অম্ল: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Ashiq Shawon (আলোচনা | অবদান)
পরিমার্জন
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
'''অম্ল''' হচ্ছে একটি রাসায়নিক পদার্থ। যৌগের অণুতে এক বা একাধিক প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেন পরমাণু থাকে এবং ঐ প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেনকে ধাতু বা যৌগমূলক দ্বারা আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে প্রতিস্থাপিত করা যায় এবং যা ক্ষারকের সাথে প্রশমন বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি উৎপন্ন করে তাকে অম্ল বা এসিড (Acid) বলে।Acid শব্দটির উৎপত্তি এসিডাস (Acidus) কিংবা এসিয়ার হতে; যার অর্থ টক। টক স্বাদযুক্ত সব বস্তুর মধ্যে এসিড থাকে। তেঁতুল, লেবু প্রভৃতিতে জৈব এসিড বিদ্যমান। এসকল এসিড অতি অল্প পরিমাণে থাকে বলে ক্ষতিকারক নয়। কিন্তু পরীক্ষাগারে ব্যবহৃত এসিড (যেমন : হাইড্রোক্লোরিক এসিড, সালফিউরিক এসিড ইত্যাদি) অত্যন্ত তীব্র। এগুলোকে অজৈব বা খনিজ এসিড বলে।
'''অম্ল''' হচ্ছে একটি রাসায়নিক পদার্থ। যৌগের অণুতে এক বা একাধিক প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেন পরমাণু থাকে এবং ঐ প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেনকে ধাতু বা যৌগমূলক দ্বারা আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে প্রতিস্থাপিত করা যায় এবং যা ক্ষারকের সাথে প্রশমন বিক্রিয়া করে [[লবণ (খাদ্য)|লবণ]][[পানি]] উৎপন্ন করে তাকে অম্ল বা অ্যাসিড (Acid) বলে।Acid শব্দটির উৎপত্তি অ্যাসিডাস (Acidus) কিংবা এসিয়ার হতে; যার অর্থ টক। টক স্বাদযুক্ত সব বস্তুর মধ্যে অ্যাসিড থাকে। তেঁতুল, লেবু প্রভৃতিতে জৈব অ্যাসিড বিদ্যমান। এসকল অ্যাসিড অতি অল্প পরিমাণে থাকে বলে ক্ষতিকারক নয়। কিন্তু পরীক্ষাগারে ব্যবহৃত অ্যাসিড (যেমন : হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড, সালফিউরিক অ্যাসিড ইত্যাদি) অত্যন্ত তীব্র। এগুলোকে অজৈব বা খনিজ অ্যাসিড বলে।


