প্যারীচরণ সরকার: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
অ বিষয়শ্রেণী:কলকাতার মানুষ অপসারণ; বিষয়শ্রেণী:কলকাতার ব্যক্তিত্ব যোগ হটক্যাটের মাধ্যমে |
পরিবর্ধন ও তথ্যসূত্র যোগ করা হলও |
||
১১ নং লাইন: | ১১ নং লাইন: | ||
| spouse = |
| spouse = |
||
}} |
}} |
||
'''প্যারীচরণ সরকার''' ({{lang-en|Peary Charan Sarkar}}) ( ২৩ জানুয়ারি, ১৮২৩–৩০ সেপ্টেম্বর, ১৮৭৫), ছিলেন একজন শিক্ষাবিদ, সমাজসংস্কারক এবং উনিশ শতকের বাঙলার পাঠ্যপুস্তক রচয়িতা। তার পাঠ্যবই মালা বাঙালির এক সমগ্র প্রজন্মকে ইংরেজি ভাষায় পরিচিত করেছে। তাঁর পাঠ্যবইসমূহ লক্ষ কপি বিক্রি হয়েছে এবং অধিকাংশ ভারতীয় ভাষায় অনূদিত হয়েছে। তিনি বাংলায় নারী শিক্ষার অগ্রদূত ছিলেন এবং এজন্য তাঁকে 'প্রাচ্যের [[Matthew Arnold|আর্নল্ড]]' বলা হতো।<ref name= |
'''প্যারীচরণ সরকার''' ({{lang-en|Peary Charan Sarkar}}) ( ২৩ জানুয়ারি, ১৮২৩–৩০ সেপ্টেম্বর, ১৮৭৫), ছিলেন একজন শিক্ষাবিদ, সমাজসংস্কারক এবং উনিশ শতকের বাঙলার পাঠ্যপুস্তক রচয়িতা। তার পাঠ্যবই মালা বাঙালির এক সমগ্র প্রজন্মকে ইংরেজি ভাষায় পরিচিত করেছে। তাঁর পাঠ্যবইসমূহ লক্ষ কপি বিক্রি হয়েছে এবং অধিকাংশ ভারতীয় ভাষায় অনূদিত হয়েছে। তিনি বাংলায় নারী শিক্ষার অগ্রদূত ছিলেন এবং এজন্য তাঁকে 'প্রাচ্যের [[Matthew Arnold|আর্নল্ড]]' বলা হতো।<ref name="সংসদ"/> তিনি তাঁর সময়কালে সুরাপান নিবারকরূপে সকলের দৃষ্টি ও শ্রদ্ধা আকর্ষণ করেছিলেন। বাঙালির ইংরেজি শিখবার তৎকালীন প্রবণতায় তাঁর রচিত 'ফার্স্ট বুক' বইটি বাঙলার সামাজিক ইতিহাসে অক্ষর-মূর্তি হয়ে আছে।<ref>[[প্রমথনাথ বিশী]], ''চিত্র-বিচিত্র''; বোধি; ঢাকা; ফেব্রুয়ারি, ২০১৩; পৃষ্ঠা- ১০১-১০২।</ref> |
||
==শৈশব ও শিক্ষা== |
==শৈশব ও শিক্ষা== |
||
প্যারীচরণ সরকার ডেভিড হেয়ারের পটলডাঙ্গার পাঠশালায় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন। ১৮৩৮ সালে হেয়ার সাহেবের স্কুল থেকে জুনিয়র স্কলারশিপ পরীক্ষায় মাসিক আট টাকা বৃত্তি লাভ করেন। অতপর হিন্দু কলেজে ভর্তি হন। সেখানে সিনিয়র স্কলারশিপ পরীক্ষায় মাসিক চল্লিশ টাকা বৃত্তি লাভ করেন। ১৮৪৩-এ হিন্দু কলেজের শিক্ষা শেষ করেন।<ref name="ReferenceA">[[সেলিনা হোসেন]] ও নুরুল ইসলাম সম্পাদিত; বাংলা একাডেমী চরিতাভিধান; ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৭; পৃষ্ঠা- ২২৩-২২৪।</ref> |
প্যারীচরণ সরকার ডেভিড হেয়ারের পটলডাঙ্গার পাঠশালায় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন। ১৮৩৮ সালে হেয়ার সাহেবের স্কুল থেকে জুনিয়র স্কলারশিপ পরীক্ষায় মাসিক আট টাকা বৃত্তি লাভ করেন। অতপর হিন্দু কলেজে ভর্তি হন। সেখানে সিনিয়র স্কলারশিপ পরীক্ষায় মাসিক চল্লিশ টাকা বৃত্তি লাভ করেন। ১৮৪৩-এ হিন্দু কলেজের শিক্ষা শেষ করেন।<ref name="ReferenceA">[[সেলিনা হোসেন]] ও নুরুল ইসলাম সম্পাদিত; ''বাংলা একাডেমী চরিতাভিধান''; [[বাংলা একাডেমী]], ঢাকা, ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৭; পৃষ্ঠা- ২২৩-২২৪।</ref> |
