পশ্চিমবঙ্গ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
→‎জনপরিসংখ্যান: সম্প্রসারণ
৬৮৩ নং লাইন: ৬৮৩ নং লাইন:
[[বিষয়শ্রেণী:ভারতীয় রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল]]
[[বিষয়শ্রেণী:ভারতীয় রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল]]
[[বিষয়শ্রেণী:ভারত]]
[[বিষয়শ্রেণী:ভারত]]
[[বিষয়শ্রেণী:ভারতের রাজ্য]]
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলাভাষী দেশ ও অঞ্চল]]

০৪:৪১, ১০ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

পশ্চিমবঙ্গ
ভারতের রাজ্য
ডাকনাম: বাংলা, বঙ্গ
ভারতের মানচিত্রে পশ্চিমবঙ্গের অবস্থান
ভারতের মানচিত্রে পশ্চিমবঙ্গের অবস্থান
পশ্চিমবঙ্গের মানচিত্র
পশ্চিমবঙ্গের মানচিত্র
দেশ ভারত
অঞ্চলপূর্ব ভারত
প্রতিষ্ঠা১৫ অগস্ট, ১৯৪৭
রাজধানীকলকাতা
বৃহত্তম শহর /
বৃহত্তম মহানগর অঞ্চল
কলকাতা
জেলা২০টি
সরকার
 • শাসকপশ্চিমবঙ্গ সরকার
 • রাজ্যপালকেশরীনাথ ত্রিপাঠী
 • মুখ্যমন্ত্রীমমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (তৃণমূল কংগ্রেস)
 • আইনসভাপশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা (২৯৫টি* আসন)
 • হাইকোর্টকলকাতা হাইকোর্ট
আয়তন
 • মোট৮৮,৭৫২ বর্গকিমি (৩৪,২৬৭ বর্গমাইল)
এলাকার ক্রম১৪শ
জনসংখ্যা (২০১১)[১]
 • মোট৯,১৩,৪৭,৭৩৬
 • ক্রম৪র্থ
 • জনঘনত্ব১,০০০/বর্গকিমি (২,৭০০/বর্গমাইল)
সময় অঞ্চলভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+০৫:৩০)
আইএসও ৩১৬৬ কোডIN-WB
মানব উন্নয়ন সূচকবৃদ্ধি ০.৬০৪২ (মধ্যম)
মানব উন্নয়ন সূচক অনুযায়ী স্থান১৩ তম (ভারত) (২০১৪-২০১৫)
জিডিপি (নোমিনাল)৮,০০,০০০ কোটি (US$ ৯৭.৭৯ বিলিয়ন) (২০১৫)
জিডিপি-এ অবস্থান৪ তম (২০১৫) ভারতে
বৃদ্ধির হার১৪.১৪ শতাংশ
বৃদ্ধির হারে ভারতের মধ্যে অবস্থান২০ তম (২০১৫)
সাক্ষরতা৭৭.০৮%[২]
সরকারি ভাষাবাংলা , ইংরেজি ও অন্যান্য
ওয়েবসাইটwestbengal.gov.in
^* ২৯৪ জন নির্বাচিত, ১ জন মনোনীত

পশ্চিমবঙ্গ বা পশ্চিম বাংলা হল পূর্ব ভারতের একটি রাজ্য। পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যা ৯ কোটি ১০ লক্ষ।[৩] এটি ভারতের ৪র্থ সর্বাধিক জনবহুল রাজ্য।[৩] পশ্চিমবঙ্গের আয়তন ৩৪,২৬৭ মা (৮৮,৭৫০ কিমি)। এই রাজ্যের উত্তরে ভারতের সিক্কিম রাজ্য, উত্তর-পূর্বে ভুটান রাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলমধ্যাঞ্চল, উত্তর-পশ্চিমে নেপাল রাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চল; পূর্ব দিকে ভারতের অসম রাজ্য এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্রের রংপুর, রাজশাহীখুলনা বিভাগ; পশ্চিমে ভারতের বিহার, ঝাড়খণ্ডওড়িশা রাজ্য এবং দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত। পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা। উত্তরের হিমালয় পর্বতশ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত কয়েকটি অঞ্চলকে বাদ দিলে এ রাজ্যের অধিকাংশ এলাকাই গাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চলের অন্তর্গত। পশ্চিমবঙ্গ, বাংলাদেশ, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য এবং অসমের বরাক উপত্যকা বাঙালি জাতি অধ্যুষিত বঙ্গ অঞ্চলের অন্তর্গত।

প্রাচীন বঙ্গদেশ একাধিক প্রধান জনপদে (রাজ্য) বিভক্ত ছিল। অধুনা ‘পশ্চিমবঙ্গ’ নামে পরিচিত অঞ্চলটি প্রাচীনকালে বঙ্গ, রাঢ়, পুণ্ড্রসুহ্ম জনপদের অন্তর্গত ছিল। পরবর্তীকালে এই অঞ্চল মৌর্য সাম্রাজ্য (খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতাব্দী) ও গুপ্ত সাম্রাজ্য (খ্রিস্টীয় ৪র্থ শতাব্দী) – এই দুই বৃহদায়তন সাম্রাজ্য এবং অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্রায়তন আঞ্চলিক পাল সাম্রাজ্য (খ্রিস্টীয় ৮ম-১১শ শতাব্দী) এবং সেন সাম্রাজ্যের (খ্রিস্টীয় ১১শ-১২শ শতাব্দী) অন্তর্ভুক্ত হয়। খ্রিস্টীয় ১৩শ শতাব্দী থেকে ১৮শ শতাব্দী পর্যন্ত এই অঞ্চল শাসিত হয় বাংলা সালতানাত, হিন্দু রাজন্যবর্গ ও বারো ভুঁইয়া নামে পরিচিত জমিদারবর্গের দ্বারা। এরপর বাংলা তথা ভারতে ব্রিটিশ শাসনের সূচনা ঘটে। ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধের পর ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলা সহ ভারতের বিস্তীর্ণ অংশের শাসন কর্তৃত্ব নিজের হাতে তুলে নেয়। এরপর ১৯১১ সাল পর্যন্ত কলকাতা ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী ছিল। ব্রিটিশ শাসনের ফলশ্রুতিতে ভারতে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে পাশ্চাত্য শিক্ষা ও বিজ্ঞানচেতনার প্রসার ঘটলে কলকাতাকে কেন্দ্র করে হিন্দু বাঙালি সমাজে এক ধর্ম ও সমাজ সংস্কার আন্দোলনের শুরু হয়। বাংলার ইতিহাসে এই আন্দোলন ‘বাংলার নবজাগরণ’ নামে পরিচিত। ২০শ শতাব্দীর প্রথম ভাগে কলকাতা সহ পশ্চিমবঙ্গ ভূখণ্ড ছিল ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্র। ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতা অর্জনের সময় ধর্মের ভিত্তিতে বাংলা বিভাজিত হয়। হিন্দুপ্রধান পশ্চিমবঙ্গ ভারতের একটি রাজ্যে পরিণত হয়। অন্যদিকে মুসলমান-প্রধান পূর্ববঙ্গ নবগঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত হয়। বিংশ শতাব্দীর শেষার্ধ্বে পশ্চিমবঙ্গে বামপন্থী মতবাদ ও আন্দোলন প্রসার লাভ করে।[৪][৫][৬][৭][৮] ১৯৭৭ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ শাসন করে কমিউনিস্ট বামফ্রন্ট সরকার। ২০১১ সালের নির্বাচনে বামফ্রন্টকে পরাজিত করে দক্ষিণপন্থী দল তৃণমূল কংগ্রেস সরকার গঠন করেছে।

কৃষিপ্রধান রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ ভারতের নিট আভ্যন্তরিণ উৎপাদনের ষষ্ঠ বৃহত্তম অবদানকারী।[৯] পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য রাজনৈতিক সক্রিয়তার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। এছাড়া সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উপস্থিতি এই রাজ্যের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য। রাজ্য রাজধানী কলকাতাকে ‘ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী’ হিসেবে পরিচিত। নিজস্ব লোকসংস্কৃতি ছাড়াও এই রাজ্যের একটি সমৃদ্ধ মূলধারার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রয়েছে। সাহিত্যে নোবেল-পুরস্কার জয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে শুরু করে বহু সংখ্যক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের কর্মস্থল এই ছিল রাজ্য। ভারতের অন্যান্য রাজ্যে ক্রিকেট সর্বাধিক জনপ্রিয় খেলা হলেও, পশ্চিমবঙ্গে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তার সঙ্গে পাল্লা দেয় ফুটবলের জনপ্রিয়তা।[১০][১১][১২] পশ্চিমবঙ্গে দু'টি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান রয়েছে―দার্জিলিং হিমালয়ান রেলসুন্দরবন জাতীয় উদ্যান

নামকরণ

আরও দেখুন : বঙ্গদেশের নামসমূহ

বঙ্গ বা বাংলা নামের সঠিক উৎসটি অজ্ঞাত। এই নামের উৎস সম্পর্কে একাধিক মতবাদ প্রচলিত। একটি মতে এটি খ্রিস্টপূর্ব ১০০০ অব্দে এই অঞ্চলে বসবাসকারী দ্রাবিড় উপজাতির ভাষা থেকে এসেছে।[১৩] সংস্কৃত সাহিত্যে বঙ্গ নামটি অনেক জায়গাতেই পাওয়া যায়। কিন্তু এই অঞ্চলের প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কে বিশেষ কিছুই জানা যায় না।

১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারতের বাংলা প্রদেশের পশ্চিমাঞ্চল স্বাধীন ভারতের অঙ্গরাজ্যে পরিণত হলে এই রাজ্যের নামকরণ পশ্চিমবঙ্গ করা হয়েছিল। ইংরেজিতে অবশ্য West Bengal (ওয়েস্ট বেঙ্গল) নামটিই সরকারিভাবে প্রচলিত। ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজ্যের ইংরেজি নামটি পালটে Paschimbanga রাখার প্রস্তাব দেয়।[১৪]

বাংলা, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নতুন পরিবর্তিত নাম। ভারত সরকার কর্তৃক স্বীকৃতি না পেলেও পশ্চিমবঙ্গ তথা বাংলা রাজ্যের বিধানসভায় এই নাম পরিবর্তনের আইন পাস করা হয়। ২০১৬ সালের আগস্টে পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলে নতুন নাম রাখার প্রস্তাব করা হয় বাংলা। ইংরেজিতে বেঙ্গল আর হিন্দিতে বাঙাল। রাজ্য বিধানসভায় নাম পরিবর্তনের এই প্রস্তাব বিপুল ভোটের ব্যবধানে পাস হয়। প্রস্তাবের পক্ষে ১৮৯ ভোট পড়ে আর বিপক্ষে পড়ে ৩১ ভোট। [১৫] পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব পেশ করেন সংসদবিষয়ক ও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তন নিয়ে রাজ্য মন্ত্রিসভায় ২ আগস্ট ২০১৬ তারিখে দুটি প্রস্তাব গৃহীত হয়- বাংলা অথবা বঙ্গ।

