কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
RockyMasum (আলোচনা | অবদান) অ প্রুভইট দিয়ে তথ্যসূত্র সম্পাদনা, তথ্যসূত্র ট্যাগ: প্রুভইট সম্পাদনা |
Mdmunabbir (আলোচনা | অবদান) →পংক্তি: রেফারেন্স থেকে কপি করা হয়েছে। |
||
৪৬ নং লাইন: | ৪৬ নং লাইন: | ||
==পংক্তি== |
==পংক্তি== |
||
⚫ | |||
<poem>যারা আমার মাতৃভাষাকে নির্বাসন দিতে চেয়েছে |
|||
তাদের জন্য আমি ফাঁসি দাবি করছি। |
|||
যাদের আদেশে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে তাদের জন্য |
|||
ফাঁসি দাবী করছি। |
|||
ফাঁসি দাবী করছি যারা এই মৃতদেহের ওপর দিয়ে |
|||
ক্ষমতার আসনে আরোহণ করেছে |
|||
সেই বিশ্বাসঘাতকদের জন্যে। |
|||
আমি তাদের বিচার দেখতে চাই |
|||
খোলা ময়দানে সেই নির্দিষ্ট জায়গাতে |
|||
শাস্তিপ্রাপ্তদের গুলিবিদ্ধ অবস্থায় |
|||
আমার দেশের মানুষ দেখতে চায়। |
|||
রমনার ঊর্ধ্বমুখী কৃষ্ণচূড়ার তলায় |
|||
ওরা চল্লিশজন কিংবা আরও বেশি |
|||
যারা প্রাণ দিয়েছে ওখানে,রসনার রৌদ্রদগ্ধ কৃষ্ণচূড়ার গাছের তলায় |
|||
ভাষার জন্য, মাতৃভাষার জন্য, বাংলার জন্য |
|||
যারা প্রাণ দিয়েছে ওখানে |
|||
একটি দেশের মহান সংস্কৃতির মর্যাদার জন্য |
|||
আলাওলের ঐতিহ্য |
|||
কায়কোবাদ, রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের |
|||
সাহিত্য ও কবিতার জন্য |
|||
যারা প্রাণ দিয়েছে ওখানে |
|||
পলাশপুরের মকবুল আহমদের |
|||
পুঁথির জন্য, রমেশ শীলের গাঁথার জন্য |
|||
জসীমউদ্দীনের সোজন বাঁধিয়ার ঘাটের জন্য |
|||
⚫ | |||
ভাটিয়ালি বাউল কীর্তন গজল |
|||
নজরুলের ‘খাঁটি সোনার চেয়ে খাঁটি |
|||
আমার দেশের মাটি’। |
|||
যেখানে আগুনের ফুলকির মতো |
|||
হে আমার মৃত ভাইরা, |
|||
সেইদিন নিস্তব্ধতার মধ্য থেকে তোমাদের কণ্ঠস্বর |
|||
এখানে ওখানে জ্বলছে অসংখ্য রক্তের ছাপ |
|||
স্বাধীনতার বলিষ্ঠ চিৎকার |
|||
ভেসে আসবে |
|||
সেখানে আমি কাঁদতে আসিনি। |
|||
সেইদিন আমাদের দেশের জনতা |
|||
খুনি জালিমকে ফাঁসির কাষ্ঠে |
|||
আজ আমি শোকে বিহ্বল নই |
|||
ঝুলাবেই ঝুলাবে |
|||
তোমাদের আশা অগ্নিশিখার মতো জ্বলবে |
|||
আজ আমি ক্রোধে উন্মত্ত নই |
|||
⚫ | |||
আজ আমি প্রতিজ্ঞায় অবিচল। |
|||
যে শিশু আর কোনোদিন তার |
|||
পিতার কোলে ঝাঁপিয়ে পড়ার |
|||
সুযোগ পাবে না |
|||
যে গৃহবধূ আর কোনোদিন তার |
|||
স্বামীর প্রতীক্ষায় আঁচলে প্রদীপ |
|||
ঢেকে দুয়ারে আর দাঁড়িয়ে থাকবে না |
|||
যে জননী খোকা এসেছে ব’লে |
|||
উদ্দাম আনন্দে সন্তানকে আর |
|||
বুকে জড়িয়ে ধরতে পারবে না |
|||
যে তরুণ মাটির কোলে লুটিয়ে |
|||
পড়ার আগে বার বার একটি |
|||
প্রিয়তমার ছবি চোখে আনতে |
|||
চেষ্টা করেছিলো |
|||
সে অসংখ্য ভাইবোনদের নামে |
|||
আমার হাজার বছরের ঐতিহ্যে লালিত |
|||
যে ভাষায় আমি মাকে সম্বোধনে অভ্যস্ত |
|||
সেই ভাষা ও স্বদেশের নামে |
|||
এখানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে |
|||
আমি তাদের ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি |
|||
যারা আমার অসংখ্য ভাইবোনকে |
|||
নির্বিচারে হত্যা করেছে। |
|||
⚫ | |||
==তথ্যসূত্র== |
==তথ্যসূত্র== |
১৭:৪০, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
মাহবুব উল আলম চৌধুরী কর্তৃক রচিত | |
লিখেছেন | ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি |
---|---|
প্রথম প্রকাশিত | কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
বিষয় | ভাষা আন্দোলন |
গঠন | দেশাত্মবোধ |
প্রকাশক | কামালউদ্দিন খান |
প্রকাশনার তারিখ | ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ |
মিডিয়া ধরন | মুদ্রিত |
পৃষ্ঠা | ১৭ |
কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি কবিতাটি ভাষা আন্দোলন নিয়ে লিখিত প্রথম কবিতা। এই জন্য কবিতাটিকে একুশের প্রথম কবিতাও বলা হয়। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি কবিতাটি রচনা করেন ভাষাসৈনিক মাহবুব উল আলম চৌধুরী।
রচনার ইতিহাস
১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় গুলিবর্ষণ ও হত্যাকান্ডের সময় মাহবুব উল আলম চট্রগ্রাম জেলা রাষ্ট্রভাষা-সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন। ২১শে ফেব্রুয়ারির ঠিক আগে আগেই তিনি আকস্মিকভাবে জলবসন্ত রোগে আক্রান্ত হন। ঢাকার ছাত্রহত্যার খবর পেয়ে সেই রাতেই রোগশয্যায় শুয়ে তিনি এই দীর্ঘ কবিতাটি রচনা করেন। রাতেই সেটি মুদ্রিত হয় এবং পরের দিন প্রচারিত হয়। এছাড়া সে দিনই চট্রগ্রামের প্রতিবাদ সভায় পঠিত হয়েছিল।[১]
পংক্তি
এখানে যারা প্রাণ দিয়েছে
রমনার ঊর্ধ্বমুখী কৃষ্ণচূড়ার তলায়
যেখানে আগুনের ফুলকির মতো
এখানে ওখানে জ্বলছে অসংখ্য রক্তের ছাপ
সেখানে আমি কাঁদতে আসিনি।
আজ আমি শোকে বিহ্বল নই
আজ আমি ক্রোধে উন্মত্ত নই
আজ আমি প্রতিজ্ঞায় অবিচল।
যে শিশু আর কোনোদিন তার
পিতার কোলে ঝাঁপিয়ে পড়ার
সুযোগ পাবে না
যে গৃহবধূ আর কোনোদিন তার
স্বামীর প্রতীক্ষায় আঁচলে প্রদীপ
ঢেকে দুয়ারে আর দাঁড়িয়ে থাকবে না
যে জননী খোকা এসেছে ব’লে
উদ্দাম আনন্দে সন্তানকে আর
বুকে জড়িয়ে ধরতে পারবে না
যে তরুণ মাটির কোলে লুটিয়ে
পড়ার আগে বার বার একটি
প্রিয়তমার ছবি চোখে আনতে
চেষ্টা করেছিলো
সে অসংখ্য ভাইবোনদের নামে
আমার হাজার বছরের ঐতিহ্যে লালিত
যে ভাষায় আমি মাকে সম্বোধনে অভ্যস্ত
সেই ভাষা ও স্বদেশের নামে
এখানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে
আমি তাদের ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি
যারা আমার অসংখ্য ভাইবোনকে
নির্বিচারে হত্যা করেছে।
(অংশ)[২]
তথ্যসূত্র
- ↑ "কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবী নিয়ে এসেছি"। rokomari.com। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮।
- ↑ "কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি"। ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭ ইং। Authors list-এ
|প্রথমাংশ1=
এর|শেষাংশ1=
নেই (সাহায্য); এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:|তারিখ=
(সাহায্য)