সুসমাচার: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
WikitanvirBot I (আলোচনা | অবদান)
বট কসমেটিক পরিবর্তন করছে; কোনো সমস্যা?
৭ নং লাইন: ৭ নং লাইন:
[[ইসলাম]] ধর্মে ''[[ইঞ্জিল]]'' ([[আরবি ভাষা|আরবি]]: إنجيل) নামে একটি বইয়ের উল্লেখ আছে। ইসলাম মতে, এই বইটি ঈশ্বর যিশুর কাছে প্রকাশ করেছিলেন। ইঞ্জিল শব্দটি কোনো কোনো অনুবাদে 'গসপেল' অর্থাৎ সুসমাচার হয়েছে। ''[[কুরআন]]''-এ যে চারটি বইকে [[আল্লাহ্‌]]-কর্তৃক প্রকাশিত বলে উল্লেখ করা হয়েছে, এটি তার একটি। তবে ইসলাম মতে, পরবর্তী যুগে ইঞ্জিলের কথা পালটে দেওয়া হয়েছিল। তাই ঈশ্বর নব [[মুহাম্মদ|মুহাম্মদকে]] পাঠিয়েছিলেন শেষ বই ''[[কুরআন]]'' প্রকাশ করার জন্য।<ref>''Historical Dictionary of Prophets in Islam and Judaism'', B.M. Wheeler, ''Injil''</ref>
[[ইসলাম]] ধর্মে ''[[ইঞ্জিল]]'' ([[আরবি ভাষা|আরবি]]: إنجيل) নামে একটি বইয়ের উল্লেখ আছে। ইসলাম মতে, এই বইটি ঈশ্বর যিশুর কাছে প্রকাশ করেছিলেন। ইঞ্জিল শব্দটি কোনো কোনো অনুবাদে 'গসপেল' অর্থাৎ সুসমাচার হয়েছে। ''[[কুরআন]]''-এ যে চারটি বইকে [[আল্লাহ্‌]]-কর্তৃক প্রকাশিত বলে উল্লেখ করা হয়েছে, এটি তার একটি। তবে ইসলাম মতে, পরবর্তী যুগে ইঞ্জিলের কথা পালটে দেওয়া হয়েছিল। তাই ঈশ্বর নব [[মুহাম্মদ|মুহাম্মদকে]] পাঠিয়েছিলেন শেষ বই ''[[কুরআন]]'' প্রকাশ করার জন্য।<ref>''Historical Dictionary of Prophets in Islam and Judaism'', B.M. Wheeler, ''Injil''</ref>


==ব্যুৎপত্তি==
== ব্যুৎপত্তি ==
{{Christianity|state=collapsed}}
{{Christianity|state=collapsed}}
{{Main|যিশু খ্রিস্টের বাণী}}
{{Main|যিশু খ্রিস্টের বাণী}}
১৩ নং লাইন: ১৩ নং লাইন:


"গসপেল" কথাটি হল গ্রিক "εὐαγγέλιον" বা "ইউয়ানজেলিয়ন" ("শুভ সংবাদ") অথবা আরামাইক "ܐܘܢܓܠܝܘܢ" বা "ইউয়াংএলিয়াওন" কথাটির আক্ষরিক অনুবাদ। গ্রিক "ইউয়ানজেলিয়ন" (এর এর [[লাতিন ভাষা|লাতিন]] প্রতিরূপ ''evangelium'' বা "ইভানগেলিয়াম") শব্দটি থেকে ইংরেজিতে "এভানজেলিস্ট" বা "[[ইভানজেলিজম]]"-এর উৎপত্তি। চারটি শাস্ত্রীয় খ্রিস্টান সুসমাচারের লেখকদের বলা হয় [[চার ইভানজেলিস্ট]]।
"গসপেল" কথাটি হল গ্রিক "εὐαγγέλιον" বা "ইউয়ানজেলিয়ন" ("শুভ সংবাদ") অথবা আরামাইক "ܐܘܢܓܠܝܘܢ" বা "ইউয়াংএলিয়াওন" কথাটির আক্ষরিক অনুবাদ। গ্রিক "ইউয়ানজেলিয়ন" (এর এর [[লাতিন ভাষা|লাতিন]] প্রতিরূপ ''evangelium'' বা "ইভানগেলিয়াম") শব্দটি থেকে ইংরেজিতে "এভানজেলিস্ট" বা "[[ইভানজেলিজম]]"-এর উৎপত্তি। চারটি শাস্ত্রীয় খ্রিস্টান সুসমাচারের লেখকদের বলা হয় [[চার ইভানজেলিস্ট]]।
==ব্যবহার==
== ব্যবহার ==
[[পল (সন্ত)|পল]] [[করিন্থ|করিন্থের]] চার্চের লোকেদের কাছে "εὐαγγέλιον" (গসপেল বা সুসমাচার) শব্দটি প্রথম ব্যবহার করে বলেছিলেন, "বন্ধুগণ, আমি যে সুসমাচার তোমাদের কাছে প্রচার করছি, যা তোমরা গ্রহণ করেছ এবং যার উপরে তোমরা প্রতিষ্ঠিত হয়েছ, তার কথাই আমি তোমাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই।"<ref>{{bibleref2|1 Corinthians|15:1}}</ref> সাহিত্যের একটি বর্গ হিসেবে "গসপেল" কথাটির প্রথম প্রয়োগ ঘটেছিল দ্বিতীয় শতাব্দীতে। [[জাস্টিন মার্টায়ার]] (১৫৫ খ্রিস্টাব্দ) তাঁর ''[[ফার্স্ট অ্যাপোলজি অফ জাস্টিন মার্টায়ার|অ্যাপোলজি]]''-তে লিখেছিলেন, "...প্রেরিতেরা তাঁদের স্মৃতিকথায় যা লিখেছিলেন, তা গসপেল নামে পরিচিত।"<ref>[http://earlychristianwritings.com/text/justinmartyr-firstapology.html 1 Apology 66]</ref>
[[পল (সন্ত)|পল]] [[করিন্থ|করিন্থের]] চার্চের লোকেদের কাছে "εὐαγγέλιον" (গসপেল বা সুসমাচার) শব্দটি প্রথম ব্যবহার করে বলেছিলেন, "বন্ধুগণ, আমি যে সুসমাচার তোমাদের কাছে প্রচার করছি, যা তোমরা গ্রহণ করেছ এবং যার উপরে তোমরা প্রতিষ্ঠিত হয়েছ, তার কথাই আমি তোমাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই।"<ref>{{bibleref2|1 Corinthians|15:1}}</ref> সাহিত্যের একটি বর্গ হিসেবে "গসপেল" কথাটির প্রথম প্রয়োগ ঘটেছিল দ্বিতীয় শতাব্দীতে। [[জাস্টিন মার্টায়ার]] (১৫৫ খ্রিস্টাব্দ) তাঁর ''[[ফার্স্ট অ্যাপোলজি অফ জাস্টিন মার্টায়ার|অ্যাপোলজি]]''-তে লিখেছিলেন, "...প্রেরিতেরা তাঁদের স্মৃতিকথায় যা লিখেছিলেন, তা গসপেল নামে পরিচিত।"<ref>[http://earlychristianwritings.com/text/justinmartyr-firstapology.html 1 Apology 66]</ref>