ইতিহাস

প্রাচীন যুগ

বৃহত্তর বঙ্গদেশে সভ্যতার সূচনা ঘটে আজ থেকে ৪,০০০ বছর আগে।[১৬][১৭] এই সময় দ্রাবিড়, তিব্বতি-বর্মি ও অস্ত্রো-এশীয় জাতিগোষ্ঠী এই অঞ্চলে এসে বসতি স্থাপন করেছিল। বঙ্গ বা বাংলা শব্দের প্রকৃত উৎস অজ্ঞাত। তবে মনে করা হয়, ১০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ নাগাদ যে দ্রাবিড়-ভাষী বং জাতিগোষ্ঠী এই অঞ্চলে বসতি স্থাপন করেছিল, তারই নামানুসারে এই অঞ্চলের নামকরণ হয় বঙ্গ[১৮] গ্রিক সূত্র থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ১০০ অব্দ নাগাদ গঙ্গারিডাই নামক একটি অঞ্চলের অস্তিত্বের কথা জানা যায়। সম্ভবত এটি বৈদেশিক সাহিত্যে বাংলার প্রাচীনতম উল্লেখগুলির অন্যতম। মনে করা হয়, এই গঙ্গারিডাই শব্দটি গঙ্গাহৃদ (অর্থাৎ, গঙ্গা যে অঞ্চলের হৃদয়ে প্রবাহিত) শব্দের অপভ্রংশ।[১৯] খ্রিষ্টপূর্ব সপ্তম শতাব্দীতে বাংলাবিহার অঞ্চল নিয়ে গড়ে ওঠে মগধ রাজ্য। একাধিক মহাজনপদের সমষ্টি এই মগধ রাজ্য ছিল মহাবীরগৌতম বুদ্ধের সমসাময়িক ভারতের চারটি প্রধান রাজ্যের অন্যতম।[২০] মৌর্য রাজবংশের রাজত্বকালে প্রায় সমগ্র দক্ষিণ এশিয়া মগধ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে এই সাম্রাজ্যের সর্বশ্রেষ্ঠ নরপতি মহামতি অশোকের রাজত্বকালে আফগানিস্তানপারস্যের কিছু অংশও এই সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়।

প্রাচীনকালে জাভা, সুমাত্রাশ্যামদেশের (অধুনা থাইল্যান্ড) সঙ্গে বাংলার বৈদেশিক বাণিজ্য সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ মহাবংশ অনুসারে, বিজয় সিংহ নামে বঙ্গ রাজ্যের এক রাজপুত্র লঙ্কা (অধুনা শ্রীলঙ্কা) জয় করেন এবং সেই দেশের নতুন নাম রাখেন সিংহল। প্রাচীন বাংলার অধিবাসীরা মালয় দ্বীপপুঞ্জ ও শ্যামদেশে গিয়ে সেখানে নিজেদের উপনিবেশ স্থাপন করেছিলেন।

আদিমধ্য ও মধ্যযুগ

লালজীউ মন্দির, বিষ্ণুপুর।

খ্রিষ্টীয় তৃতীয় থেকে ষষ্ঠ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে মগধ রাজ্য ছিল গুপ্ত সাম্রাজ্যের প্রধান কেন্দ্র। বঙ্গের প্রথম সার্বভৌম রাজা ছিলেন শশাঙ্ক। খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীর প্রথম ভাগে তিনি একাধিক ছোটো ছোটো রাজ্যে বিভক্ত সমগ্র বঙ্গ অঞ্চলটিকে একত্রিত করে একটি সুসংহত সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।[২১] শশাঙ্কের রাজধানী ছিল কর্ণসুবর্ণ (অধুনা মুর্শিদাবাদ জেলার রাঙামাটি অঞ্চল)। তাঁর মৃত্যুর অব্যবহিত পরে বঙ্গের ইতিহাসে এক নৈরাজ্যের অবস্থা সৃষ্টি। ইতিহাসে এই সময়টি "মাৎস্যন্যায়" নামে পরিচিত। এরপর চারশো বছর বৌদ্ধ পাল রাজবংশ এবং তারপর কিছুকাল হিন্দু সেন রাজবংশ এই অঞ্চল শাসন করেন। পাল সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল পাটলিপুত্র (অধুনা পাটনা, বিহার) এবং পরে গৌড় (মালদহ জেলা)। সেন সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল নবদ্বীপ (নদিয়া জেলা)। এরপর ভারতে ইসলামের আবির্ভাব ঘটলে বঙ্গ অঞ্চলেও ইসলাম ধর্মে প্রসার ঘটে।[২২] বকতিয়ার খলজি নামে দিল্লি সুলতানির দাস রাজবংশের এক তুর্কি সেনানায়ক সর্বশেষ সেন রাজা লক্ষ্মণসেনকে পরাস্ত করে বঙ্গের একটি বিরাট অঞ্চল অধিকার করে নেন। এরপর কয়েক শতাব্দী এই অঞ্চল দিল্লি সুলতানির অধীনস্থ সুলতান রাজবংশ অথবা সামন্ত প্রভুদের দ্বারা শাসিত হয়। ষোড়শ শতাব্দীতে মুঘল সেনানায়ক ইসলাম খাঁ বঙ্গ অধিকার করেন। যদিও মুঘল সাম্রাজ্যের রাজদরবার সুবা বাংলার শাসকদের শাসনকার্যের ব্যাপারে আধা-স্বাধীনতা প্রদান করেছিলেন। এই অঞ্চলের শাসনভার ন্যস্ত হয়েছিল মুর্শিদাবাদের নবাবদের হাতে। নবাবেরাও দিল্লির মুঘল সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন।

ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির রবার্ট ক্লাইভ, ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধ বিজয়ের পর

ব্রিটিশ শাসন

চিত্র:Raja Ram Mohan Roy.jpg
রাজা রামমোহন রায়, "বাংলার নবজাগরণের জনক"
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, বাংলার বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী; ব্রিটিশ শাসনের উচ্ছেদকল্পে স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁর ভূমিকা অবিস্মরণীয়।

পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষভাগে বঙ্গ অঞ্চলে ইউরোপীয় বণিকদের আগমন ঘটে। এই সব বণিকেরা এই অঞ্চলে নিজ নিজ প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হন। অবশেষে ১৭৫৭ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি পলাশীর যুদ্ধে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজদ্দৌলাকে পরাজিত করেন। এর পর সুবা বাংলার রাজস্ব আদায়ের অধিকার কোম্পানির হস্তগত হয়।[২৩] ১৭৬৫ সালে বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি স্থাপিত হয়। ধীরে ধীরে সেন্ট্রাল প্রভিন্সের (অধুনা মধ্যপ্রদেশ) উত্তরে অবস্থিত গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্রের মোহনা থেকে হিমালয়পাঞ্জাব পর্যন্ত সকল ব্রিটিশ-অধিকৃত অঞ্চল বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অন্তর্ভুক্ত হয়। ছিয়াত্তরের মন্বন্তরে লক্ষাধিক সাধারণ মানুষের মৃত্যু ঘটে।[২৪] ১৭৭২ সালে কলকাতা ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী ঘোষিত হয়।

বাংলার নবজাগরণব্রাহ্মসমাজ-কেন্দ্রিক সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংস্কার আন্দোলন বাংলার সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক জীবনে গভীর প্রভাব বিস্তার করে। ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের সূচনা কলকাতার অদূরেই হয়েছিল। এই বিদ্রোহ ব্যর্থ হলেও এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের শাসনভার কোম্পানির হাত থেকে ব্রিটিশ রাজশক্তি স্বহস্তে গ্রহণ করে। ভারত শাসনের জন্য একটি ভাইসরয়ের পদ সৃষ্টি করা হয়।[২৫] ১৯০৫ সালে ধর্মীয় বিভাজনের ভিত্তিতে প্রথম পশ্চিমবঙ্গ (ভারতীয় বঙ্গ) অঞ্চলটিকে পূর্ববঙ্গ থেকে পৃথক করা হয়। কিন্তু বঙ্গবিভাগের এই প্রয়াস শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয় এবং ১৯১১ সালে বঙ্গপ্রদেশকে পুনরায় একত্রিত করা হয়।[২৬] ১৯৪৩ সালে পঞ্চাশের মন্বন্তরে বাংলায় ৩০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়।[২৭]

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে বাংলা এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে। অনুশীলন সমিতিযুগান্তর দলের মতো বিপ্লবী দলগুলি এখানে অতিসক্রিয় হয়ে ওঠে। বাংলায় ব্রিটিশ শক্তির বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায় যখন সুভাষচন্দ্র বসু আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। ১৯২০ সাল থেকে এই রাজ্যে বামপন্থী আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করে। সেই ধারা আজও অব্যাহত আছে। ১৯৪৭ সালে কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের চক্রান্তে ভারত স্বাধীনতা অর্জন ধর্মের ভিত্তিতে বাংলা দ্বিধাবিভক্ত হয়। হিন্দুপ্রধান পশ্চিমবঙ্গ ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয় এবং মুসলমানপ্রধান পূর্ববঙ্গ নবগঠিত রাষ্ট্র পাকিস্তানে যোগ দেয় (এই অঞ্চলটি পরে পূর্ব পাকিস্তান নামে পরিচিত হয় এবং ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে)।[২৮]

স্বাধীনোত্তর যুগ

দেশভাগের পর পূর্ববঙ্গ থেকে লক্ষ লক্ষ হিন্দু পশ্চিমবঙ্গে চলে আসেন। এই ব্যাপক অভিবাসনের ফলে পশ্চিমবঙ্গে খাদ্য ও বাসস্থানের সমস্যা দেখা দেয়। ১৯৫০ সালে দেশীয় রাজ্য কোচবিহারের রাজা জগদ্দীপেন্দ্র নারায়ণ ভারত সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলে কোচবিহার পশ্চিমবঙ্গের একটি জেলায় পরিণত হয়। ১৯৫৫ সালে ফরাসি উপনিবেশ চন্দননগর পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্ভুক্ত হয়। বিহারের কিছু বাংলা-ভাষী অঞ্চলও এই সময় পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্ভুক্ত হয়।

১৯৭০ ও ১৯৮০-এর দশকে ব্যাপক বিদ্যুৎ বিপর্যয়, ধর্মঘট ও সহিংস মার্ক্সবাদী-নকশালবাদী আন্দোলনের ফলে রাজ্যের শিল্প পরিকাঠামো ভেঙে পড়ে। এর ফলে এক অর্থনৈতিক স্থবিরতার যুগের সূত্রপাত হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রায় এক কোটি শরণার্থী পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয় নেয়। সেই সময় নকশালবাদের সাথে কংগ্রেসের চক্রান্তের ফলে রাজ্যের পরিকাঠামোয় গভীর চাপ সৃষ্টি হয়।[২৯] ১৯৭৪ সালের বসন্ত মহামারীতে রাজ্যে সহস্রাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। ১৯৭৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসকে পরাজিত করে বামফ্রন্ট ক্ষমতায় এলে রাজ্যে গুরুত্বপূর্ণ এক রাজনৈতিক পরিবর্তন সূচিত হয়। এরপর তিন দশকেরও বেশি সময় ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী) (সিপিআই(এম)) নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট সরকার রাজ্যে শাসনভার পরিচালনা করে।[৩০]

১৯৯০-এর দশকের মধ্যভাগে ভারত সরকারের অর্থনৈতিক সংস্কার এবং ২০০০ সালে সংস্কারপন্থী নতুন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নির্বাচনের পর রাজ্যের অর্থনৈতিক উন্নতি ত্বরান্বিত হয়। বর্তমানে রাজ্যের বিভিন্ন অংশে ছোটোবড়ো বেশ কয়েকটি সশস্ত্র জঙ্গিহানার ঘটনা ঘটেছে।[৩১][৩২] আবার শিল্পায়নের জন্য জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে প্রশাসনের সঙ্গে স্থানীয় অধিবাসীদের একাধিক সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।[৩৩][৩৪]

২০০৬ সালে হুগলির সিঙ্গুরে টাটা ন্যানো কারখানার জন্য জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে তীব্র গণ-অসন্তোষ দেখা যায়। জমি অধিগ্রহণ বিতর্কের প্রেক্ষিতে সিঙ্গুর থেকে টাটা গোষ্ঠী কারখানা প্রত্যাহার করে নিলে, তা রাজ্য রাজনীতিতে গভীর প্রভাব বিস্তার করে।[৩৫] ২০০৭ সালে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে অশান্তির জেরে পুলিশের গুলিতে ১৪ জন মারা গেলে রাজ্য রাজনীতি ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এরপর ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন, ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচন ও ২০১০ সালের পৌরনির্বাচনে শাসক বামফ্রন্টের আসন সংখ্যা ক্রমশ হ্রাস পেতে থাকে। অবশেষে ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে বিপুল ভোটে পরাজিত হয়ে রাজ্যের ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট শাসনের অবসান হয়।

