সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Bellayet (আলোচনা | অবদান)
Suvray (আলোচনা | অবদান)
গোছানো +
৪ নং লাইন: ৪ নং লাইন:
|birth_place = [[কলকাতা]], [[ব্রিটিশ ভারত]] (অধুনা [[ভারত]])
|birth_place = [[কলকাতা]], [[ব্রিটিশ ভারত]] (অধুনা [[ভারত]])
|death_date = [[৬ আগস্ট]], [[১৯২৫]]
|death_date = [[৬ আগস্ট]], [[১৯২৫]]
|death_place = [[ব্যারাকপুর]], [[চব্বিশ পরগনা জেলা|চব্বিশ পরগনা]], [[ব্রিটিশ ভারত]] (অধুনা [[উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা|উত্তর চব্বিশ পরগনা]], [[পশ্চিমবঙ্গ]], [[ভারত]])
|death_place = [[ব্যারাকপুর]], [[২৪ পরগনা জেলার ইতিহাস|চব্বিশ পরগনা]], [[ব্রিটিশ ভারত]] (অধুনা [[উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা|উত্তর চব্বিশ পরগনা]], [[পশ্চিমবঙ্গ]], [[ভারত]])
|movement = [[ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন]], [[ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস]]
|movement = [[ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন]], [[ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস]]
|organization = [[ভারতীয় কংগ্রেস]]
|organization = [[ভারতীয় কংগ্রেস]]
|religion = [[হিন্দুধর্ম|হিন্দু]]
|religion = [[হিন্দুধর্ম|হিন্দু]]
|occupation = [[রাজনীতি]], [[শিক্ষা]], [[বিচার ব্যবস্থা]]
|occupation = [[রাজনীতি]], [[শিক্ষা]], বিচার ব্যবস্থা
}}
}}
'''স্যার সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী''' (জন্ম: [[১০ নভেম্বর]], [[১৮৪৮]] এবং মৃত্যু: [[৬ আগস্ট]], [[১৯২৫]]) [[ব্রিটিশ ভারত|ব্রিটিশ ভারতের]] [[ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন|স্বাধীনতা আন্দোলনের]] প্রথম যুগের একজন বিশিষ্ট নেতা। তিনি ছিলেন ঊনবিংশ শতাব্দীর রাজনৈতিক সংগঠন ন্যাশানাল কনফারেন্সের প্রতিষ্ঠাতা। পরে এ দলটিকে নিয়ে তিনি [[ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস|ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে]] যোগ দেন। তাঁকে '''রাষ্ট্রগুরু''' সম্মানে ভূষিত করা হয়েছিল।
'''স্যার সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী''' (জন্ম: [[১০ নভেম্বর]], [[১৮৪৮]] - মৃত্যু: [[৬ আগস্ট]], [[১৯২৫]]) [[ব্রিটিশ ভারত|ব্রিটিশ ভারতের]] [[ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন|স্বাধীনতা আন্দোলনের]] প্রথম যুগের একজন বিশিষ্ট নেতা। তিনি ছিলেন ঊনবিংশ শতাব্দীর রাজনৈতিক সংগঠন ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রতিষ্ঠাতা। পরে এ দলটিকে নিয়ে তিনি [[ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস|ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে]] যোগ দেন। তাঁকে '''রাষ্ট্রগুরু''' সম্মানে ভূষিত করা হয়েছিল।


==পারিবারিক জীবন==
==পারিবারিক জীবন==
১৬ নং লাইন: ১৬ নং লাইন:


==শিক্ষা ও কর্মজীবনের সূচনা==
==শিক্ষা ও কর্মজীবনের সূচনা==
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জনের পর সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী ইংল্যান্ডে চলে যান এবং [[ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস]] (আইসিএস) পরীক্ষা পাশ করেন। অতঃপর [[১৮৭১]] সালে তিনি সিভিল সার্ভিসের কর্মজীবনে সহকারী [[ম্যাজিস্ট্রেট]] হিসেবে প্রবেশ করেন। তিনি তার নির্ধারিত দায়িত্ব সঠিকভাবে চালাতে পারেননি ও অগ্রসর হতে চান না - এ অজুহাতে তাকে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা হয়। জাতীয় নেতৃত্বে জোড়ালোভাবে অংশগ্রহণ করার লক্ষ্যে তিনি পুণরায় ইংল্যান্ডে গমন করেন। তিনি ছিলেন একজন স্বভাবজাত লেখক এবং বাগ্মী হিসেবেও তিনি ছিলেন তদ্রুপ।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জনের পর সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী ইংল্যান্ডে চলে যান এবং ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস (আইসিএস) পরীক্ষা পাশ করেন। অতঃপর ১৮৭১ সালে তিনি সিভিল সার্ভিসের কর্মজীবনে সহকারী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে প্রবেশ করেন। তিনি তার নির্ধারিত দায়িত্ব সঠিকভাবে চালাতে পারেননি ও অগ্রসর হতে চান না - এ অজুহাতে তাকে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা হয়। জাতীয় নেতৃত্বে জোড়ালোভাবে অংশগ্রহণ করার লক্ষ্যে তিনি পুণরায় ইংল্যান্ডে গমন করেন। তিনি ছিলেন একজন স্বভাবজাত লেখক এবং বাগ্মী হিসেবেও তিনি ছিলেন তদ্রুপ।


[[জুন]], [[১৮৭৫]] সালে মাতৃভূমি ভারতে ফিরে আসেন এবং শিক্ষকতার মহান পেশায় নিজেকে মনোনিবেশ ঘটান। ইংরেজীর [[প্রফেসর]] হিসেবে প্রথমে [[মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন]] এবং পরে [[ফ্রী চার্চ কলেজ|ফ্রী চার্চ কলেজে]] নিয়োজিত ছিলেন। সর্বশেষে [[রিপন কলেজ|রিপন কলেজে]] যোগ দেন। পরবর্তীকালে এই রিপন কলেজই তার নামে নামকরণ করা হয় [[সুরেন্দ্রনাথ কলেজ]] হিসেবে।
জুন, ১৮৭৫ সালে মাতৃভূমি ভারতে ফিরে আসেন এবং শিক্ষকতার মহান পেশায় নিজেকে মনোনিবেশ ঘটান। ইংরেজীর প্রফেসর হিসেবে প্রথমে [[মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন]] এবং পরে ফ্রী চার্চ কলেজে নিয়োজিত ছিলেন। সর্বশেষে [[রিপন কলেজ|রিপন কলেজে]] যোগ দেন। পরবর্তীকালে এই রিপন কলেজই তার নামে নামকরণ করা হয় [[সুরেন্দ্রনাথ কলেজ]] হিসেবে।


==রাজনৈতিক জীবন==
==রাজনৈতিক জীবন==
[[২৬ জুলাই]], [[১৮৭৬]] সালে সুরেন্দ্রনাথ সর্ব ভারতীয় আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে ভারতীয় সংঘ বা '''দি ইন্ডিয়ান এসোসিয়েশন''' প্রতিষ্ঠা করেন। [[১৮৭৮]] সাল হতে তিনি [[বেঙ্গলী]] শিরোনামে একটি কাগজ সম্পাদনা করতেন এবং নির্ভিক ও ঔৎসুক চিত্তে জাতির স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিশেষ করে জাতীয় [[সংস্কৃতি]], [[একতা]], [[স্বাধীনতা]] ও [[মুক্তি|মুক্তির]] বিষয়ে নিয়মিত লিখতেন।
২৬ জুলাই, ১৮৭৬ সালে সুরেন্দ্রনাথ সর্ব ভারতীয় আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে ভারতীয় সংঘ বা '''দি ইন্ডিয়ান এসোসিয়েশন''' প্রতিষ্ঠা করেন। [[১৮৭৮]] সাল হতে তিনি [[বেঙ্গলী]] শিরোনামে একটি কাগজ সম্পাদনা করতেন এবং নির্ভিক ও ঔৎসুক চিত্তে জাতির স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিশেষ করে জাতীয় [[সংস্কৃতি]], [[একতা]], [[স্বাধীনতা]] ও [[মুক্তি|মুক্তির]] বিষয়ে নিয়মিত লিখতেন।