||
==কর্মজীবন== |
==কর্মজীবন== |
||
হিন্দু কলেজের শিক্ষা শেষ করে কিছুকাল হুগলী ব্যাংকে চাকরি করার পর হুগলী স্কুলে শিক্ষকতার কাজে যোগ দেন। ১৮৪৬-১৮৫৪ বারাসত গভর্নমেন্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। সেখানে কৃষি বিদ্যালয় স্থাপনে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। কুলুটোলা ব্রাঞ্চ স্কুলের প্রধান শিক্ষকরূপে আট বছর দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর চেষ্টায় স্কুলটির নাম পরিবর্তিত হয়ে হেয়ার স্কুল হয়। ১৮৬৩ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজের অস্থায়ী অধ্যাপক হিসেবে যোগদান |
হিন্দু কলেজের শিক্ষা শেষ করে কিছুকাল হুগলী ব্যাংকে চাকরি করার পর হুগলী স্কুলে শিক্ষকতার কাজে যোগ দেন। ১৮৪৬-১৮৫৪ বারাসত গভর্নমেন্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। সেখানে কৃষি বিদ্যালয় স্থাপনে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। কুলুটোলা ব্রাঞ্চ স্কুলের প্রধান শিক্ষকরূপে আট বছর দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর চেষ্টায় স্কুলটির নাম পরিবর্তিত হয়ে হেয়ার স্কুল হয়। ১৮৬৩ সালে [[প্রেসিডেন্সি কলেজ|প্রেসিডেন্সি কলেজের]] অস্থায়ী অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন<ref name="ReferenceA"/> এবং ১৮৬৭ সালে ঐ পদে স্থায়ী হয়ে আমৃত্যু কাজ করেন। বাংলার নবজাগরণে তাঁর সক্রিয় ভূমিকা ছিলো। স্ত্রীশিক্ষা প্রচারে একাধিক বিদ্যালয় স্থাপন করেন। বিধবাবিবাহ প্রচারেও [[বিদ্যাসাগর]]কে সাহায্য করেছিলেন। কৃষি বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান শিক্ষার সুষ্ঠু বন্দোবস্ত করেন। নারী শ্রমিকগণের সন্তানদের শিক্ষার জন্য তিনি কারিগরি বিদ্যালয় স্থাপন করেন এবং [[বেথুন কলেজ|বেথুন স্কুলে]] মেয়েদের পাঠানোর জন্য অভিভাবকদের প্রভাবিত করেন। ১৮৬৬ সালে সরকারি সংবাদপত্র 'এডুকেশন গেজেট ও সাপ্তাহিক বার্তাবহ'-এর সম্পাদনার ভার গ্রহণ করেছিলেন।<ref name="সংসদ">সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, ''সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান'', প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ৩৯৯-৪০০, ISBN 978-81-7955-135-6</ref> |
||
==তথ্যসূত্র== |
==তথ্যসূত্র== |
০২:২৩, ৯ মে ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
প্যারীচরণ সরকার Peary Charan Sarkar | |
---|---|
জন্ম | ২৩ জানুয়ারি, ১৮২৩ |
মৃত্যু | ৩০ সেপ্টেম্বর, ১৮৭৫ কলকাতা |
পেশা | শিক্ষাবিদ |