সাধারণত, প্রাচীন খ্রিস্টীয় সাহিত্যে "গসপেল" ছিল একটি বিশেষ বর্গের নাম।<ref>Peter Stuhlmacher, ed., ''Das Evangelium und die Evangelien'', [[Tübingen]] 1983, also in English: ''The Gospel and the Gospels''</ref> যেগুলি শাস্ত্রীয় সুসমাচারের মর্যাদা পায়নি, সেগুলিও প্রাচীন খ্রিস্টধর্মের যুগে প্রচলিত ছিল। [[টমাসলিখিত সুসমাচার]] সহ এইরকম অনেকগুলি গসপেলেই সুসমাচারের পরিচিত কাঠামোটি দেখা যায় না।<ref name="Oxford:unspecified">Cross, F. L., ed. The Oxford Dictionary of the Christian Church. New York: Oxford University Press. 2005, unspecified article</ref>
সাধারণত, প্রাচীন খ্রিস্টীয় সাহিত্যে "গসপেল" ছিল একটি বিশেষ বর্গের নাম।<ref>Peter Stuhlmacher, ed., ''Das Evangelium und die Evangelien'', [[Tübingen]] 1983, also in English: ''The Gospel and the Gospels''</ref> যেগুলি শাস্ত্রীয় সুসমাচারের মর্যাদা পায়নি, সেগুলিও প্রাচীন খ্রিস্টধর্মের যুগে প্রচলিত ছিল। [[টমাসলিখিত সুসমাচার]] সহ এইরকম অনেকগুলি গসপেলেই সুসমাচারের পরিচিত কাঠামোটি দেখা যায় না।<ref name="Oxford:unspecified">Cross, F. L., ed. The Oxford Dictionary of the Christian Church. New York: Oxford University Press. 2005, unspecified article</ref>


==প্রাথমিক বিবরণ==
== প্রাথমিক বিবরণ ==
{{ Main|মৌখিক সুসমাচার }}
{{ Main|মৌখিক সুসমাচার }}
বাইবেল-বিশেষজ্ঞদের মতে, যিশু সম্পর্কে লোকমুখে প্রচলিত গল্প ও কয়েকটি বিবরণীর সংকলন শাস্ত্রীয় সুসমাচারগুলির আগেই রচিত হয়েছিল। [[লূকলিখিত সুসমাচার|লূকলিখিত সুসমাচারের]] উৎসর্গ পৃষ্ঠার ভূমিকাটি থেজে জানা যায়, উক্ত সুসমাচারটি রচনার আগেই যিশু সম্পর্কে অনেক গল্প রচিত হয়েছিল।<ref>Stanley E. Porter ''Reading the Gospels today'' p100</ref> লুক যে শব্দটি (διήγησις ''diēgēsis'') ব্যবহার করেন, সেটি একটি [[প্রাচীন গ্রিক ভাষা|প্রাচীন গ্রিক]] শব্দ। সেটি ব্যবহৃত হত ঐতিহাসিক আখ্যান অর্থে।<ref>Charles H. Talbert ''Reading Luke: a literary and theological commentary'' 2002 p2 "(3) What exactly is Luke? The prologue (1:1–4) says it is a diegesis (account). The second-century rhetorician Theon defines diegesis as "an expository account of things which happened or might have happened". Cicero (De Inv. 1.19.27)"</ref>
বাইবেল-বিশেষজ্ঞদের মতে, যিশু সম্পর্কে লোকমুখে প্রচলিত গল্প ও কয়েকটি বিবরণীর সংকলন শাস্ত্রীয় সুসমাচারগুলির আগেই রচিত হয়েছিল। [[লূকলিখিত সুসমাচার|লূকলিখিত সুসমাচারের]] উৎসর্গ পৃষ্ঠার ভূমিকাটি থেজে জানা যায়, উক্ত সুসমাচারটি রচনার আগেই যিশু সম্পর্কে অনেক গল্প রচিত হয়েছিল।<ref>Stanley E. Porter ''Reading the Gospels today'' p100</ref> লুক যে শব্দটি (διήγησις ''diēgēsis'') ব্যবহার করেন, সেটি একটি [[প্রাচীন গ্রিক ভাষা|প্রাচীন গ্রিক]] শব্দ। সেটি ব্যবহৃত হত ঐতিহাসিক আখ্যান অর্থে।<ref>Charles H. Talbert ''Reading Luke: a literary and theological commentary'' 2002 p2 "(3) What exactly is Luke? The prologue (1:1–4) says it is a diegesis (account). The second-century rhetorician Theon defines diegesis as "an expository account of things which happened or might have happened". Cicero (De Inv. 1.19.27)"</ref>


