ইউরেনাস গ্রহ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Addbot (আলোচনা | অবদান)
বট: আন্তঃউইকি সংযোগ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, যা এখন উইকিউপাত্ত ...
Mishrarpan (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
ইউরেনাস সৌরজগতের একটি গ্রহ। সূর্যের দিক থেকে এর অবস্থান সপ্তম এবং আকারের বিচারে তৃতীয় বৃহত্তম। এই গ্রহের আবিষ্কারের সাথে উইলিয়াম হার্সেল-এর নাম বিশেষভাবে জড়িত। মূলত এই গ্রহটিকে অনেক জ্যোতির্বিজ্ঞানীই আগে লক্ষ্য করেছিলেন, কিন্তু তাঁরা এটাকে সৌর জগতের গ্রহ হিসাবে বিবেচনায় আনতে পারেন নি। ১৬৯০ খ্রিষ্টাব্দে John Flamsteed অন্তত ছয়বার এই গ্রহটিকে দেখতে পান। তিনি তার নক্ষত্র তালিকায় এই গ্রহটিকে বৃষ নক্ষত্রমণ্ডলের একটি নক্ষত্র হিসাবে নামকরণ করেছিলেন 34 Tauri। ফরাসি জ্যোতির্বিজ্ঞানী Pierre Lemonnier ১৭৫০ থেকে ১৭৬৯ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে প্রায় ১২ বার এই গ্রহটি পর্যবেক্ষণ করেন। কিন্তু তিনিও একে নক্ষত্র হিসাবেই চিহ্নিত করেছিলেন। স্যার উইলিয়াম হার্সেল (Sir William Herschel) এই গ্রহটিকে প্রথম ১৭৮১ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ মার্চে বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণ করেন এবং ঐ বৎসরের ২৬ এপ্রিলে একে একটি ধূমকেতু হিসাবে উল্লেখ করেন। পরে আরো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণের পর তিনি একে সৌরজগতের গ্রহ হিসাবে স্বীকৃতি দেন। প্রথমাবস্থায় অনেক জ্যোতির্বিজ্ঞানীই এটা মানতে চান নি। শেষ পর্যন্ত একে গ্রহ হিসাবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকার করে নেওয়া হয়।




ইউরেনাসের নামকরণ : ভারত, চীন, গ্রিক বা মিশরের প্রাচীন জ্যোতির্বিজ্ঞানে এই গ্রহের কোনো নাম পাওয়া যায় না। এই কারণে গোড়াতেই হার্সেল বা অন্যকোনো জ্যোতির্বিজ্ঞানী কোনো বিশেষ নামে একে চিহ্নিত করেন নি। এই গ্রহের নামকরণের জন্য প্রথমে হার্সেলকে অনুরোধ করা হয়েছিল। হার্সেল তৎকালীন ইংল্যান্ডের রাজা King George III-এর নামানুসারে এর নামকরণ করতে চেয়েছিলেন Georgium Sidus (George's Star)। কিন্তু ইংল্যান্ডের বাইরে এই নামকে কেউ মেনে নিলেন না। ফলে বিকল্প নামের প্রয়োজন পড়লো। জ্যোতির্বিজ্ঞানী Jérôme Lalande আবিষ্কারকের নামনুসারে এর নাম Herschel রাখার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ইউরোপে মহাকাশীয় লক্ষ্যবস্তুগুলোর নাম গ্রিক পৌরাণিক চরিত্র থেকে নেওয়ার রীতিটি ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছিল। সেই সূত্রে সুইডিশ জ্যোতির্বিজ্ঞানী Erik Prosperin এই গ্রহটির নাম নেপচুন (Neptune) রাখার প্রস্তাব দেন। কিন্তু এই গ্রহের কক্ষপথ নির্ণয়কারী জার্মান বিজ্ঞানী Johann Elert Bode এর নাম দেন ইউরেনাস। বোদে যুক্তি দেখান যে- সূর্যের দিক থেকে Jupiter (বৃহস্পতি) -এর পরে রয়েছে Saturn (শনি)। গ্রিক পুরাণ মতে জুপিটরের পিতা হলেন স্যাটার্ন। ইউরেনাস যেহেতু স্যাটার্নের পিতা, সেই কারণে স্যাটার্নের পরের গ্রহের নাম হওয়া উচিৎ ইউরেনাস। অবশেষে ১৮৫০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ইউরেনাস নামটিই আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি লাভ করে।




