জগন্নাথপুর উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

স্থানাঙ্ক: ২৪°৪৬′ উত্তর ৯১°৩৩′ পূর্ব / ২৪.৭৬৭° উত্তর ৯১.৫৫০° পূর্ব / 24.767; 91.550
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
146.241.160.235-এর সম্পাদিত সংস্করণ হতে Mdyusufmiah-এর সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণে ফেরত
ট্যাগ: পুনর্বহাল মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
Sagortimes (আলোচনা | অবদান)
→‎শিক্ষা: বিষয়বস্তু যোগ
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
৭২ নং লাইন: ৭২ নং লাইন:


== শিক্ষা ==
== শিক্ষা ==
জগন্নাথপুর উপজেলায় সর্বপ্রথম [[উচ্চ বিদ্যালয়]] প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে নাম ''[[ব্রজনাথ উচ্চ বিদ্যালয় পাইল গাও]]''। এই উপজেলায় ১২০টি [[সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়]]সহ ২১টি উচ্চ বিদ্যালয় রয়েছে। কলেজসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: [[জগন্নাথপুর কলেজ]], [[সৈয়দপুর আদর্শ কলেজ]], [[রাণিগঞ্জ কলেজ]], [[শাহ জালাল|শাহ জালাল (রহ.) কলেজ]], আট পাড়া, [[জগন্নাথপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয়]] ও আরো অনেক। উপজেলার কওমী [[মাদ্রাসা]] ২০টি, সরকারি স্বীকৃতপ্রাপ্ত মাদ্রাসার সংখ্যা ১১টি। তন্মধ্যে "হবিবপুর ও কেশবপুর ফাযিল মাদ্রাসা"র নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য । ২টি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ও আছে। পাইল গাওর জমিদার সুখময় চৌধুরী এলাকায় শিক্ষা উন্নয়নের জন্য তাহার পিতামহের নামে [[ব্রজন্নাথ উচ্চ বিদ্যালয়]] প্রতিষ্ঠিত করেন, দেশ বিভাগের পর স্কুল পরিচালনার দায়িত্ব [[আশার কান্দি|আশার কান্দি ইউনিয়নে]]র সর্ব প্রথম চেয়ারম্যান মরহুম জনাব সহুল উদ্দিন আহমেদ প্রকাশিত ছইল মিয়ার কাছে দিয়ে দেশ ত্যাগ করেন।
জগন্নাথপুর উপজেলায় সর্বপ্রথম [[উচ্চ বিদ্যালয়]] প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে নাম ''[[ব্রজনাথ উচ্চ বিদ্যালয় পাইল গাও]]''। এই উপজেলায় ১২০টি [[সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়]]সহ ২১টি উচ্চ বিদ্যালয় রয়েছে। কলেজসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: [[স্বরুপচন্দ্র সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ]] [[জগন্নাথপুর কলেজ]], [[সৈয়দপুর আদর্শ কলেজ]], [[রাণিগঞ্জ কলেজ]], [[শাহ জালাল|শাহ জালাল (রহ.) কলেজ]], আট পাড়া, [[জগন্নাথপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয়]] ও আরো অনেক। উপজেলার কওমী [[মাদ্রাসা]] ২০টি, সরকারি স্বীকৃতপ্রাপ্ত মাদ্রাসার সংখ্যা ১১টি। তন্মধ্যে "হবিবপুর ও কেশবপুর ফাযিল মাদ্রাসা"র নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য । ২টি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ও আছে। পাইল গাওর জমিদার সুখময় চৌধুরী এলাকায় শিক্ষা উন্নয়নের জন্য তাহার পিতামহের নামে [[ব্রজন্নাথ উচ্চ বিদ্যালয়]] প্রতিষ্ঠিত করেন, দেশ বিভাগের পর স্কুল পরিচালনার দায়িত্ব [[আশার কান্দি|আশার কান্দি ইউনিয়নে]]র সর্ব প্রথম চেয়ারম্যান মরহুম জনাব সহুল উদ্দিন আহমেদ প্রকাশিত ছইল মিয়ার কাছে দিয়ে দেশ ত্যাগ করেন।