== এসিড চেনার পদ্ধতি ও শনাক্তকরণ==
== অ্যাসিড চেনার পদ্ধতি ও শনাক্তকরণ==
প্রত্যেক এসিডে প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেন থাকে। এটি প্রতিটি এসিডের একটি সাধারণ মৌলিক পদার্থ।
প্রত্যেক অ্যাসিডে প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেন থাকে। এটি প্রতিটি অ্যাসিডের একটি সাধারণ [[মৌলিক পদার্থ]]।
যদি কোনো যৌগের জলীয় দ্রবণে নীল লিটমাসকে লাল করে তবে তা এসিড।
যদি কোনো যৌগের জলীয় দ্রবণে নীল লিটমাসকে লাল করে তবে তা অ্যাসিড।
যেমন : হাইড্রোক্লোরিক এসিড ( HCl), সালফিউরিক এসিড ( H2SO4) প্রভৃতি এসিডের
যেমন : [[হাইড্রোক্লোরিক এসিড|হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড]] ( HCl), [[সালফিউরিক অ্যাসিড]] ( H2SO4) প্রভৃতি অ্যাসিডের
সংকেত থেকে দেখা যাচ্ছে যে, এদের মধ্যে সাধারণ
সংকেত থেকে দেখা যাচ্ছে যে, এদের মধ্যে সাধারণ
মৌলিক পদার্থ হাইড্রোজেন ( H)। এভাবে এসিডসমূহকে সহজভাবে চেনা যেতে পারে।
মৌলিক পদার্থ [[হাইড্রোজেন]] ( H)। এভাবে অ্যাসিডসমূহকে সহজভাবে চেনা যেতে পারে।
== নির্দেশক ও এর ব্যবহার ==
== নির্দেশক ও এর ব্যবহার ==
যেসকল রাসায়নিক পদার্থএসিড ও ক্ষারককে শনাক্ত করেএবং যা এসিড ও ক্ষারকের সংস্পর্শে এসে রং পরিবর্তন করে তাদেরকে নির্দেশক বলে। সাধারণত বিজ্ঞানাগারে এসিড
যেসকল রাসায়নিক পদার্থ অ্যাসিড ও ক্ষারককে শনাক্ত করে এবং যা অ্যাসিড ও ক্ষারকের সংস্পর্শে এসে রং পরিবর্তন করে তাদেরকে নির্দেশক বলে। সাধারণত বিজ্ঞানাগারে অ্যাসিড
শনাক্ত করার জন্য লিটমাস দ্রবণ বা কাগজ,
শনাক্ত করার জন্য লিটমাস দ্রবণ বা কাগজ,
মিথাইল অরেঞ্জ, ফেনোফথ্যালিন এই তিন ধরণের নির্দেশক ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও বিভিন্ন ধরণের গাছের নির্যাস ( যেমন : জবা ফুলের রস ইত্যাদি) নির্দেশক হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
[[মিথাইল অরেঞ্জ]], ফেনোফথ্যালিন এই তিন ধরণের নির্দেশক ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও বিভিন্ন ধরণের গাছের নির্যাস ( যেমন : জবা ফুলের রস ইত্যাদি) নির্দেশক হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
{| class="wikitable"
{| class="wikitable"
|-
|-
! নির্দেশকের নাম!! এসিডের মধ্যে রং!! ক্ষারকের মধ্যে রঙ
! নির্দেশকের নাম!! অ্যাসিডের মধ্যে রং!! ক্ষারকের মধ্যে রঙ
|-
|-
|লিটমাস দ্রবণ || লাল|| নীল
|[[লিটমাস]] দ্রবণ || লাল|| নীল
|-
|-
| ফেনোফথ্যালিন || বর্ণহীন || গোলাপি
| ফেনোফথ্যালিন || বর্ণহীন || গোলাপি
২১ নং লাইন: ২১ নং লাইন:
| মিথাইল অরেঞ্জ || লাল|| হলুদ
| মিথাইল অরেঞ্জ || লাল|| হলুদ
|}
|}
নির্যাসের মধ্যে এসিড ও ক্ষারকের বর্ণ :
নির্যাসের মধ্যে অ্যাসিড ও ক্ষারকের বর্ণ :
{| class="wikitable"
{| class="wikitable"
|-
|-
! নির্যাসের নাম !! এসিডের মধ্যে রঙ!! ক্ষারকের মধ্যে রঙ
! নির্যাসের নাম !! অ্যাসিডের মধ্যে রঙ!! ক্ষারকের মধ্যে রঙ
|-
|-
| জবা ফুলের রস|| লাল|| নীল
| জবা ফুলের রস|| লাল|| নীল
৩৪ নং লাইন: ৩৪ নং লাইন:
== মতবাদ==
== মতবাদ==
অম্ল ও ক্ষারকের বিষয়ে বিভিন্ন বিজ্ঞানী নানাধরণের মতবাদ পোষণ করেছেন।এদের মধ্যে নিম্নোক্ত মতবাদসমূহ উল্লেখযোগ্য :
অম্ল ও ক্ষারকের বিষয়ে বিভিন্ন [[বিজ্ঞানী]] নানাধরণের মতবাদ পোষণ করেছেন।এদের মধ্যে নিম্নোক্ত মতবাদসমূহ উল্লেখযোগ্য :


