা গুরু করা হয় সম্রাট আকবরের সিংহাসনে আরোহনের তারিখ হতে । নতুন চালুকৃত এই বর্ষপঞ্জি পরবর্তীতে বঙ্গাব্দ বা বাংলা সন হিসেবে পরিচিত হয় ।

মাস

বাংলা সনের বারো মাসের নামকরণ করা হযেছে নক্ষত্রমন্ডলে চন্দ্রের আবর্তনে বিশেষ তারার অবস্থানের উপর ভিত্তি করে । ধারণা করা হয য়ে এ নাম সমূহ এসেছে শকাব্দ হতে । শকাব্দ হচ্ছে এ অঞ্চলের ব্যবহৃত অন্য একটি সন গণনা পদ্ধতি যা শক সাম্রাজ্যের সময় হতে শুরু হযেছিল । বাংলা সনে আত্মীকৃত এ নামগুলো হচ্ছে - • বৈশাখ - বিশাখা তারার নাম অনুসারে • জ্যৈষ্ঠ - জ্যেষ্ঠ তারার নাম অনুসারে • আষাঢ় - অষাঢ়া তারার নাম অনুসারে • শ্রাবণ - শ্রাবণ তারার নাম অনুসারে • ভাদ্র - ভাদ্রপদা তারার নাম অনুসারে • আশ্বিন - অশ্বিনী তারার নাম অনুসারে • কার্তিক - কৃত্তিকা তারার নাম অনুসারে • অগ্রহায়ন - অগ্রাইহন তারার নাম অনুসারে • পৌষ - পুশ্য তারার নাম অনুসারে • মাঘ - মঘা তারার নাম অনুসারে • ফাল্গুন - ফাল্গুনী তারার নাম অনুসারে • চৈত্র - চিত্রা তারার নাম অনুসারে বর্তমানে ব্যবহৃত বাংলা মাসের এ নামগুলো শুরুতে এরকম ছিল না । নাসগুলো পরিচিত ছিল পারস্যের সন অনুসারে, যেমন: ফারওয়াদিন, আর্দি, ভিহিসু, খোরদাদ, তির, আমারদাদ, শাহরিযার, আবান, আযুর, দাই, বহম এবং ইসক্নদার মিজ।

দিন

বাংলা সন অন্যান্য সনের মতোই সাত দিনকে গ্রহন করেছে এবং এ দিনের নামগুলো অন্যান্য সনের মতোই তারকামন্ডলীর উপর ভিত্তি করেই করা হয়েছে। • সোমবার হচ্ছে সোম বা চন্দ্র দেবতার নাম অনুসারে • মঙ্গলবার হচ্ছে মঙ্গল দেবতার নাম অনুসারে • বুধবার হচ্ছে বুধ দেবতার নাম অনুসারে • বৃহস্পতিবার হচ্ছে বৃহস্পতি দেবতার নাম অনুসারে • শুক্রবার হচ্ছে [[শুক্র দেবতার নাম অনুসারে • শনিবার হচ্ছে শনি দেবতার নাম অনুসারে • রবিবার হচ্ছে রবি বা সূর্য দেবতার নাম অনুসারে বাংলা সনে দিনের শুরু ও শেষ হয় সূর্যোদয়ে । ইংরেজী বা গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জির শুরু হয় যেমন মধ্যরাত হতে ।

সংশোধিত বাংলা সন

বাংলা একাডেমী কর্তৃক বাংলা সন সংশোধন উদ্যোগ নেয়া হয় ১৭ ফেব্রুয়ারী ১৯৬৬ সালে । ডঃ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ’র নেতৃত্বে এ কমিটি বিভিন্ন বাংলা মাস ও ঋতুতে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর আর্থ সাংস্কৃতিক জীবনে কিছু সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতাকে নির্ণয় করে সেগুলো হতে উত্তরণের প্রস্তাববালী প্রদান করেন । বাংলা সনের ব্যাপ্তি গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জির মতোই ৩৬৫ দিনের । যদিও সেখানে পৃথিবীর সূর্যকে প্রদক্ষিণের পরিপূর্ণ সময়কেই যথাযথভাবে নেয়া হয়েছে । এ প্রদক্ষিণের মোট সময় ৩৬৫ দিন ৫ ঘন্টা ৪৮ মিনিট এবং ৪৭ সেকেন্ড । এই ব্যবধান ঘোচাতে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে প্রতি চার বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে একটি অতিরিক্ত দিন যোগ করা হয় । ব্যতিক্রম হচ্ছে সে শতাব্দীতে যে শতাব্দীকে ৪০০ দিয়ে ভাগ করা যায় না বা বিভাজ্য । জ্যোর্তিবিজ্ঞান নির্ভর হলেও বাংলা সনে এই অতিরিক্ত দিনকে আত্মীকরণ করা হয়নি । বাংলা মাস অন্যান্য সনের মাসের মতোই বিভিন্ন পরিসরের । এই সমস্যাগুলোকে দূর করবার জন্য ডঃ মুহম্মদ শহীদূল্লাহ কমিটি বাংলা একাডেমীর কাছে কতকগুলো প্রস্তাব করে । এগুলো হচ্ছে ঃ- • বছরের প্রথম পাঁচ মাস বৈশাখ হতে ভাদ্র হবে ৩১ দিনের • বাকী মাসগুলো অর্থাৎ আশ্বিন হতে চৈত্র হবে প্রতিটি ৩০ দিনের মাস • প্রতি চতুর্থ বছরের ফাল্গুন মাসে একটি দিন যোগ করে তা হবে ৩১ দিনের