== অর্থনীতি ==
== অর্থনীতি ==

১০:১৭, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

জগন্নাথপুর
উপজেলা
জগন্নাথপুরের হ্রদ
জগন্নাথপুরের হ্রদ
স্থানাঙ্ক: ২৪°৪৬′ উত্তর ৯১°৩৩′ পূর্ব / ২৪.৭৬৭° উত্তর ৯১.৫৫০° পূর্ব / 24.767; 91.550 উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশবাংলাদেশ
বিভাগসিলেট বিভাগ
জেলাসুনামগঞ্জ জেলা
আয়তন
 • মোট৩৬৮.২৭ বর্গকিমি (১৪২.১৯ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)[১]
 • মোট২,৫৯,৪৯০
 • জনঘনত্ব৭০০/বর্গকিমি (১,৮০০/বর্গমাইল)
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৬০ ৯০ ৪৭
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

জগন্নাথপুর উপজেলা (ইংরেজি: Jagannathpur Upazila), বাংলাদেশের সুনামগঞ্জ জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা। ১৯৮৩ সালের ২৯শে সেপ্টম্বর জগন্নাথপুর থানাকে উপজেলায় উত্তীর্ণ করা হয়।

অবস্থান

৩৫৫.৯১ কিলোমিটার জায়গা নিয়ে অবস্থিত, এই উপজেলার পূর্বে সিলেট জেলার বালাগঞ্জ উপজেলাবিশ্বনাথ উপজেলা, উত্তরে ছাতক উপজেলাদক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা, পশ্চিমে দিরাই উপজেলা এবং দক্ষিণে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলা

প্রশাসনিক এলাকা

  • জগন্নাথপুর ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ নিয়ে বাংলাদেশ জাতিয় সংসদের ২২৬ নম্বার সুনামগঞ্জ-৩ সংসদিয় আসন।
  • জগন্নাথপুর সদর পৌরসভা

এছাড়া, উপজেলা কার্যনির্বাহী অফিস সহ রয়েছে বিভিন্ন সরকারী অদিদপ্তর এবং ৮ ইউনিয়ন পরিষদ ।

জগন্নাথপুর উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ

  • কলকলিয়া ইউনিয়ন
  • পাটলী ইউনিয়ন
  • মীরপুর ইউনিয়ন
  • হলদিপুর ইউনিয়ন
  • রানীগঞ্জ ইউনিয়ন
  • সৈয়দপুর-শাহারপাড়া ইউনিয়ন
  • আশারকান্দি ইউনিয়ন
  • পাইল গাও ইউনিয়ন

মুক্তিযুদ্ধে জগন্নাথপুর

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ১৯৭১ সালের ৩১ আগস্ট জগন্নাথপুর উপজেলায় শান্তি সভার নামে রাজাকাররা শ্রীরামসী হাইস্কুলে স্থানীয় শিক্ষক, কর্মচারী, ইউপি সদস্যসহ গণ্যমান্য ও সাধারণ লোকজনের একটি সমাবেশের আয়োজন করে। রাজাকারদের সহযোগিতায় পাকসেনারা উক্ত সভার ১২৬ জন লোককে হত্যা করে এবং গ্রামটি জ্বালিয়ে দেয়। এছাড়া ৮ সেপ্টেম্বর পাকসেনারা এ উপজেলার রাণীগঞ্জ বাজারে ৩০ জন লোককে হত্যা করে এবং ১৫০ টি দোকান জ্বালিয়ে দেয়।[২]

