স্ফিংক্স: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
Moheen (আলোচনা | অবদান)
হালনাগাদ
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{about|সাধারণ স্ফিংক্স|মিশরের গিজার স্পিংক্সের|গিজার মহা স্ফিংক্স|অন্যান্য ব্যবহারের|স্ফিংক্স (দ্ব্যর্থতা নিরসন)}}
{{Infobox mythical creature
|Creature_Name = স্ফিংক্স
|AKA =
|Image_Name = Great Sphinx of Giza - 20080716a.jpg
|Image_Size = 250px
|Image_Caption = The [[Great Sphinx of Giza]], with the [[Great Pyramid of Giza|Pyramid of Khufu]] in the background
|Mythology = পারসিক, মিশরীয় এবং গ্রিক
|Grouping = [[Legendary creatures|কিংবদন্তি সৃষ্টি]]
|Sub_Grouping = [[Mythological hybrid|পৌরাণিক হাইব্রিড]]
|Parents =
|Country =
|Region =
|Habitat =
|Similar_creatures = [[Griffin|গ্রিফিন]]
}}
[[চিত্র:Sphinx of Hetepheres II - fourth dynasty of Egypt.jpg|thumb|সম্ভবত প্রথম মিশরীয় স্পিংক্স, চতুর্থ রাজবংশ থেকে রাণী [[Hetepheres II|দ্বিতীয় হেটেফেস]] (কায়রো জাদুঘর)।]]


'''স্ফিংক্স''' ({{lang-el|Σφίγξ /''sphinx''/}}, [[Aeolic Greek|Bœotian]]: Φίξ ''/Phix'', {{lang-ar|أبو الهول,}}) একটি [[পৌরাণিক সৃষ্টি]] যার শরীরের নিচের অংশ [[সিংহ|সিংহাকৃতির]] এবং উপরে মানব মাথার মতোন।

মিশরের বৃহৎ এবং ঐতিহাসিক স্থাপনা স্ফিংস। বিশাল মরুভুমির মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা এই পাথুরে নিদর্শন শুধুই পিরামিডগুলোর সঙ্গী নয়, বরং একে ঘিরে রয়েছে অনেক প্রশ্নের ধোঁয়াশা। সবচাইতে বড় প্রশ্ন হলো, এই স্ফিংক্স কি আসলেই মিশরীয়রা তৈরি করেছিলো নাকি অন্য কেউ?


চলুন ঘড়ির কাঁটা ঘুরিয়ে দিয়ে সেই সময়ে ফিরে যাই যখন আধুনিক মানুষের সামনে স্ফিংক্স সবে উন্মোচিত হয়। ১৭৯৮ সালের গ্রীষ্মে নেপোলিয়নের ফরাসি সৈন্যেরা আলেক্সান্দ্রিয়ার উপকূল দখল করে কায়রো অভিমুখে যাত্রা করে। সে সময়ে কেউ কেউ গিজার পিরামিডগুলোর ওপরে উঠে দেখতে পায়, বালির মাঝ থেকে উঠে এসেছে অদ্ভুত একটি মাথা। এ সময়ে স্ফিংক্স এর গলা পর্যন্ত বালিতে ডুবে ছিলো। অনেকে স্ফিংক্স এর খসে যাওয়া নাকের জন্য এই ফরাসি সৈনিকদেরকেই দায়ী করেন, বলেন তারা কেউ টার্গেট প্র্যাক্টিস করতে গিয়ে উড়িয়ে দিয়েছে এর নাক। তবে ১৭৩৭ সালে আঁকা কিছু স্কেচেও দেখা যায় এর নাক নেই, যা থেকে ধারণা যায় এর অনেক আগেই স্ফিংক্স তার নাক হারিয়েছিলো।
চলুন ঘড়ির কাঁটা ঘুরিয়ে দিয়ে সেই সময়ে ফিরে যাই যখন আধুনিক মানুষের সামনে স্ফিংক্স সবে উন্মোচিত হয়। ১৭৯৮ সালের গ্রীষ্মে নেপোলিয়নের ফরাসি সৈন্যেরা আলেক্সান্দ্রিয়ার উপকূল দখল করে কায়রো অভিমুখে যাত্রা করে। সে সময়ে কেউ কেউ গিজার পিরামিডগুলোর ওপরে উঠে দেখতে পায়, বালির মাঝ থেকে উঠে এসেছে অদ্ভুত একটি মাথা। এ সময়ে স্ফিংক্স এর গলা পর্যন্ত বালিতে ডুবে ছিলো। অনেকে স্ফিংক্স এর খসে যাওয়া নাকের জন্য এই ফরাসি সৈনিকদেরকেই দায়ী করেন, বলেন তারা কেউ টার্গেট প্র্যাক্টিস করতে গিয়ে উড়িয়ে দিয়েছে এর নাক। তবে ১৭৩৭ সালে আঁকা কিছু স্কেচেও দেখা যায় এর নাক নেই, যা থেকে ধারণা যায় এর অনেক আগেই স্ফিংক্স তার নাক হারিয়েছিলো।



