জোহর বাহরু

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জোহর বাহরু

জোহর বাহরু ( মালয়েশীয় উচ্চারণ: [ˈdʒohor ˈbahru] ), মালয়েশিয়ার জোহর রাজ্যের রাজধানী, যা পূর্বে তনজুং পুতেরি বা ইস্কান্দার পুতেরি নামে পরিচিত ছিল। এটি মালয়েশিয়া উপদ্বীপের দক্ষিণ প্রান্তে জোহর স্ট্রেটস বরাবর অবস্থিত। জোহর বাহরুর জনসংখ্যা হল ৪৯৭,০৯৭ জন এবং ১,৬৩৮,২৯৯ জন জনসংখ্যা নিয়ে এর মেট্রোপলিটন অঞ্চলটি দেশের তৃতীয় বৃহত্তম শহর।[১][২]

জোহর বাহরু ১৮৩৫ সালে ইস্কান্দার পুয়েত্রি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যখন জোহরের সুলতান তেমেনগং দায়েং ইব্রাহিমের অধীনে আসে। ১৮৬২ সালে যখন সুলতানি প্রশাসনের কেন্দ্রটি তেলোক ব্লানগাহ থেকে এখানে সরিয়ে আনা হয়, তখন এই অঞ্চলটির নামকরণ করা হয় "জোহর বাহরু" এবং সুলতানিয়ার রাজধানী হয়ে ওঠে।[৩]

সুলতান আবু বকরের রাজত্বকালে শহরের অভ্যন্তরের প্রশাসনিক ভবন, স্কুল, ধর্মীয় ভবন এবং সিঙ্গাপুরের সাথে সংযোগকারী রেলপথ নির্মাণ সহ ব্যাপক উন্নয়ন ও আধুনিকীকরণ ঘটেছিল। জোহরা বাহরু ১৯৪২ থেকে ১৯৪৫ পর্যন্ত জাপানী বাহিনী দ্বারা দখল ছিল। যুদ্ধের পরে জোহর বাহরু মালয় জাতীয়তাবাদের জন্ম হয় এবং ১৯৪৪ সালে ইউনাইটেড মালয় ন্যাশনাল অরগানইজেশন (ইউএমএনও) নামে একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬৩ সালে মালয়েশিয়া গঠনের পরে জোহর বাহরু রাজ্যের রাজধানী হিসাবে তার অবস্থান ধরে রেখেছিল এবং ১৯৯৪ সালে নগরীর মর্যাদা লাভ করেছিলেন।

ভূগোল[সম্পাদনা]

জোহর বাহরু মালয়েশিয়া উপদ্বীপের দক্ষিণ প্রান্তে জোহর প্রণালী বরাবর অবস্থিত।[৪] ১৯৩৩ সালের পূর্বে মূলত শহর অঞ্চলটি ছিল মাত্র ১২.১২ কিমি (৪.৬৮ মা), ২০০০ সালে ২২০ কিমি (৮৫ মা) উপরে প্রসারিত হয়েছিল।[৫]

জনসংখ্যার উপাত্ত[সম্পাদনা]

জোহর বাহরুতে বসবাসকারী মানুষদের সাধারণত অফিসিয়ালি ভাবে "জোহর বাহরুয়ানস" হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

জাতি ও ধর্ম[সম্পাদনা]

২০১০ সালের মালয়েশিয়ার আদমশুমারি অনুসারে জোহর বাহরুর জনসংখ্যা ৪৯৭,০৬৭ জন। নগরীর জনসংখ্যা আজ তিনটি প্রধান জাতিগোষ্ঠীর সংমিশ্রণ - মালয়েশিয়া, চীনা এবং ভারতীয় - অন্যান্য বুমিপুত্রের সাথে । মালয়রা সংখ্যাগরিষ্ঠ, যার সংখ্যা ২৪০,৩৩৩ জন, চীন রয়েছে মোট ১৭২,৬০৯ জন, ভারতীয় মোট ৭৩,৩১৯ জন এবং অন্যান্য ২,৯৫৭ জন। নন-মালয়েশীয় নাগরিক রয়েছে ২,৫৮৫ জন। জোহর মালয়েশিয়ার প্রতিবেশী রিয়াউ মালয়ের সাথে দৃঢ়ভাবে সম্পর্কিত।[৬][৭] চীনারা মূলত সংখ্যাগরিষ্ঠ তেওচো, হোক্লো, হেনানিজ ও হাক্কা উপগোষ্ঠী থেকে[৮], ভারতীয় সম্প্রদায় মূলত এবং প্রধানত তামিল হয়। এখানে মালেয়ালিস, তেলুগাস এবং শিখ পাঞ্জাবীদের সংখ্যাও কিছু রয়েছে। মালয়েশিয়ানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান, যদিও চীনারা মূলত বৌদ্ধ এবং ভারতীয়রা বেশিরভাগ হিন্দু। তবে খ্রিস্টান ও মুসলমান এই দুই গ্রুপের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য পরিমানে রয়েছে। অল্প সংখ্যক শিখ, বৌদ্ধ, অ্যানিমিস্ট এবং ধর্মনিরপেক্ষবাদীরাও শহরে পাওয়া যেতে পারে।

