ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Addbot (আলোচনা | অবদান)
বট: আন্তঃউইকি সংযোগ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, যা এখন উইকিউপাত্ত ...
WikitanvirBot I (আলোচনা | অবদান)
বট কসমেটিক পরিবর্তন করছে; কোনো সমস্যা?
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[চিত্র:Brahmabandhab Upadhyay.jpg|thumb|right|ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়]]
[[চিত্র:Brahmabandhab Upadhyay.jpg|thumb|right|ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়]]
'''ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়''' (জন্ম: [[১১ ফেব্রুয়ারি]][[ ১৮৬১]] - মৃত্যূ: [[২৭ অক্টোবর]] [[১৯০৭]]) একজন [[বাঙালি]] ধর্মপ্রচারক, তিনি বেশ কয়েকটি পত্রিকা প্রকাশ ও পরিচালনা করেছিলেন । তিনি [[ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন|ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের]] অন্যতম পুরোধা ছিলেন ।
'''ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়''' (জন্ম: [[১১ ফেব্রুয়ারি]] [[১৮৬১]] - মৃত্যূ: [[২৭ অক্টোবর]] [[১৯০৭]]) একজন [[বাঙালি]] ধর্মপ্রচারক, তিনি বেশ কয়েকটি পত্রিকা প্রকাশ ও পরিচালনা করেছিলেন । তিনি [[ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন|ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের]] অন্যতম পুরোধা ছিলেন ।


ব্রহ্মবান্ধব [[হুগলি]] জেলার [[খন্যান|খন্যানের]] বাসিন্দা ছিলেন । তাঁর পিতার নাম দেবীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় । ব্রহ্মবান্ধবের পূর্বনাম ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় ।
ব্রহ্মবান্ধব [[হুগলি]] জেলার [[খন্যান|খন্যানের]] বাসিন্দা ছিলেন । তাঁর পিতার নাম দেবীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় । ব্রহ্মবান্ধবের পূর্বনাম ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় ।
৬ নং লাইন: ৬ নং লাইন:
তিনি হুগলি কলিজিয়েট স্কুল থেকে এন্ট্রান্স পাস করে কলকাতা জেনারেল অ্যাসেমব্লিজ ইনস্টিটিউশনে ভর্তি হন । কিন্তু তিনি সমাজ সেবার জন্য কলেজ ত্যাগ করেন । তিনি [[কেশবচন্দ্র সেন|কেশবচন্দ্র সেনের]] সংস্পর্শে এসে [[১৮৮৭]] খ্রিস্টাব্দে [[ব্রাহ্ম ধর্ম]] গ্রহণ করে ব্রাহ্মধর্ম প্রচারের জন্য সিন্ধুদেশে যান । সেখানে কয়েকজন রোমান [[ক্যাথলিক]] পাদ্রী এবং খুল্লতাত রেভারেন্ড কালীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রভাবে প্রথমে প্রটেস্টান্ট এবং পরে রোমান ক্যাথলিক সম্প্রদায়ভুক্ত হন । তিনি [[খ্রিষ্টধর্ম]] প্রচারের জন্য সন্ন্যাস গ্রহণ করেন । হিন্দু সন্ন্যাসীদের মতোই তিনি গৈরিক পোষাক পরতেন । ক্যাথলিক ধর্মপ্রচারে তিনি একে বিদেশী প্রভাব থেকে মুক্ত করে পুরোপুরি ভারতীয় রূপে প্রতিষ্ঠিত করতে উদ্যোগী হয়েছিলেন । তিনি হিন্দু ক্যাথলিক বা ঈশাপন্থী হিন্দু সন্ন্যাসী গড়ে তোলার জন্য [[জব্বলপুর|জব্বলপুরে]] [[নর্মদা|নর্মদার]] তীরে কান্থলিক মঠ স্থাপন করেন ।
তিনি হুগলি কলিজিয়েট স্কুল থেকে এন্ট্রান্স পাস করে কলকাতা জেনারেল অ্যাসেমব্লিজ ইনস্টিটিউশনে ভর্তি হন । কিন্তু তিনি সমাজ সেবার জন্য কলেজ ত্যাগ করেন । তিনি [[কেশবচন্দ্র সেন|কেশবচন্দ্র সেনের]] সংস্পর্শে এসে [[১৮৮৭]] খ্রিস্টাব্দে [[ব্রাহ্ম ধর্ম]] গ্রহণ করে ব্রাহ্মধর্ম প্রচারের জন্য সিন্ধুদেশে যান । সেখানে কয়েকজন রোমান [[ক্যাথলিক]] পাদ্রী এবং খুল্লতাত রেভারেন্ড কালীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রভাবে প্রথমে প্রটেস্টান্ট এবং পরে রোমান ক্যাথলিক সম্প্রদায়ভুক্ত হন । তিনি [[খ্রিষ্টধর্ম]] প্রচারের জন্য সন্ন্যাস গ্রহণ করেন । হিন্দু সন্ন্যাসীদের মতোই তিনি গৈরিক পোষাক পরতেন । ক্যাথলিক ধর্মপ্রচারে তিনি একে বিদেশী প্রভাব থেকে মুক্ত করে পুরোপুরি ভারতীয় রূপে প্রতিষ্ঠিত করতে উদ্যোগী হয়েছিলেন । তিনি হিন্দু ক্যাথলিক বা ঈশাপন্থী হিন্দু সন্ন্যাসী গড়ে তোলার জন্য [[জব্বলপুর|জব্বলপুরে]] [[নর্মদা|নর্মদার]] তীরে কান্থলিক মঠ স্থাপন করেন ।