ইতিহাস

১১৯১ খ্রিস্টাব্দে রাজা বিজয় মাণিক্য লাউড় রাজ্যর অধিপতি ছিলেন, রাজা বিজয় মাণিক্য তত্কালে জগন্নাথ মিশ্রকে দিয়ে বাসুদেব মন্দির প্রতিষ্ঠা করান। পরে এই স্থানকে জগন্নাথ মিশ্রের নামানুসারে "জগন্নাথপুর" বলে ঘোষণা করেন। আর সেই থেকে জগন্নাথপুর, রাজা বিজয় মাণিক্যের রাজ্য বলে ঘোষিত। জগন্নাথপুরের পান্ডুয়া থেকে রাজা বিজয় মাণিক্য সেই সময় নিজ নামের সাথে দুই স্ত্রীর নাম সংযুক্ত করে ১১৯১ খ্রিস্টাব্দে সিক্কা মুদ্রা প্রকাশ করেছিলেন। এই সিক্কা মুদ্রাই রাজা বিজয় মাণিক্যের রাজ্যের প্রমাণ, যা কুবাজপুর গ্রামের মদনমোহন চৌধুরীর পরিবারদের কাছে সংরক্ষিত আছে । [৩] জগন্নাথপুর এককালে বর্তমান ভৌগোলিক সীমানার চেয়ে আরো বড় ছিল। সেই দ্বাদশ শতাব্দি থেকে অষ্টাদশ শতাব্দি পর্যন্ত জগন্নাথপুর রাজ্য লাউড়ের শাখা-রাজ্য ছিল, এবং বংশানুক্রমে লাউড়ের নৃপতিগণ কর্তৃক শাসিত । দিল্লী সম্রাটদের রেকর্ডে জগন্নাথপুর রাজ্য লাউড়ের এজমালি সম্পদ হিসেবে বিবেচিত এবং শ্রীহট্রের ইতিহাসে বর্ণিত যে, উক্ত লাউড় রাজ্য সর্ব সময় মোগল সম্রাটদের কাছে স্বাধীন রাজ্য হিসেবে গণ্য ছিল। তাই এই জগন্নাথপুর রাজ্যের ইতিহাস আলোচনা করতে গেলে প্রাচীন লাউড় রাজ্যের কথায় যেতে হয়। কারণ এর পত্তনস্থলই হচ্ছে প্রাচীন লাউড়। প্রাচীন লাউড়ের পত্তন সম্পর্ক মূলত প্রাচীন কামরূপ ।[৪] বৌদ্ধপরিব্রাজক হিউয়েঙ সাঙ (৬০২-৬৬৪) কামরুপ রাজার আমন্ত্রনে (৬৪০ খ্রিস্টাব্দে) এদেশে ভ্রমণে এলে, সিলহেটকে কামরুপের অংশ বলে উল্লেখ করেছেন। উল্লেখ্য, বিভিন্ন বৌদ্ধগ্রন্থাদিতেও সিলেটকে সমুদ্র নিকটবর্তী বলা হয়েছে। এছাড়া নিধনপুরে প্রাপ্ত তাম্রলিপিগুলোও তার প্রকৃষ্ট প্রমাণ ।[৫]

খ্রিস্টপূর্ব ত্রিশ শতাব্দিতে ভগদত্ত নামের জনৈক নৃপতি কামরূপে রাজত্ব করেছেন। তাঁর রাজ্য বিবরণে বলা হ্য় যে, তত্কালে লাউড়ের পাহাড়ে ভগদত্ত রাজার একটি শাখা-রাজধানী ছিল। তিনি যখনই এদেশে আসতেন সেখানেই অবস্থান করতেন এবং লাউড় থেকে দিনারপুর পর্যন্ত নৌকাযোগে ভ্রমণ করতেন। উপরে উল্লেখিত ঐতিহাসিক আলোচনায় প্রমাণ হ্য় যে, প্রাচীন শ্রীহট্র (বর্তমান সিলেটের) নিম্নাঞ্চল তখনকার যুগে গভীর পানির নিচে নিমজ্জিত ছিল। উল্লেখ্য, 'মহাভারত গ্রন্থের সভাপর্বে লিখিত: ভিম পন্ডু বঙ্গাদেশ জয় করিয়া তাম্রলিপ্ত এবং সাগরকুলবাসী স্লেচ্ছদিগকে জয় করেন। এই তথ্যের ভিত্তিতে ভূতত্ত্ব বিষয়ের পন্ডিত বঙ্কিমচন্দ্র বঙ্গে প্রবেশাধিকার গ্রন্থে মহাভারতে উল্লেখিত বঙ্গ উত্তর-পূর্ব বঙ্গ দেশ অর্থে প্রাচীন লাউড় অঞ্চল বলেছেন। সুতরাং উল্লেখিত লাউড় তথা শ্রীহট্টই নয় বঙ্গ হতেও প্রাচীন। পুরাতাত্ত্বিক রমেশচন্দ্র দত্তের মতে, ব্রহ্মপুত্রের পরবর্তি কামরুপ রাজ্যের বিস্তৃতি প্রায় ২,০০০ মাইল। আসাম, মণিপুর, ময়মনসিংহ, শ্রীহট্ট, কাছার প্রভৃতি নিয়ে কামরূপ বিস্তৃত ছিল ।[৬] সুতরাং এদিক দিয়ে বিবেচনায় প্রতিপাদ হয় যে, নৃপতি ভগদত্তের লাউড় রাজ্য মহাভারতকালের চেয়েও প্রাচীন। মহাকাব্য মহাভারতে প্রমাণ মিলে যে, রাজা ভগদত্ত কুরুক্ষেত্রের সমরে মহাবীর অর্জুন কর্তৃক নিহত হন। ভগদত্ত রাজার পরে তার পুত্রগণের মধ্যে ১৯ জন নৃপতি পর্যায়ক্রমে কামরূপ তথা লাউড়ে রাজত্ব করেন। ভাটেরায় প্রাপ্ত তাম্রফলকে বর্মান, ইশানদেব তাদেরই বংশধর বলে ব্রেতাগণ উল্লেখ করেছেন। এই রাজাগণ চন্দ্রবংশীয় বলে খ্যাত । উক্ত ১৯ জন নৃপতির অনেকদিন পরে প্রাচীন লাউড় রাজ্যে নৃপতি বিজয়মাণিক্য আবির্ভুত হন। ১১৯১ খ্রিস্টাব্দ সময়কালে বিজয় মাণিক্য জগন্নাথপুর রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন এবং ছিক্কা মুদ্রার প্রচার করেন ।

