বাংলাদেশে অ্যালকোহল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

বাংলাদেশে অ্যালকোহল এর ব্যবহার সীমাবদ্ধ ও নিয়ন্ত্রিত। ২০১৫ সালে বিশ্ব ব্যাংকের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে কম অ্যালকোহল ব্যবহার করা হয়।[১] তবে স্থানীয় পানীয় যেমন স্পিড, টাইগার এসবে অ্যালকোহল ও ক্যাফেইন ক্ষতিকর মাত্রায় মিশানো হয়, যা নিষিদ্ধের জন্য সরকারের কাছে অনেকসময় আবেদন করা হয়।[২][৩]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

১৮৮৭ সালে বাংলাদেশের প্রথম ডিস্টিলারি স্থাপিত হয়। রবার্ট রাসেল কেরু নামে এক ইংরেজ এটি স্থাপন করেন। যেটি বর্তমানে কেরু এ্যান্ড কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড নামে পরিচিত। এটি ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ সরকার জাতীয়করণ করে।[৪] ডিস্টিলারিটি দর্শনা চিনিকলের একটি অংশ এবং বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের অধীনে পরিচালিত। বাংলাদেশের ১৫টি চিনিকলের মধ্যে একমাত্র কেরু এ্যান্ড কোম্পানিকে লোকসান গুনতে হয় না। এর লাভের প্রায় সম্পুর্নটাই আসে এখানকার ডিস্টিলারি ইউনিট থেকে। ডিস্টিলারিতে হুইস্কি, জিন, ব্র্যান্ডি, ক্রেকাউট, রাম ও ভদকা উৎপন্ন হয়।[৫]

দর্শনা ডিস্টিলারির পণ্য

২০০৩ সালে বাংলাদেশ সরকার যমুনা গ্রুপের যমুনা ডিস্টিলারি লিমিটেডকে মদ্যপ পানীয় উৎপাদনের লাইসেন্স দেয়। যমুনা ডিস্টিলারি লিমিটেড বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি প্রতিস্ঠান হিসেবে অ্যালকোহল উৎপাদনের লাইসেন্স পায়। ২০০৯ সালে যমুনা হান্টার ব্র্যান্ডের বিয়ার বাংলাদেশে নিয়ে আসে।[৬]

আইন[সম্পাদনা]

বাংলাদেশের আইন অনুসারে, কোন পানীয়তে ০.৫% এর বেশি অ্যালকোহল থাকলে সেটি অ্যালকোহলিক পানীয় হিসেবে গণ্য হবে। অ্যালকোহল বিপণন, মজুদ ও বহনের জন্য সরকারি অনুমতি প্রয়োজন হয়। অ্যালকোহল পানের জন্য একজনের অবশ্যই বৈধ অনুমতি নিতে হবে। মুসলিমদের অ্যালকোহলের অনুমতি পেতে হলে ডাক্তারি ব্যবস্থা পত্রের প্রয়োজন হয়। ব্যবস্থা পত্রটি মেডিকেল কলেজের একজন সহযোগী অধ্যাপক বা সিভিল সার্জনের কাছে থেকে নিতে হবে।[৭]

ফেব্রুয়ারি, ২০২২ এর এক আইন অনুযায়ী ২১ বছর বয়সী সব উপজাতি সবাই মদ পানের লাইসেন্স পাবে।[৮] এছাড়া মদের দোকান খোলা ও গ্রহণ নিয়ে আইন অনেকাংশে শিথিল করে ফেলা হয়।[৯] বাংলাদেশে ১৩,০০০ জনের বিদেশি ও ২৮,০০০ জনের দেশি মদ পানের অনুমতি থাকলেও মদ পানকারী প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি।[১০] ২০২২ সালে রিজার্ভ সংকটে বিদেশি মদ আমদানি বন্ধ করা হয়। গড়ে ক্যারু ও কোং(একমাত্র মদ উৎপাদনকারী) ১২,০০০ থেকে ১৩,০০০ বাক্স মদ বিক্রি করে।[১১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Bangladesh among abstinent countries when it comes to drinking"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  2. Newaz, Dr Nagma; Specialist, Child; Activist, Environmental; BSMMU; Hospital, P. G.; Dhaka (২০১০-০৬-০৪)। "Alcoholic beverages"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-১০ 
  3. "Beware of energy drinks"Beware of energy drinks | theindependentbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-১০ 
  4. "Carew: Serving liquor since 1897"dhakatribune.com। Dhaka Tribune। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  5. "Carew: The discreet distillery"dhakatribune.com। Dhaka Tribune। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  6. "First local beer debuts"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০০৯-১০-১২। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-১২ 
  7. "Law and Our Rights"thedailystar.net। The Daily Star। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  8. "বাংলাদেশে মদ্যপান: নতুন অ্যালকোহল বিধিমালায় যা বলা হয়েছে"। BBC বাংলা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ 
  9. Correspondent, Staff (২০২২-০২-১৯)। "Liquor management: Colonial-era rules discarded, fresh ones in place"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৮-২৩ 
  10. Ahmed, Inam; Liton, Shakhawat (২০১৮-০৯-২৫)। "Licence of lies"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৮-২৩ 
  11. Wahid, Shahnoor (২০২২-০১-১২)। "Good news cometh from Carew & Co?"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৮-২৩