ইউরেনাসের দৈহিক বৈশিষ্ট্য: এর ব্যাস নেপচুনের চেয়ে একটু বেশি কিন্তু পৃথিবীর চেয়ে প্রায় ৪গুণ বেশি। এর বিষুব এলাকার ব্যাসার্ধ ২৫,৫৫৯ ±৪ কিলোমিটার। মেরু অঞ্চলের ব্যাসার্ধ ২৪,৯৭৩ ±২০ কিলোমিটার। এর পরিধি ১,৫৯,৩৫৪.১ কিলোমিটার। এর উপরিতলের এলাকার পরিমাণ ৮,১১৫.৬X১০৯ কিলোমিটার। এর আয়তন ৬,৮৩৩.৬X১০১৩ কিলোমিটার। এর ভর ৮,৬৮১০±০.০০১৩X১০২৫ কিলোগ্রাম। পৃথিবীর তুলনায় এই গ্রহ প্রায় ১৪.৫ গুণ বেশি ভারি। এর ঘনত্ব ১.২৭ গ্রাম/ঘন সেন্টিমিটার। বিষুব এলাকার মাধ্যাকর্ষণ শক্তি ৮.৬৯ মিটার/সেকেন্ড, ০.৮৮৬ গ্রাম।

এর অভ্যন্তরে কেন্দ্রে রয়েছে সিলিকেট, লৌহ ও নিকেল মিশ্রিত পিণ্ড, এর ব্যাপ্তী ২২,০০০ কিলোমিটার। এরপর ১০,০০০ কিলোমিটার জুড়ে রয়েছে বরফের আবরণ। এরপর রয়েছে ৫,০০০ কিলোমিটার জুড়ে হাইড্রোজেন, হিলিয়াম ও মিথেনের গ্যাসীয় বলয়।

এর একটি মেরু সূর্যের দিকে প্রায় ৪২ বৎসর থাকে, এই সময় অন্য মেরু অন্ধকারে থাকে। ইউরেনাসে সূর্যের আলোর তীব্রতা পৃথিবীর ৪০০ ভাগের ১ ভাগ পরিমাণ। এর উপরিতলের গড় তাপমাত্রা -১৮২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে শীতলতম অবস্থায় তাপমাত্রার পরিমাণ দাঁড়ায় -২২৪ সেলসিয়াস। বিষুব অঞ্চলে প্রায় ২৫০ মিটার/সেকেন্ড বেগে বাতাস প্রবাহিত হয়।




ইউরেনাসের কক্ষপথ: সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করে আসতে ইউরেনাসের সময় লাগে পার্থিব ৮৪ বৎসর। সূর্য থেকে এর সর্বোচ্চ দূরত্ব ৩,০০,৪৪,১৯,৭০৪ কিলোমিটার এবং সর্বনিম্ন দূরত্ব ২,৭৪,৮৯,৩৮,৪৬১ কিলোমিটার। কক্ষপথে এর গড় গতি ৬.৮১ কিলোমিটার/সেকেন্ড। এর নাক্ষত্রিক আবর্তন কাল ০.৭১৮৩৩ দিন বা ১৭ ঘণ্টা, ১৪ মিনিট। এটি পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে আবর্তিত হয়। অর্থাৎ এই গ্রহটি ঘড়ির কাঁটার দিকে ঘোরে।




ইউরেনাসের বলয় : এই গ্রহকে ঘিরে রয়েছে অনেকগুলো বলয়। এই বলয়গুলোর বিস্তার মাইক্রোমিটার থেকে সর্বোচ্চ ১ মিটার পর্যন্ত। এ পর্যন্ত অন্তত দুটি বলয়ের সন্ধান পাওয়া গেছে, যাদের বিস্তৃতি কয়েক কিলোমিটার। এই বলয়গুলোর উপাদান উপগ্রহের খণ্ডাংশ দ্বারা গঠিত বলেই অনুমান করা হয়। এখন পর্যন্ত ১৩টি উজ্জ্বল বলয় সম্পর্কে ধারণা করা গেছে। দূর থেকে টেলিস্কোপের সাহয্যে এই বলয়গুলো সম্পর্কে যে ধারণা করা হয়েছিল, Voyager 2-এর পাঠানো তথ্যানুসারে এ সকল বলয় সম্পর্কে আরও নিশ্চিত হওয়া গেছে। এদের বলয়গুলোর রঙ ভিন্ন ভিন্ন ধরনের। হাল্কা ধূসর, লাল, নীল রঙের বলয় দেখা যায়। নিচে বলয়গুলোর পরিচয় তুলে ধরা হলো।