এছাড়াও, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতীয় [[বিধানসভা|বিধানসভার]] অন্যতম '''সদস্য''' ছিলেন। ১৮৭৬-১৮৯৯ সাল পর্যন্ত একাধারে তিনি [[কলকাতা কর্পোরেশন|কলকাতা কর্পোরেশনেরও]] সদস্য হিসেবে ছিলেন।
এছাড়াও, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতীয় [[বিধানসভা|বিধানসভার]] অন্যতম '''সদস্য''' ছিলেন। ১৮৭৬-১৮৯৯ সাল পর্যন্ত একাধারে তিনি [[কলকাতা কর্পোরেশন|কলকাতা কর্পোরেশনেরও]] সদস্য হিসেবে ছিলেন।
২৭ নং লাইন: ২৭ নং লাইন:
তার সুদক্ষ ও সুচারু নেতৃত্বের ফলে ভারতীয় সংঘ অল্প সময়েই পরিস্ফুটিত হয়। [[১৮৮৩]] সাল থেকে ভারতের সকল এলাকা থেকে আগত প্রতিনিধিদের নিয়ে নিয়মিতভাবে বার্ষিক সভা পরিচালনা করতেন তিনি। [[১৮৮৫]] সালে [[কংগ্রেস|ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস]] প্রতিষ্ঠা পায় এবং এর লক্ষ্য, উদ্দেশ্যও ভারতীয় সংঘের সাথে মিল থাকায় [[১৮৮৬]] সালে [[কলকাতা|কলকাতায়]] অনুষ্ঠিত কংগ্রেসের ২য় অধিবেশনে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় সিদ্ধান্ত নিলেন ভারতীয় সংঘকে কংগ্রেসের সাথে একীভূত করেন। তিনি নতুন প্রতিষ্ঠিত কংগ্রেসকে আরো শক্তিশালী ও গতিশীল করার লক্ষ্যে দুইবার - [[১৮৯৫]] এবং [[১৯০৭]] সালে এর সভাপতিত্ব করেন।
তার সুদক্ষ ও সুচারু নেতৃত্বের ফলে ভারতীয় সংঘ অল্প সময়েই পরিস্ফুটিত হয়। [[১৮৮৩]] সাল থেকে ভারতের সকল এলাকা থেকে আগত প্রতিনিধিদের নিয়ে নিয়মিতভাবে বার্ষিক সভা পরিচালনা করতেন তিনি। [[১৮৮৫]] সালে [[কংগ্রেস|ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস]] প্রতিষ্ঠা পায় এবং এর লক্ষ্য, উদ্দেশ্যও ভারতীয় সংঘের সাথে মিল থাকায় [[১৮৮৬]] সালে [[কলকাতা|কলকাতায়]] অনুষ্ঠিত কংগ্রেসের ২য় অধিবেশনে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় সিদ্ধান্ত নিলেন ভারতীয় সংঘকে কংগ্রেসের সাথে একীভূত করেন। তিনি নতুন প্রতিষ্ঠিত কংগ্রেসকে আরো শক্তিশালী ও গতিশীল করার লক্ষ্যে দুইবার - [[১৮৯৫]] এবং [[১৯০৭]] সালে এর সভাপতিত্ব করেন।


[[১৯০৫]] সালে সুরেন্দ্রনাথ [[বঙ্গভঙ্গ|বঙ্গভঙ্গের]] বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেন এবং [[স্বদেশী আন্দোলন|স্বদেশী আন্দোলনে]] নেতৃত্ব দেন। অধিকন্তু [[হিন্দু-মুসলমান|হিন্দু-মুসলমানের]] মধ্যে [[সাম্প্রদায়িকতা]] মাথাচাড়া দিয়ে উঠে এবং [[জাতীয়তাবাদ|জাতীয়তাবাদের]] উত্থান ঘটায় পরবর্তীতে তিনি মতানৈক্যজনিত কারণে [[১৯১৮]] সালে [[ভারতীয় কংগ্রেস|কংগ্রেস]] থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন। এরপর তিনি [[মধ্যপন্থী]] হিসেবে হিন্দু-মুসলিম উভয় পক্ষকে একীকরণের জন্য উদ্যোগী হন। [[১৯২১]] সালে তিনি [[নাইট]] [[উপাধি]] লাভ করেন এবং বাংলায় তৎকালীন সরকারের [[মন্ত্রী]] হিসেবে ১৯২১ থেকে [[১৯২৪]] সাল পর্যন্ত দেশের সেবায় মনোনিবেশ ঘটান।
[[১৯০৫]] সালে সুরেন্দ্রনাথ [[বঙ্গভঙ্গ|বঙ্গভঙ্গের]] বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেন এবং [[স্বদেশী আন্দোলন|স্বদেশী আন্দোলনে]] নেতৃত্ব দেন। অধিকন্তু [[হিন্দু-মুসলমান|হিন্দু-মুসলমানের]] মধ্যে [[সাম্প্রদায়িকতা]] মাথাচাড়া দিয়ে উঠে এবং [[জাতীয়তাবাদ|জাতীয়তাবাদের]] উত্থান ঘটে। পরবর্তীতে তিনি মতানৈক্যজনিত কারণে [[১৯১৮]] সালে [[ভারতীয় কংগ্রেস|কংগ্রেস]] থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন। এরপর তিনি [[মধ্যপন্থী]] হিসেবে হিন্দু-মুসলিম উভয় পক্ষকে একীকরণের জন্য উদ্যোগী হন। [[১৯২১]] সালে তিনি [[নাইট]] [[উপাধি]] লাভ করেন এবং বাংলায় তৎকালীন সরকারের [[মন্ত্রী]] হিসেবে ১৯২১ থেকে [[১৯২৪]] সাল পর্যন্ত দেশের সেবায় মনোনিবেশ ঘটান।