অন্যদিকে ১৩০৩ খ্রিস্টাব্দে য়ামনদেশীয় তাপস হজ়রত্ শাহ জালাল মুজাররদ আল য়ামানী (রঃ)|শাহ জালাল মুজারর্দ আল য়ামানী (রঃ)]] তিনশত ষাটজন সঙ্গিঅনুসারী নিয়ে প্রাচীন শ্রীহট্রের গৌড় জয় করেন । শাহ জালাল (রঃ) এর সঙ্গীঅনুসারিগণ ইসলামের পবিত্র বাণী নিয়ে শ্রীহট্রসহ বঙ্গদেশে ছড়িয়ে পড়েন । তারই ধারাবাহিকতায় হযরত শাহ জালাল (রঃ) এর সঙ্গীঅনুসারিগণদের মধ্য হতে পর্যাক্রমে হজ়রত্ শাহ কালাম উদ্দিন কো়হাফাহ্ এর নেত্রীত্বে ১২ জন আউলিয়া জগন্নাথপুর রাজ্যে এসেছেন।[৭] পর্যাক্রমে আগত আউলিয়াগণের নাম ও বর্তমানে অবস্থিত মাজা়র:- হজ়রত্ শাহ কালাম ক়োহাফাহ্ - শাহারপাড়া গ্রাম, সৈয়দ শামস উদ্দীন - সৈয়দপুর গ্রাম, শাহ কালু - পিরেরগাঁও, শাহ চান্দ - চান্দভরাং, দাওর বখশ খতিব ও দিলাওর বখ্শ খতিব - দাওরশাহী বা দাওরাই গ্রাম, শাহ ফৈজ উদ্দিন বা ফেছন উদ্দীন - ফৈজী় বা ফেছি গ্রাম, সৈয়দ শামস উদ্দীন বিহারি - আটঘর গ্রাম, শাহ মাণিক - মনিহারা গ্রাম, শাহ জলাল উদ্দিন - কুসিপুর বা কুস্কীপুর গ্রাম, সৈয়দ বাহা উদ্দিন - মুকান বাজার, সৈয়দ রুকনুদ্দিন - কদমহাটী, সৈয়দ তাজ উদ্দিন - অরম্পুর, সৈয়দ জিয়া উদ্দিন - মুকান বাজার। উল্লেখ যে, মিরপুরে অবস্থান রত শাহ চান্দ পরবর্তিতে চান্দ ভরাং গ্রামে ছলে যান এবং সেখানেই বর্তমানে তাঁর মাজা়র অবস্থিত [৮]