{{তথ্যছক গ্রহ
{{তথ্যছক গ্রহ
৮১ নং লাইন: ৫৫ নং লাইন:
| atmosphere_composition = 83% [[Hydrogen]]<br />15% [[Helium]]<br />1.99% [[Methane]]<br />0.01% [[Ammonia]]<br />0.00025% [[Ethane]]<br />0.00001% [[Acetylene]]<br />trace [[Carbon monoxide]]<br />trace [[Hydrogen sulfide]]
| atmosphere_composition = 83% [[Hydrogen]]<br />15% [[Helium]]<br />1.99% [[Methane]]<br />0.01% [[Ammonia]]<br />0.00025% [[Ethane]]<br />0.00001% [[Acetylene]]<br />trace [[Carbon monoxide]]<br />trace [[Hydrogen sulfide]]
}}
}}


ইউরেনাস সৌরজগতের একটি গ্রহ। সূর্যের দিক থেকে এর অবস্থান সপ্তম এবং আকারের বিচারে তৃতীয় বৃহত্তম। এই গ্রহের আবিষ্কারের সাথে উইলিয়াম হার্সেল-এর নাম বিশেষভাবে জড়িত। মূলত এই গ্রহটিকে অনেক জ্যোতির্বিজ্ঞানীই আগে লক্ষ্য করেছিলেন, কিন্তু তাঁরা এটাকে সৌর জগতের গ্রহ হিসাবে বিবেচনায় আনতে পারেন নি। ১৬৯০ খ্রিষ্টাব্দে John Flamsteed অন্তত ছয়বার এই গ্রহটিকে দেখতে পান। তিনি তার নক্ষত্র তালিকায় এই গ্রহটিকে বৃষ নক্ষত্রমণ্ডলের একটি নক্ষত্র হিসাবে নামকরণ করেছিলেন 34 Tauri। ফরাসি জ্যোতির্বিজ্ঞানী Pierre Lemonnier ১৭৫০ থেকে ১৭৬৯ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে প্রায় ১২ বার এই গ্রহটি পর্যবেক্ষণ করেন। কিন্তু তিনিও একে নক্ষত্র হিসাবেই চিহ্নিত করেছিলেন। স্যার উইলিয়াম হার্সেল (Sir William Herschel) এই গ্রহটিকে প্রথম ১৭৮১ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ মার্চে বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণ করেন এবং ঐ বৎসরের ২৬ এপ্রিলে একে একটি ধূমকেতু হিসাবে উল্লেখ করেন। পরে আরো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণের পর তিনি একে সৌরজগতের গ্রহ হিসাবে স্বীকৃতি দেন। প্রথমাবস্থায় অনেক জ্যোতির্বিজ্ঞানীই এটা মানতে চান নি। শেষ পর্যন্ত একে গ্রহ হিসাবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকার করে নেওয়া হয়।