"গসপেল" শব্দটি নূতন নিয়মের কোনো শাস্ত্রীয় সুসমাচারে ব্যবহৃত হয়নি। তবে পরবর্তীকালের একটি প্রথাগত পাঠ অনুযায়ী লূকলিখিত সুসমাচারে সুসমাচারের উল্লেখ দেখা যায়।<ref>F. F. Bruce ''Acts'' p383</ref>
"গসপেল" শব্দটি নূতন নিয়মের কোনো শাস্ত্রীয় সুসমাচারে ব্যবহৃত হয়নি। তবে পরবর্তীকালের একটি প্রথাগত পাঠ অনুযায়ী লূকলিখিত সুসমাচারে সুসমাচারের উল্লেখ দেখা যায়।<ref>F. F. Bruce ''Acts'' p383</ref>
==ঐক্যমূলক সুসমাচার==
== ঐক্যমূলক সুসমাচার ==
{{main|ঐক্যমূলক সুসমাচার}}
{{main|ঐক্যমূলক সুসমাচার}}
ম্যাথিউ, মার্ক ও লুকের সুসমাচারগুলিকে [[ঐক্যমূলক সুসমাচার]] বা সাইনপটিক মনে করা হয়। কারণ, এগুলির মধ্যে কিছু কিছু মিল পাওয়া যায় যা জনের সুসমাচারের মধ্যে পাওয়া যায় না। "সাইনপটিক" বলতে বোঝানো হয়েছে যা একসঙ্গে দেখা বা পড়া হয়েছে, যার অর্থ এই তিন সুসমাচারে অনেক ঘটনার মিল আছে। ঐক্যমূলক সুসমাচারগুলি অনেক জনপ্রিয় গল্প, উপকথা ও উপদেশের উৎস। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য [[যিশুর জন্ম]], [[যিশুর শৈলোপদেশ]], [[শেষ নৈশভোজ]] ইত্যাদি।
ম্যাথিউ, মার্ক ও লুকের সুসমাচারগুলিকে [[ঐক্যমূলক সুসমাচার]] বা সাইনপটিক মনে করা হয়। কারণ, এগুলির মধ্যে কিছু কিছু মিল পাওয়া যায় যা জনের সুসমাচারের মধ্যে পাওয়া যায় না। "সাইনপটিক" বলতে বোঝানো হয়েছে যা একসঙ্গে দেখা বা পড়া হয়েছে, যার অর্থ এই তিন সুসমাচারে অনেক ঘটনার মিল আছে। ঐক্যমূলক সুসমাচারগুলি অনেক জনপ্রিয় গল্প, উপকথা ও উপদেশের উৎস। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য [[যিশুর জন্ম]], [[যিশুর শৈলোপদেশ]], [[শেষ নৈশভোজ]] ইত্যাদি।
৩১ নং লাইন: ৩১ নং লাইন:
চতুর্থ সুসমাচার বা জনের লেখা সুসমাচারটি যিশুর জীবন ও তার পার্ষদদের অন্যরকম বর্ণনা দেয়।<ref>Understanding the Bible. Palo Alto: Mayfield. 1985.</ref> এই ধরনের পার্থক্যের জন্য গবেষকেরা সুসমাচারের বর্ণনাগুলির সত্যতাকে সন্দেহের চোখে দেখেন।<ref name = "Sanders">[[E. P. Sanders|Sanders, E. P.]], ''The historical figure of Jesus'', Penguin, 1993.</ref> তবে সাধারণভাবে ঐক্যমূলক সুসমাচার ও যিশুর সম্পর্কে অন্যান্য নির্ভরযোগ্য ঐতিহাসিক সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যগুলিকে তাঁরা সত্যই মনে করেন।<ref name = "Sanders"/>
চতুর্থ সুসমাচার বা জনের লেখা সুসমাচারটি যিশুর জীবন ও তার পার্ষদদের অন্যরকম বর্ণনা দেয়।<ref>Understanding the Bible. Palo Alto: Mayfield. 1985.</ref> এই ধরনের পার্থক্যের জন্য গবেষকেরা সুসমাচারের বর্ণনাগুলির সত্যতাকে সন্দেহের চোখে দেখেন।<ref name = "Sanders">[[E. P. Sanders|Sanders, E. P.]], ''The historical figure of Jesus'', Penguin, 1993.</ref> তবে সাধারণভাবে ঐক্যমূলক সুসমাচার ও যিশুর সম্পর্কে অন্যান্য নির্ভরযোগ্য ঐতিহাসিক সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যগুলিকে তাঁরা সত্যই মনে করেন।<ref name = "Sanders"/>