প্যারীচরণ সরকার (ইংরেজি: Peary Charan Sarkar) ( ২৩ জানুয়ারি, ১৮২৩–৩০ সেপ্টেম্বর, ১৮৭৫), ছিলেন একজন শিক্ষাবিদ, সমাজসংস্কারক এবং উনিশ শতকের বাঙলার পাঠ্যপুস্তক রচয়িতা। তার পাঠ্যবই মালা বাঙালির এক সমগ্র প্রজন্মকে ইংরেজি ভাষায় পরিচিত করেছে। তাঁর পাঠ্যবইসমূহ লক্ষ কপি বিক্রি হয়েছে এবং অধিকাংশ ভারতীয় ভাষায় অনূদিত হয়েছে। তিনি বাংলায় নারী শিক্ষার অগ্রদূত ছিলেন এবং এজন্য তাঁকে 'প্রাচ্যের আর্নল্ড' বলা হতো।[১] তিনি তাঁর সময়কালে সুরাপান নিবারকরূপে সকলের দৃষ্টি ও শ্রদ্ধা আকর্ষণ করেছিলেন। বাঙালির ইংরেজি শিখবার তৎকালীন প্রবণতায় তাঁর রচিত 'ফার্স্ট বুক' বইটি বাঙলার সামাজিক ইতিহাসে অক্ষর-মূর্তি হয়ে আছে।[২]
শৈশব ও শিক্ষা
প্যারীচরণ সরকার ডেভিড হেয়ারের পটলডাঙ্গার পাঠশালায় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন। ১৮৩৮ সালে হেয়ার সাহেবের স্কুল থেকে জুনিয়র স্কলারশিপ পরীক্ষায় মাসিক আট টাকা বৃত্তি লাভ করেন। অতপর হিন্দু কলেজে ভর্তি হন। সেখানে সিনিয়র স্কলারশিপ পরীক্ষায় মাসিক চল্লিশ টাকা বৃত্তি লাভ করেন। ১৮৪৩-এ হিন্দু কলেজের শিক্ষা শেষ করেন।[৩]
কর্মজীবন
হিন্দু কলেজের শিক্ষা শেষ করে কিছুকাল হুগলী ব্যাংকে চাকরি করার পর হুগলী স্কুলে শিক্ষকতার কাজে যোগ দেন। ১৮৪৬-১৮৫৪ বারাসত গভর্নমেন্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। সেখানে কৃষি বিদ্যালয় স্থাপনে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। কুলুটোলা ব্রাঞ্চ স্কুলের প্রধান শিক্ষকরূপে আট বছর দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর চেষ্টায় স্কুলটির নাম পরিবর্তিত হয়ে হেয়ার স্কুল হয়। ১৮৬৩ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজের অস্থায়ী অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন[৩] এবং ১৮৬৭ সালে ঐ পদে স্থায়ী হয়ে আমৃত্যু কাজ করেন। বাংলার নবজাগরণে তাঁর সক্রিয় ভূমিকা ছিলো। স্ত্রীশিক্ষা প্রচারে একাধিক বিদ্যালয় স্থাপন করেন। বিধবাবিবাহ প্রচারেও বিদ্যাসাগরকে সাহায্য করেছিলেন। কৃষি বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান শিক্ষার সুষ্ঠু বন্দোবস্ত করেন। নারী শ্রমিকগণের সন্তানদের শিক্ষার জন্য তিনি কারিগরি বিদ্যালয় স্থাপন করেন এবং বেথুন স্কুলে মেয়েদের পাঠানোর জন্য অভিভাবকদের প্রভাবিত করেন। ১৮৬৬ সালে সরকারি সংবাদপত্র 'এডুকেশন গেজেট ও সাপ্তাহিক বার্তাবহ'-এর সম্পাদনার ভার গ্রহণ করেছিলেন।[১]
তথ্যসূত্র
- ↑ ক খ সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ৩৯৯-৪০০, ISBN 978-81-7955-135-6
- ↑ প্রমথনাথ বিশী, চিত্র-বিচিত্র; বোধি; ঢাকা; ফেব্রুয়ারি, ২০১৩; পৃষ্ঠা- ১০১-১০২।
- ↑ ক খ সেলিনা হোসেন ও নুরুল ইসলাম সম্পাদিত; বাংলা একাডেমী চরিতাভিধান; বাংলা একাডেমী, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৭; পৃষ্ঠা- ২২৩-২২৪।