ইউরেনাসের নামকরণ : ভারত, চীন, গ্রিক বা মিশরের প্রাচীন জ্যোতির্বিজ্ঞানে এই গ্রহের কোনো নাম পাওয়া যায় না। এই কারণে গোড়াতেই হার্সেল বা অন্যকোনো জ্যোতির্বিজ্ঞানী কোনো বিশেষ নামে একে চিহ্নিত করেন নি। এই গ্রহের নামকরণের জন্য প্রথমে হার্সেলকে অনুরোধ করা হয়েছিল। হার্সেল তৎকালীন ইংল্যান্ডের রাজা King George III-এর নামানুসারে এর নামকরণ করতে চেয়েছিলেন Georgium Sidus (George's Star)। কিন্তু ইংল্যান্ডের বাইরে এই নামকে কেউ মেনে নিলেন না। ফলে বিকল্প নামের প্রয়োজন পড়লো। জ্যোতির্বিজ্ঞানী Jérôme Lalande আবিষ্কারকের নামনুসারে এর নাম Herschel রাখার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ইউরোপে মহাকাশীয় লক্ষ্যবস্তুগুলোর নাম গ্রিক পৌরাণিক চরিত্র থেকে নেওয়ার রীতিটি ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছিল। সেই সূত্রে সুইডিশ জ্যোতির্বিজ্ঞানী Erik Prosperin এই গ্রহটির নাম নেপচুন (Neptune) রাখার প্রস্তাব দেন। কিন্তু এই গ্রহের কক্ষপথ নির্ণয়কারী জার্মান বিজ্ঞানী Johann Elert Bode এর নাম দেন ইউরেনাস। বোদে যুক্তি দেখান যে- সূর্যের দিক থেকে Jupiter (বৃহস্পতি) -এর পরে রয়েছে Saturn (শনি)। গ্রিক পুরাণ মতে জুপিটরের পিতা হলেন স্যাটার্ন। ইউরেনাস যেহেতু স্যাটার্নের পিতা, সেই কারণে স্যাটার্নের পরের গ্রহের নাম হওয়া উচিৎ ইউরেনাস। অবশেষে ১৮৫০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ইউরেনাস নামটিই আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি লাভ করে।




ইউরেনাসের দৈহিক বৈশিষ্ট্য: এর ব্যাস নেপচুনের চেয়ে একটু বেশি কিন্তু পৃথিবীর চেয়ে প্রায় ৪গুণ বেশি। এর বিষুব এলাকার ব্যাসার্ধ ২৫,৫৫৯ ±৪ কিলোমিটার। মেরু অঞ্চলের ব্যাসার্ধ ২৪,৯৭৩ ±২০ কিলোমিটার। এর পরিধি ১,৫৯,৩৫৪.১ কিলোমিটার। এর উপরিতলের এলাকার পরিমাণ ৮,১১৫.৬X১০৯ কিলোমিটার। এর আয়তন ৬,৮৩৩.৬X১০১৩ কিলোমিটার। এর ভর ৮,৬৮১০±০.০০১৩X১০২৫ কিলোগ্রাম। পৃথিবীর তুলনায় এই গ্রহ প্রায় ১৪.৫ গুণ বেশি ভারি। এর ঘনত্ব ১.২৭ গ্রাম/ঘন সেন্টিমিটার। বিষুব এলাকার মাধ্যাকর্ষণ শক্তি ৮.৬৯ মিটার/সেকেন্ড, ০.৮৮৬ গ্রাম।

এর অভ্যন্তরে কেন্দ্রে রয়েছে সিলিকেট, লৌহ ও নিকেল মিশ্রিত পিণ্ড, এর ব্যাপ্তী ২২,০০০ কিলোমিটার। এরপর ১০,০০০ কিলোমিটার জুড়ে রয়েছে বরফের আবরণ। এরপর রয়েছে ৫,০০০ কিলোমিটার জুড়ে হাইড্রোজেন, হিলিয়াম ও মিথেনের গ্যাসীয় বলয়।

এর একটি মেরু সূর্যের দিকে প্রায় ৪২ বৎসর থাকে, এই সময় অন্য মেরু অন্ধকারে থাকে। ইউরেনাসে সূর্যের আলোর তীব্রতা পৃথিবীর ৪০০ ভাগের ১ ভাগ পরিমাণ। এর উপরিতলের গড় তাপমাত্রা -১৮২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে শীতলতম অবস্থায় তাপমাত্রার পরিমাণ দাঁড়ায় -২২৪ সেলসিয়াস। বিষুব অঞ্চলে প্রায় ২৫০ মিটার/সেকেন্ড বেগে বাতাস প্রবাহিত হয়।




ইউরেনাসের কক্ষপথ: সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করে আসতে ইউরেনাসের সময় লাগে পার্থিব ৮৪ বৎসর। সূর্য থেকে এর সর্বোচ্চ দূরত্ব ৩,০০,৪৪,১৯,৭০৪ কিলোমিটার এবং সর্বনিম্ন দূরত্ব ২,৭৪,৮৯,৩৮,৪৬১ কিলোমিটার। কক্ষপথে এর গড় গতি ৬.৮১ কিলোমিটার/সেকেন্ড। এর নাক্ষত্রিক আবর্তন কাল ০.৭১৮৩৩ দিন বা ১৭ ঘণ্টা, ১৪ মিনিট। এটি পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে আবর্তিত হয়। অর্থাৎ এই গ্রহটি ঘড়ির কাঁটার দিকে ঘোরে।