==তথ্যসূত্র==
== তথ্যসূত্র ==
{{reflist|colwidth=30em}}
{{reflist|colwidth=30em}}


==আরও পড়ুন==
== আরও পড়ুন ==
McGrath, A. 2001. ''In the Beginning the Story of the King James Bible and how it changed a Nation, a Language and a Culture''. Hodder & Stoughton. ISBN 0-340-78585-3.
McGrath, A. 2001. ''In the Beginning the Story of the King James Bible and how it changed a Nation, a Language and a Culture''. Hodder & Stoughton. ISBN 0-340-78585-3.


==বহিঃসংযোগ==
== বহিঃসংযোগ ==
{{wikiquote|Gospel|সুসমাচার}}
{{wikiquote|Gospel|সুসমাচার}}
{{NIE Poster|year=1905}}
{{NIE Poster|year=1905}}
৪৬ নং লাইন: ৪৬ নং লাইন:
* [http://dubitando.no.sapo.pt/qevcon.htm Quattuor Evangeliorum Consonantia] – The Latin harmony of the Gospels (1)
* [http://dubitando.no.sapo.pt/qevcon.htm Quattuor Evangeliorum Consonantia] – The Latin harmony of the Gospels (1)
* [http://dubitando.no.sapo.pt/qevconn.htm Quattuor Evangeliorum Consonantia] – The Latin harmony of the Gospels (2)
* [http://dubitando.no.sapo.pt/qevconn.htm Quattuor Evangeliorum Consonantia] – The Latin harmony of the Gospels (2)
*[http://www.ParallelGospelsInHarmony.com Parallel Gospels in Harmony] Online version of the public domain book ''Parallel Gospels in Harmony&nbsp;— with Study Guide''
* [http://www.ParallelGospelsInHarmony.com Parallel Gospels in Harmony] Online version of the public domain book ''Parallel Gospels in Harmony&nbsp;— with Study Guide''
*[http://www.utoronto.ca/religion/synopsis/meta-4g.htm Synoptic Parallels] A web tool for finding corresponding passages in the Gospels
* [http://www.utoronto.ca/religion/synopsis/meta-4g.htm Synoptic Parallels] A web tool for finding corresponding passages in the Gospels


<!-- {{Books of the Bible}}
<!-- {{Books of the Bible}}

০৭:৩১, ৮ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

আর্মেনিয়ান ভাষায় লেখা মার্কলিখিত সুসমাচারের প্রথম পৃষ্ঠা। সারগিস পিটস্যাক কৃত, চতুর্দশ শতাব্দী।