ভূগোল ও জলবায়ু

দার্জিলিং শহর
বর্ষাকালে রাজ্যের বহু অংশই বন্যার কবলে পড়ে।

পূর্ব ভারতে হিমালয়ের দক্ষিণে ও বঙ্গোপসাগরের উত্তরে এক সংকীর্ণ অংশে পশ্চিমবঙ্গ অবস্থিত। রাজ্যের মোট আয়তন ৮৮,৭৫২ বর্গকিলোমিটার (৩৪,২৬৭ বর্গমাইল)।[৩৬] রাজ্যের সর্বোত্তরে অবস্থিত দার্জিলিং হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল পূর্ব হিমালয়ের একটি অংশ। পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ সান্দাকফু (৩,৬৩৬ মিটার বা ১১,৯২৯ ফুট) এই অঞ্চলে অবস্থিত।[৩৭] এই পার্বত্য অঞ্চলকে দক্ষিণে গাঙ্গেয় বদ্বীপ অঞ্চলের থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে সংকীর্ণ তরাই অঞ্চল। অন্যদিকে রাঢ় অঞ্চল গাঙ্গেয় বদ্বীপকে বিচ্ছিন্ন করেছে পশ্চিমের মালভূমি ও উচ্চভূমি অঞ্চলের থেকে। রাজ্যের সর্বদক্ষিণে একটি নাতিদীর্ঘ উপকূলীয় সমভূমিও বিদ্যমান। অন্যদিকে সুন্দরবন অঞ্চলের ম্যানগ্রোভ অরণ্য গাঙ্গেয় বদ্বীপের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য।

দার্জিলিং হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে কালিম্পঙের কাছে তিস্তা নদীর তীর ঘেঁষে ৩১ ক জাতীয় সড়ক

পশ্চিমবঙ্গের প্রধান নদী গঙ্গা রাজ্যকে দ্বিধাবিভক্ত করেছে। এই নদীর একটি শাখা পদ্মা নাম ধারণ করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে; অপর শাখাটি ভাগীরথীহুগলি নামে পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তিস্তা, তোরষা, জলঢাকা, ফুলহারমহানন্দা উত্তরবঙ্গের প্রধান নদনদী। পশ্চিমের মালভূমি অঞ্চল থেকে উৎপন্ন নদনদীগুলির মধ্যে প্রধান হল দামোদর, অজয়কংসাবতীগাঙ্গেয় বদ্বীপসুন্দরবন অঞ্চলে অজস্র নদনদী ও খাঁড়ি দেখা যায়। নদীতে বেপরোয়া বর্জ্য নিক্ষেপের ফলে গঙ্গার দূষণ পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম প্রধান সমস্যা।[৩৮] রাজ্যের অন্তত নয়টি জেলায় আর্সেনিক দূষিত ভৌমজলের সমস্যা রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্ধারিত ১০ µg/লিটারের অধিক মাত্রার আর্সেনিক দূষিত জল পান করে ৮৭ লক্ষ মানুষ।[৩৯]

পশ্চিমবঙ্গ গ্রীষ্মপ্রধান উষ্ণ জলবায়ু অঞ্চলের অন্তর্গত। রাজ্যের প্রধান ঋতু চারটি, যেমন: শুষ্ক গ্রীষ্মকাল, আর্দ্র গ্রীষ্মকাল বা বর্ষাকাল, শরৎকাল ও শীতকাল। বদ্বীপ অঞ্চলের গ্রীষ্মকাল আর্দ্র হলেও, পশ্চিমের উচ্চভূমি অঞ্চলে উত্তর ভারতের মতো শুষ্ক গ্রীষ্মকাল। রাজ্যে গ্রীষ্মকালের গড় তাপমাত্রা ৩৮° সেলসিয়াস (১০০° ফারেনহাইট) থেকে ৪৫° সেলসিয়াস (১১৩° ফারেনহাইট)।[৪০] রাত্রিকালে বঙ্গোপসাগর থেকে শীতল আর্দ্র দক্ষিণা বায়ু বয়। গ্রীষ্মের শুরুতে স্বল্পস্থায়ী বৃষ্টিপাতের সঙ্গে যে প্রবল ঝড়, বজ্রপাতশিলাবৃষ্টি হয় তা কালবৈশাখী নামে পরিচিত।[৪১] বর্ষাকাল স্থায়ী হয় জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত। ভারত মহাসাগরীয় মৌসুমি বায়ুর বঙ্গোপসাগরীয় শাখাটি উত্তরপশ্চিম অভিমুখে ধাবিত হয়ে পশ্চিমবঙ্গে বৃষ্টিপাত ঘটায়। রাজ্যে শীতকাল (ডিসেম্বর-জানুয়ারি) আরামদায়ক। এই সময় রাজ্যের সমভূমি অঞ্চলের গড় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হয় ১৫° সেলসিয়াস (৫৯° ফারেনহাইট)।[৪০] শীতকালে শুষ্ক শীতল উত্তরে বাতাস বয়। এই বায়ু তাপমাত্রার সঙ্গে সঙ্গে আর্দ্রতার মাত্রাও কমিয়ে দেয়। যদিও দার্জিলিং হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে প্রচণ্ড ঠান্ডা পড়ে। এই সময়ে এই অঞ্চলের কোথাও কোথাও তুষারপাতও হয়।

জীবজগৎ

রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার
নেওড়া উপত্যকা জাতীয় উদ্যানে সূর্যাস্ত
পশ্চিমবঙ্গের রাষ্ট্রীয় প্রতীক
পশু মেছোবাঘ[৪২]
পাখি ধলাগলা মাছরাঙা
বৃক্ষ ছাতিম [৪৩]
ফুল শিউলি [৪৩]

পশ্চিমবঙ্গ জৈব বৈচিত্র্যে পরিপূর্ণ। এর প্রধান কারণ হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল থেকে উপকূলীয় সমভূমি পর্যন্ত সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ভূপৃষ্ঠের উচ্চতার তারতম্য। রাজ্যের ভৌগোলিক এলাকার মাত্র ১৪ শতাংশ বনভূমি; যা জাতীয় গড় ২৩ শতাংশের চেয়ে অনেকটাই কম।[৪৪][৪৫] রাজ্যের আয়তনের ৪ শতাংশ সংরক্ষিত এলাকা[৪৬] বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরবনের একটি অংশ পশ্চিমবঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত।[৪৭]

উদ্ভিজ্জভৌগোলিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণাঞ্চলকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়, যেমন: গাঙ্গেয় সমভূমি ও সুন্দরবনের লবনাক্ত ম্যানগ্রোভ অরণ্যভূমি।[৪৮] গাঙ্গেয় সমভূমির পললমৃত্তিকা এবং প্রচুর বৃষ্টিপাত এই অঞ্চলকে বিশেষভাবে উর্বর করে তুলেছে।[৪৮] রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের উদ্ভিদপ্রকৃতি পার্শ্ববর্তী রাজ্য ঝাড়খণ্ডের ছোটোনাগপুর মালভূমির উদ্ভিদপ্রকৃতির সমরূপ।[৪৮] এই অঞ্চলের প্রধান অর্থকরী বৃক্ষ হল শাল। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার উপকূলীয় অঞ্চলের উদ্ভিদপ্রকৃতি উপকূলীয় ধরনের। এই অঞ্চলের প্রধান বৃক্ষ হল ঝাউ। সুন্দরবন অঞ্চলের সর্বাপেক্ষা মূল্যবান বৃক্ষ সুন্দরী গাছ। এই গাছ এই অঞ্চলের সর্বত্র দেখতে পাওয়া যায় এবং সুন্দরবনের নামকরণও এই গাছের নামেই হয়েছে।[৪৯] উত্তরবঙ্গের উদ্ভিদপ্রকৃতির প্রধান তারতম্যের কারণ এই অঞ্চলের উচ্চতা ও বৃষ্টিপাত। উদাহরণস্বরূপ, হিমালয়ের পাদদেশে ডুয়ার্স অঞ্চলে ঘন শাল ও অন্যান্য ক্রান্তীয় চিরহরিৎ বৃক্ষের বন দেখা যায়।[৫০] আবার ১০০০ মিটার উচ্চতায় উদ্ভিদের প্রকৃতি উপক্রান্তীয়। ১,৫০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত দার্জিলিঙে ওক, কনিফার, রডোডেনড্রন প্রভৃতি গাছের নাতিশীতোষ্ণমণ্ডলীয় অরণ্য দেখা যায়।[৫০]

সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের জন্য বিখ্যাত। রাজ্যে মোট ছয়টি জাতীয় উদ্যান আছে[৫১]সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান, বক্সা জাতীয় উদ্যান, গোরুমারা জাতীয় উদ্যান, নেওড়া উপত্যকা জাতীয় উদ্যান, সিঙ্গালীলা জাতীয় উদ্যানজলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান। রাজ্যের অন্যান্য বন্যপ্রাণীর মধ্যে ভারতীয় গণ্ডার, এশীয় হাতি, হরিণ, বাইসন, চিতাবাঘ, গৌর ও কুমির উল্লেখযোগ্য। রাজ্যের পক্ষীজগৎও বৈচিত্র্যে পরিপূর্ণ। পরিযায়ী পাখিদের শীতকালে এ রাজ্যে আসতে দেখা যায়।[৪৬] সিঙ্গালীলা জাতীয় উদ্যানের মতো উচ্চ পার্বত্য বনভূমি অঞ্চলে বার্কিং ডিয়ার, রেড পান্ডা, চিঙ্কারা, টাকিন, সেরো, প্যাঙ্গোলিন, মিনিভেট, কালিজ ফেজান্ট প্রভৃতি বন্যপ্রাণীর সন্ধান মেলে। বেঙ্গল টাইগার ছাড়া সুন্দরবন অঞ্চলে গঙ্গা নদী শুশুক, নদী কচ্ছপ, স্বাদুপানির কুমিরলোনা পানির কুমির প্রভৃতি বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির বন্যপ্রাণীও দেখা যায়।[৫২] ম্যানগ্রোভ অরণ্য প্রাকৃতিক মৎস্য উৎপাদন কেন্দ্রের কাজও করে। এখানে বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় মাছ দেখা যায়।[৫২]

সরকার ব্যবস্থা ও রাজনীতি

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সচিবালয় (মহাকরণ)
রাজভবন
পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ বিচারালয় কলকাতা হাইকোর্ট