ইউরেনাসের বলয় : এই গ্রহকে ঘিরে রয়েছে অনেকগুলো বলয়। এই বলয়গুলোর বিস্তার মাইক্রোমিটার থেকে সর্বোচ্চ ১ মিটার পর্যন্ত। এ পর্যন্ত অন্তত দুটি বলয়ের সন্ধান পাওয়া গেছে, যাদের বিস্তৃতি কয়েক কিলোমিটার। এই বলয়গুলোর উপাদান উপগ্রহের খণ্ডাংশ দ্বারা গঠিত বলেই অনুমান করা হয়। এখন পর্যন্ত ১৩টি উজ্জ্বল বলয় সম্পর্কে ধারণা করা গেছে। দূর থেকে টেলিস্কোপের সাহয্যে এই বলয়গুলো সম্পর্কে যে ধারণা করা হয়েছিল, Voyager 2-এর পাঠানো তথ্যানুসারে এ সকল বলয় সম্পর্কে আরও নিশ্চিত হওয়া গেছে। এদের বলয়গুলোর রঙ ভিন্ন ভিন্ন ধরনের। হাল্কা ধূসর, লাল, নীল রঙের বলয় দেখা যায়। নিচে বলয়গুলোর পরিচয় তুলে ধরা হলো।






১৩:২৭, ২৯ আগস্ট ২০১৩ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

Uranus Astronomical symbol of Uranus
The planet Uranus
Uranus, as seen by Voyager 2
আবিষ্কার
আবিষ্কারকWilliam Herschel
আবিষ্কারের তারিখMarch 13, 1781
বিবরণ
বিশেষণUranian
কক্ষপথের বৈশিষ্ট্য
যুগ J2000
অপসূর3,006,389,405 km
20.096 471 90 AU
1,868,088,249 miles
অনুসূর2,735,555,035 km
18.286 055 96 AU
1,699,799,169 miles
অর্ধ-মুখ্য অক্ষ2,870,972,220 km
19.191 263 93 AU
1,783,943,710 miles
উৎকেন্দ্রিকতা0.047 167 71
যুতিকাল369.65 day
গড় কক্ষীয় দ্রুতি6.795 km/s
নতি0.769 86°
(6.48° to Sun's equator)
উদ্বিন্দুর দ্রাঘিমা74.229 88°
উপগ্রহসমূহ27
ভৌত বৈশিষ্ট্যসমূহ
বিষুবীয় ব্যাসার্ধ25,559 km
(4.007 Earths)
মেরু ব্যাসার্ধ24,973 km
(3.929 Earths)
পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল8.084×109 km2
(15.849 Earths)
আয়তন6.834×1013 km3
(63.086 Earths)
ভর8.6832×1025 kg
(14.536 Earths)
গড় ঘনত্ব1.318 g/cm3
বিষুবীয় পৃষ্ঠের অভিকর্ষ8.69 m/s2
(0.886 g)
মুক্তি বেগ21.29 km/s
নাক্ষত্রিক ঘূর্ণনকাল0.718 33 day (17 h 14 min 24 s by convention) [১]
বিষুবীয় অঞ্চলে ঘূর্ণন বেগ2.59 km/s = 9320 km/h
অক্ষীয় ঢাল97.77°
উত্তর মেরুর বিষুবাংশ77.31° (5 h 9 min 15 s)
উত্তর মেরুর বিষুবলম্ব+15.175°
প্রতিফলন অনুপাত0.51
পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ন্যূন মধ্যক সর্বোচ্চ
Surface 59 K 68 K N/A
Cloudtop 55 K
বায়ুমণ্ডল
পৃষ্ঠের চাপ120 kPa (at the cloud level)
গঠন83% Hydrogen
15% Helium
1.99% Methane
0.01% Ammonia
0.00025% Ethane
0.00001% Acetylene
trace Carbon monoxide
trace Hydrogen sulfide