বাংলা একাডেমী সরকারীভাবে এই সংশোধিত বাংলা মাসের হিসাব গ্রহণ করে । যদিও ভারতের পশ্চিম বাংলায় পুরোনো বাংলা সনের প্রচলনই থেকে গেছে ।

বাংলা সনের সংস্কারকৃত ও পূর্বতন সংস্করণ

পহেলা বৈশাখ, বাংলা বর্ষপঞ্জির প্রথম দিন । বাংলাদেশে বাংলা একাডেমী কর্তৃক সংশোধিত বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুসারে এদিন উদযাপন করা হয় প্রতি বছরের এপ্রিল ১৪ তারিখে । যদিও পশ্চিম বঙ্গে তা উদযাপন করা হয় পূর্বতন বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুসারে । এটা পাশ্চ্যাতের বর্ষপঞ্জির মতো নির্দিষ্ট নয় । ভারতের বাঙালীরা নতুন বছর উদযাপন করে এপ্রিল ১৫ তারিখে ।

ভারতের পশ্চিম বঙ্গে বাঙালীরা সিডেরিয়েল ( পৃথিবীর কক্ষপথ ভ্রমণের সময়ের পরিমাপ; জ্যোর্তিমন্ডলে তারার অবস্থান অর্থাৎ সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে পৃথিবীর যে সময় লাগে সেটাই সিডেরিয়েল সৌরপঞ্জি । এক্ষেত্রে সিডেরিয়েল অর্থ হচ্ছে ৩৬৫.২৫৬৩৬০২ সৌর দিবস যা ক্রান্তীয় বর্ষপঞ্জি হতে ২০ মিনিট ২৪ সেকেন্ড দীর্ঘ । ) সৌরপঞ্জি নির্ভর বর্ষপঞ্জি ব্যবহার করে থাকে । এই বর্ষপঞ্জি ক্রান্তীয় সৌরবঞ্জি যেমন সংস্কারকৃত বাংলা সন এবং গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি হতে আলাদা । এই উভয় ধরণের বর্ষপঞ্জির মধ্যে সময়ের যে গাণিতিক পার্থক্য রয়েছে তার কারণেই বাংলাদেশ ও পশ্চিম বঙ্গের নতুন বর্ষ শুরুতে দিনের পার্থক্য হয় । এই সময়ের পার্থক্যের কারণে সেডেরিয়াল সৌর বর্ষপঞ্জিতে মাসের দৈর্ঘে পার্থক্য রয়েছে ।

অধিবর্ষ (লীপ ইয়ার)

সংস্কারকৃত বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুসারে ফাল্গুন (যা ফেব্রুয়ারীর মাঝামাঝি শুরু হয়) মাস প্রতি চতুর্থ বর্ষে ৩১ দিনের হয় । মিল রাখবার উদ্দেশ্যে গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জির সাথে সাথেই বাংলা লীপ ইয়ার হয় । উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে, ফাল্গুন ১৪১০ ছিল বাংলা অধিবর্ষের (লীপ ইয়ার) মাস যা পড়েছে গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জির অধিবর্ষ ২০০৪ এর ফেব্রুয়ারী মাসে । ভারতের পশ্চিম বঙ্গ সৌরপঞ্জি নির্ভর সিডেরিয়েল বর্ষপঞ্জি ব্যবহার করে থাকে । এই বর্ষপঞ্জির মাসগুলো নির্ধারিত হয় সূর্যের প্রকৃত আবর্তনকে ভিত্তি করে । এই বর্ষপঞ্জিতে বর্ষ সংখ্যা হতে সাত বিয়োজন করে তা ৩৯ দিয়ে ভাগ করতে হয় । যদি ভাগশেষ শূন্য হয় বা ৪ দিয়ে বিভাজ্য হয় তাহলে সে বর্ষটিকে অধিবর্ষ হিসেবে গ্রহণ করা হয় এবং ৩৬৬ দিনের এই বর্ষের চৈত্র মাস ৩১ দিনের হয় । প্রতি ৩৭ বছরে ১০ টি অধিবর্ষ হয় ।

