ফরিদপুরের দুই হাজার কোটি টাকা পাচার মামলা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ফরিদপুরের দুই হাজার কোটি টাকা পাচার মামলা বাংলাদেশ পুলিশের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশান ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) কর্তৃক ২০২০ সালের ২৬ জুন দায়েরকৃত একটি বিদেশে অর্থপাচার মামলা। এ মামলা ঢাকা শহরের কাফরুল থানায় সিআইডির পরিদর্শক এসএম মিরাজ আল মাহমুদ বাদি হয়ে দায়ের করা হয়েছে। ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন সংশোধনী-২০১৫-এর ৪ (২) ধারায় এ মামলা করা হয়। মামলাটি ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। মামলায় ২ হাজার কোটি টাকার সম্পদ অবৈধ উপায়ে উপার্জন ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়। এ মামলার তদন্তপূর্বক ২০২১ সালের ৩ মার্চ তারিখে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার (সিআইডি) উত্তম কুমার বিশ্বাস। এদের মধ্যে অন্যতম হলেন ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সাবেক অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেল।[১] এজন্য এ মামলার শিরোনামে বারবার তাদের নাম উঠে আসে। বরকত-রুবেল ফরিদপুর শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ের পাশে ব্রাক্ষ্মণকান্দা এলাকার মৃত আব্দুস সালাম মন্ডলের ছেলে। আব্দুস সালাম মন্ডল সরকারি চাকরিজীবি ছিলেন। তার আদি নিবাস ছিল ফরিদপুরের নগরকান্দা। যুদ্ধাপরাধী মামলায় ফাঁসির দন্ড নিয়ে পলাতক খোকন রাজাকারের ভগ্নিপতি তিনি। এজন্য বরকত-রুবেল খোকন রাজাকারের ভাগ্নে হিসেবেও পরিচিত। তবে আদালত এ অভিযোগপত্র আমলে না নিয়ে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। এরপর ২০২৩ সালের ২২ জুন পূর্বোক্ত ১০ জন সহ আরো ৩৭ জনকে আসামি করে মোট ৪৭ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমানের আদালতে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন খান। এরপর মামলাটি ৫ জুলাই বিচারিক আদালতে বদলি করা হয়।

মামলার ইতিবৃত্ত[সম্পাদনা]

২০২০ সালের ৭ জুন রাতে জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে হামলা মামলার আসামি হিসেবে শহরের বদরপুরসহ বিভিন্ন মহল্লায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ বরকত, রুবেলসহ ৯ জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার অন্যরা হলেন, আওয়ামী লীগ নেত্রী ইয়াসমিন সুলতানা বন্যা মণ্ডল, ছাত্রলীগ নেতা এনামুল ইসলাম জনি, অমিয় সরকার, বর্ধিত ১৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চক্রবর্তী, সাবেক ৬ নং ওয়ার্ডের পৌর কাউন্সিলর মাহফুজুর রহমান মামুন ও জাহিদ খানকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সুপার পরেরদিন প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে পাঁচটি পিস্তল ও ৯১ রাউন্ড গুলি, দুইটি শটগান ও ১৮০টি কার্তুজ, ছয় বোতল বিদেশি মদ, ৬৫ পিস ইয়াবা, খাদ্য অধিদফতরের ১২শ বস্তায় ৬০ হাজার কেজি চাল, ৩ হাজার ইউএস ডলার, ৯৮ হাজার ভারতীয় রুপি ও বাংলাদেশি ২৯ লাখ টাকা ও পাঁচটি পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে। পরে আটককৃতদের আদালতে হাজির করে অধিকতর তদন্তের জন্য দফায় দফায় রিমান্ডে নেয়া হয়। [২]

আলোচিত অর্থপাচার মামলা দায়ের[সম্পাদনা]