ভারতের অন্যান্য রাজ্যের মতো পশ্চিমবঙ্গও প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রের সংসদীয় পদ্ধতিতে শাসিত হয়। রাজ্যের সকল নাগরিকের জন্য সার্বজনীন ভোটাধিকার স্বীকৃত। পশ্চিমবঙ্গের আইনসভা বিধানসভা নামে পরিচিত। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে এই বিধানসভা গঠিত। বিধানসভার সদস্যরা একজন অধ্যক্ষ ও একজন উপাধ্যক্ষকে নির্বাচিত করেন। অধ্যক্ষ অথবা (অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে) উপাধ্যক্ষ বিধানসভা অধিবেশনে পৌরহিত্য করেন। কলকাতা হাইকোর্ট ও অন্যান্য নিম্ন আদালত নিয়ে রাজ্যের বিচারবিভাগ গঠিত। শাসনবিভাগের কর্তৃত্বভার ন্যস্ত রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার উপর। রাজ্যপাল রাজ্যের আনুষ্ঠানিক প্রধান হলেও, প্রকৃত ক্ষমতা সরকারপ্রধান মুখ্যমন্ত্রীর হাতেই ন্যস্ত থাকে। রাজ্যপালকে নিয়োগ করেন ভারতের রাষ্ট্রপতি। বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতাকে রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করেন; এবং মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে রাজ্যপালই অন্যান্য মন্ত্রীদের নিয়োগ করে থাকেন। মন্ত্রিসভা বিধানসভার নিকট দায়বদ্ধ থাকে। পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা এককক্ষীয়। এই সভার সদস্য সংখ্যা ২৯৫ জন; এঁদের মধ্যে ২৯৪ জন নির্বাচিত এবং একজন অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান সম্প্রদায় থেকে মনোনীত। বিধানসভার সদস্যদের বিধায়ক বলা হয়।[৫৩][৫৪] বিধানসভার স্বাভাবিক মেয়াদ পাঁচ বছর; তবে মেয়াদ শেষ হবার আগেও বিধানসভা ভেঙে দেওয়া যায়। গ্রাম ও শহরাঞ্চলে স্থানীয় স্বায়ত্বশাসন সংস্থাগুলি যথাক্রমে পঞ্চায়েতপুরসভা নামে পরিচিত। এই সকল সংস্থাও নিয়মিত নির্বাচনের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। পশ্চিমবঙ্গ (ভারতীয় বঙ্গ) থেকে ভারতীয় সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় ৪২ জন ও উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় ১৬ জন সদস্য প্রতিনিধিত্ব করেন।[৫৫]

পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে দুই প্রধান প্রতিপক্ষ শক্তি হল ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী) (সিপিআই(এম)) নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্টসর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস২০০৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ২৩৫টি আসন দখল করে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় আসে। বিগত ৩৪ বছর এই বামফ্রন্ট পশ্চিমবঙ্গ শাসন করেছে। এই সরকার ছিল বিশ্বের দীর্ঘতম মেয়াদের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত কমিউনিস্ট সরকার।[৩০][৫৬][৫৭] ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে, ২২৬টি আসন দখল করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস-জাতীয় কংগ্রেস জোট বামফ্রন্টকে পরাজিত করে পশ্চিমবঙ্গে সরকার গঠন করছে।

প্রশাসনিক বিভাগ

প্রশাসনিক কাজের সুবিধার জন্য পশ্চিমবঙ্গকে তিনটি বিভাগ ও ২০টি (অধুনা ঘোষিত আলিপুরদুয়ার জেলাটিকে ধরে) জেলায় বিভক্ত করা হয়েছে।[৫৮] এগুলি হল:

প্রেসিডেন্সি বিভাগ বর্ধমান বিভাগ জলপাইগুড়ি বিভাগ পশ্চিমবঙ্গের জেলা-মানচিত্র

প্রতিটি জেলার শাসনভার একজন জেলাশাসক বা জেলা কালেক্টরের হাতে ন্যস্ত থাকে। তিনি "ভারতীয় প্রশাসনিক কৃত্যক" (আইএএস) বা "পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসন কৃত্যক" (ডব্লিউবিসিএস) কর্তৃক নিযুক্ত হন।[৫৯] প্রতিটি জেলা মহকুমার বিভক্ত। মহকুমার শাসনভার মহকুমা-শাসকের হাতে ন্যস্ত থাকে। মহকুমাগুলি আবার ব্লকে বিভক্ত। ব্লকগুলি গঠিত হয়েছে পঞ্চায়েতপুরসভা নিয়ে।[৫৮]

কলকাতা পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী তথা বৃহত্তম শহর। কলকাতা ভারতের তৃতীয় বৃহৎ মহানগর।[৬০] এবং বৃহত্তর কলকাতা দেশের তৃতীয় বৃহত্তম নগরাঞ্চল।[৬১] উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ি রাজ্যের অপর এক অর্থনৈতিক গুরুত্বসম্পন্ন মহানগর। শিলিগুড়ি করিডোরে অবস্থিত এই শহর উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে অবশিষ্ট দেশের সংযোগ রক্ষা করছে। আসানসোলদুর্গাপুর রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের শিল্পতালুকে অবস্থিত অপর দুটি মহানগর।[৬২] রাজ্যের অন্যান্য শহরগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হাওড়া, রাণীগঞ্জ, হলদিয়া, জলপাইগুড়ি, খড়গপুর, বর্ধমান, দার্জিলিং, মেদিনীপুর, তমলুক, ইংরেজ বাজারকোচবিহার[৬২]

অর্থনীতি

কলকাতা পশ্চিমবঙ্গের প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র
পশ্চিমবঙ্গের প্রধান খাদ্য ও পণ্যফসল যথাক্রমে ধানপাট
মোট রাজ্য অভ্যন্তরীণ উৎপাদন, বর্তমান মূল্যে (৯৩-৯৪ ভিত্তি)[৬৩]

ভারতীয় টাকার কোটির অঙ্কে

বছর মোট রাজ্য অভ্যন্তরীণ উৎপাদন
১৯৯৯-২০০০ ১৩৫,১৮২
২০০০-২০০১ ১৪৩,৫৩২
২০০১-২০০২ ১৫৭,১৩৬
২০০২-২০০৩ ১৬৮,০৪৭
২০০৩-২০০৪ ১৮৯,০৯৯
২০০৪-২০০৫ ২০৮,৫৭৮
২০০৫-২০০৬ ২৩৬,০৪৪

পশ্চিমবঙ্গের অধিকাংশ মানুষ কৃষিজীবী। রাজ্যের প্রধান খাদ্যফসল হল ধান। অন্যান্য খাদ্যফসলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ডাল, তৈলবীজ, গম, তামাক, আখআলু। এই অঞ্চলের প্রধান পণ্যফসল হল পাটচা উৎপাদনও বাণিজ্যিকভাবে করা হয়ে থাকে; উত্তরবঙ্গ দার্জিলিং ও অন্যান্য উচ্চ মানের চায়ের জন্য বিখ্যাত।[৬৪] যদিও রাজ্যের মোট আভ্যন্তরিণ উৎপাদনে প্রধান অবদানকারী হল চাকুরিক্ষেত্র; এই ক্ষেত্র থেকে রাজ্যের মোট আভ্যন্তরিণ উৎপাদনের ৫১ শতাংশ আসে; অন্যদিকে কৃষিক্ষেত্র থেকে আসে ২৭ শতাংশ ও শিল্পক্ষেত্র থেকে আসে ২২ শতাংশ।[৬৫] রাজ্যের শিল্পকেন্দ্রগুলি কলকাতা ও পশ্চিমের খনিজসমৃদ্ধ উচ্চভূমি অঞ্চলে কেন্দ্রীভূত। দুর্গাপুর-আসানসোল কয়লাখনি অঞ্চলে রাজ্যের প্রধান প্রধান ইস্পাতকেন্দ্রগুলি অবস্থিত।[৬৪] ইঞ্জিনিয়ারিং দ্রব্যাদি, ইলেকট্রনিকস, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, কেবল, ইস্পাত, চামড়া, বস্ত্র, অলংকার, যুদ্ধজাহাজ, অটোমোবাইল, রেলওয়ে কোচ ও ওয়াগন প্রভৃতি নির্মাণশিল্প রাজ্যের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

স্বাধীনতার বেশ কয়েক বছর পরও খাদ্যের চাহিদা মেটানোর ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ (ভারতীয় বঙ্গ) কেন্দ্রীয় সরকারের মুখাপেক্ষী ছিল। ভারতের সবুজ বিপ্লব পশ্চিমবঙ্গে কোনো প্রভাব বিস্তার করতে না পারায় এই রাজ্যের খাদ্য উৎপাদন অপর্যাপ্তই রয়ে যায়। তবে ১৯৮০-এর দশক থেকে রাজ্যে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে উদ্বৃত্ত খাদ্য উৎপাদিত হয়ে থাকে।[৬৬] ১৯৮০-৮১ সালে ভারতের সামগ্রিক শিল্প উৎপাদনে পশ্চিমবঙ্গের অংশ ছিল ৯.৮ শতাংশ; ১৯৯৭-৯৮ সালে এই অংশ কমে দাঁড়ায় ৫ শতাংশ। তবে চাকুরিক্ষেত্র জাতীয় হারের তুলনায় অধিক হারে প্রসারিত হয়েছে এই রাজ্যে।

২০০৩-২০০৪ সালের হিসেব অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গ (ভারতীয় বঙ্গ) ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থব্যবস্থা। রাজ্যের নিট আভ্যন্তরীন উৎপাদন ২১.৫ মার্কিন ডলার[৬৫] ২০০১-২০০২ সালে রাজ্যের গড় রাজ্য আভ্যন্তরীন উৎপাদন ছিল ৭.৮ শতাংশেরও বেশি — যা জাতীয় জিডিপি বৃদ্ধির হারকেও ছাপিয়ে যায়।[৬৭] রাজ্য প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। এই বিনিয়োগ মূলত আসে সফটওয়্যার ও ইলেকট্রনিকস ক্ষেত্রে।[৬৫] কলকাতা বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের একটি অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। কলকাতা তথা রাজ্যের সামগ্রিক আর্থিক উন্নতির দৌলতে বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ (ভারতীয় বঙ্গ) দেশের তৃতীয় দ্রুততম বর্ধনশীল অর্থব্যবস্থা।[৬৮] যদিও, এই কৃষিভিত্তিক রাজ্যে দ্রুত শিল্পায়নের জন্য জমি অধিগ্রহণের প্রশ্নে নানারকম বিতর্ক দানা বেঁধেছে।[৬৯] ন্যাসকম-গার্টনার পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যুৎ পরিকাঠামোকে দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ আখ্যা দিয়েছে।[৭০] পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য আভ্যন্তরিন উৎপাদন বেড়ে ২০০৪ সালে ১২.৭ শতাংশ এবং ২০০৫ সালে ১১.০ শতাংশ হয়।[৭১] চীনের দৃষ্টান্ত থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য কমিউনিস্ট পদ্ধতির পরিবর্তে ধনতান্ত্রিক পন্থায় রাজ্যের উচ্চাকাঙ্ক্ষী অর্থনৈতিক সংস্কারের পথ গ্রহণ করেছিলেন।[৭২]

পরিবহন ব্যবস্থা

ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য দার্জিলিং হিমালয়ান রেল

পশ্চিমবঙ্গে ভূতল সড়কপথের মোট দৈর্ঘ্য ৯২,০২৩ কিলোমিটার (৫৭,১৮০ মাইল)।[৭৩] এর মধ্যে জাতীয় সড়ক ২,৩৭৭ কিলোমিটার (১,৪৭৭ মাইল),[৭৪] এবং রাজ্য সড়ক ২,৩৯৩ কিলোমিটার (১,৪৮৭ মাইল)। রাজ্যে সড়কপথের ঘনত্ব প্রতি ১০০ বর্গকিলোমিটারে ১০৩.৬৯ কিলোমিটার (প্রতি ১০০ বর্গমাইলে ১৬৬.৯২ মাইল); যা জাতীয় ঘনত্ব প্রতি ১০০ বর্গকিলোমিটারে ৭৪.৭ কিলোমিটারের (প্রতি ১০০ বর্গমাইলে ১২০ মাইল) থেকে বেশি।[৭৫] রাজ্যের সড়কপথে যানবাহনের গড় গতিবেগ ৪০-৫০ কিলোমিটার/ঘণ্টার (২৫-৩১ মাইল/ঘণ্টা) মধ্যে থাকে। গ্রাম ও শহরাঞ্চলে গতিবেগ ২০-২৫ কিলোমিটার/ঘণ্টার (১২-১৬ মাইল/ঘণ্টা) মধ্যে থাকে। এই মূল কারণ রাস্তার নিম্নমান ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাব। রাজ্যে রেলপথের মোট দৈর্ঘ্য ৩,৮২৫ কিলোমিটার (২,৩৭৭ মাইল)।[৭৬] ভারতীয় রেলের পূর্ব রেলদক্ষিণ পূর্ব রেল ক্ষেত্রদুটির সদর কলকাতায় অবস্থিত।[৭৭] রাজ্যের উত্তরভাগের রেলপথ উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের অন্তর্গত। কলকাতা মেট্রো ভারতের প্রথম ভূগর্ভস্থ মেট্রো রেল পরিষেবা।[৭৮] উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের অংশ দার্জিলিং হিমালয়ান রেল একটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃত।[৭৯]

