মোঃ আব্দুস সাত্তার: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Sabab Ador (আলোচনা | অবদান)
নতুন পৃষ্ঠা: প্রফেসর ড. মোঃ আব্দুস সাত্তার ১৯৫৭সালের ৫ই ফেব্রুয়ারী যশোর...
 
দ্রুত অপসারণ প্রস্তাবনা (CSD স১২)। (টুইং)
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{db-copyvio}}
প্রফেসর ড. মোঃ আব্দুস সাত্তার ১৯৫৭সালের ৫ই ফেব্রুয়ারী যশোর জেলার মণিরামপুর থানার চন্ডীপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মরহুম ইব্রাহিম এবং মাতা মরহুমা নূরজাহান বেগম। ১৯৯০ সালে তিনি যশোরের সম্ভ্রান্ত পরিবারের কন্যা নাসিমা আখতারের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। স্ত্রী, দুই পুত্র-ওয়াসেক সাত্তার আবীর এবং ওয়াসিফ সাত্তার নিবিড়কে নিয়ে তাঁর ছোট্ট পরিবার।
প্রফেসর ড. মোঃ আব্দুস সাত্তার ১৯৫৭সালের ৫ই ফেব্রুয়ারী যশোর জেলার মণিরামপুর থানার চন্ডীপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মরহুম ইব্রাহিম এবং মাতা মরহুমা নূরজাহান বেগম। ১৯৯০ সালে তিনি যশোরের সম্ভ্রান্ত পরিবারের কন্যা নাসিমা আখতারের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। স্ত্রী, দুই পুত্র-ওয়াসেক সাত্তার আবীর এবং ওয়াসিফ সাত্তার নিবিড়কে নিয়ে তাঁর ছোট্ট পরিবার।



০২:২৫, ১৯ মার্চ ২০১৭ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

প্রফেসর ড. মোঃ আব্দুস সাত্তার ১৯৫৭সালের ৫ই ফেব্রুয়ারী যশোর জেলার মণিরামপুর থানার চন্ডীপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মরহুম ইব্রাহিম এবং মাতা মরহুমা নূরজাহান বেগম। ১৯৯০ সালে তিনি যশোরের সম্ভ্রান্ত পরিবারের কন্যা নাসিমা আখতারের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। স্ত্রী, দুই পুত্র-ওয়াসেক সাত্তার আবীর এবং ওয়াসিফ সাত্তার নিবিড়কে নিয়ে তাঁর ছোট্ট পরিবার।