উল্লেখিত বিজয় মাণিক্য অনেক কাল পরে লাউড় ও জগন্নাথপুর রাজ্যে দিব্য সিংহ নামে নৃপতি রাজত্ব করেন । তখন লাউড়ের রাজধানী নবগ্রামে স্থানান্তর হ্য়। যে নবগ্রাম বৈষ্ণবী ধর্মাবতার অদ্বৈত্য'র জন্মস্থান বলে আখ্যায়িত। রাজা দিব্য সিংহ রাজ্যভার তাঁর পুত্র রমানাথকে দিয়ে, শান্তি সাধনায় তিনি তাঁর মন্ত্রীতনয় অদ্বৈত্যের আখড়া শান্তিপুরে চলে যান। সেখানে থেকে অদ্বৈত্যের উপদেশে বৈষ্ণবীধর্ম গ্রহণ করেন এবং অদ্বৈত্য বাল্যলিলা গ্রন্থ রচনা করে কৃষ্ণদাস নামে খ্যাত হন। রাজা দিব্য সিংহের পুত্র রামানাথ সিংহের তিন পুত্র হয়। এই তিন পুত্রের মধ্যে একজন কাশীবাসি হন এবং এক পুত্রকে লাউড়ের রাজ সিংহাসনে বসিয়ে; রামানাথ সিংহ তাঁর অন্য পুত্র কেশবের সাথে জগন্নাথপুরে আসেন। প্রায় পঞ্চদশ শতাব্দির কালে রামানাথের পুত্র কেশব সিংহ তথায় রাজা হন। উল্লেখ্য যে, এসময়ে আজমিরীগঞ্জ এলাকায় বানিয়াচঙ্গে অন্য একটি নবরাজ্যের আর্বিভাব ঘটে। এই নব্য আবিষ্কৃত রাজ্যের রাজার নামও কেশব ছিল। অচুত্যচরণ চৌধুরী লিখেছেন যে, "নব্য আবিস্কৃত বানিয়াচং রাজ্যের রাজার নাম এবং জগন্নাথপুর রাজ্যের রাজার নাম এক থাকায়, অনেক লেখক ভ্রমে পতিত হয়ে জগন্নাথপুর ও বানিয়াচঙ্গের রাজ পরিবারকে এক বংশের বলে যেভাবে আখ্যায়িত করেন, আসলে এরা এক নন। বানিয়াচং রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা কেশব একজন বণিক ছিলেন। তিনি বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে এদেশে এসেছিলেন এবং কালী নামের দেবির পূজা নির্বাহের লক্ষ্যে দৈব্যে শ্রুত শুষ্কভূমির সন্ধান প্রাপ্ত হয়ে সেখানে অবতরণ করে দেবি পুজা সমাধান করে দৈবাভিপ্রায় মতে সেখানেই বসতি স্থাপন করেন। এছাড়া জগন্নাথপুর রাজ্যের কেশব রাজার পুত্রের নাম শনি, তার পুত্র প্রজাপতি, প্রজাপতির পুত্র দুর্বার । অন্যদিকে বানিয়াচঙ্গের কেশব রাজার পুত্রের নাম দক্ষ, দক্ষের পুত্র নন্দন ইহার পুত্র গণপতি ও কল্যাণ। সুতরাং ইহাদের বংশিয় ধারায়ও ইহা প্রতিপাদিত হয় যে, জগন্নাথপুরের কেশব ও বানিয়াচঙ্গের রাজা কেশব দুই ব্যক্তি, ওরা এক নন।" [৯]

জনসংখ্যার উপাত্ত

বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় পরিচয়পত্র সম্পর্কিত রেকর্ড অনুযায়ী বর্তমান (২০১০) জনসংখ্যা ২,২৫,২৭১ জন।