পশ্চিমবঙ্গের একমাত্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কলকাতার নিকটেই উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার দমদমে অবস্থিত। শিলিগুড়ির নিকটবর্তী বাগডোগরা বিমানবন্দর রাজ্যের অপর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দর; সাম্প্রতিককালে এটিকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের স্তরে উন্নীত করা হয়েছে।উত্তর-পশ্চিমবঙ্গের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দর হল কোচবিহার বিমানবন্দর। এটি বৃহত্তর অসম-বাংলা সীমান্ত এলাকায় পরিষেবা দেয়।[৮০]

কলকাতা বন্দর পূর্ব ভারতের একটি প্রধান নদীবন্দর। কলকাতা পোর্ট ট্রাস্ট কলকাতা ও হলদিয়া ডকের দায়িত্বপ্রাপ্ত।[৮১] কলকাতা বন্দর থেকে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের পোর্ট ব্লেয়ার পর্যন্ত যাত্রী পরিবহন পরিষেবা ও ভারত ও বহির্ভারতের বন্দরগুলিতে শিপিং কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার মাধ্যমে পণ্য পরিবহন পরিষেবা চালু আছে। রাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলে, বিশেষত সুন্দরবন অঞ্চলে, নৌকা পরিবহনের প্রধান মাধ্যম। কলকাতা ভারতের একমাত্র শহর যেখানে আজও ট্রাম গণপরিবহনের অন্যতম মাধ্যম। এই পরিষেবার দায়িত্বে রয়েছে ক্যালকাটা ট্রামওয়েজ কোম্পানি[৮২]

পশ্চিমবঙ্গের বাস পরিষেবা অপর্যাপ্ত। কলকাতা রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থা, উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা, দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থা, পশ্চিমবঙ্গ ভূতল পরিবহন নিগম ও ক্যালকাটা ট্রামওয়েজ কোম্পানি এই পরিষেবার দায়িত্বপ্রাপ্ত। এছাড়া বেসরকারি কোম্পানিগুলিও বাস চালিয়ে থাকে। শহরের বিশেষ বিশেষ রুটে মিটার ট্যাক্সি ও অটোরিকশা চলে। কম দুরত্বের যাত্রার জন্য রাজ্যের সর্বত্র সাইকেল রিকশা ও কলকাতাতে সাইকেল রিকশা ও হাতে-টানা রিকশা ব্যবহার করা হয়।

জনপরিসংখ্যান

পশ্চিমবঙ্গের ধর্মবিশ্বাস[৮৪]
ধর্ম শতকরা হার
হিন্দুধর্ম
  
৭২.৫%
ইসলাম
  
২৫.২%
অন্যান্য
  
২.৩%

২০১১ সালের জনগণনার তাৎক্ষণিক ফলাফল অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যা ৯১,৩৪৭, ৭৩৬ (ভারতের মোট জনসংখ্যার ৭.৫৫%)। জনসংখ্যার ভিত্তিতে পশ্চিমবঙ্গ ভারতের চতুর্থ বৃহত্তম রাজ্য।[১] জনসংখ্যার সিংহভাগই বাঙালি[৮৫] মাড়োয়ারি, বিহারিওড়িয়া সংখ্যালঘুরা রাজ্যের নানা প্রান্তে ছড়িয়েছিটিয়ে বাস করে। দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চলে শেরপাতিব্বতিদের দেখা যায়। দার্জিলিঙে নেপালি গোর্খা জাতির লোকও প্রচুর সংখ্যায় বাস করে। পশ্চিমবঙ্গে সাঁওতাল, কোল, রাজবংশীটোটো আদিবাসীরাও বাস করে। রাজ্যের রাজধানী কলকাতায় চীনা, তামিল, গুজরাতি, অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান, আর্মেনিয়ান, পাঞ্জাবিপারসি সংখ্যালঘুদেরও খুব অল্প সংখ্যায় বাস করতে দেখা যায়।[৮৬] ভারতের একমাত্র চায়নাটাউনটি পূর্ব কলকাতায় অবস্থিত।[৮৭]

রাজ্যের সরকারি ভাষা বাংলা ও ইংরেজি।[৮৮] দার্জিলিং জেলার তিনটি মহকুমায় সরকারি ভাষা হল নেপালি[৮৮] ২০০১ সালের জনগণনা অনুসারে, ভাষাগত জনসংখ্যার বৃহত্তম থেকে ক্ষুদ্রতম ক্রম অনুযায়ী ভাষাগুলি হল বাংলা, হিন্দি, সাঁওতালি, উর্দু, নেপালি ও ওড়িয়া[৮৮] রাজ্যের কোনো কোনো অংশে রাজবংশীহো ভাষাও প্রচলিত।

২০০১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, হিন্দুধর্ম পশ্চিমবঙ্গের প্রধান ধর্মবিশ্বাস। হিন্দুধর্মাবলম্বীরা রাজ্যের জনসংখ্যার মোট ৭২.৫ শতাংশ। অন্যদিকে ইসলাম দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মবিশ্বাস এবং বৃহত্তম সংখ্যালঘু ধর্ম। মুসলমানরা রাজ্যের জনসংখ্যার মোট ২৫.২ শতাংশ। শিখ, খ্রিষ্টান ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা জনসংখ্যার অবশিষ্ট অংশ।[৮৪] পশ্চিমবঙ্গের জনঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৯০৪ জন। এই রাজ্য জনঘনত্বের বিচারে ভারতের রাজ্যগুলির মধ্যে প্রথম স্থানাধিকারী।[৮৯] ভারতের মোট জনসংখ্যার ৭.৮১ শতাংশ বাস করে পশ্চিমবঙ্গে।[৯০] ১৯৯১-২০০১ সময়কালের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১৭.৮৪ শতাংশ; যা জাতীয় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ২১.৩৪ শতাংশের থেকে কম।[৯১] রাজ্যে লিঙ্গানুপাতের হার প্রতি ১০০০ পুরুষে ৯৩৪ জন মহিলা।[৯১]

পশ্চিমবঙ্গের সাক্ষরতার হার ৭৭.০৮%, যা জাতীয় গড় ৭৪.০৪%-এর চেয়ে বেশি।[৯২] ১৯৯১-১৯৯৫ সালের তথ্য থেকে জানা যায়, এই রাজ্যের মানুষের গড় আয়ু ৬৩.৪ বছর, যা জাতীয় স্তরে গড় আয়ু ৬১.৭ বছরের থেকে কিছু বেশি।[৯৩] রাজ্যের ৭২ শতাংশ মানুষ বাস করেন গ্রামাঞ্চলে। ১৯৯৯-২০০০ সালের হিসেব অনুযায়ী, রাজ্যের ৩১.৮৫ শতাংশ মানুষ বাস করেন দারিদ্র্যসীমার নিচে।[৬৬] তফসিলি জাতি ও উপজাতিগুলি গ্রামীণ জনসংখ্যার যথাক্রমে ২৮.৬ শতাংশ ও ৫.৮ শতাংশ এবং নগরাঞ্চলীয় জনসংখ্যার ১৯.৯ শতাংশ ও ১.৫ শতাংশ।[৬৬]

রাজ্যে অপরাধের হার প্রতি এক লক্ষে ৮২.৬; যা জাতীয় হারের অর্ধেক।[৯৪] ভারতের ৩২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে এই হার চতুর্থ নিম্নতম।[৯৫] যদিও রাজ্যের বিশেষ ও স্থানীয় আইন সংক্রান্ত অপরাধের হার সর্বোচ্চ বলেই জানা যায়।[৯৬] রাজ্যে মহিলাদের বিরুদ্ধে কৃত অপরাধের হার ৭.১; উল্লেখ্য এই ক্ষেত্রে জাতীয় হার ১৪.১।[৯৫] পশ্চিমবঙ্গ (ভারতীয় বঙ্গ) ভারতের প্রথম রাজ্য যেটি নিজস্ব মানবাধিকার কমিশন গঠন করেছিল।[৯৫]

সংস্কৃতি

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, এশিয়া থেকে প্রথম নোবেল পুরস্কার বিজয়ী সাহিত্যিক ও ভারতের জাতীয় সংগীতের রচয়িতা।
স্বামী বিবেকানন্দ, ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম বেদান্তযোগ দর্শনের প্রচারক[৯৭]হিন্দুধর্মকে বিশ্বের প্রধান ধর্মগুলির পর্যায়ে উন্নীত করা ও আন্তঃধর্ম সুসম্পর্ক স্থাপনের একজন উল্লেখযোগ্য প্রবক্তা।[৯৮]

সাহিত্য

বাংলা ভাষায় রচিত সাহিত্য যথেষ্ট সমৃদ্ধ ও প্রাচীন ঐতিহ্যের বাহক। বাংলা ভাষার প্রাচীনতম নিদর্শন চর্যাপদের (দশম-দ্বাদশ শতাব্দী) কবিরা পশ্চিমবঙ্গের রাঢ় অঞ্চলের কথ্য ভাষারীতিকে সাহিত্যের ভাষা হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন।[৯৯] বাংলা সাহিত্যের দ্বিতীয় প্রাচীনতম নিদর্শন শ্রীকৃষ্ণকীর্তন (পঞ্চদশ শতাব্দী) কাব্যের রচয়িতা বড়ু চণ্ডীদাস ছিলেন অধুনা বাঁকুড়া জেলার ছাতনার বাসিন্দা।[১০০] মধ্যযুগে মঙ্গলকাব্য ধারাতেও রাঢ়ের বহু কবির রচনা পাওয়া যায়। মনসামঙ্গল ধারার কবি নারায়ণ দেব পূর্ববঙ্গের কিশোরগঞ্জ অঞ্চলের বাসিন্দা হলেও আদতে রাঢ়বঙ্গের মানুষ ছিলেন।[১০১] এই ধারার কবি কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ ছিলেন গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ অঞ্চলের বাসিন্দা।[১০২] চণ্ডীমঙ্গল ধারার সর্বশ্রেষ্ঠ কবি মুকুন্দরাম চক্রবর্তী ছিলেন বর্ধমান জেলার দামুন্যা গ্রামের অধিবাসী।[১০৩]

এই সাহিত্যের নিদর্শন মঙ্গলকাব্য, শ্রীকৃষ্ণকীর্তন, ঠাকুরমার ঝুলি, ও গোপাল ভাঁড়ের গল্পগুলি। ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীতে বাংলা সাহিত্যের আধুনিকীকরণ সম্পন্ন হয় বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, জীবনানন্দ দাশ, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়, মহাশ্বেতা দেবী, আশাপূর্ণা দেবী প্রমুখ সাহিত্যিকের হাত ধরে।

