নারায়ণ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে, কোন সমস্যা?
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১৫ নং লাইন: ১৫ নং লাইন:
| Mount = [[গরুড়]]
| Mount = [[গরুড়]]
}}
}}
'''নারায়ণ''' ([[সংস্কৃত]]: नारायण [[IAST]]: Nārāyaṇa) হলেন [[বেদ|বৈদিক]] সর্বোচ্চ উপাস্য।<ref>Bhagavata Purana (12.12.56): "Narayanam Devam adevam isam - Lord Narayana, the Supreme controller and the ultimate Soul of all existence, beyond whom there is no other god.</ref><ref>Bhagavata Purana (12.13.16): Just as the river Ganges is the greatest of all rivers, Lord Achyuta (Vishnu or Narayana) the supreme among deities (devas) and Lord Shambhu (Shiva) the greatest of Vaishnavas, so Bhagavata Purana is the greatest of all Puranas.</ref> [[বৈষ্ণবধর্ম|বৈষ্ণবধর্মে]] তাঁকে "[[পুরুষোত্তম]]" বা শ্রেষ্ঠ [[পুরুষ (হিন্দু দর্শন)|পুরুষ]] মনে করা হয়। তিনি [[বিষ্ণু]] বা [[হরি]] নামেও পরিচিত। [[বেদ]], [[ভগবদ্গীতা]],<ref>Bhagavad Gita (15.18): Because I am transcendental, beyond both the fallible and the infallible, and because I am the greatest, I am celebrated both in the world and in the Vedas as that Supreme Person (Purushottama)</ref> ও [[পুরাণ|পুরাণেও]] তাঁকে "পুরুষোত্তম" বলা হয়েছে।


পরম উপাস্যের সর্বব্যাপী সত্ত্বাটি "নারায়ণ" নামে পরিচিত। তিনিই [[ঋগ্বেদ|ঋগ্বেদের]] [[পুরুষসূক্ত|পুরুষসূক্তে]] উল্লিখিত [[পুরুষ (হিন্দু দর্শন)|পুরুষ]]। [[যজুর্বেদ|যজুর্বেদের]] [[নারায়ণ সূক্ত|নারায়ণ সূক্তের]] পঞ্চম শ্লোকে নারায়ণকে ব্রহ্মাণ্ডের ভিতরে ও বাইরের সব কিছুর মধ্যে পরিব্যাপ্ত সত্ত্বা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। "নারায়ণ" শব্দের অর্থ "যিনি জলের উপর শয়ন করেন।" হিন্দুশাস্ত্র মতে, জল প্রথম সৃষ্ট বস্তু, তাই সৃষ্টিকর্তা নারায়ণ জলেই বাস করেন।<ref>Manu Smruti 1:10 " The Law Code of Manu", Published by Oxford University Press, ISBN 0-19-280271-2, page 11, also, The Laws of Manu in the 21st Century [http://www.srimatham.com/storage/docs/manu-smriti.pdf] by Pt. Sri Rama Ramanuja Acharya, page 6</ref> এই জন্য হিন্দু শিল্পকলায় নারায়ণকে প্রায়শই জলের উপর অবস্থানকারী মূর্তিতে চিত্রিত করা হয়। সংস্কৃত ভাষায় "নর" শব্দের অর্থ মানুষ। তাই "নারায়ণ" শব্দের অন্য অর্থ হল, "মানুষ যেখানে আশ্রয় গ্রহণ করে।"
'''নারায়ণ''' [[হিন্দু]] দেবতা [[বিষ্ণু|বিষ্ণুর]] একটি বিশেষ রূপ। [[বেদ|বেদের]] শতপথ-এ অবশ্য ‘পুরুষ’ অর্থাৎ ঈশ্বরকেই নারায়ণ নামে অভিহিত করা হয়েছে। ‘নারায়ণ’ শব্দের অর্থ ‘নার’ অর্থাৎ জলে শুয়ে থাকেন যিনি। [[ভাগবত]] অনুসারে, অন্ড ভেদ করে বেরিয়ে নার অর্থাৎ জল সৃষ্টি করে অবস্থান করেছিলেন বলে বিষ্ণুর অপর নাম নারায়ণ (ভাগবত ২।১০।১০)। পৌরাণিক বর্ণনা অনুসারে, প্রলয়ের পর বিষ্ণু অনন্তশয্যায় শায়িত হয়ে নিদ্রামগ্ন ছিলেন। সেই সময় তাঁর সহস্র মস্তক, সহস্র চোখ, সহস্র হাত ও সহস্র পা ছিল। এই সময় তাঁর নাভি থেকে সাত যোজন ব্যাপী এক পদ্ম প্রস্ফুটিত হয় এবং এই পদ্মে উৎপন্ন হন [[ব্রহ্মা]]। নারায়ণের [[গায়ত্রী]] হল – ওঁ নারায়ণায় বিদ্মহে বাসুদেবায় ধীমহি তন্নো বিষ্ণু প্রচোদয়াৎ।