সুসমাচার বা গসপেল (ইংরেজি: Gospel) হল নাজারেথের যিশুর জীবন, মৃত্যু ও পুনরুজ্জীবনের বিবরণ। সুসমাচারের বহুল প্রচলিত উদাহরণ হল ম্যাথিউ, মার্ক, লুকজনের লেখা নূতন নিয়মের চারটি শাস্ত্রীয় সুসমাচার। তবে অপ্রামাণিক সুসমাচার, অশাস্ত্রীয় সুসমাচার, ইহুদি-খ্রিস্টান সুসমাচারমরমি সুসমাচারগুলিকেও সুসমাচার বা গসপেল নামে অভিহিত করা হয়।

খ্রিস্টধর্মে শাস্ত্রীয় সুসমাচারগুলিরই মর্যাদা বেশি। এগুলিকে ঈশ্বর-কর্তৃক প্রকাশিত মনে করা হয়। এগুলি খ্রিস্টধর্মের ধর্মীয় ব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দু।[১] চারটি শাস্ত্রীয় সুসমাচারে প্রকাশিত খ্রিস্টের জীবনকথাই যথাযথ ও প্রামাণ্য বলে খ্রিস্টানদের বিশ্বাস।[২] তবে অনেক গবেষকের মতে, এই চারটি সুসমাচারের সবকিছু ঐতিহাসিকভাবে বিশ্বাসযোগ্য নয়।[৩][৪][৫][৬][৭][৮][৯]

ইসলাম ধর্মে ইঞ্জিল (আরবি: إنجيل) নামে একটি বইয়ের উল্লেখ আছে। ইসলাম মতে, এই বইটি ঈশ্বর যিশুর কাছে প্রকাশ করেছিলেন। ইঞ্জিল শব্দটি কোনো কোনো অনুবাদে 'গসপেল' অর্থাৎ সুসমাচার হয়েছে। কুরআন-এ যে চারটি বইকে আল্লাহ্‌-কর্তৃক প্রকাশিত বলে উল্লেখ করা হয়েছে, এটি তার একটি। তবে ইসলাম মতে, পরবর্তী যুগে ইঞ্জিলের কথা পালটে দেওয়া হয়েছিল। তাই ঈশ্বর নব মুহাম্মদকে পাঠিয়েছিলেন শেষ বই কুরআন প্রকাশ করার জন্য।[১০]

ব্যুৎপত্তি

ইংরেজি "Gospel" শব্দটি এসেছে প্রাচীন ইংরেজি gōd-spell[১১] (বা অপেক্ষাকৃত কম ব্যবহৃত godspel) কথাটি থেকে। এর অর্থ "শুভ সংবাদ" বা "আনন্দ তরঙ্গ"। সুসমাচারকে মসিহার আসন্ন রাজ্যের "শুভ আগমনবার্তা" মনে করা হয়। এখানে খ্রিস্টানদের প্রধান মতবাদের কেন্দ্রবিন্দু যিশুর জীবন ও মৃত্যুর মাধ্যমে পাপমুক্তি ও শয়তানের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার কথা বলা হয়েছে।[১২]

"গসপেল" কথাটি হল গ্রিক "εὐαγγέλιον" বা "ইউয়ানজেলিয়ন" ("শুভ সংবাদ") অথবা আরামাইক "ܐܘܢܓܠܝܘܢ" বা "ইউয়াংএলিয়াওন" কথাটির আক্ষরিক অনুবাদ। গ্রিক "ইউয়ানজেলিয়ন" (এর এর লাতিন প্রতিরূপ evangelium বা "ইভানগেলিয়াম") শব্দটি থেকে ইংরেজিতে "এভানজেলিস্ট" বা "ইভানজেলিজম"-এর উৎপত্তি। চারটি শাস্ত্রীয় খ্রিস্টান সুসমাচারের লেখকদের বলা হয় চার ইভানজেলিস্ট