=== ব্রনস্টেড - লাওরির মতবাদ ===
=== ব্রনস্টেড - লাওরির মতবাদ ===


জোহানেস ব্রনস্টেড (১৮৭৯-১৯৪৭) ও থমাস লাওরি ( ১৮৭৪-১৯৩৬) ১৯২৩ সালে ডেনমার্ক ও ইউকে -তে বসে অম্ল ও ক্ষারক সর্ম্পকে মতবাদ পোষণ করেন। তাদের মতে
জোহানেস ব্রনস্টেড (১৮৭৯-১৯৪৭) ও থমাস লাওরি ( ১৮৭৪-১৯৩৬) ১৯২৩ সালে [[ডেনমার্ক]] ও ইউকে -তে বসে অম্ল ও ক্ষারক সর্ম্পকে মতবাদ পোষণ করেন। তাদের মতে
এসিড হল এমন একটি অণু যা রাসায়নিক বিক্রিয়ায় প্রোটন ( হাইড্রোজেন H+) দান করতে সক্ষম এবং ক্ষারক হল এমন একটি অণু যা রাসায়নিক বিক্রিয়ায় প্রোটন গ্রহণ করে। সাধারণভাবে বলা যায় যে, অম্ল হল প্রোটন দাতা ও ক্ষারক হল প্রোটন গ্রহীতা।
অ্যাসিড হল এমন একটি [[অণু]] যা রাসায়নিক বিক্রিয়ায় প্রোটন ( হাইড্রোজেন H+) দান করতে সক্ষম এবং ক্ষারক হল এমন একটি অণু যা রাসায়নিক বিক্রিয়ায় প্রোটন গ্রহণ করে। সাধারণভাবে বলা যায় যে, অম্ল হল [[প্রোটন]] দাতা ও ক্ষারক হল প্রোটন গ্রহীতা।


===== এসিডের উদাহরণ =====
===== অ্যাসিডের উদাহরণ =====


নিম্নে কয়েকটি এসিডের উদাহরণ উল্লেখিত হল:
নিম্নে কয়েকটি অ্যাসিডের উদাহরণ উল্লেখিত হল:


{| class="wikitable"
{| class="wikitable"
৪৯ নং লাইন: ৪৯ নং লাইন:
! অম্লের নাম!! সংকেত
! অম্লের নাম!! সংকেত
|-
|-
| হাইড্রোক্লরিক এসিড || HCl
| হাইড্রোক্লরিক অ্যাসিড || HCl
|-
|-
| সালফিউরিক এসিড|| H2SO4
| সালফিউরিক অ্যাসিড|| H2SO4
|-
|-
| নাইট্রিক এসিড|| HNO3
| [[নাইট্রিক অ্যাসিড]]|| HNO3
|-
|-
| পারক্লোরিক এসিড|| HClO4
| পারক্লোরিক অ্যাসিড|| HClO4
|-
|-
| সাইট্রিক এসিড || C6H8O7
| সাইট্রিক অ্যাসিড || C6H8O7
|-
|-
| উদাহরণ || উদাহরণ
| উদাহরণ || উদাহরণ
৭০ নং লাইন: ৭০ নং লাইন:
|}
|}


তথ্যসূত্র :
== তথ্যসূত্র :
<ref>১। উচ্চ মাধ্যমিক রসায়ন প্রথম পত্র - হাজারী ও নাগ।</ref>
<ref>১। উচ্চ মাধ্যমিক রসায়ন প্রথম পত্র - হাজারী ও নাগ।</ref> ==
<references/>
<references/>



১১:৫৯, ২১ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

অম্ল হচ্ছে একটি রাসায়নিক পদার্থ। যৌগের অণুতে এক বা একাধিক প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেন পরমাণু থাকে এবং ঐ প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেনকে ধাতু বা যৌগমূলক দ্বারা আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে প্রতিস্থাপিত করা যায় এবং যা ক্ষারকের সাথে প্রশমন বিক্রিয়া করে লবণপানি উৎপন্ন করে তাকে অম্ল বা অ্যাসিড (Acid) বলে।Acid শব্দটির উৎপত্তি অ্যাসিডাস (Acidus) কিংবা এসিয়ার হতে; যার অর্থ টক। টক স্বাদযুক্ত সব বস্তুর মধ্যে অ্যাসিড থাকে। তেঁতুল, লেবু প্রভৃতিতে জৈব অ্যাসিড বিদ্যমান। এসকল অ্যাসিড অতি অল্প পরিমাণে থাকে বলে ক্ষতিকারক নয়। কিন্তু পরীক্ষাগারে ব্যবহৃত অ্যাসিড (যেমন : হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড, সালফিউরিক অ্যাসিড ইত্যাদি) অত্যন্ত তীব্র। এগুলোকে অজৈব বা খনিজ অ্যাসিড বলে।