তিনি ''কঙ্কর্ড ক্লাব'' নামে একটি সমিতি এবং ''কঙ্কর্ড'' নামে একটি মাসিক পত্রিকা প্রকাশ করেন । তিনি ইউনিয়ন অ্যাকাডেমিতে শিক্ষকতা করতেন । এরপর কিছুদিন [[করাচি|করাচিতে]] ''ফিনিক্স'' ও ''হার্মান'' পত্রিকার সম্পাদনা ও [[নগেন্দ্রনাথ গুপ্ত|নগেন্দ্রনাথ গুপ্তের]] সহায়তায় কলকাতায় ''টুয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরি'' নামে একটি মাসিক পত্র প্রতিষ্ঠা এবং পরিচালনা করেন । [[১৮৯৪]] থেকে [[১৮৯৯]] খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি করাচিতে সোফিয়া নামে একটি মাসিক পত্রিকার প্রকাশ কার্যও চালান ।
তিনি ''কঙ্কর্ড ক্লাব'' নামে একটি সমিতি এবং ''কঙ্কর্ড'' নামে একটি মাসিক পত্রিকা প্রকাশ করেন । তিনি ইউনিয়ন অ্যাকাডেমিতে শিক্ষকতা করতেন । এরপর কিছুদিন [[করাচি|করাচিতে]] ''ফিনিক্স'' ও ''হার্মান'' পত্রিকার সম্পাদনা ও [[নগেন্দ্রনাথ গুপ্ত|নগেন্দ্রনাথ গুপ্তের]] সহায়তায় কলকাতায় ''টুয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরি'' নামে একটি মাসিক পত্র প্রতিষ্ঠা এবং পরিচালনা করেন । [[১৮৯৪]] থেকে [[১৮৯৯]] খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি করাচিতে সোফিয়া নামে একটি মাসিক পত্রিকার প্রকাশ কার্যও চালান ।