ব্যবহার

পল করিন্থের চার্চের লোকেদের কাছে "εὐαγγέλιον" (গসপেল বা সুসমাচার) শব্দটি প্রথম ব্যবহার করে বলেছিলেন, "বন্ধুগণ, আমি যে সুসমাচার তোমাদের কাছে প্রচার করছি, যা তোমরা গ্রহণ করেছ এবং যার উপরে তোমরা প্রতিষ্ঠিত হয়েছ, তার কথাই আমি তোমাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই।"[১৩] সাহিত্যের একটি বর্গ হিসেবে "গসপেল" কথাটির প্রথম প্রয়োগ ঘটেছিল দ্বিতীয় শতাব্দীতে। জাস্টিন মার্টায়ার (১৫৫ খ্রিস্টাব্দ) তাঁর অ্যাপোলজি-তে লিখেছিলেন, "...প্রেরিতেরা তাঁদের স্মৃতিকথায় যা লিখেছিলেন, তা গসপেল নামে পরিচিত।"[১৪]

সাধারণত, প্রাচীন খ্রিস্টীয় সাহিত্যে "গসপেল" ছিল একটি বিশেষ বর্গের নাম।[১৫] যেগুলি শাস্ত্রীয় সুসমাচারের মর্যাদা পায়নি, সেগুলিও প্রাচীন খ্রিস্টধর্মের যুগে প্রচলিত ছিল। টমাসলিখিত সুসমাচার সহ এইরকম অনেকগুলি গসপেলেই সুসমাচারের পরিচিত কাঠামোটি দেখা যায় না।[১৬]

প্রাথমিক বিবরণ

বাইবেল-বিশেষজ্ঞদের মতে, যিশু সম্পর্কে লোকমুখে প্রচলিত গল্প ও কয়েকটি বিবরণীর সংকলন শাস্ত্রীয় সুসমাচারগুলির আগেই রচিত হয়েছিল। লূকলিখিত সুসমাচারের উৎসর্গ পৃষ্ঠার ভূমিকাটি থেজে জানা যায়, উক্ত সুসমাচারটি রচনার আগেই যিশু সম্পর্কে অনেক গল্প রচিত হয়েছিল।[১৭] লুক যে শব্দটি (διήγησις diēgēsis) ব্যবহার করেন, সেটি একটি প্রাচীন গ্রিক শব্দ। সেটি ব্যবহৃত হত ঐতিহাসিক আখ্যান অর্থে।[১৮]

"গসপেল" শব্দটি নূতন নিয়মের কোনো শাস্ত্রীয় সুসমাচারে ব্যবহৃত হয়নি। তবে পরবর্তীকালের একটি প্রথাগত পাঠ অনুযায়ী লূকলিখিত সুসমাচারে সুসমাচারের উল্লেখ দেখা যায়।[১৯]

ঐক্যমূলক সুসমাচার

ম্যাথিউ, মার্ক ও লুকের সুসমাচারগুলিকে ঐক্যমূলক সুসমাচার বা সাইনপটিক মনে করা হয়। কারণ, এগুলির মধ্যে কিছু কিছু মিল পাওয়া যায় যা জনের সুসমাচারের মধ্যে পাওয়া যায় না। "সাইনপটিক" বলতে বোঝানো হয়েছে যা একসঙ্গে দেখা বা পড়া হয়েছে, যার অর্থ এই তিন সুসমাচারে অনেক ঘটনার মিল আছে। ঐক্যমূলক সুসমাচারগুলি অনেক জনপ্রিয় গল্প, উপকথা ও উপদেশের উৎস। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য যিশুর জন্ম, যিশুর শৈলোপদেশ, শেষ নৈশভোজ ইত্যাদি।