ইউরেনাস সৌরজগতের একটি গ্রহ। সূর্যের দিক থেকে এর অবস্থান সপ্তম এবং আকারের বিচারে তৃতীয় বৃহত্তম। এই গ্রহের আবিষ্কারের সাথে উইলিয়াম হার্সেল-এর নাম বিশেষভাবে জড়িত। মূলত এই গ্রহটিকে অনেক জ্যোতির্বিজ্ঞানীই আগে লক্ষ্য করেছিলেন, কিন্তু তাঁরা এটাকে সৌর জগতের গ্রহ হিসাবে বিবেচনায় আনতে পারেন নি। ১৬৯০ খ্রিষ্টাব্দে John Flamsteed অন্তত ছয়বার এই গ্রহটিকে দেখতে পান। তিনি তার নক্ষত্র তালিকায় এই গ্রহটিকে বৃষ নক্ষত্রমণ্ডলের একটি নক্ষত্র হিসাবে নামকরণ করেছিলেন 34 Tauri। ফরাসি জ্যোতির্বিজ্ঞানী Pierre Lemonnier ১৭৫০ থেকে ১৭৬৯ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে প্রায় ১২ বার এই গ্রহটি পর্যবেক্ষণ করেন। কিন্তু তিনিও একে নক্ষত্র হিসাবেই চিহ্নিত করেছিলেন। স্যার উইলিয়াম হার্সেল (Sir William Herschel) এই গ্রহটিকে প্রথম ১৭৮১ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ মার্চে বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণ করেন এবং ঐ বৎসরের ২৬ এপ্রিলে একে একটি ধূমকেতু হিসাবে উল্লেখ করেন। পরে আরো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণের পর তিনি একে সৌরজগতের গ্রহ হিসাবে স্বীকৃতি দেন। প্রথমাবস্থায় অনেক জ্যোতির্বিজ্ঞানীই এটা মানতে চান নি। শেষ পর্যন্ত একে গ্রহ হিসাবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকার করে নেওয়া হয়।



ইউরেনাসের নামকরণ : ভারত, চীন, গ্রিক বা মিশরের প্রাচীন জ্যোতির্বিজ্ঞানে এই গ্রহের কোনো নাম পাওয়া যায় না। এই কারণে গোড়াতেই হার্সেল বা অন্যকোনো জ্যোতির্বিজ্ঞানী কোনো বিশেষ নামে একে চিহ্নিত করেন নি। এই গ্রহের নামকরণের জন্য প্রথমে হার্সেলকে অনুরোধ করা হয়েছিল। হার্সেল তৎকালীন ইংল্যান্ডের রাজা King George III-এর নামানুসারে এর নামকরণ করতে চেয়েছিলেন Georgium Sidus (George's Star)। কিন্তু ইংল্যান্ডের বাইরে এই নামকে কেউ মেনে নিলেন না। ফলে বিকল্প নামের প্রয়োজন পড়লো। জ্যোতির্বিজ্ঞানী Jérôme Lalande আবিষ্কারকের নামনুসারে এর নাম Herschel রাখার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ইউরোপে মহাকাশীয় লক্ষ্যবস্তুগুলোর নাম গ্রিক পৌরাণিক চরিত্র থেকে নেওয়ার রীতিটি ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছিল। সেই সূত্রে সুইডিশ জ্যোতির্বিজ্ঞানী Erik Prosperin এই গ্রহটির নাম নেপচুন (Neptune) রাখার প্রস্তাব দেন। কিন্তু এই গ্রহের কক্ষপথ নির্ণয়কারী জার্মান বিজ্ঞানী Johann Elert Bode এর নাম দেন ইউরেনাস। বোদে যুক্তি দেখান যে- সূর্যের দিক থেকে Jupiter (বৃহস্পতি) -এর পরে রয়েছে Saturn (শনি)। গ্রিক পুরাণ মতে জুপিটরের পিতা হলেন স্যাটার্ন। ইউরেনাস যেহেতু স্যাটার্নের পিতা, সেই কারণে স্যাটার্নের পরের গ্রহের নাম হওয়া উচিৎ ইউরেনাস। অবশেষে ১৮৫০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ইউরেনাস নামটিই আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি লাভ করে।



