জরাথুস্ট্রবাদ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
আদিব এহসান (আলোচনা | অবদান) সম্পাদনা সারাংশ নেই |
আদিব এহসান (আলোচনা | অবদান) |
||
১৮ নং লাইন: | ১৮ নং লাইন: | ||
==বিস্তারিত== |
==বিস্তারিত== |
||
[[File:Farvahar001.JPG|thumb|right|250px|প্রাচীন পারস্য সম্রাজ্য ও জরাথ্রুস্টবাদের প্রতীক]] |
[[File:Farvahar001.JPG|thumb|right|250px|প্রাচীন পারস্য সম্রাজ্য ও জরাথ্রুস্টবাদের প্রতীক]] |
||
এককালের এক্হমেনিদ, পার্থিয়ান এবং সসানিয়ান সাম্রাজ্যগুলোর রাষ্ট্রধর্ম ছিল জরাথ্রুস্টবাদ। |
এককালের এক্হমেনিদ, পার্থিয়ান এবং সসানিয়ান সাম্রাজ্যগুলোর রাষ্ট্রধর্ম ছিল জরাথ্রুস্টবাদ। <ref name="a">[http://www.adherents.com/Religions_By_Adherents.html Major Religions of the World Ranked by Number of Adherents] retrieved 14 April 2013</ref> ধারণা করা হয়, গত একদশকে জরাথ্রুস্টবাদ বা পার্সি ধর্মের অনুসারির সংখ্যায় এই ব্যাপক পরিবর্তন প্রকৃত জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে হয়নি, বরং এ সময়কালে উদ্ভূত অবাধ তথ্যপ্রবাহের সুবিধার ফলে পার্সি জনগোষ্ঠীর সংখ্যা সম্পর্কিত তথ্যউপাত্তের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং অনেকেই নিজেদের জরাথ্রুস্টবাদ বা পার্সি ধর্মের অনুসারি হিসেবে সনাক্ত করেছেন। তবে মধ্যপ্রাচ্যে অঞ্চলে পার্সিগণ ঐতিহাসিকভাবেই নিপীড়নের শিকার হয়ে আসছে বলে প্রকৃত পার্সি জনসংখ্যা কত তা এখনো সঠিকভাবে নির্ণয় করা কঠিনসাধ্য। |
||
জরাথ্রুস্টীয়বাদীগণকে প্রধানত অগ্নি উপাসক নামে সংজ্ঞায়িত করা হলেও জরথ্রুস্ত্রিয়বাদীদের অগ্নি উপাসনার ধারণাটি মূলত জরাথ্রুস্ট্রবাদ-বিরোধী বিতর্ক থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। প্রকৃতপক্ষে, অগ্নিকে জরাথ্রুস্ট্র ধর্মে শুদ্ধতার প্রতিনিধি এবং ন্যায় ও সত্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়, এমনকি তাদের ফায়ার টেম্পল বা অগ্নি মন্দিরেও (জরাথ্রুস্ত্রীয় পরিভাষাটি আরও বিস্তৃত যার সরল অর্থ হল হাউজ অব ফায়ার বা আগুনের ঘর) এই একই ধারণা পোষণ করা হয়। । বর্তমানকালে এই বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে এভাবে যে অগ্নি প্রজ্বলনের কারণ হল তা সর্বদা যে কোন ঊর্ধ্বমুখী বস্তুবিশেষকে পুড়িয়ে ফেলে এবং তা কখনোয় দূষিত হয় না। তা সত্ত্বেও, সাদেহ এবং চাহারশানবে সুরি হল বৃহত্তর ইরানের সর্বত্র উদযাপিত দুটি অগ্নি-সম্পর্কিত উৎসব এবং এই দুটি উৎসবে সেই সময়ের রীতিতে ফিরে যাওয়া হয় যে সময়টিতে জরাথ্রুস্ট্রীয় ধর্ম অঞ্চলের সবচেয়ে প্রভাব বিস্তারকারী ধর্ম ছিল। |