==সমাজ সংস্কারে==
==সমাজ সংস্কারে==
[[শিক্ষক]] হিসেবে স্যার সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী ছাত্রদেরকে ভারতীয় জাতীয়তাবাদী চেতনায় উজ্জ্বীবিত, অনুপ্রাণিত তথা উদ্বুদ্ধ করতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেন। একই সাথে তিনি ভারতীয়দের একতাবদ্ধতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে [[বক্তৃতা]] দিতে শুরু করেন। উনবিংশ শতকে [[রাজা রামমোহন রায়|রাজা রামমোহন রায়ের]] নির্দেশিত সমাজ-ধর্ম বিষয়ক পুণর্জাগরণের আন্দোলনকে আরো বেগবান করতে বিশেষভাবে সচেষ্ট ছিলেন।
[[শিক্ষক]] হিসেবে স্যার সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী ছাত্রদেরকে ভারতীয় জাতীয়তাবাদী চেতনায় উজ্জ্বীবিত, অনুপ্রাণিত তথা উদ্বুদ্ধ করতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেন। একই সাথে তিনি ভারতীয়দের একতাবদ্ধতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে [[বক্তৃতা]] দিতে শুরু করেন। উনবিংশ শতকে [[রাজা রামমোহন রায়|রাজা রামমোহন রায়ের]] নির্দেশিত সমাজ-ধর্ম বিষয়ক পুণর্জাগরণের আন্দোলনকে আরো বেগবান করতে বিশেষভাবে সচেষ্ট ছিলেন।


কিন্তু সুরেন্দ্রনাথ কর্তৃক অনুসৃত সামাজিক সংস্কারে সমাজ সচেতন ব্যক্তিদের ঐক্যবদ্ধ অংশগ্রহণ থাকা সত্ত্বেও রাজনৈতিক ডামাডোলের কারণে তেমন একটা সফলতা পায়নি। এছাড়াও, তিনি সমাজ পুণর্গঠনের অংশ হিসেবে বিশেষ করে [[বিধবা বিবাহ]], মেয়েদের অধিক বয়সে [[বিবাহ]] ইত্যাদি কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়ান।
কিন্তু সুরেন্দ্রনাথ কর্তৃক অনুসৃত সামাজিক সংস্কারে সমাজ সচেতন ব্যক্তিদের ঐক্যবদ্ধ অংশগ্রহণ থাকা সত্ত্বেও রাজনৈতিক ডামাডোলের কারণে তাঁর উদ্যোগ তেমন একটা সফলতা পায়নি। এছাড়াও, তিনি সমাজ পুণর্গঠনের অংশ হিসেবে বিশেষ করে [[বিধবা বিবাহ]], মেয়েদের অধিক বয়সে [[বিবাহ]] ইত্যাদি কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়ান।