এ মামলার তদন্তে গিয়ে এ দুই ভাইয়ের আড়াই হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের সন্ধান পায় সিআইডি। পরে এই মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়। নেওয়া হয় রিমান্ডে। রিমান্ডে থেকে পরে আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তারা। সেখানে হাজার হাজার কোটি টাকা কীভাবে বিদেশে পাচার করেছেন এবং এর সুবিধাভোগী কারা, তার বিস্তারিত বর্ণনা দেন তারা। এছাড়া এসব অর্থ কীভাবে এবং কাদের সহায়তায় অর্জন করেছেন, তাদের নামও প্রকাশ করেন ঐ জবানবন্দিতে। এরপর জবানবন্দীতে দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অর্থপাচারের অভিযোগে ২০২১ সালের ২৬ জুন ঢাকার কাফরুল থানায় আলোচিত এ মানিলন্ডারিংয়ের মামলাটি করেন সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ। মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১০ সাল থেকে ২০২০ বছর পর্যন্ত ফরিদপুরের এলজিইডি, বিআরটিএ, সড়ক বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি বিভাগের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করতেন বরকত ও রুবেল। ওই ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করে বরকত ও রুবেল বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের মালিক হন। এছাড়া তারা মাদক কারবার ও ভূমি দখল করেও অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন: এসি ও নন-এসিসহ ২৩টি বাস, ডাম্প ট্রাক, বোল্ডার ও পাজেরোর মালিক তারা। অবৈধভাবে অর্জিত অর্থের মধ্যে অন্তত দুই হাজার কোটি টাকা তারা বিদেশে পাচার করেছেন বলে সিআইডির অভিযোগ। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রাতারাতি দল পালটে বরকত আওয়ামী লীগে যোগ দেন। পরে অবৈধ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ফরিদপুর জেলার রোডস, পিডব্লিউডি, এলজিইডি, হেলথ, বিআরটিএ, পৌরসভা, বিদ্যুত্, জেলা পরিষদ, ফ্যাসলিটিজ, সিএমএমইউ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, টেপাখোলা গরুর হাট, সিঅ্যান্ডবি ও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সব ধরনের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও কমিশন বাণিজ্য, মাদক ব্যবসা, পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি ও জেলা রেজিস্টার অফিসের দলিলসংক্রান্ত কমিশন বাণিজ্য করে হাজার হাজার কোটি টাকা অবৈধভাবে উপার্জন করেন।

১ম চার্জশিট[সম্পাদনা]

২০২১ সালের ৩ মার্চ দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের মামলায় ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করে সিআইডি। ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার উত্তম কুমার বিশ্বাস। ১ম দফার এ চার্জশিটে যাদের নাম ছিলো: ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সাবেক অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত, তার ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেল ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ভাই খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর, ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার লেভী, আসিকুর রহমান ফারহান, এএইচএম ফোয়াদ, ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ওরফে ফাহিম, কামরুল হাসান ডেভিড, মুহাম্মদ আলী মিনার ও তারিকুল ইসলাম ওরফে নাসিম।[৩]

সম্পূরক চার্জশিট[সম্পাদনা]