ইউরেনাসের দৈহিক বৈশিষ্ট্য: এর ব্যাস নেপচুনের চেয়ে একটু বেশি কিন্তু পৃথিবীর চেয়ে প্রায় ৪গুণ বেশি। এর বিষুব এলাকার ব্যাসার্ধ ২৫,৫৫৯ ±৪ কিলোমিটার। মেরু অঞ্চলের ব্যাসার্ধ ২৪,৯৭৩ ±২০ কিলোমিটার। এর পরিধি ১,৫৯,৩৫৪.১ কিলোমিটার। এর উপরিতলের এলাকার পরিমাণ ৮,১১৫.৬X১০৯ কিলোমিটার। এর আয়তন ৬,৮৩৩.৬X১০১৩ কিলোমিটার। এর ভর ৮,৬৮১০±০.০০১৩X১০২৫ কিলোগ্রাম। পৃথিবীর তুলনায় এই গ্রহ প্রায় ১৪.৫ গুণ বেশি ভারি। এর ঘনত্ব ১.২৭ গ্রাম/ঘন সেন্টিমিটার। বিষুব এলাকার মাধ্যাকর্ষণ শক্তি ৮.৬৯ মিটার/সেকেন্ড, ০.৮৮৬ গ্রাম।

এর অভ্যন্তরে কেন্দ্রে রয়েছে সিলিকেট, লৌহ ও নিকেল মিশ্রিত পিণ্ড, এর ব্যাপ্তী ২২,০০০ কিলোমিটার। এরপর ১০,০০০ কিলোমিটার জুড়ে রয়েছে বরফের আবরণ। এরপর রয়েছে ৫,০০০ কিলোমিটার জুড়ে হাইড্রোজেন, হিলিয়াম ও মিথেনের গ্যাসীয় বলয়।

এর একটি মেরু সূর্যের দিকে প্রায় ৪২ বৎসর থাকে, এই সময় অন্য মেরু অন্ধকারে থাকে। ইউরেনাসে সূর্যের আলোর তীব্রতা পৃথিবীর ৪০০ ভাগের ১ ভাগ পরিমাণ। এর উপরিতলের গড় তাপমাত্রা -১৮২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে শীতলতম অবস্থায় তাপমাত্রার পরিমাণ দাঁড়ায় -২২৪ সেলসিয়াস। বিষুব অঞ্চলে প্রায় ২৫০ মিটার/সেকেন্ড বেগে বাতাস প্রবাহিত হয়।



ইউরেনাসের কক্ষপথ: সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করে আসতে ইউরেনাসের সময় লাগে পার্থিব ৮৪ বৎসর। সূর্য থেকে এর সর্বোচ্চ দূরত্ব ৩,০০,৪৪,১৯,৭০৪ কিলোমিটার এবং সর্বনিম্ন দূরত্ব ২,৭৪,৮৯,৩৮,৪৬১ কিলোমিটার। কক্ষপথে এর গড় গতি ৬.৮১ কিলোমিটার/সেকেন্ড। এর নাক্ষত্রিক আবর্তন কাল ০.৭১৮৩৩ দিন বা ১৭ ঘণ্টা, ১৪ মিনিট। এটি পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে আবর্তিত হয়। অর্থাৎ এই গ্রহটি ঘড়ির কাঁটার দিকে ঘোরে।



ইউরেনাসের বলয় : এই গ্রহকে ঘিরে রয়েছে অনেকগুলো বলয়। এই বলয়গুলোর বিস্তার মাইক্রোমিটার থেকে সর্বোচ্চ ১ মিটার পর্যন্ত। এ পর্যন্ত অন্তত দুটি বলয়ের সন্ধান পাওয়া গেছে, যাদের বিস্তৃতি কয়েক কিলোমিটার। এই বলয়গুলোর উপাদান উপগ্রহের খণ্ডাংশ দ্বারা গঠিত বলেই অনুমান করা হয়। এখন পর্যন্ত ১৩টি উজ্জ্বল বলয় সম্পর্কে ধারণা করা গেছে। দূর থেকে টেলিস্কোপের সাহয্যে এই বলয়গুলো সম্পর্কে যে ধারণা করা হয়েছিল, Voyager 2-এর পাঠানো তথ্যানুসারে এ সকল বলয় সম্পর্কে আরও নিশ্চিত হওয়া গেছে। এদের বলয়গুলোর রঙ ভিন্ন ভিন্ন ধরনের। হাল্কা ধূসর, লাল, নীল রঙের বলয় দেখা যায়। নিচে বলয়গুলোর পরিচয় তুলে ধরা হলো।


টেমপ্লেট:Link FA টেমপ্লেট:Link FA

  1. http://www.hnsky.org/iau-iag.htm