২০১০ মালয়েশিয়ার আদম শুমারি উপর ভিত্তি করে নিম্নলিখিত পরিসংখ্যান পাওয়া যায়।

ভাষাসমূহ[সম্পাদনা]

স্থানীয় জাতিগত মালয়েশিয়ানরা মালয় ভাষায় কথা বলে,[৬] যেখানে স্থানীয় চীনা ভাষার যে ভাষায় কথা হয় তা ম্যান্ডারিন চাইনিজ। চীনা সম্প্রদায়টি বেশ কয়েকটি উপভাষা গোষ্ঠী দ্বারা প্রতিনিধিত্ব করে: তেওচে, হেনানিজ, হাক্কা এবং হক্কিয়ান [৯][১০] ভারতীয় সম্প্রদায় প্রধানত কথা বলে তামিল, সংখ্যালঘুরা মালায়ালম, তেলুগু এবং পাঞ্জাবি ভাষাভাষী। ব্রিটিশ শাসনকালে স্কুলে পড়াশুনা করা প্রবীণ প্রজন্মের মধ্যেও ইংরেজি ভাষা (বা মঙ্গলিশ ) যথেষ্ট ব্যবহৃত হয়।[১১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Biggest Cities In Malaysia"। World Atlas। ২৫ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০১৬ 
  2. "JB can be Malaysia's second-biggest city: Johor Sultan"The Star/Asia News NetworkThe Straits Times। ২৪ মার্চ ২০১৬। ২৫ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০১৬ 
  3. "Background of Johor Bahru City Council and History of Johor Bahru" (পিডিএফ)। Malaysian Digital Repository। ১২ মার্চ ২০১৩। ২৭ জুন ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুন ২০১৫ 
  4. Eric Wolanski (১৮ জানুয়ারি ২০০৬)। The Environment in Asia Pacific Harbours। Springer Science & Business Media। পৃষ্ঠা 349–। আইএসবিএন 978-1-4020-3654-5 
  5. "Background (Total Area)"Johor Bahru City Council। ২২ আগস্ট ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ আগস্ট ২০১৫ 
  6. Susanna Cumming (৯ আগস্ট ২০১১)। Functional Change: The Case of Malay Constituent Order। Walter de Gruyter। পৃষ্ঠা 14–। আইএসবিএন 978-3-11-086454-0 
  7. Peter Borschberg (২০১৬)। "Singapore and its Straits, c.1500–1800"। Taylor & Francis: 373–390। ডিওআই:10.1080/13639811.2017.1340493 
  8. "Keeping the art of Teochew opera alive"New Straits TimesAsiaOne। ২৪ জুলাই ২০১০। ২৪ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুলাই ২০১৫ 
  9. Patricia Pui Huen Lim; Diana Wong (১ জানুয়ারি ২০০০)। War and Memory in Malaysia and Singapore। Institute of Southeast Asian Studies। পৃষ্ঠা 140–145। আইএসবিএন 978-981-230-037-9 
  10. Robbie B.H. Goh (১ মার্চ ২০০৫)। Contours of Culture: Space and Social Difference in Singapore। Hong Kong University Press। পৃষ্ঠা 3–। আইএসবিএন 978-962-209-731-5 
  11. "Johor Sultan: English in danger of becoming older people's language"The Malay Mail। ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫। ২৮ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মার্চ ২০১৬