বাআল: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Ferdous (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যা?
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[File:Baal Ugarit Louvre AO17330.jpg|thumb|right|বাআলের ব্রোঞ্জ মূর্তি, খ্রিস্টীয় দ্বাদশ-চতুর্দশ শতক, রাস শর্মা (প্রাচীন উগারিট) অঞ্চলে প্রাপ্ত]]
[[File:Baal Ugarit Louvre AO17330.jpg|thumb|right|বাআলের ব্রোঞ্জ মূর্তি, খ্রিস্টীয় দ্বাদশ-চতুর্দশ শতক, রাস শর্মা (প্রাচীন উগারিট) অঞ্চলে প্রাপ্ত]]
{{প্রাক-ইসলামী দেবতাসমূহ}}
{{প্রাক-ইসলামী দেবতাসমূহ}}
'''বাআল''' (([[হিব্রু]] בַּעַל) উত্তর-পশ্চিমের সেমিটিক ইশ্বর এবং শব্দটির অর্থ পভু।<ref>Serge Lancel, ''Carthage, a History'', p. 194.</ref> লেভান্ত এবং এশিয়া মাইনরের বিস্তৃত এলাকায় শহরসমূহের রক্ষক দেবতাদেরকে বাআল নামে সম্বোধন করা হত। বাআল উপাসকগণ বাআলাইত নামে পরিচিত ছিলো।
'''বাআল''' ([[হিব্রু]] בַּעַל) উত্তর-পশ্চিমের সেমিটিক ইশ্বর এবং শব্দটির অর্থ পভু।<ref>Serge Lancel, ''Carthage, a History'', p. 194.</ref> লেভান্ত এবং এশিয়া মাইনরের বিস্তৃত এলাকায় শহরসমূহের রক্ষক দেবতাদেরকে বাআল নামে সম্বোধন করা হত। বাআল উপাসকগণ বাআলাইত নামে পরিচিত ছিলো।




কিছু লিপি থেকে জানা যায় প্রাচীন আরব দেবতা [[হাদাদ]]কে বাআল নামে সম্বোধন করা হত। হাদাদ ছিলেন বজ্রপাত, উর্বতা, কৃষি এবং স্বর্গের দেবতা। কিন্তু সেই সময়ে শুধু মাত্র ধর্মযাজকগণ তার পবিত্র নাম উচ্চারণের অনুমতি পেতেন। সেজন্য জনসাধারণ তাকে বাআল নামে সম্বোধন করত।
কিছু লিপি থেকে জানা যায় প্রাচীন আরব দেবতা [[হাদাদ]]কে বাআল নামে সম্বোধন করা হত। হাদাদ ছিলেন বজ্রপাত, উর্বতা, কৃষি এবং স্বর্গের দেবতা। কিন্তু সেই সময়ে শুধু মাত্র ধর্মযাজকগণ তার পবিত্র নাম উচ্চারণের অনুমতি পেতেন। সেজন্য জনসাধারণ তাকে বাআল নামে সম্বোধন করত।
১১ নং লাইন: ৯ নং লাইন:


==আল কোরআনে==
==আল কোরআনে==
কুরআন মাজীদের বিভিন্ন স্থানে বাআল শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। যেমনঃ সূরা বাকারার ২২৮, সূরা নিসার ১২৭, সূরা হূদের ৭২ এবং সূরা নূরের ৩১ আয়াতসমূহ।
কুরআন মাজীদের বিভিন্ন স্থানে বাআল শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। যেমনঃ সূরা বাকারার ২২৮, সূরা নিসার ১২৭, সূরা হূদের ৭২ এবং সূরা নূরের ৩১ আয়াতসমূহ।