অর্থ পাচারের এই মামলায় গত ২২ জুন সহ প্রথম দফার চার্জশিটের ১০ জনের সাথে আরো ৩৭ জনের নাম যুক্ত করে সর্বমোট ৪৭ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করে সিআইডি। সম্পূরক চার্জশিটে নতুন করে যুক্ত হওয়া ৩৭ জন অভিযুক্তরা হলেন, জেলা শ্রমিক লীগের একাংশের সভাপতি ও মোটরস ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোহাম্মদ নাসির, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক মোকররম মিয়া বাবু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম জীবন, সাবেক মন্ত্রীর ভাই বাবরের ঘনিষ্ঠ সহচর বিল্লাল হোসেন, ফরিদপুর চেম্বারের সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নিশান মাহমুদ শামীম, জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট অনিমেষ রায়, আওয়ামী লীগ নেতা সাহেব সরোয়ার, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা দীপক মজুমদার, ফরিদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামচুল আলম চৌধুরী, ঈশান গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম মজনু, কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফকির মো. বেলায়েত, ব্যবসায়ী জামাল আহমেদ খান, বেলায়েত মোল্লা, আহসান হোসেন খান, স্থানীয় সাংবাদিক সাজ্জাদ হোসেন বাবু, জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট স্বপন কুমার পাল, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট জাহিদ ব্যাপারী, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা খলিফা কামাল উদ্দিন, ফরিদপুরের পৌর মেয়র অমিতাভ বোস, পৌরসভার সাবেক মেয়র শেখ মাহাতাব আলী মেথু, সাবেক কাউন্সিলর নাফিজুল ইসলাম তাপস, যুবলীগ নেতা ও ঠিকাদার চৌধুরী মো. হাসান, বরকত-বরকতের চাচাতো ভাই জাফর ইকবাল হারুন, বরকতের স্ত্রী আফরোজা পারভীন, রুবেলের স্ত্রী সোহেলী ইমরুজ, বরকত-রুবেলের ভাই রফিক মণ্ডল, রুবেল-বরকতের সহযোগী রিয়াজ আহমদ, আফজাল হোসেন খান শিপলু, ডিক্রিরচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন আবু, মনিরুজ্জামান মামুন, মাহফুজুর রহমান মামুন, সুমন সাহা, আবদুল জলিল শেখ, ঠিকাদার আজমল হোসেন খান ওরফে ছোট আজম, ঠিকাদার খন্দকার শাহিন আহমেদ ওরফে পান শাহিন ও ঢাকা টাইমস পত্রিকার সম্পাদক সাংবাদিক আরিফুর রহমান দোলন। তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির সহকারী পুলিশ কমিশনার (এএসপি) উত্তম কুমার সাহা প্রথমে ১০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ মামলার চার্জশির্ট দাখিলের পর মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকার দশ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে যায়। সেখানে কয়েক দফা চার্জগঠনের শুনানি হয়। শুনানিতে কিছু ত্রুতি-বিচ্যুতি ওঠে আসে। যার মধ্যে মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তি দেয়া এবং স্বীকারোক্তিতে নাম নাম আসা ৪২ জনকে বাদ দেওয়া হয়। বাদ দেয়া ৪২ জনের মধ্যে ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিশান মাহমুদ শামীম ও বিল্লাল হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন। এই দুই জনের নাম বাদ দেওয়া এবং দুই ভাইয়ের যে সম্পত্তি থাকার কথা চার্জশিটে বলা হয় সে হিসাবে গড়মিল থাকয় রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন।[৪][৫]


বিচারিক আদালতে বদলি মামলা[সম্পাদনা]

২০২১ সালের ৩ মার্চ বরকত ও রুবেলসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার উত্তম কুমার বিশ্বাস আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ওই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালত এ অভিযোগপত্র আমলে গ্রহণ করেন। এরপর গত ১ সেপ্টেম্বর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর জজ মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম এ মামলাটির অভিযোগ গঠন শুনানি থেকে পুনঃতদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। ২০২৩ সালের ২২ জুন আদালতে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করা হয়। ২০২৩ সালের ৫ জুলাই মামলাটির তারিখ ধার্য ছিলো। এদিন এ মামলায় দাখিলকৃত সম্পূরক চার্জশিট তথা অভিযোগপত্রের ওপর শুনানি গ্রহণ করেন ঢাকার ৯ নম্বর মহানগর হাকিম শেখ হাফিজুর রহমান। তিনি মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলি করেন।

মামলার মাস্টার মাইন্ড বাবর[সম্পাদনা]

হাইকোর্ট এ মামলায় গ্রেফকার খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবরকে মামলার মাস্টারমাইন্ড ও রিং লিডার বলে মন্তব্য করেছেন । হাইকোর্ট বলেন, এ মামলায় সংঘটিত অপরাধের মাস্টারমাইন্ড ও রিং লিডার মোহতেশাম। তিনি অন্য আসামিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছেন ও পরামর্শদাতা ছিলেন। তার কারণে সরকার ও দেশের মানুষের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। এ ধরনের আসামিদের জামিন দেব কেন? বাবরের জামিন আবেদনের শুনানিতে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দ সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ মন্তব্য করেন। ২০২২ সালের ১৪ জুন হাইকোর্টে বাবরের জামিন আবেদনের এ শুনানি হয়। এ শুনানিকালে হাইকোর্টে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। বাবরের জামি আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মিজানুর রহমান। বাবরের আইনজীবী বলেন, আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। তার চাঁদাবাজি করার কোনো দরকার নেই। তার শ্বশুর মন্ত্রী ছিলেন। পারিবারিকভাবে তারাও ধনী। তখন আদালত বলেন, যার আছে সেই তো করে। বাইরে ফিটফাট ভেতরে সদরঘাট। পরে আদালত তার আবেদন খারিজ করতে চাইলে ‘উত্থাপিত হয়নি’ মর্মে খারিজ করার আবেদন জানান বাবরের আইনজীবী। ২০২২ সালের ৭ মার্চ দিবাগত রাত ৩টার দিকে ঢাকা থেকে খোন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবরকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২৪ মার্চ ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক নজরুল ইসলামের আদালতে বাবরের জামিন আবেদন নামঞ্জুর হলে তিনি হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন।[৬]