==মহাপ্রয়াণ==
==মহাপ্রয়াণ==
৬ই আগস্ট, ১৯২৫: স্যার সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ৭৭ বৎসর বয়সে প্রয়াত হন। তার মৃত্যুতে সমগ্র বাঙ্গালী জাতি এক মহৎ হৃদয়ের অধিকারী সূর্যসন্তানকে হারালো।
৬ই আগস্ট, ১৯২৫: স্যার সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ৭৭ বৎসর বয়সে প্রয়াত হন। তার মৃত্যুতে সমগ্র বাঙ্গালী জাতি এক মহৎ হৃদয়ের অধিকারী সূর্যসন্তানকে হারালো।



==আরও দেখুন==
==আরও দেখুন==
* [[সুরেন্দ্রনাথ কলেজ]]

==পাদটীকা==

==আরও পড়ুন==



==বহিঃসংযোগ==
==বহিঃসংযোগ==
৫০ নং লাইন: ৪৫ নং লাইন:
*[http://www.aicc.org.in/new/past-president-detail.php?id=9 কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে]
*[http://www.aicc.org.in/new/past-president-detail.php?id=9 কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে]
*[http://www.indianpost.com/viewstamp.php/Color/Raw%20Sienna/S.%20N.%20BANERJEE ভারতীয় ডাকটিকিটে সুরেন্দ্র নাথ ব্যানার্জী]
*[http://www.indianpost.com/viewstamp.php/Color/Raw%20Sienna/S.%20N.%20BANERJEE ভারতীয় ডাকটিকিটে সুরেন্দ্র নাথ ব্যানার্জী]



[[da:Surendranath Banerjea]]
[[da:Surendranath Banerjea]]

১৪:১৩, ৩ নভেম্বর ২০১১ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
জন্ম১০ নভেম্বর, ১৮৪৮
মৃত্যু৬ আগস্ট, ১৯২৫
পেশারাজনীতি, শিক্ষা, বিচার ব্যবস্থা
প্রতিষ্ঠানভারতীয় কংগ্রেস
আন্দোলনভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস

স্যার সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী (জন্ম: ১০ নভেম্বর, ১৮৪৮ - মৃত্যু: ৬ আগস্ট, ১৯২৫) ব্রিটিশ ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রথম যুগের একজন বিশিষ্ট নেতা। তিনি ছিলেন ঊনবিংশ শতাব্দীর রাজনৈতিক সংগঠন ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রতিষ্ঠাতা। পরে এ দলটিকে নিয়ে তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দেন। তাঁকে রাষ্ট্রগুরু সম্মানে ভূষিত করা হয়েছিল।

পারিবারিক জীবন

১৮৪৮ সালের ৩০ নভেম্বর কলকাতায় সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম। তাঁর বাবা দুর্গাচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন ঐ যুগের একজন স্বনামধন্য চিকিৎসক।

শিক্ষা ও কর্মজীবনের সূচনা

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জনের পর সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী ইংল্যান্ডে চলে যান এবং ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস (আইসিএস) পরীক্ষা পাশ করেন। অতঃপর ১৮৭১ সালে তিনি সিভিল সার্ভিসের কর্মজীবনে সহকারী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে প্রবেশ করেন। তিনি তার নির্ধারিত দায়িত্ব সঠিকভাবে চালাতে পারেননি ও অগ্রসর হতে চান না - এ অজুহাতে তাকে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা হয়। জাতীয় নেতৃত্বে জোড়ালোভাবে অংশগ্রহণ করার লক্ষ্যে তিনি পুণরায় ইংল্যান্ডে গমন করেন। তিনি ছিলেন একজন স্বভাবজাত লেখক এবং বাগ্মী হিসেবেও তিনি ছিলেন তদ্রুপ।

জুন, ১৮৭৫ সালে মাতৃভূমি ভারতে ফিরে আসেন এবং শিক্ষকতার মহান পেশায় নিজেকে মনোনিবেশ ঘটান। ইংরেজীর প্রফেসর হিসেবে প্রথমে মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন এবং পরে ফ্রী চার্চ কলেজে নিয়োজিত ছিলেন। সর্বশেষে রিপন কলেজে যোগ দেন। পরবর্তীকালে এই রিপন কলেজই তার নামে নামকরণ করা হয় সুরেন্দ্রনাথ কলেজ হিসেবে।