তবে একে নিয়ে যেসব গুজব এবং জল্পনা-কল্পনা আছে, তার মাঝে নাকের কদর বেশ কমই। ফারাওদের মস্তকাবরণ পরিহিত এই স্ফিংক্সের শরীরটা আবার সিংহের মত। সে বসে আছে নেক্রোপোলিস বা মৃতের নগরীর দ্বার আগলে। স্ফিংক্স, গিজার পিরামিডগুলো এবং আরও কিছু সমাধিকক্ষের সমন্বয়ে তৈরি এই নেক্রোপোলিস তৈরি হয়েছিলো ফারাও খুফু, খাফ্রে এবং মেনকুরের সময়কালে (খ্রিস্টপূর্ব ২৫৬০ থেকে ২৪৫০ সালের মাঝে)। ধারণা করা হয়, ফারাও খাফ্রের আদলে তৈরি করা হয় এই স্ফিংক্সের মুখ। প্রায় ৪,৫০০ বছর আগে তৈরি হবার পর কালের গ্রাসে ক্ষয়ে গিয়ে ভয়াল রূপ ধারণ করেছে এই মুখ।
তবে একে নিয়ে যেসব গুজব এবং জল্পনা-কল্পনা আছে, তার মাঝে নাকের কদর বেশ কমই। ফারাওদের মস্তকাবরণ পরিহিত এই স্ফিংক্সের শরীরটা আবার সিংহের মত। সে বসে আছে নেক্রোপোলিস বা মৃতের নগরীর দ্বার আগলে। স্ফিংক্স, গিজার পিরামিডগুলো এবং আরও কিছু সমাধিকক্ষের সমন্বয়ে তৈরি এই নেক্রোপোলিস তৈরি হয়েছিলো ফারাও খুফু, খাফ্রে এবং মেনকুরের সময়কালে (খ্রিস্টপূর্ব ২৫৬০ থেকে ২৪৫০ সালের মাঝে)। ধারণা করা হয়, ফারাও খাফ্রের আদলে তৈরি করা হয় এই স্ফিংক্সের মুখ। প্রায় ৪,৫০০ বছর আগে তৈরি হবার পর কালের গ্রাসে ক্ষয়ে গিয়ে ভয়াল রূপ ধারণ করেছে এই মুখ।


স্ফিংক্সের সামনের দুই থাবার মাঝে রয়েছে আরও একটি রহস্যের আধার, যা হলো রাজা চতুর্থ তুতমোস (খ্রিস্টপূর্ব ১৪০০-১৩৯০) এর “ড্রিম স্টেল”।বলা হয়, তরুণ বয়সে তিনি একদিন স্ফিংক্সের ছায়ায় ঘুমিয়ে পড়েন। স্বপ্নে সূর্য দেবতা হোরাস হিসেবে দেখা দেয় স্ফিংক্স এবং বালির করাল গ্রাস থেকে তুতমোস এর কাছে নিরাপত্তা চায়। এর বদলে তুতমোস কে মিশরের আধিপত্য দেবার শপথ করে। তুতমোস স্ফিংক্সের নিরাপত্তা দেন এবং তার বদলে আসলেই সাম্রাজ্যের আধিপত্য পান।
স্ফিংক্সের সামনের দুই থাবার মাঝে রয়েছে আরও একটি রহস্যের আধার, যা হলো রাজা চতুর্থ তুতমোস (খ্রিস্টপূর্ব ১৪০০-১৩৯০) এর “ড্রিম স্টেল”।বলা হয়, তরুণ বয়সে তিনি একদিন স্ফিংক্সের ছায়ায় ঘুমিয়ে পড়েন। স্বপ্নে সূর্য দেবতা হোরাস হিসেবে দেখা দেয় স্ফিংক্স এবং বালির করাল গ্রাস থেকে তুতমোস এর কাছে নিরাপত্তা চায়। এর বদলে তুতমোস কে মিশরের আধিপত্য দেবার শপথ করে। তুতমোস স্ফিংক্সের নিরাপত্তা দেন এবং তার বদলে আসলেই সাম্রাজ্যের আধিপত্য পান।