সুরা সাফফাতের ১২৫ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে হযরত ইলিয়াস (আঃ) [ইলিজাহ] কে তার লোকদেরকে বাআল এর পূজা পরিত্যাগ করে সত্যিকারের সৃষ্টিকর্তার উপাসনা করার উপদেশ দিয়েছেন। ''তোমরা কি বাআলকে ডাকো এবং পরিত্যাগ করো শ্রেষ্ঠ ও সর্বোত্তম স্রষ্টা আল্লাহকে''-আয়াত ১২৫, সুরা সাফফাত, আল কোরআন <ref>আয়াত ১২৫, সুরা সাফফাত, আল কোরআন। </ref>
সুরা সাফফাতের ১২৫ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে হযরত ইলিয়াস (আঃ) [ইলিজাহ] কে তার লোকদেরকে বাআল এর পূজা পরিত্যাগ করে সত্যিকারের সৃষ্টিকর্তার উপাসনা করার উপদেশ দিয়েছেন। ''তোমরা কি বাআলকে ডাকো এবং পরিত্যাগ করো শ্রেষ্ঠ ও সর্বোত্তম স্রষ্টা আল্লাহকে''-আয়াত ১২৫, সুরা সাফফাত, আল কোরআন <ref>আয়াত ১২৫, সুরা সাফফাত, আল কোরআন।</ref>


==ইহুদি ধর্মে==
==ইহুদি ধর্মে==

০৭:১৫, ২১ মার্চ ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

বাআলের ব্রোঞ্জ মূর্তি, খ্রিস্টীয় দ্বাদশ-চতুর্দশ শতক, রাস শর্মা (প্রাচীন উগারিট) অঞ্চলে প্রাপ্ত

বাআল (হিব্রু בַּעַל) উত্তর-পশ্চিমের সেমিটিক ইশ্বর এবং শব্দটির অর্থ পভু।[১] লেভান্ত এবং এশিয়া মাইনরের বিস্তৃত এলাকায় শহরসমূহের রক্ষক দেবতাদেরকে বাআল নামে সম্বোধন করা হত। বাআল উপাসকগণ বাআলাইত নামে পরিচিত ছিলো।

কিছু লিপি থেকে জানা যায় প্রাচীন আরব দেবতা হাদাদকে বাআল নামে সম্বোধন করা হত। হাদাদ ছিলেন বজ্রপাত, উর্বতা, কৃষি এবং স্বর্গের দেবতা। কিন্তু সেই সময়ে শুধু মাত্র ধর্মযাজকগণ তার পবিত্র নাম উচ্চারণের অনুমতি পেতেন। সেজন্য জনসাধারণ তাকে বাআল নামে সম্বোধন করত।

নামকরণ

বজ্রাধর সহ বাআল, উগারিতে প্রাপ্ত

বাআল (বেত-আইন-লামেধ, হিব্রু בַּעַל / בָּעַל, আরবী بعل) একটি সেমিটিক শব্দ যার অর্থ প্রভু, শাসক, মালিক (পুরুষ), রক্ষক, স্বামী। বাআল শব্দ দ্বারা পশ্চিম সেমিটিক অঞ্চলে[২] আবহাওয়ার দেবতা(বৃষ্টির দেবতা)কে সম্বোধন করা হত। হিব্রুতে বাআল শব্দের অর্থ স্বামী বা মালিক এবং এটি ক্রিয়াপদ সম্পর্কিত শব্দ। হিব্রু বাগধারায় বাআল শব্দটি বহুল ব্যবহৃত হয়। এর দ্বারা একজনের মাঝে একাধিক গুনের সন্নিবেশকে বোঝানো হয়। বাআল এর স্ত্রী লিঙ্গ হচ্ছে বাআলাহ (হিব্রু בַּעֲלָה, আরবী بعلـة)। বাআলাহ অর্থ মালিক (স্ত্রী), বউ।[৩]

আল কোরআনে

কুরআন মাজীদের বিভিন্ন স্থানে বাআল শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। যেমনঃ সূরা বাকারার ২২৮, সূরা নিসার ১২৭, সূরা হূদের ৭২ এবং সূরা নূরের ৩১ আয়াতসমূহ।