জরাথ্রুস্টীয়বাদীগণকে প্রধানত অগ্নি উপাসক নামে সংজ্ঞায়িত করা হলেও জরথ্রুস্ত্রিয়বাদীদের অগ্নি উপাসনার ধারণাটি মূলত জরাথ্রুস্ট্রবাদ-বিরোধী বিতর্ক থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। প্রকৃতপক্ষে, অগ্নিকে জরাথ্রুস্ট্র ধর্মে শুদ্ধতার প্রতিনিধি এবং ন্যায় ও সত্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়, এমনকি তাদের ফায়ার টেম্পল বা অগ্নি মন্দিরেও (জরাথ্রুস্ত্রীয় পরিভাষাটি আরও বিস্তৃত যার সরল অর্থ হল হাউজ অব ফায়ার বা আগুনের ঘর) এই একই ধারণা পোষণ করা হয়। । বর্তমানকালে এই বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে এভাবে যে অগ্নি প্রজ্বলনের কারণ হল তা সর্বদা যে কোন ঊর্ধ্বমুখী বস্তুবিশেষকে পুড়িয়ে ফেলে এবং তা কখনোয় দূষিত হয় না। তা সত্ত্বেও, সাদেহ এবং চাহারশানবে সুরি হল বৃহত্তর ইরানের সর্বত্র উদযাপিত দুটি অগ্নি-সম্পর্কিত উৎসব এবং এই দুটি উৎসবে সেই সময়ের রীতিতে ফিরে যাওয়া হয় যে সময়টিতে জরাথ্রুস্ট্রীয় ধর্ম অঞ্চলের সবচেয়ে প্রভাব বিস্তারকারী ধর্ম ছিল। |
০৯:২২, ৬ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
জরাথ্রুস্টবাদ /ˌzɒroʊˈæstriənɪzəm/ (ইংরেজি: Zoroastrianism বা Zarathustraism, Mazdaism এবং Magianism) একটি অতিপ্রাচীন ইরানীয় একেশ্বরবাদী ধর্ম বা ধর্মীয় মতবাদ। ভারতীয় উপমহাদেশে এটি পারসিক বা পার্সি ধর্ম নামেও পরিচিত।[১][২]
প্রাথমিক তথ্য
জরাথুস্ট্রীয় ধর্মের প্রবর্তক জরাথুস্ত্র। তাঁর নাম অনুসারেই এই ধর্মের নাম হয়েছে জরাথুস্ট্রীয়। এ ধর্মে ঈশ্বরকে আহুরা মাজদা নামে ডাকা হয়। এদের ধর্মগ্রন্থের নাম আবেস্তা। জরাথুস্ট্রীয় ধর্মের অনুসারীরা অগ্নির উপাসক। আগুনের পবিত্রতাকে ঈশ্বরের পবিত্রতার সাথে তুলনীয় মনে করেন পার্সি জরাথুস্ট্রীয়রা।[২]
অনুসারীর সংখ্যা
বর্তমানে পৃথিবীতে পার্সি জরাথুস্ট্রীয়দের সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার। ভারত, আমেরিকা, কানাডা, ব্রিটেন, ইরান সহ হাতে গোনা কয়েকটি দেশে এদের বাস। তবে ধর্মটির অনুসারীদের অর্ধেকই বর্তমানে ভারতে বসবাস করছে। ভারতে বসবাসকারী এসব পার্সিদের ৯০ শতাংশ থাকেন মুম্বইয়ে। বাকি ১০ শতাংশ ছড়িয়ে রয়েছেন সারা ভারতে। কলকাতায় পার্সি জনসংখ্যা প্রায় চারশো। সাম্প্রতিক সময়ে ২০১৫ সালে ইরাকের কুর্দ উপজাতির ১ লক্ষ মানুষ নতুন করে জরাথুস্ট্রীয় ধর্মে দীক্ষিত হয়েছেন।[২]
ধর্মীয় অনুষ্ঠান
জরাথুস্ট্রীয় ধর্মে আনুষ্ঠানিকভাবে দীক্ষিত করার জন্য নভজোত নামে একটি আচার-অনুষ্ঠান পালিত হয়। সাত বছর বয়স হওয়ার আগে কারও নভজোত হয় না। তবে নভজোতের জন্য বয়সের কোন উর্ধ্বসীমা নেই।[২]
ভারতে পার্সি জরথ্রুস্টীয়দের ইতিহাস
খ্রিস্টীয় ৯ম শতকে জরাথুস্ট্রীয় ধর্মালম্বী পার্সিরা পারস্য (বর্তমান ইরান) থেকে ভারতে চলে আসেন। ভারতে এসে পার্সিরা প্রথম পা রাখেন বর্তমান গুজরাতের সনজান এলাকায়। পার্সিদের এই আগমন সম্পর্কে একটি চমৎকার ঘটনা প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে জানা যায়। পার্সিদের আগমনের পর সনজানের শাসক একটি কানায় কানায় পূর্ণ দুধের পাত্র পার্সিদের কাছে পাঠিয়েছিলেন। অর্থাৎ তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন তাঁর রাজ্যে আর কাউকে ঠাঁই দেয়ার জায়গা নেই। পার্সিরা ঐ পাত্রে চিনি ঢেলে দেখিয়ে দেন পাত্র উপচে পড়ছে না। অর্থাৎ বোঝানোর চেষ্টা করেন চিনি যেমন দুধে মিশে যায় তেমনি তাঁরাও ওই এলাকার মানুষের সাথে মিলেমিশে থাকবেন। এরপর শাসক পার্সিদের আশ্রয় দেন।[২]
