জাতিসংঘ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
অ স্থানাঙ্ক |
|||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
{{উইকিউপাত্ত স্থানাঙ্ক}} |
|||
{{Infobox Geopolitical organization |
{{Infobox Geopolitical organization |
||
|name = |
|name = |
২৩:৪৪, ১৩ আগস্ট ২০১৭ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
{{উইকিউপাত্ত স্থানাঙ্ক}} – স্থানাঙ্কের উপাত্ত অনুপস্থিত
সদস্য দেশের মানচিত্র | |
সদর দপ্তর | আন্তর্জাতিক অঞ্চল ম্যানহাটন, নিউ ইয়র্ক সিটি |
রাষ্ট্রভাষা | আরবি, চীনা, ইংরেজি, ফরাসি, রুশ, স্পেনীয় |
সদস্যপদ | ১৯৩টি সদস্য দেশ |
নেতৃবৃন্দ | |
• মহাসচিব | অ্যান্টোনিও গুতারেস |
প্রতিষ্ঠিত | |
২৬ জুন ১৯৪৫ | |
ওয়েবসাইট http://www.un.org/ |
জাতিসংঘ (অপর নাম: রাষ্ট্রসঙ্ঘ) বিশ্বের জাতিসমূহের একটি সংগঠন, যার লক্ষ্য হলো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আইন, নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সামাজিক অগ্রগতি এবং মানবাধিকার বিষয়ে পারষ্পরিক সহযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি করা। ১৯৪৫ সালে ৫১টি রাষ্ট্র জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসঙ্ঘ সনদ স্বাক্ষর করার মাধ্যমে জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসঙ্ঘ প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি ১৯১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং পরবর্তীতে লুপ্ত লীগ অব নেশন্সের স্থলাভিষিক্ত হয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে বিজয়ী মিত্রশক্তি পরবর্তীকালে যাতে যুদ্ধ ও সংঘাত প্রতিরোধ করা যায়, এই উদ্দেশ্যে জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসঙ্ঘ প্রতিষ্ঠা করতে উদ্যোগী হয়। তখনকার বিশ্ব রাজনীতির পরিস্থিতি জাতিসংঘের বা রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাংগঠনিক কাঠামোতে এখনও প্রতিফলিত হচ্ছে। জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের ৫টি স্থায়ী সদস্য (যাদের ভেটো প্রদানের ক্ষমতা আছে) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া ও গণচীন হলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিজয়ী দেশ।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
অক্টোবর, ২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসঙ্ঘের সদস্য রাষ্ট্রের সংখ্যা ১৯৩ সদস্য।[১] এর সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরে অবস্থিত। সাংগঠনিকভাবে জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রধান অঙ্গ সংস্থাগুলো হলো - সাধারণ পরিষদ, নিরাপত্তা পরিষদ, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ, সচিবালয়, ট্রাস্টিশীপ কাউন্সিল এবং আন্তর্জাতিক আদালত। এছাড়াও রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ ইত্যাদি। জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রধান নির্বাহী হলেন এর মহাসচিব। ২০১৭ সালের জানুয়ারি ১ তারিখ থেকে মহাসচিব পদে রয়েছেন পর্তুগালের নাগরিক অ্যান্টোনিও ম্যানুয়েল দে অলিভেইরা গুতারেস।
সদস্যরাষ্ট্র
২০১৬ সালের তথ্যানুসারে জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসঙ্ঘের সদস্য সংখ্যা ১৯৩। বিশ্বের প্রায় সব স্বীকৃত রাষ্ট্রই এর সদস্য। তবে উল্লেখযোগ্য ব্যতিক্রম হলো তাইওয়ান (প্রজাতন্ত্রী চীন), ভ্যাটিকান সিটি। এছাড়াও, অন্যান্য কিছু অস্বীকৃত এলাকার মধ্যে রয়েছে ট্রান্সনিস্ট্রিয়া ও উত্তর সাইপ্রাসের তুর্কী প্রজাতন্ত্র।
জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসঙ্ঘে যোগদানকারী সর্বশেষ সদস্য রাষ্ট্র হলো দক্ষিণ সুদান (২০১১ সালের ১৪ জুলাই, ১৯৩তম) যোগদান করে।
সদর দপ্তর
জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসঙ্ঘের সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে অবস্থিত। এটি ১৬ একর জমিতে ১৯৪৯ হতে ১৯৫০ সালের মধ্যে নির্মাণ করা হয়। ভবনটি ইস্ট নদীর তীরে অবস্থিত। সদর দপ্তর স্থাপনের জমি কেনার জন্য জন ডি রকফেলার জুনিয়র ৮.৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেন। তিনি জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসঙ্ঘকে এই জমি দান করেন।
সদর দপ্তরের মূল ভবনটির নকশা প্রণয়ন করেন - লে করবুসিয়ে, অস্কার নিয়েমেয়ারসহ আরো অনেক খ্যাতনামা স্থপতি। নেলসন রকফেলারের উপদেষ্টা ওয়ালেস কে হ্যারিসন এই স্থপতি দলের নেতৃত্ব দেন। আনুষ্ঠানিকভাবে সদর দপ্তরের উদ্বোধন হয় ১৯৫১ সালের ৯ই জানুয়ারি তারিখে।
সদর দপ্তর নিউইয়র্কে হলেও জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসঙ্ঘের বেশ কিছু অঙ্গ সংগঠনের প্রধান কার্যালয় সুইজারল্যান্ডের জেনেভা, নেদারল্যান্ডের দ্য হেগ, অষ্ট্রিয়ার ভিয়েনা, কানাডার মন্ট্রিল, ডেনমার্কের কোপেনহাগেন, জার্মানীর বন ও অন্যত্র অবস্থিত।
জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসঙ্ঘের সদর দপ্তরের ঠিকানা হল -
- 760 United Nations Plaza,
- New York City, NY 10017,
- USA
নিরাপত্তার খাতিরে এই ঠিকানায় প্রেরিত সকল ধরণের চিঠিপত্র পরীক্ষণ-নিরীক্ষণসহ জীবাণুমুক্ত করা হয়।[২]
জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসঙ্ঘের সদর দপ্তরের পুরানো ভবনের সংস্কার কার্য উপলক্ষে ম্যানহাটানের ফার্স্ট অ্যাভিনিউতে ফুমিহিকো মাকি’র নকশায় অস্থায়ী দপ্তর নির্মাণ করা হচ্ছে।
১৯৪৯ সালের আগে পর্যন্ত লন্ডন ও নিউইয়র্কের বিভিন্ন স্থানে জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসঙ্ঘের কার্যালয়ের অবস্থান ছিল।[৩]
ভাষা
জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসঙ্ঘের ছয়টি দাপ্তরিক ভাষা হলো আরবি, চীনা, ইংরেজি, ফরাসি, রুশ, এবং স্পেনীয় ভাষা। [৪] জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসঙ্ঘের সচিবালয়ে যে দুটি ভাষা ব্যবহৃত হয় তা হলো ইংরেজি ও ফরাসি।
জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসঙ্ঘের দাপ্তরিক ভাষাগুলোর মধ্যে ইংরেজি ৫২টি সদস্য দেশের সরকারি ভাষা। ফরাসি হলো ২৯টি দেশের, আরবি ২৪টি দেশের, স্পেনীয় ২০টি দেশের, রুশ ৪টি দেশের, এবং চীনা ভাষা ২টি দেশের সরকারি ভাষা।
প্রাসঙ্গিক নিবন্ধসমূহ
মহাসচিব
জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রধান হিসেবে রয়েছেন মহাসচিব। তিনি মহাসচিব বান কি মুন ২০০৭ সালে সাবেক মহাসচিব কফি আনানের কাছ থেকে দায়িত্ব নেন এবং তাঁর ১ম মেয়াদ শেষ হবে ২০১১ সালে । যদি তাঁর গ্রহণযোগ্যতা থাকে, তবে তিনি পুণরায় ২য় মেয়াদে মহাসচিব পদে মনোনীত হতে পারবেন। এমনকি তিনি নিজ যোগ্যতাবলে ২০১২-২০১৬ জাতিসংঘ এর মহাসচিব হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসঙ্ঘ সনদের ৯৭ অনুচ্ছেদ মোতাবেক মহাসচিবকে “প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা” হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ঐ সনদে আরো বলা হয়েছে যে, মহাসচিব যে-কোন বিশ্ব শান্তিভঙ্গের আশঙ্কা ও নিরাপত্তার খাতিরে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের লক্ষ্যে নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব আনতে পারবেন। মহাসচিব পদটি দ্বৈত ভূমিকার অধিকারী - জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রশাসক এবং কুটনৈতিক ও মধ্যস্থতাকারী হিসেবে।