[[১৯০১]] খ্রিস্টাব্দে [[স্বামী বিবেকানন্দ|স্বামী বিবেকানন্দের]] প্রভাবে হিন্দুধর্মে প্রত্যাবর্তন করে তিনি ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় নাম নেন এবং [[১৯০২]]-[[১৯০৩]] খ্রিস্টাব্দে তিনি [[বেদান্ত]] প্রচারের জন্য বিলেত যান এবং অক্সফোর্ড এবং কেমব্রিজে হিন্দুধর্ম সম্পর্কে বক্তৃতা করে প্রসিদ্ধ হন ।
[[১৯০১]] খ্রিস্টাব্দে [[স্বামী বিবেকানন্দ|স্বামী বিবেকানন্দের]] প্রভাবে হিন্দুধর্মে প্রত্যাবর্তন করে তিনি ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় নাম নেন এবং [[১৯০২]]-[[১৯০৩]] খ্রিস্টাব্দে তিনি [[বেদান্ত]] প্রচারের জন্য বিলেত যান এবং অক্সফোর্ড এবং কেমব্রিজে হিন্দুধর্ম সম্পর্কে বক্তৃতা করে প্রসিদ্ধ হন ।
১৫ নং লাইন: ১৫ নং লাইন:


ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ :
ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ :
*বিলাতযাত্রী সন্ন্যাসীর চিঠি
* বিলাতযাত্রী সন্ন্যাসীর চিঠি
*ব্রহ্মামৃত
* ব্রহ্মামৃত
*সমাজতত্ত্ব
* সমাজতত্ত্ব
*আমার ভারত উদ্ধার
* আমার ভারত উদ্ধার
*পালপার্বণ
* পালপার্বণ


==তথ্যসূত্র==
== তথ্যসূত্র ==
*সংসদ বাঙালি চরিতভিধান - সাহিত্য সংসদ - প্রথম খণ্ড
* সংসদ বাঙালি চরিতভিধান - সাহিত্য সংসদ - প্রথম খণ্ড
{{বাংলার নবজাগরণ}}


[[Category:বাঙালি সম্পাদক]]
[[বিষয়শ্রেণী:বাঙালি সম্পাদক]]
[[Category:বাংলার নবজাগরণ]]
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলার নবজাগরণ]]
[[বিষয়শ্রেণী:১৮৬১-এ জন্ম]]
[[বিষয়শ্রেণী:১৮৬১-এ জন্ম]]
[[বিষয়শ্রেণী:১৯০৭-এ মৃত্যু]]
[[বিষয়শ্রেণী:১৯০৭-এ মৃত্যু]]
[[বিষয়শ্রেণী:হিন্দু ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব]]
[[বিষয়শ্রেণী:হিন্দু ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব]]
{{বাংলার নবজাগরণ}}

১৬:৩৫, ৭ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়

ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় (জন্ম: ১১ ফেব্রুয়ারি ১৮৬১ - মৃত্যূ: ২৭ অক্টোবর ১৯০৭) একজন বাঙালি ধর্মপ্রচারক, তিনি বেশ কয়েকটি পত্রিকা প্রকাশ ও পরিচালনা করেছিলেন । তিনি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ছিলেন ।

ব্রহ্মবান্ধব হুগলি জেলার খন্যানের বাসিন্দা ছিলেন । তাঁর পিতার নাম দেবীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় । ব্রহ্মবান্ধবের পূর্বনাম ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় ।

তিনি হুগলি কলিজিয়েট স্কুল থেকে এন্ট্রান্স পাস করে কলকাতা জেনারেল অ্যাসেমব্লিজ ইনস্টিটিউশনে ভর্তি হন । কিন্তু তিনি সমাজ সেবার জন্য কলেজ ত্যাগ করেন । তিনি কেশবচন্দ্র সেনের সংস্পর্শে এসে ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দে ব্রাহ্ম ধর্ম গ্রহণ করে ব্রাহ্মধর্ম প্রচারের জন্য সিন্ধুদেশে যান । সেখানে কয়েকজন রোমান ক্যাথলিক পাদ্রী এবং খুল্লতাত রেভারেন্ড কালীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রভাবে প্রথমে প্রটেস্টান্ট এবং পরে রোমান ক্যাথলিক সম্প্রদায়ভুক্ত হন । তিনি খ্রিষ্টধর্ম প্রচারের জন্য সন্ন্যাস গ্রহণ করেন । হিন্দু সন্ন্যাসীদের মতোই তিনি গৈরিক পোষাক পরতেন । ক্যাথলিক ধর্মপ্রচারে তিনি একে বিদেশী প্রভাব থেকে মুক্ত করে পুরোপুরি ভারতীয় রূপে প্রতিষ্ঠিত করতে উদ্যোগী হয়েছিলেন । তিনি হিন্দু ক্যাথলিক বা ঈশাপন্থী হিন্দু সন্ন্যাসী গড়ে তোলার জন্য জব্বলপুরে নর্মদার তীরে কান্থলিক মঠ স্থাপন করেন ।