বিস্তারিত
এককালের এক্হমেনিদ, পার্থিয়ান এবং সসানিয়ান সাম্রাজ্যগুলোর রাষ্ট্রধর্ম ছিল জরাথ্রুস্টবাদ। [১] ধারণা করা হয়, গত একদশকে জরাথ্রুস্টবাদ বা পার্সি ধর্মের অনুসারির সংখ্যায় এই ব্যাপক পরিবর্তন প্রকৃত জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে হয়নি, বরং এ সময়কালে উদ্ভূত অবাধ তথ্যপ্রবাহের সুবিধার ফলে পার্সি জনগোষ্ঠীর সংখ্যা সম্পর্কিত তথ্যউপাত্তের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং অনেকেই নিজেদের জরাথ্রুস্টবাদ বা পার্সি ধর্মের অনুসারি হিসেবে সনাক্ত করেছেন। তবে মধ্যপ্রাচ্যে অঞ্চলে পার্সিগণ ঐতিহাসিকভাবেই নিপীড়নের শিকার হয়ে আসছে বলে প্রকৃত পার্সি জনসংখ্যা কত তা এখনো সঠিকভাবে নির্ণয় করা কঠিনসাধ্য।
জরাথ্রুস্টীয়বাদীগণকে প্রধানত অগ্নি উপাসক নামে সংজ্ঞায়িত করা হলেও জরথ্রুস্ত্রিয়বাদীদের অগ্নি উপাসনার ধারণাটি মূলত জরাথ্রুস্ট্রবাদ-বিরোধী বিতর্ক থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। প্রকৃতপক্ষে, অগ্নিকে জরাথ্রুস্ট্র ধর্মে শুদ্ধতার প্রতিনিধি এবং ন্যায় ও সত্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়, এমনকি তাদের ফায়ার টেম্পল বা অগ্নি মন্দিরেও (জরাথ্রুস্ত্রীয় পরিভাষাটি আরও বিস্তৃত যার সরল অর্থ হল হাউজ অব ফায়ার বা আগুনের ঘর) এই একই ধারণা পোষণ করা হয়। । বর্তমানকালে এই বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে এভাবে যে অগ্নি প্রজ্বলনের কারণ হল তা সর্বদা যে কোন ঊর্ধ্বমুখী বস্তুবিশেষকে পুড়িয়ে ফেলে এবং তা কখনোয় দূষিত হয় না। তা সত্ত্বেও, সাদেহ এবং চাহারশানবে সুরি হল বৃহত্তর ইরানের সর্বত্র উদযাপিত দুটি অগ্নি-সম্পর্কিত উৎসব এবং এই দুটি উৎসবে সেই সময়ের রীতিতে ফিরে যাওয়া হয় যে সময়টিতে জরাথ্রুস্ট্রীয় ধর্ম অঞ্চলের সবচেয়ে প্রভাব বিস্তারকারী ধর্ম ছিল।
জরাথ্রুস্টবাদে, পানি (আপো, আবান) এবং আগুন (আতার, আযার) হল ধর্মীয় পবিত্রতার প্রতিনিধি এবং এ-সম্পর্কিত শুদ্ধিকরণ আচার-অনুষ্ঠানসমূহকে ধর্মীয় জীবনব্যবস্থার ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জরাথ্রুস্টীয় সৃষ্টিতত্ত্ব অনুসারে, পানি এবং আগুন হল যথাক্রমে দ্বিতীয় এবং সর্বশেষ সৃষ্ট প্রভাবশালী পদার্থ, এবং তাদের ধর্মীয় গ্রন্থে পানিকে সৃষ্টিগতভাবে আগুনের মূল উৎস মনে করা হয়েছে। আগুন এবং পানিকে জীবন ধারণের জন্য অপরিহার্য বলে মনে করা হয়, এবং আগুন ও পানি উভয়কেই ফায়ার টেম্পলের চারপাশে প্রতীকীরুপে তুলে ধরা হয়। জরাথ্রুস্টবাদীগণ বিভিন্নভাবে প্রজ্বলিত আগুনের (যাকে যে কোন ধরনের আলোতে স্পষ্টভাবে দেখা যায়) উপস্থিতিতে উপাসনা করে থাকেন, এবং উপাসনার মৌলিক কর্মের চূড়ান্ত আচারটি "জলরাশির শক্তি"রূপে সংযুক্ত হয়। আগুনকে একটি মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যার মাধ্যমে আধ্যাত্মিক জ্ঞান ও অন্তর্দৃষ্টি অর্জিত হয়, এবং পানিকে সেই জ্ঞানের উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হয়।