শিক্ষা

জগন্নাথপুর উপজেলায় সর্বপ্রথম উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে নাম ব্রজনাথ উচ্চ বিদ্যালয় পাইল গাও। এই উপজেলায় ১২০টি সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়সহ ২১টি উচ্চ বিদ্যালয় রয়েছে। কলেজসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: স্বরুপচন্দ্র সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় জগন্নাথপুর কলেজ, সৈয়দপুর আদর্শ কলেজ, রাণিগঞ্জ কলেজ, শাহ জালাল (রহ.) কলেজ, আট পাড়া, জগন্নাথপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও আরো অনেক। উপজেলার কওমী মাদ্রাসা ২০টি, সরকারি স্বীকৃতপ্রাপ্ত মাদ্রাসার সংখ্যা ১১টি। তন্মধ্যে "হবিবপুর ও কেশবপুর ফাযিল মাদ্রাসা"র নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য । ২টি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ও আছে। পাইল গাওর জমিদার সুখময় চৌধুরী এলাকায় শিক্ষা উন্নয়নের জন্য তাহার পিতামহের নামে ব্রজন্নাথ উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত করেন, দেশ বিভাগের পর স্কুল পরিচালনার দায়িত্ব আশার কান্দি ইউনিয়নের সর্ব প্রথম চেয়ারম্যান মরহুম জনাব সহুল উদ্দিন আহমেদ প্রকাশিত ছইল মিয়ার কাছে দিয়ে দেশ ত্যাগ করেন।

অর্থনীতি

কৃষিপণ্যের মধ্যে ধান আর পাটের বিপুল আবাদ রয়েছে। এছাড়া আছে হাওর ভরা মাছ। পাশাপাশি উপজেলার প্রচুর লোক বহির্দেশে বসবাস করায় তাঁদের পাঠানো রেমিট্যান্সের উপরও এলাকার অর্থনীতি নির্ভরশীল। এছাড়া দরিদ্রদের জন্য সরকারি অবদানও রয়েছে।

যাতায়াত ও যোগাযোগ

উপজেলার উল্লেখযোগ্য সড়কগুলো হলো: সিলেট বিশ্বনাথ জগন্নাথপুর সড়ক, ভবের বাজার সৈয়দপুর, ন্য়াবন্দর গোয়ালা বাজার, শেরপুর, ঢাকা সড়ক, জগন্নাথপুর, কুবাজপুর, পাইলগাও কুশিয়ারা নদি, ইনায়েতগঞ্জ, হবিগঞ্জ। পাগলা, জগন্নাথপুর, রাণীগঞ্জ, আউশকান্দী বিশ্ব রোড। উপজেলার পাকা রাস্তা হচ্ছে, জগন্নাথপু-ভবের বাজার-মীরপুর-বিশ্বনাথ সড়ক। জগন্নাথপুর-শিবগঞ্জ বাজার সড়ক। জগন্নাথপুর-পাগলা সড়ক। ভবের বাজার-সৈয়দপুর-শাহারপাড়া-নয়াবন্দর-গোয়ালা বাজার সড়ক। নয়াবন্দর-দাওরাই বাজার- পাঠকুরা বাজার সড়ক। মীরপুর-রসুলগঞ্জ বাজার সড়ক। পাইলগাও হাই স্কুল-কাতিয়া-বড় ফেচী বাজার-বেগমপুর সড়ক। এছাড়া প্রস্তাবিত অনেক সড়ক আছে।

কৃতি ব্যক্তিত্ব

বিবিধ

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন, ২০১৪)। "এক নজরে জগন্নাথপুর"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই, ২০১৫  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ=, |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  2. বাংলা পেডিয়ায় জগন্নাথপুর উপজেলা[[১]]।
  3. শ্রীহট্রের ইতিবৃত্ত, অচ্যুতচরণ চৌধুরী; পৃষ্ঠা ৩৭৫।
  4. শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত, অচ্যুতচরণ চৌধুরী
  5. সিলেটের গীতিকা, সমাজ ও সংস্কৃতি, ডঃ আবুল ফতেহ ফাত্তাহ
  6. শ্রীহট্রের ইতিবৃত্ত পূর্বাংশ
  7. শ্রীহট্রের ইসলাম জ্যোতি মুফতি আজহার উদ্দিন আহমদ সিদ্দিকী
  8. ইসকন্দর গীতি, পীর শাহ মোহাম্মদ ইসকন্দর মিয়া
  9. [৭]শ্রীহট্রের ইতিবৃত্ত পূর্বাংশ, ৩৮৫-৩৮৬
৯ রাধারমণ গীতিমালা -নন্দলাল শর্মা ।প্রকাশকাল ২০০২

বহিঃসংযোগ