অ্যাসিড চেনার পদ্ধতি ও শনাক্তকরণ

প্রত্যেক অ্যাসিডে প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেন থাকে। এটি প্রতিটি অ্যাসিডের একটি সাধারণ মৌলিক পদার্থ। যদি কোনো যৌগের জলীয় দ্রবণে নীল লিটমাসকে লাল করে তবে তা অ্যাসিড। যেমন : হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড ( HCl), সালফিউরিক অ্যাসিড ( H2SO4) প্রভৃতি অ্যাসিডের সংকেত থেকে দেখা যাচ্ছে যে, এদের মধ্যে সাধারণ মৌলিক পদার্থ হাইড্রোজেন ( H)। এভাবে অ্যাসিডসমূহকে সহজভাবে চেনা যেতে পারে।

নির্দেশক ও এর ব্যবহার

যেসকল রাসায়নিক পদার্থ অ্যাসিড ও ক্ষারককে শনাক্ত করে এবং যা অ্যাসিড ও ক্ষারকের সংস্পর্শে এসে রং পরিবর্তন করে তাদেরকে নির্দেশক বলে। সাধারণত বিজ্ঞানাগারে অ্যাসিড শনাক্ত করার জন্য লিটমাস দ্রবণ বা কাগজ, মিথাইল অরেঞ্জ, ফেনোফথ্যালিন এই তিন ধরণের নির্দেশক ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও বিভিন্ন ধরণের গাছের নির্যাস ( যেমন : জবা ফুলের রস ইত্যাদি) নির্দেশক হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

নির্দেশকের নাম অ্যাসিডের মধ্যে রং ক্ষারকের মধ্যে রঙ
লিটমাস দ্রবণ লাল নীল
ফেনোফথ্যালিন বর্ণহীন গোলাপি
মিথাইল অরেঞ্জ লাল হলুদ

নির্যাসের মধ্যে অ্যাসিড ও ক্ষারকের বর্ণ :

নির্যাসের নাম অ্যাসিডের মধ্যে রঙ ক্ষারকের মধ্যে রঙ
জবা ফুলের রস লাল নীল
উদাহরণ উদাহরণ উদাহরণ
উদাহরণ উদাহরণ উদাহরণ

মতবাদ

অম্ল ও ক্ষারকের বিষয়ে বিভিন্ন বিজ্ঞানী নানাধরণের মতবাদ পোষণ করেছেন।এদের মধ্যে নিম্নোক্ত মতবাদসমূহ উল্লেখযোগ্য :

ব্রনস্টেড - লাওরির মতবাদ

জোহানেস ব্রনস্টেড (১৮৭৯-১৯৪৭) ও থমাস লাওরি ( ১৮৭৪-১৯৩৬) ১৯২৩ সালে ডেনমার্ক ও ইউকে -তে বসে অম্ল ও ক্ষারক সর্ম্পকে মতবাদ পোষণ করেন। তাদের মতে অ্যাসিড হল এমন একটি অণু যা রাসায়নিক বিক্রিয়ায় প্রোটন ( হাইড্রোজেন H+) দান করতে সক্ষম এবং ক্ষারক হল এমন একটি অণু যা রাসায়নিক বিক্রিয়ায় প্রোটন গ্রহণ করে। সাধারণভাবে বলা যায় যে, অম্ল হল প্রোটন দাতা ও ক্ষারক হল প্রোটন গ্রহীতা।

অ্যাসিডের উদাহরণ

নিম্নে কয়েকটি অ্যাসিডের উদাহরণ উল্লেখিত হল:

অম্লের নাম সংকেত
হাইড্রোক্লরিক অ্যাসিড HCl
সালফিউরিক অ্যাসিড H2SO4
নাইট্রিক অ্যাসিড HNO3
পারক্লোরিক অ্যাসিড HClO4
সাইট্রিক অ্যাসিড C6H8O7
উদাহরণ উদাহরণ
উদাহরণ উদাহরণ
উদাহরণ উদাহরণ
উদাহরণ উদাহরণ
উদাহরণ উদাহরণ

== তথ্যসূত্র : [১] ==

  1. ১। উচ্চ মাধ্যমিক রসায়ন প্রথম পত্র - হাজারী ও নাগ।

২। বিজ্ঞান অষ্টম শ্রেণি

৩। বিজ্ঞান জটিল সূত্রের সহজ ব্যাখা - এইচ কে রুমি