প্রফেসর ড. আব্দুস সাত্তারের শিক্ষাজীবন শুরু হয়েছিলো পিতৃভূমি মণিরামপুরেই। রাজগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১৯৭৩সালে তিনি বিজ্ঞান বিভাগ থেকে চমকপ্রদ ফলাফল নিয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন, এরপর যশোর সরকারী মাইকেল মধুসূদন কলেজ থেকে ১৯৭৫সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কৃতিত্বের সাথে পাস করেন। পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন তিনি। অসাধারণ একাডেমিক ফলাফলের কল্যাণে ভারত সরকারের বিশেষ শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে তিনি পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন; একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোস্ট-ডক্টরাল গবেষণা সম্পন্ন করেন তিনি। ড. আব্দুস সাত্তার কর্মজীবন শুরু করেন ১৯৮৯সালে; চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিভাগে প্রভাষক হিসাবে যোগদান করেন তিনি। পরে ১৯৯২সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৯৪সালে সহকারী অধ্যাপক হিসাবে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৯৯৬সালে তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক হিসাবে ফলিত রসায়ন ও রাসায়নিক প্রযুক্তি বিভাগে শিক্ষকতা শুরু করেন। এরপর ১৯৯৮সালে সহযোগী অধ্যাপক পদে এবং ২০০২সালে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি লাভ করেন। কর্মজীবনে প্রফেসর ড. মোঃ আব্দুস সাত্তার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সবকটি প্রশাসনিক পদ অলংকৃত করে অত্যন্ত সফলতার সাথে প্রত্যেকটি দায়িত্ব পালন করেছেন। অধ্যাপক মোঃ আব্দুস সাত্তার চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. কে. কে. হলের সহকারী প্রভোস্ট, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলের হাউস টিউটর, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর, খালেদা জিয়া হলের প্রভোস্ট, ফলিত রসায়ন ও রাসায়নিক প্রযুক্তি বিভাগ এবং বায়োটেকনোলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতি হিসেবে দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের ডীন হিসেবে অত্যন্ত সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। ড. সাত্তার চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন সহকারী অধ্যাপক ক্যাটাগরীতে। কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে প্রগতিশীল শিক্ষকদের প্যানেল থেকে নির্বাচনে অংশ নিয়ে সদস্যপদে নির্বাচিত হয়ে অনন্য নজির স্থাপন করেন তিনি, দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে পূর্ণ করেছেন দায়িত্বের মেয়াদকাল। তাঁরই হাত ধরে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনসমূহ তাদের রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করবার সাহস পেয়েছিলো। এছাড়াও অধুনালুপ্ত বি.আই.টি শিক্ষক ফেডারেশনের কোষাধ্যক্ষের দায়িত্বও অত্যন্ত সুনামের সাথে পালন করেছেন তিনি। ২০০৯সালে আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করবার পর প্রফেসর আব্দুস সাত্তারের উপর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারারের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। ট্রেজারারের দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র ২৭দিনের মাথায় ২০০৯সালের ৭ই এপ্রিল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মরহুম জিল্লুর রহমান, প্রফেসর ড. মোঃ আব্দুস সাত্তারকে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেন। তিনি যখন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য হিসেবে যোগদান করেন, তাকে যাত্রা শুরু করতে হয়েছিলো একপ্রকার শূন্য হাতে। প্রকৃতপক্ষে প্রফেসর ড. আব্দুস সাত্তারের হাত ধরেই পথ চলতে শুরু করেছিলো যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে ছিলোনা কোন শিক্ষক, না ছিলো বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার কোন নীতিমালা; ছিলো কেবল একাডেমিক বিল্ডিঙয়ের ছয়টি কক্ষের ছাঁদ। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দকৃত যশোরের সদর উপজেলার আমবটতলা গ্রামের ৩৫একরের বিরাণ ফসলের মাঠকে প্রফেসর ড. মোঃ আব্দুস সাত্তার কঠোর পরিশ্রম, একাগ্রতা এবং কর্মস্পৃহার জোরে মাত্র আট বছরের ব্যবধানে পরিণত করেছেন দেশের বুকে সগৌরবে মাথা তুলে দাঁড়ানো একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। বর্তমানকালে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন উপাচার্য যেখানে তাঁর চারবছরের মেয়াদকাল সম্পন্ন করতেই হিমশিম খান, সেখানে পরপর দুইমেয়াদে অত্যন্ত সফলতার সাথে উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করে প্রফেসর ড. আব্দুস সাত্তার স্থাপন করতে চলেছেন এক অনন্য দৃষ্টান্ত। ২০১৩সালে অধ্যাপক আব্দুস সাত্তারের উপর আস্থা রেখে পুনরায় তাকে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিযুক্ত করা হয়; আওয়ামীলীগের ২০০৯সাল থেকে রাষ্ট্রপরিচালনার সময়কালে যা ছিলো প্রথম ঘটনা। ড. আব্দুস সাত্তারের দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার ফসল হিসেবে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য ২০১৬সালে ২৮২কোটি বরাদ্দ দেয় সরকার যা কিনা কোন বিশ্ববিদ্যালয়কে বরাদ্দ করা স্মরণকালের অন্যতম বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর একটি। শুধু তাই নয়, স্বল্প সময়ের এই পথচলায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দুইটি সমাবর্তনের আয়োজন করতে পেরেছে যা কিনা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সত্যিই বিস্ময়কর ঘটনা। প্রফেসর আব্দুস সাত্তারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ২০১৬সালে আয়োজিত যবিপ্রবির দ্বিতীয় সমাবর্তনে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত থেকে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মোঃ আব্দুল হামিদ। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের রাষ্ট্রপরিচালনাকালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বিগত কয়েক বছরে হাতেগোনা কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পদচিহ্ন রেখেছেন যার ভেতর যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় একটি। ২০১০সালের ২৭শে ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের উদ্বোধন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়াও প্রফেসর সাত্তারের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে গত আটটি বছরে যবিপ্রবিতে পা রেখেছেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণকারী দেশবরেণ্য প্রগতিশীল অসংখ্য ব্যক্তিবর্গ যার ভেতর রয়েছেন স্বনামধন্য বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম, দেশবরেণ্য শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, খ্যাতনামা চিত্রশিল্পী হাশেম খান, দেশবরেণ্য স্থপতি জনাব মোবাশ্বের আলম, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের বর্তমান চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী ও অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা জনাব এইচ টি ইমাম, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. গওহর রিজভী, অর্থনৈতিকবিষয়ক উপদেষ্টা জনাব ড. মসিউর রহমান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাবেক রাজনীতি-সমাজকল্যাণ ও শিক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আলাউদ্দীন আহমেদ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় অর্থমন্ত্রী ড. আবুল মাল আব্দুল মুহিত, মাননীয় কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী জনাব নুরুল ইসলাম নাহিদ, মাননীয় সংস্কৃতিমন্ত্রী জনাব আসাদুজ্জামান নূর, মাননীয় রেলমন্ত্রী জনাব মুজিবুল হক, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব ইসমাত আরা সাদেক, বিদ্যুৎ জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব নসরুল হামিদ বিপু, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনায়েদ আহমেদ পলক, বিগত মহাজোট সরকারের সাবেক মন্ত্রী মরহুম মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ, সাবেক মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জনাব আব্দুল হাই, সাবেক শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান, প্রধানমন্ত্রীর কার্য্যালয়ের মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, সাবেক শিক্ষাসচিব জনাব নজরুল ইসলাম খান, সরকারী কর্ম কমিশনের সদস্য জনাব শরীফ এনামুল কবীর সহ অসংখ্য প্রখ্যাত ব্যক্তিবর্গ।