ব্যবহার

দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ঋতু বৈচিত্রকে ধারন করবার কারণে বাংলা সনের জনপ্রিয়তা এসেছে । দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পূর্বাঞ্চলের জলবায়ুকে ষঢ়ঋতুতে ভাগ করা হয়েছে । এগুলো হচ্ছে বসন্ত, গ্রীষ্ম, হেমন্ত এবং শীত ঋতুর সাথে [[বর্ষা ও শরৎ ঋতু । বাংলা সনের মাসগুলোর উপর ভিত্তি করেই এই ঋতু বিভাজন করা হয়েছে । বাঙালী সংস্কুতিতে বাংলা সনের ব্যবহার এখন আর পূর্বের পর্যায়ে নেই । নাগরিক জীবন যাপনের পরিধি বৃদ্ধি পাওয়ায় এর ব্যবহার এখন কেবল কৃষিজীবীদের মধ্যেই সীমাবব্ধ হয়ে পড়েছে । কৃষিজীবীরা এখনো বীজতলা তৈরী, বীজ বপন, ফসলের যত্ন, ফসল তোলা ইত্যাদি যাবতীয় কাজে বাংলা মাসের ব্যাপক ব্যবহার করেন । ব্যবসায় ব্যবস্থায় পূর্বের সেই বাংলা সন ভিত্তিক হিসাব ব্যবস্থা এখন গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি নির্ভর হয়ে পড়েছে । যার ফলে ব্যবসায়ের হিসাবের খাতা এখন রাষ্ট্রের আইনে যাকে সহজভাবে গ্রহণ করে সে পদ্ধতিতে রাখা হয় । ষাট বা সত্তুর দশকেও যে হালখাতা দেখা যেতো উৎসবের মতো করে, তা দিনে দিনে ফিকে হতে হতে প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে । ধর্মীয় ক্ষেত্রে বাংলায় (বাংলাদেশ ও পশ্চিম বঙ্গ) পূজা এখনো বাংলা বর্ষপঞ্জি নির্ভর । সামজিক ব্যবস্থায় মানুষের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানগুলো, যেমন [[বিয়ে, গৃহপ্রবেশ, অন্নপ্রাশন, সাধভক্ষণ, জামাই ষষ্ঠী, ভাই ফোঁটা ইত্যাদি অনুষ্ঠানের দিন নির্বাচনে বাংলা মাসের দিনকেই গুরুত্ব দেয় । উৎসব পার্বন যেমন পৌষ সংক্রান্তি, চৈত্র সংক্রান্তি এগুলোও বাংলা মাস নির্ভর । শহুরে মানুষরা বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে সাম্প্রতিক কালে পহেলা বৈশাখকে একটি সার্বজনীন ধর্মনিরপেক্ষ উৎসবের রূপ দিতে সচেষ্ট এবং অনেকখানি সফলও বলা যায় । পারস্যের নওরোজের মতো বাংলা নববর্ষও সার্বজনীন উৎসবের মর্যাদায় এগিয়ে যাচ্ছে ।

সহযোগী বর্ষপঞ্জী

বাংলা সন ওতপ্রোতভাবে হিন্দু সৌর পঞ্জিকার সাথে সম্পর্কিত যেটা আবার সূর্য সিদ্ধান্তের উপর নির্ভরশীল । হিন্দু সৌর পঞ্জিও শুরু হয় মধ্য এপ্রিলে । বাংলাদেশ এবং পশ্চিম বঙ্গের বাইরে আসাম, কেরালা,মনিপুর, নেপাল, উড়িষ্যা, পাঞ্জাব, তামিলনাড়ু এবং ত্রিপুরায় এই বর্ষপঞ্জির প্রথম দিনকেই নতুন বর্ষের শুরু হিসেবে উদযাপন করা হয় । নববর্ষ আবার “মেসা সংক্রান্তি” হিসেবেও পরিচিত ।

তথ্য সূত্র

ইংরেজী উইকিপিডিয়া