সংগীত ও নৃত্যকলা

বাংলা সংগীতের এক স্বতন্ত্র ঐতিহ্যবাহী ধারা হল বাউল গান[১০৪] লোকসঙ্গীতের অন্যান্য বিশিষ্ট ধারাগুলি হল গম্ভীরাভাওয়াইয়া। অন্যদিকে বাংলা ধর্মসঙ্গীতের দুটি জনপ্রিয় ধারা হল কীর্তনশ্যামাসংগীত। পশ্চিমবঙ্গের বিষ্ণুপুর শহর হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সংগীতের বিষ্ণুপুরী ঘরানার প্রধান কেন্দ্র। রবীন্দ্রসংগীতনজরুলগীতি অত্যন্ত জনপ্রিয় দুটি সঙ্গীত ধারা। অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীত ধারাগুলির মধ্যে অতুলপ্রসাদী, দ্বিজেন্দ্রগীতি, রজনীকান্তের গানবাংলা আধুনিক গান উল্লেখযোগ্য। ১৯৯০-এর দশকে বাংলা লোকসঙ্গীত ও পাশ্চাত্য সঙ্গীতের সংমিশ্রণে বাংলা গানের এক নতুন যুগের সূত্রপাত ঘটে। এই গান জীবনমুখী গান নামে পরিচিত ছিল। বাংলার নৃত্যকলায় মিলন ঘটেছে আদিবাসী নৃত্য ও ভারতীয় ধ্রুপদি নৃত্যের। পুরুলিয়ার ছৌ নাচ একপ্রকার দুর্লভ মুখোশনৃত্যের উদাহরণ।[১০৫]

চলচ্চিত্র

কলকাতার টালিগঞ্জ অঞ্চলে বাংলা চলচ্চিত্রের প্রধান কেন্দ্রটি অবস্থিত। এই কারণে এই কেন্দ্রটি হলিউডের অনুকরণে "টলিউড" নামে পরিচিত হয়ে থাকে। বাংলা চলচ্চিত্র শিল্প আর্ট ফিল্ম বা শিল্পগুণান্বিত চলচ্চিত্রে সুসমৃদ্ধ। সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন, তপন সিংহ, ঋত্বিক ঘটক প্রমুখ বিশিষ্ট পরিচালকের চলচ্চিত্র বিশ্ববন্দিত। সমসাময়িককালের বিশিষ্ট পরিচালকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, গৌতম ঘোষ, অপর্ণা সেনঋতুপর্ণ ঘোষ। বাংলা সিনেমার পাশাপাশি এই রাজ্যে অবশ্য হিন্দি সিনেমাও অত্যন্ত জনপ্রিয়।

শিল্পকলা

বাংলা ভারতীয় শিল্পকলার আধুনিকতার পথপ্রদর্শক। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বলা হয় আধুনিক ভারতীয় শিল্পকলার জনক। বঙ্গীয় শিল্প ঘরানা ইউরোপীয় রিয়্যালিস্ট ঐতিহ্যের বাইরে এমন একটি নিজস্ব ধারা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছিল যা ব্রিটিশ সরকারের ঔপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থার আর্ট কলেজগুলিতে শেখানো হত। এই ধারার অন্যান্য বিশিষ্ট চিত্রকরেরা হলেন গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, রামকিঙ্কর বেইজযামিনী রায়। স্বাধীনতার পরে কলকাতা গোষ্ঠী ও সোসাইটি অফ কনটেম্পোরারি আর্টিস্টস-এর শিল্পীরা ভারতীয় শিল্পকলার জগতে বিশিষ্ট স্থানের অধিকারী হন।

উৎসব ও মেলা

দুর্গাপূজা পশ্চিমবঙ্গের বৃহত্তম উৎসব।[১০৬] শরৎকালে আশ্বিন-কার্তিক মাসে (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর) চারদিনব্যাপী এই উৎসব আয়োজিত হয়ে থাকে। পশ্চিমবঙ্গের অপর একটি বহুপ্রচলিত হিন্দু উৎসব হল কালীপূজা। এই পূজা অনুষ্ঠিত হয় দুর্গাপূজার পরবর্তী অমাবস্যা তিথিতে। রাজ্যের অন্যান্য উল্লেখযোগ্য হিন্দু উৎসবগুলি হল পয়লা বৈশাখ, অক্ষয় তৃতীয়া, দশহরা, রথযাত্রা, ঝুলনযাত্রা, জন্মাষ্টমী, বিশ্বকর্মা পূজা, মহালয়া, কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা, ভ্রাতৃদ্বিতীয়া, নবান্ন, জগদ্ধাত্রী পূজা, সরস্বতী পূজা, দোলযাত্রা, শিবরাত্রিচড়ক-গাজন। রথযাত্রা উপলক্ষে হুগলি জেলার মাহেশ ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদলে বিশেষ মেলা ও জনসমাগম হয়ে থাকে। হুগলি জেলার চন্দননগর ও নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পূজা ও জগদ্ধাত্রী বিসর্জন শোভাযাত্রা বিখ্যাত। মকর সংক্রান্তির দিন বীরভূম জেলার কেন্দুলিতে জয়দেব মেলা উপলক্ষে বাউল সমাগম ঘটে। পৌষ সংক্রান্তির দিন হুগলি নদীর মোহনার কাছে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার গঙ্গাসাগরে আয়োজিত গঙ্গাসাগর মেলায় সারা ভারত থেকেই পুণ্যার্থী সমাগম হয়। ৪ঠা মাঘ বাঁকুড়ার কেঞ্জেকুড়া গ্রামে দ্বারকেশ্বর নদীর তীরে এক বিশাল মুড়ি মেলা হয়। শিবরাত্রি উপলক্ষে জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ির নিকটে প্রাচীন জল্পেশ্বর শিবমন্দিরকে কেন্দ্র করে আয়োজিত হয় বিখ্যাত জল্পেশ্বর মেলা। শ্রাবণ সংক্রান্তির সর্পদেবী মনসার পূজা উপলক্ষে রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলে আয়োজিত হয় ঝাঁপান উৎসব। বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুরের ঝাঁপান উৎসব সবচেয়ে বিখ্যাত। বাঁকুড়া জেলার রাইপুর ব্লককের অন্তর্গত মটগোদা গ্রামে ধর্মরাজ পুজো উপলক্ষে মাঘ মাসের শেষ শনিবারে অনুষ্ঠিত হয় শনিমেলা;কোচবিহার শহরের মদনমোহন মন্দিরকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত রাসমেলা পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম বৃহত্তম মেলা।[১০৭]

ইসলামি উৎসব মধ্যে ঈদুজ্জোহা, ঈদুলফিতর, মিলাদ-উন-নবি, শবেবরাতমহরম বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে পালিত হয়। খ্রিষ্টান উৎসব বড়দিনগুড ফ্রাইডে; বৌদ্ধ উৎসব বুদ্ধপূর্ণিমা; জৈন উৎসব মহাবীর জয়ন্তী এবং শিখ উৎসব গুরু নানক জয়ন্তীও মহাধুমধামের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়।

পশ্চিমবঙ্গের সাংস্কৃতিক উৎসবগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল স্বাধীনতা দিবস, প্রজাতন্ত্র দিবস, পঁচিশে বৈশাখ, নেতাজি জয়ন্তী ইত্যাদি। প্রতি বছর পৌষ মাসে শান্তিনিকেতনে বিখ্যাত পৌষমেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে।[১০৭] বইমেলা পশ্চিমবঙ্গের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক উৎসব আন্তর্জাতিক কলকাতা পুস্তকমেলা রাজ্যে একমাত্র তথা বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বইমেলা। আঞ্চলিক বইমেলাগুলি রাজ্যের সকল প্রান্তেই বছরের নানা সময়ে আয়োজিত হয়। এছাড়া সারা বছরই রাজ্য জুড়ে নানা ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে।

শিক্ষা

সেন্ট জোসেফ'স কলেজ, নর্থ পয়েন্ট, দার্জিলিং
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
আইআইএম কলকাতা
চিত্র:IIT KGP Main Building.JPG
আইআইটি খড়গপুর

পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যালয়গুলি রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে অথবা বেসরকারি উদ্যোগে পরিচালিত হয়ে থাকে। বেসরকারি উদ্যোগের মধ্যে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনও বিদ্যালয় পরিচালনা করে। প্রধানত বাংলাইংরেজি মাধ্যমেই শিক্ষাব্যবস্থা প্রচলিত; তবে সাঁওতালি, নেপালি, হিন্দিউর্দু ভাষাতেও পঠনপাঠন করার সুযোগ এ-রাজ্যে অপ্রতুল নয়। মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলি পশ্চিমবঙ্গ মধ্য শিক্ষা পর্ষদ অথবা কেন্দ্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ (সিবিএসসি) অথবা কাউন্সিল ফর ইন্ডিয়ান স্কুল সার্টিফিকেট একজামিনেশন (আইসিএসই) দ্বারা অনুমোদিত। ১০+২+৩ পরিকল্পনায় মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করার পর ছাত্রছাত্রীদের দুই বছরের জন্য প্রাক-বিশ্ববিদ্যালয় জুনিয়র কলেজে পড়াশোনা করতে হয়। এছাড়াও তারা পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ অথবা কোনো কেন্দ্রীয় বোর্ড অনুমোদিত উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়েও প্রাক-বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনা করতে পারে। এই ব্যবস্থায় তাদের কলাবিভাগ, বাণিজ্যবিভাগ অথবা বিজ্ঞানবিভাগের যেকোনো একটি ধারা নির্বাচন করে নিতে হয়। এই পাঠ্যক্রম সম্পূর্ণ করার পরই তারা সাধারণ বা পেশাদার স্নাতক স্তরের পড়াশোনা করতে পারে।

২০০৬ সালের হিসেব অনুসারে, পশ্চিমবঙ্গের বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা আঠারো।[১০৮][১০৯] কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীনতম ও অন্যতম বৃহৎ আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রয়েছে প্রায় ২০০টি কলেজ।[১১০] বেঙ্গল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটিযাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় রাজ্যের দুটি প্রসিদ্ধ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম।[১১১] শান্তিনিকেতনে অবস্থিত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাতীয় গুরুত্বসম্পন্ন এক প্রতিষ্ঠান।[১১২] অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় (কলকাতা), বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় (বর্ধমান), বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয় (বাঁকুড়া), বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় (মেদিনীপুর), উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় (রাজা রামমোহনপুর, শিলিগুড়ি), বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় (কল্যাণী, নদিয়া), পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়, পশ্চিমবঙ্গ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়, পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়, উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিশ্ববিদ্যালয় উল্লেখযোগ্য। ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আরও তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় – আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে খ্যাতিসম্পন্ন রাজ্যের অন্যান্য উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি হল ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, খড়গপুর, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট, কলকাতা, জাতীয় প্রযুক্তি সংস্থান, দুর্গাপুর (পূর্বতন আঞ্চলিক ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ), ওয়েস্ট বেঙ্গল ন্যাশানাল ইউনিভার্সিটি অফ জুরিডিক্যাল সায়েন্সেস, ভারতীয় বিজ্ঞান শিক্ষা ও অনুসন্ধান সংস্থান, কলকাতা; IISER-K)ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউশন

গণমাধ্যম

২০০৫ সালের হিসেব অনুসারে, পশ্চিমবঙ্গ (ভারতীয় বঙ্গ) থেকে প্রকাশিত সংবাদপত্রের সংখ্যা ৫০৫।[১১৩] এগুলির মধ্যে ৩৮৯টি বাংলা সংবাদপত্র।[১১৩] কলকাতা থেকে প্রকাশিত আনন্দবাজার পত্রিকা ভারতে একক-সংস্করণে সর্বাধিক বিক্রিত বাংলা পত্রিকা। এই পত্রিকার দৈনিক গড় বিক্রির পরিমাণ ১,২৩৪,১২২টি কপি।[১১৩] অন্যান্য উল্লেখযোগ্য বাংলা সংবাদপত্রগুলি হল আজকাল, বর্তমান, সংবাদ প্রতিদিন, উত্তরবঙ্গ সংবাদ, জাগো বাংলা, দৈনিক স্টেটসম্যানগণশক্তিদ্য টেলিগ্রাফ, দ্য স্টেটসম্যান, এশিয়ান এজ, হিন্দুস্তান টাইমসদ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ইংরেজি দৈনিকের নাম। এছাড়াও হিন্দি, গুজরাটি, ওড়িয়া, উর্দুনেপালি ভাষাতেও সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়ে থাকে।