রাজনৈতিক জীবন

২৬ জুলাই, ১৮৭৬ সালে সুরেন্দ্রনাথ সর্ব ভারতীয় আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে ভারতীয় সংঘ বা দি ইন্ডিয়ান এসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৭৮ সাল হতে তিনি বেঙ্গলী শিরোনামে একটি কাগজ সম্পাদনা করতেন এবং নির্ভিক ও ঔৎসুক চিত্তে জাতির স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিশেষ করে জাতীয় সংস্কৃতি, একতা, স্বাধীনতামুক্তির বিষয়ে নিয়মিত লিখতেন।

এছাড়াও, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতীয় বিধানসভার অন্যতম সদস্য ছিলেন। ১৮৭৬-১৮৯৯ সাল পর্যন্ত একাধারে তিনি কলকাতা কর্পোরেশনেরও সদস্য হিসেবে ছিলেন।

তার সুদক্ষ ও সুচারু নেতৃত্বের ফলে ভারতীয় সংঘ অল্প সময়েই পরিস্ফুটিত হয়। ১৮৮৩ সাল থেকে ভারতের সকল এলাকা থেকে আগত প্রতিনিধিদের নিয়ে নিয়মিতভাবে বার্ষিক সভা পরিচালনা করতেন তিনি। ১৮৮৫ সালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা পায় এবং এর লক্ষ্য, উদ্দেশ্যও ভারতীয় সংঘের সাথে মিল থাকায় ১৮৮৬ সালে কলকাতায় অনুষ্ঠিত কংগ্রেসের ২য় অধিবেশনে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় সিদ্ধান্ত নিলেন ভারতীয় সংঘকে কংগ্রেসের সাথে একীভূত করেন। তিনি নতুন প্রতিষ্ঠিত কংগ্রেসকে আরো শক্তিশালী ও গতিশীল করার লক্ষ্যে দুইবার - ১৮৯৫ এবং ১৯০৭ সালে এর সভাপতিত্ব করেন।

১৯০৫ সালে সুরেন্দ্রনাথ বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেন এবং স্বদেশী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। অধিকন্তু হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতা মাথাচাড়া দিয়ে উঠে এবং জাতীয়তাবাদের উত্থান ঘটে। পরবর্তীতে তিনি মতানৈক্যজনিত কারণে ১৯১৮ সালে কংগ্রেস থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন। এরপর তিনি মধ্যপন্থী হিসেবে হিন্দু-মুসলিম উভয় পক্ষকে একীকরণের জন্য উদ্যোগী হন। ১৯২১ সালে তিনি নাইট উপাধি লাভ করেন এবং বাংলায় তৎকালীন সরকারের মন্ত্রী হিসেবে ১৯২১ থেকে ১৯২৪ সাল পর্যন্ত দেশের সেবায় মনোনিবেশ ঘটান।

সমাজ সংস্কারে

শিক্ষক হিসেবে স্যার সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী ছাত্রদেরকে ভারতীয় জাতীয়তাবাদী চেতনায় উজ্জ্বীবিত, অনুপ্রাণিত তথা উদ্বুদ্ধ করতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেন। একই সাথে তিনি ভারতীয়দের একতাবদ্ধতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে বক্তৃতা দিতে শুরু করেন। উনবিংশ শতকে রাজা রামমোহন রায়ের নির্দেশিত সমাজ-ধর্ম বিষয়ক পুণর্জাগরণের আন্দোলনকে আরো বেগবান করতে বিশেষভাবে সচেষ্ট ছিলেন।

কিন্তু সুরেন্দ্রনাথ কর্তৃক অনুসৃত সামাজিক সংস্কারে সমাজ সচেতন ব্যক্তিদের ঐক্যবদ্ধ অংশগ্রহণ থাকা সত্ত্বেও রাজনৈতিক ডামাডোলের কারণে তাঁর উদ্যোগ তেমন একটা সফলতা পায়নি। এছাড়াও, তিনি সমাজ পুণর্গঠনের অংশ হিসেবে বিশেষ করে বিধবা বিবাহ, মেয়েদের অধিক বয়সে বিবাহ ইত্যাদি কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়ান।

মহাপ্রয়াণ

৬ই আগস্ট, ১৯২৫: স্যার সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ৭৭ বৎসর বয়সে প্রয়াত হন। তার মৃত্যুতে সমগ্র বাঙ্গালী জাতি এক মহৎ হৃদয়ের অধিকারী সূর্যসন্তানকে হারালো।

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