[[ভাগবত পুরাণ|ভাগবত পুরাণে]] নারায়ণকে বলা হয়েছে [[পরব্রহ্ম]] বা সর্বোচ্চ উপাস্য। এই পুরাণ মতে, তিনি অসংখ্য জগৎ সৃষ্টি করে প্রতিটি জগতে জগদীশ্বর রূপে প্রবেশ করেছেন।<ref>Bhagavata Purana Canto 2 Chapter 10 Verse 10</ref> [[ব্রহ্মা]] রূপে [[রজঃ]] [[গুণ (হিন্দু দর্শন)|গুণ]] অবলম্বন করে তিনি চোদ্দটি জগৎ সৃষ্টি করেছেন। [[বিষ্ণু]] রূপে [[সত্ত্ব]] গুণ অবলম্বন করে তিনি সেগুলি রক্ষা করেন এবং [[শি]] রূপে [[তমঃ]] গুণ অবলম্বন করে তিনি তা ধ্বংস করেন।<ref>Bhagavata Purana Canto 2 Chapter 5 Verse 16-18</ref><ref>Bhagavata Purana Canto 11 Chapter 4 Verse 5</ref><ref>Vishnu Purana 1.2.61-63</ref> এই ব্যাখ্যা অনুযায়ী, [[ত্রিমূর্তি]] ও [[নারায়ণ]] অভিন্ন।

নারায়ণের অপর নাম "মুকুন্দ"। এই শব্দের অর্থ, যিনি জন্ম ও মৃত্যুর চক্র থেকে মুক্তি অর্থাৎ [[মোক্ষ]] প্রদান করেন।<ref>Name No. 515 in Vishnu Sahasranama</ref>

জাগতিক বিশ্বের বাইরে নারায়ণের সর্বোচ্চ ও চিরন্তন অধিষ্ঠান [[বৈকুণ্ঠ|বৈকুণ্ঠে]]। বৈকুণ্ঠকে হিন্দুরা আনন্দময় স্থান মনে করেন। বৈকুণ্ঠ পরমধামও (অর্থাৎ, সর্বশ্রেষ্ঠ স্থান যেখানে মুক্তাত্মারা পরমেশ্বেরের সান্নিধ্যে চিরকালের জন্য বাস করেন) বলা হয়। হিন্দুরা মনে করেন, বৈকুণ্ঠের ধারণা কোনো জাগতিক বিজ্ঞান বা যুক্তির সাহায্যে করা যায় না।<ref>http://www.tirumala.org/sapthagiri/062003/vaikuntha.htm</ref> কোনো কোনো ক্ষেত্রে, [[ক্ষীরসমুদ্র]], যেখানে [[বিষ্ণু]] [[অনন্তনাগ|অনন্তনাগের]] উপর শয়ন করেন, তাকে জাগতিক বিশ্বের "স্থানীয় [[বৈকুণ্ঠ]]" বলা হয়।

''[[মহাভারত]]''-এ [[কৃষ্ণ|কৃষ্ণকে]] একাধিকবার নারায়ণ ও [[অর্জুন|অর্জুনকে]] নর বলা হয়েছে।<ref>''Vaisnavism Saivism and Minor Religious Systems'', Ramkrishna Gopal Bhandarkar. Published by Asian Educational Services, p.46.</ref> এই মহাকাব্যে তাঁদের বোঝাতে বহুবচন "কৃষ্ণদ্বয়" শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে বিষ্ণুর পূর্ববর্তী অবতার [[নর-নারায়ণ|নর-নারায়ণের]] সঙ্গে তাঁদের একত্ব বোঝাতে।<ref>{{cite book |author=Hiltebeitel, Alf |title=The ritual of battle: Krishna in the Mahābhārata |publisher=State University of New York Press |location=Albany, N.Y |year=1990 |pages= |isbn=0-7914-0249-5 |oclc= |doi= |accessdate=}} [http://books.google.ie/books?id=vwWGX08JAx8C&pg=PA61 p61]</ref>
== আরও দেখুন ==
== আরও দেখুন ==
* [[বিষ্ণু]]
* [[বিষ্ণু]]

০৯:৫২, ২৪ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

নারায়ণ
দেবনাগরীनारायण

নারায়ণ (সংস্কৃত: नारायण IAST: Nārāyaṇa) হলেন বৈদিক সর্বোচ্চ উপাস্য।[১][২] বৈষ্ণবধর্মে তাঁকে "পুরুষোত্তম" বা শ্রেষ্ঠ পুরুষ মনে করা হয়। তিনি বিষ্ণু বা হরি নামেও পরিচিত। বেদ, ভগবদ্গীতা,[৩]পুরাণেও তাঁকে "পুরুষোত্তম" বলা হয়েছে।