প্রফেসর ড. আব্দুস সাত্তার প্রত্যক্ষভাবে কখনোই রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত না থাকলেও আপাদমস্তক রাজনীতি লালন করা ব্যক্তিত্ব তিনি। শৈশবে স্কুলছাত্র থাকা অবস্থায়ই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি তাঁর গভীর অনুরাগ জন্মে; সেই থেকেই আজীবন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অন্তরে লালন করে পথ চলেছেন তিনি। নির্ভীক, সৎ, অসাম্প্রদায়িক, দেশপ্রেমী এই মানুষটির এবং তাঁর পরিবারের উপর অসংখ্যবার প্রাণনাশের হুমকি এলেও সততা-আদর্শের প্রশ্নে বিন্দুমাত্র আপোষ করেননি তিনি। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের দুঃশাসনামলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে নির্যাতিত আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী-সমর্থক ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। ওয়ান-ইলেভেনের সেনাসমর্থিত সরকারের রাষ্ট্রপরিচালনার সময়কালের রাজনৈতিক মহাসংকটে কারান্তরীণ জননেত্রী শেখ হাসিনার মুক্তির দাবিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পক্ষে প্রথম স্বাক্ষরকারী ব্যক্তি ছিলেন প্রফেসর সাত্তার। যশোরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিলো তাঁর। আজীবন অসাম্প্রদায়িক চেতনা লালনকারী দেশবরেণ্য তুখোড় আলোচক এই বুদ্ধিজীবী, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কেও গড়ে তুলেছেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়। যবিপ্রবির প্রধান ফটকেই রয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সাতজন বীরশ্রেষ্ঠের প্রতিকৃতি। যবিপ্রবির প্রথম একাডেমিক ভবনটির নামও রাখা হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নামে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রয়েছে ভাষা শহীদদের স্মরণে শহীদ মিনার এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাহক ভাস্কর্য “অদম্য ৭১”। তারই নেতৃত্বে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দেশের ভেতর সর্বপ্রথম দেশরত্ন শেখ হাসিনার নামে আবাসিক ছাত্রী হল প্রতিষ্ঠা করেছে। একমাত্র ছাত্র হলটিরও নামকরণ করা হয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ একমাত্র জনপ্রতিনিধি শহীদ মসিয়ূর রহমানের নামানুসারে।