দূরদর্শন পশ্চিমবঙ্গের সরকারি টেলিভিশন সম্প্রচারক। এছাড়া কেবল টেলিভিশনের মাধ্যমে মাল্টিসিস্টেম অপারেটরগণ বাংলা, নেপালি, হিন্দি, ইংরেজি সহ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চ্যানেল সম্প্রচার করে থাকেন। বাংলা ভাষায় সম্প্রচারিত ২৪ ঘণ্টার বাংলা টেলিভিশন সংবাদ-চ্যানেলগুলি হল স্টার আনন্দ, কলকাতা টিভি, ২৪ ঘণ্টা, এনই বাংলা, নিউজ টাইম, চ্যানেল টেন, আর-প্লাস ও তারা নিউজ;[১১৪][১১৫] ২৪ ঘণ্টার টেলিভিশন বিনোদন-চ্যানেলগুলি হল স্টার জলসা, ইটিভি বাংলা, জি বাংলা, আকাশ বাংলা ইত্যাদি। এছাড়া চ্যানেল এইট টকিজ নামে একটি ২৪ ঘণ্টার চলচ্চিত্র-চ্যানেল এবং তারা মিউজিকসঙ্গীত বাংলা নামে দুটি উল্লেখনীয় ২৪ ঘণ্টার সংগীত-চ্যানেলও দৃষ্ট হয়। আকাশবাণী পশ্চিমবঙ্গের সরকারি বেতার কেন্দ্র।[১১৫] বেসরকারি এফএম স্টেশন কেবলমাত্র কলকাতা, শিলিগুড়ি ও আসানসোল শহরেই দেখা যায়।[১১৫] বিএসএনএল, ইউনিনর, টাটা ডোকোমো, আইডিয়া সেলুলার, রিলায়েন্স ইনফোকম, টাটা ইন্ডিকম, ভোডাফোন এসার, এয়ারসেলএয়ারটেল সেলুলার ফোন পরিষেবা দিয়ে থাকে। সরকারি সংস্থা বিএসএনএল ও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা থেকে ব্রডব্যান্ডডায়াল-আপ অ্যাকসেস ইন্টারনেট পরিষেবা পাওয়া যায়।

খেলাধূলা

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ফুটবল স্টেডিয়াম বিধাননগরের যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে বায়ার্ন মিউনিখ-মোহনবাগান ফুটবল ম্যাচের একটি দৃশ্য। উল্লেখ্য, এই ম্যাচটি ছিল জার্মান গোলকিপার অলিভার কানের বিদায়ী ম্যাচ।

ক্রিকেটফুটবল এই রাজ্যের দুটি জনপ্রিয় খেলা। কলকাতা ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র।[১১৬] মোহনবাগান, ইস্ট বেঙ্গলমহমেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মতো দেশের প্রথম সারির জাতীয় ক্লাবগুলি রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করে থাকে।[১১৭] খো খো, কবাডি প্রভৃতি দেশীয় খেলাও এখানে খেলা হয়ে থাকে। ক্যালকাটা পোলো ক্লাব বিশ্বের প্রাচীনতম পোলো ক্লাব বলে পরিগণিত হয়।[১১৮] অন্যদিকে রয়্যাল ক্যালকাটা গলফ ক্লাব গ্রেট ব্রিটেনের বাইরে এই ধরনের ক্লাবগুলির মধ্যে প্রথম।[১১৯]

পশ্চিমবঙ্গে একাধিক সুবৃহৎ স্টেডিয়াম অবস্থিত। সারা বিশ্বে যে দুটি মাত্র লক্ষ-আসন বিশিষ্ট ক্রিকেট স্টেডিয়াম রয়েছে কলকাতার ইডেন গার্ডেনস তার অন্যতম।[১২০] অন্যদিকে বিধাননগরের বহুমুখী স্টেডিয়াম যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ফুটবল স্টেডিয়াম।[১২১][১২২] ক্যালকাটা ক্রিকেট অ্যান্ড ফুটবল ক্লাব বিশ্বের দ্বিতীয় প্রাচীনতম ফুটবল ক্লাব।[১২৩] জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজিত হয় দুর্গাপুর, শিলিগুড়িখড়গপুর শহরেও।[১২৪] পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট ক্রীড়া ব্যক্তিত্বেরা হলেন প্রাক্তন জাতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, অলিম্পিক টেনিস ব্রোঞ্জ পদকজয়ী লিয়েন্ডার পেজ, দাবা আন্তর্জাতিক গ্র্যান্ডমাস্টার দিব্যেন্দু বড়ুয়া প্রমুখ। আবার অতীতের খ্যাতমানা ক্রীড়া ব্যক্তিত্বদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ফুটবলার চুনী গোস্বামী, পি কে বন্দ্যোপাধ্যায়, শৈলেন মান্না, সাঁতারু মিহির সেন, অ্যাথলেট জ্যোতির্ময়ী শিকদার প্রমুখ।[১২৫] পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে প্রচুর সাংস্কৃতিক সংস্থা। কলকাতার জোকায় রয়েছে বাংলার ব্রতচারী সমিতি। ব্রতচারী কেন্দ্রীয় নায়কমন্ডলী, কবি সুকান্তের কিশোর বাহিনী, সব পেয়েছির আসর, মনিমেলা মহাকেন্দ্র ইত্যাদি শিশু কিশোর সংস্থা।