স্ফিংক্সের ক্ষমতার এমন নিদর্শন শুনে অনেক তত্বের উদ্ভব হয় যাতে বলা হয়, স্ফিংক্স হতে পারে কোনও অতিপ্রাকৃত অস্তিত্ব। অনেকে হারানো আটলান্টিস নগরীর সাথেও এর যোগসূত্র স্থাপন করে ফেলেন। আটলান্টিস এবং স্ফিংক্স এর এই ব্যাপারটা অবশ্য অনেক আগে থেকেই প্রচলিত, প্লেটো যখন উইটোপিয়ান সভ্যতার লেখা শুরু করেন তখন থেকেই। বিংশ শতকের পর আমেরিকান আধ্যাত্মিক এডগার অ্যালান কেস বলেন, তিনি স্বপ্নে স্ফিংক্সের নিচের একটি কক্ষের দৃশ্য দেখতে পান যাতে আটলান্টিসের অবস্থানের ব্যাপারে সব রহস্য রয়েছে এবং তিনি ভবিষ্যৎবাণী করে যান, ১৯৯৮ সালে এই কক্ষ আবিষ্কৃত হবে। তিনি মারা যান ১৯৪৫ সালে।
স্ফিংক্সের ক্ষমতার এমন নিদর্শন শুনে অনেক তত্বের উদ্ভব হয় যাতে বলা হয়, স্ফিংক্স হতে পারে কোনও অতিপ্রাকৃত অস্তিত্ব। অনেকে হারানো আটলান্টিস নগরীর সাথেও এর যোগসূত্র স্থাপন করে ফেলেন। আটলান্টিস এবং স্ফিংক্স এর এই ব্যাপারটা অবশ্য অনেক আগে থেকেই প্রচলিত, প্লেটো যখন উইটোপিয়ান সভ্যতার লেখা শুরু করেন তখন থেকেই। বিংশ শতকের পর আমেরিকান আধ্যাত্মিক এডগার অ্যালান কেস বলেন, তিনি স্বপ্নে স্ফিংক্সের নিচের একটি কক্ষের দৃশ্য দেখতে পান যাতে আটলান্টিসের অবস্থানের ব্যাপারে সব রহস্য রয়েছে এবং তিনি ভবিষ্যৎবাণী করে যান, ১৯৯৮ সালে এই কক্ষ আবিষ্কৃত হবে। তিনি মারা যান ১৯৪৫ সালে।