সুরা সাফফাতের ১২৫ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে হযরত ইলিয়াস (আঃ) [ইলিজাহ] কে তার লোকদেরকে বাআল এর পূজা পরিত্যাগ করে সত্যিকারের সৃষ্টিকর্তার উপাসনা করার উপদেশ দিয়েছেন। তোমরা কি বাআলকে ডাকো এবং পরিত্যাগ করো শ্রেষ্ঠ ও সর্বোত্তম স্রষ্টা আল্লাহকে-আয়াত ১২৫, সুরা সাফফাত, আল কোরআন [৪]

ইহুদি ধর্মে

বাইবেলের বর্ণনা মতে মূসার প্রথম খলিফা ইউশা বিন নূনের ইন্তেকালের পরপরই বনী ইসরাঈলের মধ্যে এ নৈতিক ও ধর্মীয় অবক্ষয়ের সূচনা হয়ে গিয়েছিল। একেশ্ববাদী মূসা (মোজেস) এর অনুসারীগুণ বাআলের পূজা শুরু করে।

ইসরাইল সন্তানগণ সদাপ্রভূর দৃষ্টিতে যাহা মন্দ, তাহাই করিতে লাগিল; এবং বাল দেবগনের সেবা করিতে লাগিল।-------তাহারা সদাপ্রভূকে ত্যাগ করিয়া বাল দেবের ও অষ্টারেৎ দেবীদের সেবা করিত। (বিচারকর্তৃগণ ২: ১১-১৩)

ইসরাইল-সন্তানগণ কানানীয়, হিত্তীয়, ইমোরীয়, পরিযীয়, হিব্বীয় ও যিবূযীয়গণের মধ্যে বসতি করিল; আর তাহারা তাহাদের কন্যাগণকে বিবাহ করিত, তাহাদের পুত্রগণের সহিত আপন আপন কন্যাদের বিবাহ দিত ও তাহাদের দেবগণের সেবা করিত।( বিচারকর্তৃগণ ৩: ৫-৬ )

সে সময় ইসরাইলিদের মধ্যে বাআল পূজার এত বেশী প্রচলন হয়ে পড়েছিল যে, বাইবেলের বর্ণনা মতে তাদের একটি জনপদে প্রকাশ্যে বা’আলের যজ্ঞবেদী নির্মিত হয়েছিল এবং সেখানে বলিদান করা হতো। একেশ্বরবাদে অনুগত জনৈক ইসরাইলি এটা সহ্য করতে না পেরে রাতের আঁধারে চুপিচুপি যজ্ঞবেদীটি ভেঙে ফেললো। পরদিন জনতার একটি বিরাট সমাবেশ অনুষ্ঠিত হলো। তারা উচ্ছেদকারী ব্যক্তির হত্যার দাবী করতে লাগলো। (বিচারকর্তৃগণ ৬: ২৫-৩২) শেষ পর্যন্ত এ অবস্থার পরিসমাপ্তি ঘটালেন সামুয়েল (সামায়েল), তালূত এবং দাউদ (ডেভিদ) ও সুলাইমান (সোলেমান)। তাঁরা কেবল বনী ইসরাঈলেরই সংস্কার করলেন না, নিজেদের রাজ্যেও শিরক ও মূর্তিপূজা নির্মূল করলেন। কিন্তু সুলাইমানের মৃত্যুর পর বাআল পূজা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো এবং বিশেষ করে উত্তর ফিলিস্তিন যেখানে এখন ইসরাইল রাষ্ট্র অবস্থিত, বাআল পূজার ব্যাপক প্রচলন শুরু হলো।

তথ্যসূত্র

  1. Serge Lancel, Carthage, a History, p. 194.
  2. Encyclopedia Judaica, Ba-Blo, pg 11, Baal worship
  3. Strong, James। Strong's Exhaustive Concordance of the Bible। Peabody, MA: Hendrickson Publishers। পৃষ্ঠা Heb dict 22। আইএসবিএন 1-56563-777-1 
  4. আয়াত ১২৫, সুরা সাফফাত, আল কোরআন।