আইপিএল ২০০৮-এর সময় ইডেন গার্ডেন

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. "Area, population, decennial growth rate and density for 2001 and 2011 at a glance for West Bengal and the districts: provisional population totals paper 1 of 2011: West Bengal"। Registrar General & Census Commissioner, India। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জানুয়ারি ২০১২ 
  2. "Sex ratio, 0–6 age population, literates and literacy rate by sex for 2001 and 2011 at a glance for West Bengal and the districts: provisional population totals paper 1 of 2011: West Bengal"। Government of India:Ministry of Home Affairs। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১২ 
  3. "India: Administrative Divisions (population and area)"। Census of India। ২০১২-১২-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-১৭ 
  4. "Why India's Stalinists oppose the US nuclear deal" (aspx)। WSWS। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ২৭, ২০১০ 
  5. "Fresh gunfight between police, Naxals in West Bengal" (aspx)। DNA। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ২৭, ২০১০ 
  6. "A slaughter reveals the inadequacy of India's counterinsurgency effort" (aspx)। The Economist। সংগ্রহের তারিখ Apr 8th 2010  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  7. "While the debate goes on whether trade unions must be allowed in the IT sector, the CITU forms one in West Bengal"। FrontLine। সংগ্রহের তারিখ Dec. 01, 2006  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  8. "Waking up too late"। The Statesman। সংগ্রহের তারিখ ১১ এপ্রিল ২০১০ 
  9. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; rbinsdpstat নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  10. Dineo, Paul; Mills, James (২০০১)। Soccer in South Asia: empire, nation, diaspora। London: Frank Cass Publishers। পৃষ্ঠা 71। আইএসবিএন 978-0-7146-8170-2 
  11. Bose, Mihir (২০০৬)। The magic of Indian cricket: cricket and society in India। Psychology Press। পৃষ্ঠা 240। আইএসবিএন 978-0-415-35691-6 
  12. Das Sharma, Amitabha (২০০২)। "Football and the big fight in Kolkata" (PDF)Football Studies5 (2): 57। সংগ্রহের তারিখ ৫ এপ্রিল ২০১২ 
  13. "Bangldesh: early history, 1000 B.C.–A.D. 1202"Bangladesh: A country study। Washington, D.C.: Library of Congress। ১৯৮৮। সংগ্রহের তারিখ ২ মার্চ ২০১২Historians believe that Bengal, the area comprising present-day Bangladesh and the Indian state of West Bengal, was settled in about 1000 B.C. by Dravidian-speaking peoples who were later known as the Bang. Their homeland bore various titles that reflected earlier tribal names, such as Vanga, Banga, Bangala, Bangal, and Bengal.  অজানা প্যারামিটার |month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  14. "West Bengal may be renamed PaschimBanga"The Hindu। Chennai, India। ১৯ আগস্ট ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১২ 
  15. বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডট কম, ২ আগস্ট ২০১৬।
  16. "History of Bangladesh"। Bangladesh Student Association। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৬ 
  17. "4000-year old settlement unearthed in Bangladesh"। Xinhua। 2006-March।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  18. James Heitzman and Robert L. Worden, সম্পাদক (১৯৮৯)। "Early History, 1000 B.C.-A.D. 1202"। Bangladesh: A country study। Library of Congress। 
  19. Chowdhury, AM। "Gangaridai"Banglapedia। Asiatic Society of Bangladesh। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৯-০৮ 
  20. Sultana, Sabiha। "Settlement in Bengal (Early Period)"Banglapedia। Asiatic Society of Bangladesh। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৩-০৪ 
  21. "Shashanka"Banglapedia। Asiatic Society of Bangladesh। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৬ 
  22. "Islam (in Bengal)"Banglapedia। Asiatic Society of Bangladesh। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৬ 
  23. Chaudhury, S; Mohsin, KM। "Sirajuddaula"Banglapedia। Asiatic Society of Bangladesh। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৬ 
  24. Fiske, John। "The Famine of 1770 in Bengal"The Unseen World, and other essays। University of Adelaide Library Electronic Texts Collection। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৬ 
  25. (Baxter 1997, পৃ. 30–32)
  26. (Baxter 1997, পৃ. 39–40)
  27. Sen, Amartya (১৯৭৩)। Poverty and Famines। Oxford University Press। আইএসবিএন 0-19-828463-2 
  28. Harun-or-Rashid। "Partition of Bengal, 1947"Banglapedia। Asiatic Society of Bangladesh। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৬ 
  29. (Bennett ও Hindle 1996, পৃ. 63–70)
  30. Biswas, Soutik (২০০৬-০৪-১৬)। "Calcutta's colourless campaign"BBC। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৮-২৬ 
  31. Ghosh Roy, Paramasish (২০০৫-০৭-২২)। "Maoist on Rise in West Bengal"VOA BanglaVoice of America। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৯-১১ 
  32. "Maoist Communist Centre (MCC)"Left-wing Extremist group। South Asia Terrorism Portal। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৯-১১ 
  33. "Several hurt in Singur clash"rediff News। Rediff.com India Limited। ২৮ জানুয়ারি ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৩-১৫ 
  34. "Red-hand Buddha: 14 killed in Nandigram re-entry bid"The Telegraph। ১৫ মার্চ ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৩-১৫ 
  35. The Hindu Business Line, 26 November 2006
  36. "Statistical Facts about India"। www.indianmirror.com। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৬ 
  37. "National Himalayan Sandakphu-Gurdum Trekking Expedition: 2006"। Youth Hostels Association of India: West Bengal State Branch। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৬ 
  38. "Alarming rise in bacterial percentage in Ganga waters"। The Hindu Business Line। ৪ আগস্ট ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৯ 
  39. "Groundwater Arsenic Contamination Status in West Bengal"Groundwater Arsenic Contamination in West Bengal – India (17 Years Study)। School of Environmental Studies, Jadavpur University। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৯ 
  40. "Climate"West Bengal: Land। Suni System (P) Ltd। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৯-০৫ 
  41. "kal Baisakhi"Glossary of Meteorology। American Meteorological Society। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৯-০৫ 
  42. "State animals, birds, trees and flowers" (পিডিএফ)। Wildlife Institute of India। ৪ মার্চ ২০০৯ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ মার্চ ২০১২ 
  43. http://www.flowersofindia.net/misc/state_flora.html
  44. "Flora and Fauna"। calcuttayellowpages.com (P) Ltd। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৮-২৫ 
  45. "Environmental Issues" (পিডিএফ)West Bengal Human Development Report 2004 (PDF)। Development and Planning Department, Government of West Bengal। ২০০৪ [2004]। পৃষ্ঠা 180–182। আইএসবিএন 81-7955-030-3। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৮-২৬  অজানা প্যারামিটার |month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  46. "West Bengal: General Information"India in Business। Federation of Indian Chambers of Commerce and Industry। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৮-২৫ 
  47. Islam, Sadiq (২৯ জুন ২০০১)। "World's largest mangrove forest under threat"CNN Student Bureau। Cable News Network। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-৩১ 
  48. Mukherji, S.J. (২০০০)। College Botany Vol. III: (chapter on Phytogeography)। Calcutta: New Central Book Agency। পৃষ্ঠা 345–365। 
  49. Snedaker, Samuel (২০০৬-০৮-২৯)। "Notes on the Sundarbans"। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-০২ .
  50. "Natural vegetation"West Bengal। Suni System (P) Ltd। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-৩১ 
  51. "West Bengal"Directory of Wildlife Protected Areas in India। Wildlife Institute of India। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৬ 
  52. "Problems of Specific Regions" (পিডিএফ)West Bengal Human Development Report 2004 (PDF)। Development and Planning Department, Government of West Bengal। ২০০৪ [2004]। পৃষ্ঠা 200–203। আইএসবিএন 81-7955-030-3। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৮-২৬  অজানা প্যারামিটার |month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  53. "West Bengal Legislative Assembly"Legislative Bodies in India। National Informatics Centre। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৮ 
  54. "Election Database"। Election Commission of India। ২০০৬-০৮-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৮-২৬ 
  55. "West Bengal"India Together। Civil Society Information Exchange Pvt. Ltd। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৮-২৬ 
  56. "The CPI(M) has always used violence to achieve its goals"India Together। The Telegraph। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৮-২৬ 
  57. "West Bengal: Next time, the volcano"India Together। The Times of India। সংগ্রহের তারিখ জুন ২১, ২০০৯ 
  58. "Directory of District, Sub division, Panchayat Samiti/ Block and Gram Panchayats in West Bengal, March 2008"West Bengal। National Informatics Centre, India। ২০০৮-০৩-১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১১-১৯ 
  59. "Section 2 of West Bengal Panchayat Act, 1973"। Department of Panchayat and Rural Department, West Bengal। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১২-০৯ 
  60. "India: largest cities and towns and statistics of their population"। World Gazetteer। ২০০৬-১১-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৬ 
  61. "India: metropolitan areas"। World Gazetteer। ২০১২-১২-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৬ 
  62. David Christiana (২০০৭-০৯-০১)। "Arsenic Mitigation in West Bengal, India: New Hope for Millions" (PDF)। Southwest Hydrology। পৃষ্ঠা 32। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১২-২০ 
  63. "Gross State Domestic Product at Current Prices"National Accounts Division: Press release & StatementsMinistry of Statistics and Programme Implementation, Government of India। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৩-২৯  |publisher= এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
  64. "Economy"West Bengal। Suni System (P) Ltd। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৯-০৭ 
  65. "The State Economy" (PDF)Indian States Economy and Business: West BengalIndia Brand Equity Foundation, Confederation of Indian Industry। পৃষ্ঠা 9। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৯-০৭ 
  66. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; hdrchap1 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  67. "Basic Information"About West Bengal। West Bengal Industrial Development Corporation। ২০০৬-১১-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৯-০৭ 
  68. "Consul General Henry V. Jardine to The Indo-American Chamber of Commerce, 19 October 2005"। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-১১ 
  69. Ray Choudhury, R (২৭ অক্টোবর ২০০৬)। "A new dawn beckons West Bengal"। The Hindu Business Line। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৯ 
  70. "West Bengal Industrial Development Corporation Ltd." (PDF)India @ Hannover Messe 2006। Engineering Export Promotion Council (EEPC), India। পৃষ্ঠা 303। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৯-০৭ 
  71. "Statement: Gross state domestic product at current prices"। Directorate of Economics & Statistics of respective State Governments, and for All-India। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৯-০২ 
  72. http://www1.voanews.com/english/news/news-analysis/a-13-2006-08-30-voa29.html
  73. "West Bengal: Infrastructure"Public Private Partnerships in India। Dept of Economic Affairs, Ministry of Finance, Government of India। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৭ 
  74. "List of State-wise National Hoghways in the Country"National Highways। Department of Road Transport and Highways; Ministry of Shipping, Road Transport and Highways; Government of India। ২০০৭-০১-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৭ 
  75. Chattopadhyay, Suhrid Sankar (২০০৬)। "Remarkable Growth"Frontline। Chennai, India: The Hindu। 23 (02)। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৩-৩১  অজানা প্যারামিটার |month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  76. "West Bengal"Indian States-A Profile। Indian Investment Centre, Government of India। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৯-০১ 
  77. "Geography : Railway Zones"IRFCA.org। Indian Railways Fan Club। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-৩১ 
  78. "About Kolkata Metro"Kolkata Metro। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৯-০১ 
  79. "Mountain Railways of India"। UNESCO World Heritage Centre। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-৩০ 
  80. http://www.aai.aero/allAirports/cooch_behar.jsp
  81. "Salient Physical Features"Kolkata Port Trust। Kolkata Port Trust, India। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৬-০৯ 
  82. "Intra-city train travel"reaching India। Times Internet Limited। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-৩১ 
  83. "Census Population" (PDF)Census of India। Ministry of Finance India। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১২-১৮ 
  84. "Data on Religion"Census of India (2001)। Office of the Registrar General & Census Commissioner, India। ২০০৭-০৮-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৮-২৬ 
  85. Hoddie, Matthew (২০০৬)। Ethnic realignments: a comparative study of government influences on identity। Lexington Books। পৃষ্ঠা 114–115। আইএসবিএন 978-0-7391-1325-7। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১২ 
  86. Banerjee, Himadri; Gupta, Nilanjana; Mukherjee, Sipra, সম্পাদকগণ (২০০৯)। Calcutta mosaic: essays and interviews on the minority communities of Calcutta। Anthem Press। পৃষ্ঠা 3। আইএসবিএন 978-81-905835-5-8। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১২ 
  87. Banerjee, Himadri; Gupta, Nilanjana; Mukherjee, Sipra, সম্পাদকগণ (২০০৯)। Calcutta mosaic: essays and interviews on the minority communities of Calcutta। Anthem Press। পৃষ্ঠা 9–10। আইএসবিএন 978-81-905835-5-8। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১২ 
  88. "Report of the Commissioner for linguistic minorities: 47th report (July 2008 to June 2010)" (পিডিএফ)। Commissioner for Linguistic Minorities, Ministry of Minority Affairs, Government of India। পৃষ্ঠা 122–126। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১২ 
  89. "Press Release – Provisional Population Results – Census of India 2001"। Office of the Registrar General & Census Commissioner, India। ২৬ মার্চ ২০০১। ২০০৭-০৮-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৮-২৬ 
  90. Population of West Bengal (80,221,171) is 7.81% of India's population (1,027,015,247)
  91. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; censuswb নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  92. "Table 2(3): Literates and literacy rates by sex : 2011"Provisional population totals paper 1 of 2011 India: series 1। Registrar General & Census Commissioner, India। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১২ 
  93. "An Indian life: Life expectancy in our nation"India Together। Civil Society Information Exchange Pvt. Ltd। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৮-২৬ 
  94. National Crime Records Bureau (২০০৪)। "Crimes in Mega Cities" (পিডিএফ)Crime in India-2004 (PDF Format)। Ministry of Home Affairs। পৃষ্ঠা 158। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৮-২৬ 
  95. "Human Security" (পিডিএফ)West Bengal Human Development Report 2004। Development and Planning Department, Government of West Bengal। ২০০৪। পৃষ্ঠা pp167–172। ২০০৬-১১-০৮ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৮-২৬  অজানা প্যারামিটার |month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য); |work= এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
  96. National Crime Records Bureau (২০০৪)। "General Crime Statistics Snapshots 2004" (পিডিএফ)Crime in India-2004 (PDF Format)। Ministry of Home Affairs। পৃষ্ঠা 1। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-২৬ 
  97. Georg, Feuerstein (২০০২)। The Yoga Tradition। Motilal Banarsidass। পৃষ্ঠা 600। আইএসবিএন 3-935001-06-1 
  98. Clarke, Peter Bernard (২০০৬)। New Religions in Global Perspective। Routledge। পৃষ্ঠা 209। আইএসবিএন 0-7007-1185-6 
  99. বাংলা সাহিত্যের ইতিবৃত্ত, প্রথম খণ্ড, অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, মডার্ন বুক এজেন্সি প্রাঃ লিঃ, কলকাতা, ২০০৬, পৃ. ১৪৩
  100. শ্রীকৃষ্ণকীর্তন বড়ু চণ্ডীদাস বিরচিত, ডঃ মিহির চৌধুরী কামিল্যা সম্পাদিত, শিলালিপি, কলকাতা, ১৯৯৭, পৃ.৪
  101. বাংলা মঙ্গলকাব্যের ইতিহাস, আশুতোষ ভট্টাচার্য, এ মুখার্জি অ্যান্ড কোং প্রাঃ লিঃ, কলকাতা, ২০০৯, পৃ. ২৫৪
  102. বাংলা মঙ্গলকাব্যের ইতিহাস, আশুতোষ ভট্টাচার্য, এ মুখার্জি অ্যান্ড কোং প্রাঃ লিঃ, কলকাতা, ২০০৯, পৃ. ২৮৪
  103. বাংলা মঙ্গলকাব্যের ইতিহাস, আশুতোষ ভট্টাচার্য, এ মুখার্জি অ্যান্ড কোং প্রাঃ লিঃ, কলকাতা, ২০০৯, পৃ. ৪০৪
  104. "The Bauls of Bengal"Folk Music। BengalOnline। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৬ 
  105. "Chau: The Rare Mask Dances"Dances of India। Boloji.com। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২২ 
  106. "Durga Puja"Festivals of Bengal। West Bengal Tourism, Government of West Bengal। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৮ 
  107. "List of festivals of West Bengal"। Festivalsofindia.in। 
  108. "UGC recognised Universities in West Bengal with NAAC accreditation status"। Education Observer। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৬ 
  109. "West Bengal University of Health Sciences"। West Bengal University of Health Sciences। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৬ 
  110. "List of Affiliated Colleges"। University of Calcutta। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৩-২৯ 
  111. Mitra, P (৩১ আগস্ট ২০০৫)। "Waning interest"Careergraph। The Telegraph। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৬ 
  112. "Visva-Bharati: Facts and Figures at a Glance"। Visva-Bharati Computer Centre। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৩-৩১ 
  113. "General Review"। Registrar of Newspapers for India। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৩-২৯ 
  114. "Bengali News Channel took 5 months to reach no.1 position"। News Center। সংগ্রহের তারিখ Sep 07, 2006  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  115. "CALCUTTA : Television, Radio Channels"। Calcutta Web। সংগ্রহের তারিখ Sep 07, 2006  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  116. Prabhakaran, Shaji (১৮ জানুয়ারি ২০০৩)। "Football in India – A Fact File"। LongLiveSoccer.com। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৬ 
  117. "Indian Football Clubs"। Iloveindia.com। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৬ 
  118. "History of Polo"। Hurlingham Polo Association। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-৩০ 
  119. "Royal Calcutta Golf Club"। Encyclopaedia Britannica। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-৩০ 
  120. "India – Eden Gardens (Kolkata)"। Cricket Web। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৬ 
  121. "100 000+ Stadiums"। World Stadiums। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৬ 
  122. "The Asian Football Stadiums (30.000+ capacity)"। Gunther Lades। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৬ 
  123. Raju, Mukherji (১৪ মার্চ ২০০৫)। "Seven Years? Head Start"। The Telegraph। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৬ 
  124. "Sports & Adventure"। West Bengal Tourism। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২২ 
  125. "Famous Indian Football Players"। Iloveindia.com। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১০-২৬ 

বহিঃসংযোগ