পরম উপাস্যের সর্বব্যাপী সত্ত্বাটি "নারায়ণ" নামে পরিচিত। তিনিই ঋগ্বেদের পুরুষসূক্তে উল্লিখিত পুরুষযজুর্বেদের নারায়ণ সূক্তের পঞ্চম শ্লোকে নারায়ণকে ব্রহ্মাণ্ডের ভিতরে ও বাইরের সব কিছুর মধ্যে পরিব্যাপ্ত সত্ত্বা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। "নারায়ণ" শব্দের অর্থ "যিনি জলের উপর শয়ন করেন।" হিন্দুশাস্ত্র মতে, জল প্রথম সৃষ্ট বস্তু, তাই সৃষ্টিকর্তা নারায়ণ জলেই বাস করেন।[৪] এই জন্য হিন্দু শিল্পকলায় নারায়ণকে প্রায়শই জলের উপর অবস্থানকারী মূর্তিতে চিত্রিত করা হয়। সংস্কৃত ভাষায় "নর" শব্দের অর্থ মানুষ। তাই "নারায়ণ" শব্দের অন্য অর্থ হল, "মানুষ যেখানে আশ্রয় গ্রহণ করে।"

ভাগবত পুরাণে নারায়ণকে বলা হয়েছে পরব্রহ্ম বা সর্বোচ্চ উপাস্য। এই পুরাণ মতে, তিনি অসংখ্য জগৎ সৃষ্টি করে প্রতিটি জগতে জগদীশ্বর রূপে প্রবেশ করেছেন।[৫] ব্রহ্মা রূপে রজঃ গুণ অবলম্বন করে তিনি চোদ্দটি জগৎ সৃষ্টি করেছেন। বিষ্ণু রূপে সত্ত্ব গুণ অবলম্বন করে তিনি সেগুলি রক্ষা করেন এবং শি রূপে তমঃ গুণ অবলম্বন করে তিনি তা ধ্বংস করেন।[৬][৭][৮] এই ব্যাখ্যা অনুযায়ী, ত্রিমূর্তিনারায়ণ অভিন্ন।

নারায়ণের অপর নাম "মুকুন্দ"। এই শব্দের অর্থ, যিনি জন্ম ও মৃত্যুর চক্র থেকে মুক্তি অর্থাৎ মোক্ষ প্রদান করেন।[৯]

জাগতিক বিশ্বের বাইরে নারায়ণের সর্বোচ্চ ও চিরন্তন অধিষ্ঠান বৈকুণ্ঠে। বৈকুণ্ঠকে হিন্দুরা আনন্দময় স্থান মনে করেন। বৈকুণ্ঠ পরমধামও (অর্থাৎ, সর্বশ্রেষ্ঠ স্থান যেখানে মুক্তাত্মারা পরমেশ্বেরের সান্নিধ্যে চিরকালের জন্য বাস করেন) বলা হয়। হিন্দুরা মনে করেন, বৈকুণ্ঠের ধারণা কোনো জাগতিক বিজ্ঞান বা যুক্তির সাহায্যে করা যায় না।[১০] কোনো কোনো ক্ষেত্রে, ক্ষীরসমুদ্র, যেখানে বিষ্ণু অনন্তনাগের উপর শয়ন করেন, তাকে জাগতিক বিশ্বের "স্থানীয় বৈকুণ্ঠ" বলা হয়।

মহাভারত-এ কৃষ্ণকে একাধিকবার নারায়ণ ও অর্জুনকে নর বলা হয়েছে।[১১] এই মহাকাব্যে তাঁদের বোঝাতে বহুবচন "কৃষ্ণদ্বয়" শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে বিষ্ণুর পূর্ববর্তী অবতার নর-নারায়ণের সঙ্গে তাঁদের একত্ব বোঝাতে।[১২]

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  • পৌরাণিকা (বিশ্বকোষ হিন্দুধর্ম), প্রথম খণ্ড, ফার্মা কেএলএম প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, ২০০১
  1. Bhagavata Purana (12.12.56): "Narayanam Devam adevam isam - Lord Narayana, the Supreme controller and the ultimate Soul of all existence, beyond whom there is no other god.
  2. Bhagavata Purana (12.13.16): Just as the river Ganges is the greatest of all rivers, Lord Achyuta (Vishnu or Narayana) the supreme among deities (devas) and Lord Shambhu (Shiva) the greatest of Vaishnavas, so Bhagavata Purana is the greatest of all Puranas.
  3. Bhagavad Gita (15.18): Because I am transcendental, beyond both the fallible and the infallible, and because I am the greatest, I am celebrated both in the world and in the Vedas as that Supreme Person (Purushottama)
  4. Manu Smruti 1:10 " The Law Code of Manu", Published by Oxford University Press, ISBN 0-19-280271-2, page 11, also, The Laws of Manu in the 21st Century [১] by Pt. Sri Rama Ramanuja Acharya, page 6
  5. Bhagavata Purana Canto 2 Chapter 10 Verse 10
  6. Bhagavata Purana Canto 2 Chapter 5 Verse 16-18
  7. Bhagavata Purana Canto 11 Chapter 4 Verse 5
  8. Vishnu Purana 1.2.61-63
  9. Name No. 515 in Vishnu Sahasranama
  10. http://www.tirumala.org/sapthagiri/062003/vaikuntha.htm
  11. Vaisnavism Saivism and Minor Religious Systems, Ramkrishna Gopal Bhandarkar. Published by Asian Educational Services, p.46.
  12. Hiltebeitel, Alf (১৯৯০)। The ritual of battle: Krishna in the Mahābhārata। Albany, N.Y: State University of New York Press। আইএসবিএন 0-7914-0249-5  p61