প্রফেসর সাত্তার বেশকিছু সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের কর্মকান্ডের সঙ্গেও সরাসরি জড়িত। এর ভেতর বাংলাদেশ রসায়ন সমিতির আজীবন সদস্য তিনি, সোসাইটি ফর ফার্মাসিউটিক্যালস অফ প্রফেশন্যালস এর কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি, এবং বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অফ এ্যাডভান্স সাইন্সের আজীবন সদস্য। শিক্ষকতার পাশাপাশি অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার একজন সফল গবেষক হিসেবেও দারুণ সুনাম কুড়িয়েছেন। বেশকিছু গবেষণা প্রকল্পের পরিচালকের দায়িত্ব সফলতার সাথে পালন করেছেন তিনি। অনেক শিক্ষার্থী তাঁর তত্ত্বাবধানে এম. ফিল ও পি.এইচ.ডি ডিগ্রী অর্জন করেছেন। বেশকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পি.এইচ.ডি থিসিসের পরীক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন এবং বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বশীল পদে থেকে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন তিনি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রায় সত্তরটির মত গবেষণাপত্র রয়েছে তাঁর। শুধু একজন সফল শিক্ষক, গবেষক কিংবা দক্ষ প্রশাসক হিসেবেই নয়, যশোরের সন্তান প্রফেসর ড. মোঃ আব্দুস সাত্তার যশোরের উন্নয়নে বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর হিসেবে প্রতিনিয়ত ভূমিকা রেখে চলেছেন। তাঁর জোরালো দাবির মুখে যশোরের শংকরপুরে স্থাপিত হচ্ছে সফটওয়্যার টেকনোলজী পার্ক। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে চক্ররেল সার্ভিস চালু করবার প্রচেষ্টায় অনেক আগে থেকেই সংগ্রাম করে চলেছেন তিনি, সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে দাবি জানিয়েছেন বারংবার, যার ফলশ্রুতিতে সম্প্রতি সরকার এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ নিয়েছে। ড. আব্দুস সাত্তারের দীর্ঘদিনের সংগ্রামের ফসল হিসেবে বর্তমান সরকার যশোরে আধুনিক শিল্পাঞ্চল গড়ে তুলতে এবং যশোরের মণিরামপুর-কেশবপুর অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যুদ্ধপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে রাজপথে থেকে তরুণসমাজের আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছেন তিনি। বিএনপি-জামায়াতের আগুন সন্ত্রাসের প্রতিবাদে রাজপথে নামার পাশাপাশি অচলাবস্থা থেকে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে রক্ষার জন্য নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন তিনি। তারই প্রচেষ্টায় হরতাল অবরোধের মাঝেও পুলিশি প্রহরায় পরিবহণ ব্যবস্থা চালু করে ক্লাস পরীক্ষা শুরু করেছিলো যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

যশোরের ক্রীড়া-সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে প্রফেসর ড. আব্দুস সাত্তারের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মত। ব্যস্ত জীবনের মাঝে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন বিভিন্ন সংকটে-দুর্যোগে-সুখে-দুঃখে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে। গত আটটি বছরে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব পালনকালে তিনি হয়ে উঠেছেন যবিপ্রবি পরিবারের একান্ত আস্থা, বিশ্বাস ও ভালোবাসার কেন্দ্রবিন্দু; সেই সাথে যশোরবাসীর কাছেও ভরসার আশ্রয়স্থল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন নিজেকে।