তিনি কঙ্কর্ড ক্লাব নামে একটি সমিতি এবং কঙ্কর্ড নামে একটি মাসিক পত্রিকা প্রকাশ করেন । তিনি ইউনিয়ন অ্যাকাডেমিতে শিক্ষকতা করতেন । এরপর কিছুদিন করাচিতে ফিনিক্সহার্মান পত্রিকার সম্পাদনা ও নগেন্দ্রনাথ গুপ্তের সহায়তায় কলকাতায় টুয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরি নামে একটি মাসিক পত্র প্রতিষ্ঠা এবং পরিচালনা করেন । ১৮৯৪ থেকে ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি করাচিতে সোফিয়া নামে একটি মাসিক পত্রিকার প্রকাশ কার্যও চালান ।

১৯০১ খ্রিস্টাব্দে স্বামী বিবেকানন্দের প্রভাবে হিন্দুধর্মে প্রত্যাবর্তন করে তিনি ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় নাম নেন এবং ১৯০২-১৯০৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি বেদান্ত প্রচারের জন্য বিলেত যান এবং অক্সফোর্ড এবং কেমব্রিজে হিন্দুধর্ম সম্পর্কে বক্তৃতা করে প্রসিদ্ধ হন ।

তিনি মাতৃভাষায় শিক্ষাব্যবস্থার প্রবক্তা ছিলেন । ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার সিমলায় বৈদিক আদর্শে তিনি আবাসিক বিদ্যালয় সারস্বত আয়তন স্থাপন করেন । রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্য বিদ্যালয় স্থাপনের সময় তাঁর সক্রিয় সাহায্য পান । ব্রহ্মবান্ধবের মতে সরকারী নিয়ন্ত্রনে বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে গোলদিঘির গোলামখানা ।

স্বামী বিবেকানন্দের মৃত্যুর পর তিনি রাজনৈতিক নেতারূপে অবতীর্ণ হন । অগ্নিযুগের অন্যতম পুরোধা ব্রহ্মবান্ধব ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত সন্ধ্যা দৈনিক পত্রিকার মাধ্যমে ইংরেজদের বিরূদ্ধে আপসহীন সংগ্রাম ঘোষণা করেন । ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে সরকারের আদেশে সন্ধ্যা পত্রিকা বন্ধ করা হয় এবং রাজদ্রোহের অভিযোগ তিনি মুদ্রাকরসহ ধৃত হন । তিনি আদালতে ঘোষণা করেন যে তিনি ব্রিটিশ কর্তৃত্ব মানেন না । মামলা চলাকালে ক্যাম্বেল হাসপাতালে অস্ত্রপ্রচারের তিনদিন পর ধনুষ্টঙ্কার রোগে মারা যান ।

ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ :

  • বিলাতযাত্রী সন্ন্যাসীর চিঠি
  • ব্রহ্মামৃত
  • সমাজতত্ত্ব
  • আমার ভারত উদ্ধার
  • পালপার্বণ

তথ্যসূত্র

  • সংসদ বাঙালি চরিতভিধান - সাহিত্য সংসদ - প্রথম খণ্ড