নিরাপত্তা পরিষদের সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুসারে জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদ মহাসচিব নিযুক্ত করেন।
পদের মেয়াদ সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোন নীতিমালা নেই। কিন্তু পূর্ব থেকেই এক বা দুই মেয়াদে ৫ বছরের জন্য ভৌগোলিক চক্রাবর্তে মহাসচিব পদে মনোনীত করার বিধান চলে আসছে।
ক্রমিক নং | নাম | যে দেশে জন্ম নিয়েছেন | কার্যভার গ্রহণ | কার্যভার প্রদান | মন্তব্য |
---|---|---|---|---|---|
(১) | ট্রাইগভে লাই | নরওয়ে | ২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৬ | ১০ নভেম্বর, ১৯৫২ | পদত্যাগ; ১ম মহাসচিব: স্ক্যান্ডিনেভিয়া দেশ থেকে |
(২) | ডগ হামারশোল্ড | সুইডেন | ১০ এপ্রিল, ১৯৫৩ | ১৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৬১ | কর্মরত অবস্থায় মৃত্যু |
(৩) | উ থান্ট | মায়ানমার | ৩০ নভেম্বর, ১৯৬১ | ১ জানুয়ারি, ১৯৭২ | এশিয়া থেকে নির্বাচিত ১ম মহাসচিব |
(৪) | কুর্ট ওয়াল্ডহেইম | অস্ট্রিয়া | ১ জানুয়ারি, ১৯৭২ | ১ জানুয়ারি, ১৯৮২ | |
(৫) | জ্যাভিয়ার পেরেজ দ্য কুয়েলার | পেরু | ১ জানুয়ারি, ১৯৮২ | ১ জানুয়ারি, ১৯৯২ | আমেরিকা থেকে নির্বাচিত ১ম মহাসচিব |
(৬) | বুট্রোস বুট্রোস-ঘালি | মিশর | ১ জানুয়ারি, ১৯৯২ | ১ জানুয়ারি, ১৯৯৭ | আফ্রিকা থেকে নির্বাচিত ১ম মহাসচিব |
(৭) | কফি আন্নান | ঘানা | ১ জানুয়ারি, ১৯৯৭ | ১ জানুয়ারি, ২০০৭ | |
(৮) | বান কি-মুন | দক্ষিণ কোরিয়া | ১ জানুয়ারি, ২০০৭ | ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৬ | |
(৯) | অ্যান্টোনিও গুতারেস | পর্তুগাল | ১ জানুয়ারি, ২০১৭ | - |
শুভেচ্ছা দূত
জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসঙ্ঘ তার সদস্যভূক্ত দেশগুলোর মাঝে নির্দিষ্ট লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শুভেচ্ছা দূত নিয়োগ করে থাকে। শুভেচ্ছা দূতের মধ্যে - বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় নেতা, খেলোয়াড়, চলচ্চিত্র তারকা প্রমুখ পেশাজীবিদেরকে সম্পৃক্ত করা হয়।
জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসঙ্ঘ শান্তি বার্তাবাহক, খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, এইচআইভি ও এইডস্ কর্মসূচী, পরিবেশ কার্যক্রম, ইউএনডিপি, ইউনেস্কো, ইউনোডিসি, ইউএনএফপিএ, জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসঙ্ঘ মানবাধিকার কমিশন, ইউনিসেফ, ইউনিডো, ইউনিফেম, বিশ্ব খাদ্য সংস্থা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রমূখ প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাগুলো তাদের কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য শুভেচ্ছা দূত হিসেবে সময়ে সময়ে বিখ্যাত ব্যক্তিত্বকে নিয়োগ করে থাকে।
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- ↑ "What are Member States?". United Nations.
- ↑ Information Technology Section (২০০১)। "Security Notice"। United Nations।
- ↑ The Story of United Nations Headquarters www.un.org, United Nations, Accessed September 20, 2006
- ↑ "What are the official languages of the United Nations?" (English ভাষায়)। United Nations। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১২-২৩।
- ↑ Former Secretaries-General–United Nations.