এখন পর্যন্ত এই আটলান্টিস চেম্বার আবিষ্কৃত হয়নি। তবে স্ফিংক্সের বয়স নিয়ে বিতর্ক চলছে এখন। ১৯৯৬ সালে একদল গবেষক দাবি করেন, স্ফিংক্সের চেহারা ক্ষয় হয়ে যাবার জন্য শুধু বাতাস এবং বালি নয় বরং বৃষ্টিও দায়ী। কিন্তু খাফ্রে-এর সময়ে মিশরের আবহাওয়ায় নিয়মিত বৃষ্টির সম্ভাবনা ছিলো না। মোটামুটি খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০ সালের দিকে আবহাওয়া এমন ছিলো যে সেখানে বৃষ্টি হতো। এ থেকে ধরে নেওয়া যায়, খাফ্রে-এর সময়কালের অনেক আগেই এই স্ফিংক্স তৈরি হয়েছিলো।
এখন পর্যন্ত এই আটলান্টিস চেম্বার আবিষ্কৃত হয়নি। তবে স্ফিংক্সের বয়স নিয়ে বিতর্ক চলছে এখন। ১৯৯৬ সালে একদল গবেষক দাবি করেন, স্ফিংক্সের চেহারা ক্ষয় হয়ে যাবার জন্য শুধু বাতাস এবং বালি নয় বরং বৃষ্টিও দায়ী। কিন্তু খাফ্রে-এর সময়ে মিশরের আবহাওয়ায় নিয়মিত বৃষ্টির সম্ভাবনা ছিলো না। মোটামুটি খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০ সালের দিকে আবহাওয়া এমন ছিলো যে সেখানে বৃষ্টি হতো। এ থেকে ধরে নেওয়া যায়, খাফ্রে-এর সময়কালের অনেক আগেই এই স্ফিংক্স তৈরি হয়েছিলো।



স্ফিংক্সের আকার-আকৃতি এবং নকশার সাথে এর আশেপাশে থাকা কাঠামোগুলোর বেশ অমিল দেখতে পাওয়া যায়। শুধু তাই নয়, এর মাথা এবং শরীরের বিসদৃশ আকৃতি থেকেও অনেক খটকা লাগতে পারে। অনেক গবেষকের বদ্ধমুল ধারণা, মিশরীয়দের আগে অন্য কোনও উন্নত জাতি বসবাস করতো সেই অঞ্চলে এবং তারাই তৈরি করেছিলো স্ফিংক্স। এই সভ্যতা পরে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। অনেকের মতে অবশ্য এই তত্ব ভিত্তিহীন, কারণ স্ফিংক্স ছাড়া সেই সভ্যতার আর কোনও চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায় নি কখনও।
স্ফিংক্সের আকার-আকৃতি এবং নকশার সাথে এর আশেপাশে থাকা কাঠামোগুলোর বেশ অমিল দেখতে পাওয়া যায়। শুধু তাই নয়, এর মাথা এবং শরীরের বিসদৃশ আকৃতি থেকেও অনেক খটকা লাগতে পারে। অনেক গবেষকের বদ্ধমুল ধারণা, মিশরীয়দের আগে অন্য কোনও উন্নত জাতি বসবাস করতো সেই অঞ্চলে এবং তারাই তৈরি করেছিলো স্ফিংক্স। এই সভ্যতা পরে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। অনেকের মতে অবশ্য এই তত্ব ভিত্তিহীন, কারণ স্ফিংক্স ছাড়া সেই সভ্যতার আর কোনও চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায় নি কখনও।

==টীকা==
{{reflist|2}}

==তথ্যসূত্র==
* Clay, Jenny Strauss, ''Hesiod's Cosmos'', Cambridge University Press, 2003. ISBN 978-0-521-82392-0.
{{Use dmy dates|date=October 2010}}
* Stewart, Desmond. Pyramids and the Sphinx. [S.l.]: Newsweek, U.S., 72. Print.
* Kallich, Martin. "Oepidus and the Sphinx." Oepidus: Myth and Drama. N.p.: Western, 1968. N. pag. Print.

==আরও পড়ুন==
* Dessenne, André. ''Le Sphinx: Étude iconographique'' (in French). De Boccard, 1957.

==বহিঃসংযোগ==
* [http://www.newslobby.net/2014/10/23/historical-moment-sphinx-head-found-in-greek-tomb/ Sphinx Head Found in Greek Tomb]
* [http://www.life.com/image/first/in-gallery/51921/the-sphinx-totally-random-trivia The Sphinx: Totally Random Trivia] - slideshow by ''[[Life magazine]]''