মনে করা হয়, তিনটি ঐক্যমূলক সুসমাচার একটি সাধারণ উৎস ও একাধিক উৎস থেকে তথ্য ধার করে লেখা হয়েছিল এবং এগুলি একে অপরকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল। যেমন মার্কের সুসমাচারের অনেকটাই লুক বা ম্যাথিউর সুসমাচারে পাওয়া যায়। এর ফলে অনুমিত হয় যে মার্ক ম্যাথিউ ও লুকের থেকে তথ্য নিয়ে সুসমাচারটি লিপিবদ্ধ করেন। তবে ম্যাথিউ ও লুকের সুসমাচারে বর্ণিত সাধারণ ঘটনা যেখানে মার্কের সুসমাচারে নেই, তা নির্দেশ করে যে, উক্ত দুই সুসমাচারের তথ্যের উৎস আলাদা ছিল।

চতুর্থ সুসমাচার বা জনের লেখা সুসমাচারটি যিশুর জীবন ও তার পার্ষদদের অন্যরকম বর্ণনা দেয়।[২০] এই ধরনের পার্থক্যের জন্য গবেষকেরা সুসমাচারের বর্ণনাগুলির সত্যতাকে সন্দেহের চোখে দেখেন।[২১] তবে সাধারণভাবে ঐক্যমূলক সুসমাচার ও যিশুর সম্পর্কে অন্যান্য নির্ভরযোগ্য ঐতিহাসিক সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যগুলিকে তাঁরা সত্যই মনে করেন।[২১]

তথ্যসূত্র

  1. Stott, John R.W. "Basic Christianity". Inter-Varsity Press, 1971. p. 12
  2. Keller, Timothy. "The Reason for God". Dutton, 2008. p. 100
  3. The Myth about Jesus, Allvar Ellegard 1992,
  4. Craig Evans, "Life-of-Jesus Research and the Eclipse of Mythology", Theological Studies 54 (1993) p. 5,
  5. Charles H. Talbert, What Is a Gospel? The Genre of Canonical Gospels pg 42 (Philadelphia: Fortress Press, 1977).
  6. “The Historical Figure of Jesus", Sanders, E.P., Penguin Books: London, 1995, p., 3.
  7. Fire of Mercy, Heart of the Word (Vol. II): Meditations on the Gospel According to St. Matthew – Dr Erasmo Leiva-Merikakis, Ignatius Press, Introduction
  8. Grant, Robert M., "A Historical Introduction to the New Testament" (Harper and Row, 1963) http://www.religion-online.org/showchapter.asp?title=1116&C=1230
  9. "Main Body"। Church.org.uk। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-১২-২৫ 
  10. Historical Dictionary of Prophets in Islam and Judaism, B.M. Wheeler, Injil
  11. "Gospel - Definition and More from the Free Merriam-Webster Dictionary"। Merriam-webster.com। ২০১২-০৮-৩১। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-১২-২৫ 
  12. "Gospel". Cross, F. L., ed. The Oxford dictionary of the Christian church. New York: Oxford University Press. 2005
  13. 1 Corinthians 15:1
  14. 1 Apology 66
  15. Peter Stuhlmacher, ed., Das Evangelium und die Evangelien, Tübingen 1983, also in English: The Gospel and the Gospels
  16. Cross, F. L., ed. The Oxford Dictionary of the Christian Church. New York: Oxford University Press. 2005, unspecified article
  17. Stanley E. Porter Reading the Gospels today p100
  18. Charles H. Talbert Reading Luke: a literary and theological commentary 2002 p2 "(3) What exactly is Luke? The prologue (1:1–4) says it is a diegesis (account). The second-century rhetorician Theon defines diegesis as "an expository account of things which happened or might have happened". Cicero (De Inv. 1.19.27)"
  19. F. F. Bruce Acts p383
  20. Understanding the Bible. Palo Alto: Mayfield. 1985.
  21. Sanders, E. P., The historical figure of Jesus, Penguin, 1993.

আরও পড়ুন

McGrath, A. 2001. In the Beginning the Story of the King James Bible and how it changed a Nation, a Language and a Culture. Hodder & Stoughton. ISBN 0-340-78585-3.

বহিঃসংযোগ