দুই ভাইয়ের উপার্জন[সম্পাদনা]

মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১০ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ফরিদপুরের এলজিইডি, বিআরটিএ, সড়ক বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি বিভাগের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন সাজ্জাদ ও ইমতিয়াজ। এ ছাড়া মাদক ব্যবসা, ভূমি দখল করে অবৈধ সম্পদ করেছেন তাঁরা। এসি, নন-এসিসহ ২৩টি বাস, ড্রাম ট্রাক, বোল্ডার, পাজেরো গাড়ির মালিক হয়েছেন। এ অর্থের উল্লেখযোগ্য অংশ হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করেন তাঁরা। প্রথম জীবনে এ দুই ভাই রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে এক বিএনপি নেতার ফাইফরমাশ খাটতেন। তখন তাঁদের সম্পদ বলতে তেমন কিছুই ছিল না। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এ দুই ভাই অন্তত আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি সম্পদ অবৈধ উপায়ে উপার্জন করেছেন। এই অর্থ পাচার মামলায় দুই প্রধান অভিযুক্ত ব্যক্তি সাজ্জাদ হোসেন বরকত এবং তার ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেল। পুলিশ আদালতে দায়েরকৃত অভিযোগনামায় উল্লেখ করে যে, তাদেরকে ২০১৭ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে এলজিইডি ৪৭৫টি ঠিকাদারী কাজ প্রদান করা হয়। এ সবের মোট অর্থ মূল্য ৮১২ কোটি ২৬ লাখ টাকা। এছাড়া সমসময়ে দুই ভাইয়ের ৯টি ব্যাংকে খোলা ১৮৮টি হিসাবে ২ হাজার ৯১০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।[৭]} মামলায় এর আগে দুই সহোদরের ৫ হাজার ৭০৬ বিঘা জমি, ৫৫টি গাড়ি ক্রোক ও ১৮৮টি ব্যাংক হিসাবে থাকা ৯ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ফ্রিজের আদেশ দেন আদালত।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "বরকত-রুবেলের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার মামলায় অভিযোগপত্র"। ২৪ অক্টোবর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ অক্টোবর ২০২১ 
  2. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৫ জুলাই ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০২৩ 
  3. https://www.ittefaq.com.bd/226723/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%B0-%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%B2-%E0%A6%AC%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%A4%E0%A6%B8%E0%A6%B9-%E0%A7%A7%E0%A7%A6-%E0%A6%9C%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A7%E0%A7%87-%E0%A6%9A%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%9C%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%9F
  4. https://samakal.com/bangladesh/article/2306180267/%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%AC%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%A4-%E0%A6%85%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A5%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%9A%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%B2%E0%A6%BE-%E0%A6%A8%E0%A6%A4%E0%A7%81%E0%A6%A8-%E0%A7%A9%E0%A7%AD-%E0%A6%86%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%BF-%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BE
  5. https://www.dailynayadiganta.com/first-page/758263/%E0%A6%AC%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%A4-%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%B8%E0%A6%B9-%E0%A7%AA%E0%A7%AD-%E0%A6%9C%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A7%E0%A7%87-%E0%A6%9A%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%9C%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%9F
  6. https://www.bssnews.net/bangla/national/46148</
  7. একটি মামলা পাল্টে দিল সব