[[বিষয়শ্রেণী:প্রাচীন গ্রিক শিল্প]]
[[বিষয়শ্রেণী:প্রাচীন গ্রিক সংস্কৃতি]]
[[বিষয়শ্রেণী:Egyptian legendary creatures]]
[[বিষয়শ্রেণী:Greek legendary creatures]]
[[বিষয়শ্রেণী:পৌরাণিক মানব হাইব্রিড]]
[[বিষয়শ্রেণী:মিশরীয় হস্তনির্মিত ধরনের]]
[[বিষয়শ্রেণী:হেঁয়ালি]]
[[বিষয়শ্রেণী:দানব]]
[[বিষয়শ্রেণী:Fantasy creatures]]
[[বিষয়শ্রেণী:প্রাচীন মিশরীয় চিহ্ন]]
[[বিষয়শ্রেণী:গ্রিক পুরাণ]]
[[বিষয়শ্রেণী:Mythological felines]]
[[বিষয়শ্রেণী:Human-headed mythical creatures]]

১২:৫৪, ১৭ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

স্ফিংক্স
দলকিংবদন্তি সৃষ্টি
উপ দলপৌরাণিক হাইব্রিড
অনুরূপ সৃষ্টিগ্রিফিন
পুরাণপারসিক, মিশরীয় এবং গ্রিক
সম্ভবত প্রথম মিশরীয় স্পিংক্স, চতুর্থ রাজবংশ থেকে রাণী দ্বিতীয় হেটেফেস (কায়রো জাদুঘর)।

স্ফিংক্স (গ্রিক: Σφίγξ /sphinx/, Bœotian: Φίξ /Phix, আরবি: أبو الهول,) একটি পৌরাণিক সৃষ্টি যার শরীরের নিচের অংশ সিংহাকৃতির এবং উপরে মানব মাথার মতোন।

চলুন ঘড়ির কাঁটা ঘুরিয়ে দিয়ে সেই সময়ে ফিরে যাই যখন আধুনিক মানুষের সামনে স্ফিংক্স সবে উন্মোচিত হয়। ১৭৯৮ সালের গ্রীষ্মে নেপোলিয়নের ফরাসি সৈন্যেরা আলেক্সান্দ্রিয়ার উপকূল দখল করে কায়রো অভিমুখে যাত্রা করে। সে সময়ে কেউ কেউ গিজার পিরামিডগুলোর ওপরে উঠে দেখতে পায়, বালির মাঝ থেকে উঠে এসেছে অদ্ভুত একটি মাথা। এ সময়ে স্ফিংক্স এর গলা পর্যন্ত বালিতে ডুবে ছিলো। অনেকে স্ফিংক্স এর খসে যাওয়া নাকের জন্য এই ফরাসি সৈনিকদেরকেই দায়ী করেন, বলেন তারা কেউ টার্গেট প্র্যাক্টিস করতে গিয়ে উড়িয়ে দিয়েছে এর নাক। তবে ১৭৩৭ সালে আঁকা কিছু স্কেচেও দেখা যায় এর নাক নেই, যা থেকে ধারণা যায় এর অনেক আগেই স্ফিংক্স তার নাক হারিয়েছিলো।

তবে একে নিয়ে যেসব গুজব এবং জল্পনা-কল্পনা আছে, তার মাঝে নাকের কদর বেশ কমই। ফারাওদের মস্তকাবরণ পরিহিত এই স্ফিংক্সের শরীরটা আবার সিংহের মত। সে বসে আছে নেক্রোপোলিস বা মৃতের নগরীর দ্বার আগলে। স্ফিংক্স, গিজার পিরামিডগুলো এবং আরও কিছু সমাধিকক্ষের সমন্বয়ে তৈরি এই নেক্রোপোলিস তৈরি হয়েছিলো ফারাও খুফু, খাফ্রে এবং মেনকুরের সময়কালে (খ্রিস্টপূর্ব ২৫৬০ থেকে ২৪৫০ সালের মাঝে)। ধারণা করা হয়, ফারাও খাফ্রের আদলে তৈরি করা হয় এই স্ফিংক্সের মুখ। প্রায় ৪,৫০০ বছর আগে তৈরি হবার পর কালের গ্রাসে ক্ষয়ে গিয়ে ভয়াল রূপ ধারণ করেছে এই মুখ।

স্ফিংক্সের সামনের দুই থাবার মাঝে রয়েছে আরও একটি রহস্যের আধার, যা হলো রাজা চতুর্থ তুতমোস (খ্রিস্টপূর্ব ১৪০০-১৩৯০) এর “ড্রিম স্টেল”।বলা হয়, তরুণ বয়সে তিনি একদিন স্ফিংক্সের ছায়ায় ঘুমিয়ে পড়েন। স্বপ্নে সূর্য দেবতা হোরাস হিসেবে দেখা দেয় স্ফিংক্স এবং বালির করাল গ্রাস থেকে তুতমোস এর কাছে নিরাপত্তা চায়। এর বদলে তুতমোস কে মিশরের আধিপত্য দেবার শপথ করে। তুতমোস স্ফিংক্সের নিরাপত্তা দেন এবং তার বদলে আসলেই সাম্রাজ্যের আধিপত্য পান।

স্ফিংক্সের ক্ষমতার এমন নিদর্শন শুনে অনেক তত্বের উদ্ভব হয় যাতে বলা হয়, স্ফিংক্স হতে পারে কোনও অতিপ্রাকৃত অস্তিত্ব। অনেকে হারানো আটলান্টিস নগরীর সাথেও এর যোগসূত্র স্থাপন করে ফেলেন। আটলান্টিস এবং স্ফিংক্স এর এই ব্যাপারটা অবশ্য অনেক আগে থেকেই প্রচলিত, প্লেটো যখন উইটোপিয়ান সভ্যতার লেখা শুরু করেন তখন থেকেই। বিংশ শতকের পর আমেরিকান আধ্যাত্মিক এডগার অ্যালান কেস বলেন, তিনি স্বপ্নে স্ফিংক্সের নিচের একটি কক্ষের দৃশ্য দেখতে পান যাতে আটলান্টিসের অবস্থানের ব্যাপারে সব রহস্য রয়েছে এবং তিনি ভবিষ্যৎবাণী করে যান, ১৯৯৮ সালে এই কক্ষ আবিষ্কৃত হবে। তিনি মারা যান ১৯৪৫ সালে।

এখন পর্যন্ত এই আটলান্টিস চেম্বার আবিষ্কৃত হয়নি। তবে স্ফিংক্সের বয়স নিয়ে বিতর্ক চলছে এখন। ১৯৯৬ সালে একদল গবেষক দাবি করেন, স্ফিংক্সের চেহারা ক্ষয় হয়ে যাবার জন্য শুধু বাতাস এবং বালি নয় বরং বৃষ্টিও দায়ী। কিন্তু খাফ্রে-এর সময়ে মিশরের আবহাওয়ায় নিয়মিত বৃষ্টির সম্ভাবনা ছিলো না। মোটামুটি খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০ সালের দিকে আবহাওয়া এমন ছিলো যে সেখানে বৃষ্টি হতো। এ থেকে ধরে নেওয়া যায়, খাফ্রে-এর সময়কালের অনেক আগেই এই স্ফিংক্স তৈরি হয়েছিলো।

স্ফিংক্সের আকার-আকৃতি এবং নকশার সাথে এর আশেপাশে থাকা কাঠামোগুলোর বেশ অমিল দেখতে পাওয়া যায়। শুধু তাই নয়, এর মাথা এবং শরীরের বিসদৃশ আকৃতি থেকেও অনেক খটকা লাগতে পারে। অনেক গবেষকের বদ্ধমুল ধারণা, মিশরীয়দের আগে অন্য কোনও উন্নত জাতি বসবাস করতো সেই অঞ্চলে এবং তারাই তৈরি করেছিলো স্ফিংক্স। এই সভ্যতা পরে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। অনেকের মতে অবশ্য এই তত্ব ভিত্তিহীন, কারণ স্ফিংক্স ছাড়া সেই সভ্যতার আর কোনও চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায় নি কখনও।

টীকা

তথ্যসূত্র

টেমপ্লেট:Use dmy dates

  • Stewart, Desmond. Pyramids and the Sphinx. [S.l.]: Newsweek, U.S., 72. Print.
  • Kallich, Martin. "Oepidus and the Sphinx." Oepidus: Myth and Drama. N.p.: Western, 1968. N. pag. Print.

আরও পড়ুন

  • Dessenne, André. Le Sphinx: Étude iconographique (in French). De Boccard, 1957.

বহিঃসংযোগ