গোয়াংজু

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

গোয়াংজু (কোরীয় উচ্চারণ: [kwaŋ.dʑu]) দক্ষিণ কোরিয়ার ষষ্ঠ বৃহত্তম শহর। এটি সরকারের তত্ত্বাবধানে থাকা একটি মেট্রোপলিটন শহর। ২০০৫ সালে মুয়ান অঞ্চলের নামাকে দক্ষিণ জল্লার প্রাদেশিক অফিস স্থানান্তরের আগ পর্যন্ত এই শহরটিই দক্ষিণ জল্লা প্রদেশের রাজধানী ছিল। 

গোয়াং (광, চৈনিক অক্ষর: 光) অর্থ "আলো" এবং জু  (주, চৈনিক অক্ষর: 州) অর্থ "প্রদেশ"। কৃষিপ্রধান জল্লা প্রদেশের কেন্দ্রে গোয়াংজু শহর, যা নিজস্ব বিচিত্র ধরনের রান্নার জন্য বিখ্যাত। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

পাহাড়চূড়া থেকে গোয়াংজু শহর

ইতিহাস[সম্পাদনা]

খ্রিস্টপূর্ব ৫৭ সালে গোয়াংজু শহরে পত্তন হয়। তৃ-সাম্রাজ্য সময়কালে, এটি বেকজের অন্যতম একটি প্রশাসনিক কেন্দ্র ছিল।[১]

১৯২৯ সালে জাপানীদের শাসনকালে, কোরিয়ান ও জাপানী শিক্ষার্থীরা এখানে আঞ্চলিক বিক্ষোভের সূচনা করে যা পরবর্তীতে সমগ্র দেশ জুড়ে জাপানবিরোধী আন্দোলন গড়ে উঠতে ভূমিকা রাখে।

১৯৮০ সালের মে মাসে, সামরিক বাহিনীর প্রধান চুন দু-হোয়ান এর বিরুদ্ধে একটি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সংগঠিত হয়। যা সামরিকবাহিনী দ্বারা দমন করারর প্রয়াস চালানো হয় এবং পরবর্তীতে সহিংস ঘটনার জন্ম দেয় যা গোয়াংজু গণঅভ্যুত্থানের জন্ম দেয়। বিপুল সংখ্যক সাধারণ জনতা এবং কিছু সংখ্যক পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর সদস্য নিহত হয়।[২]

১৯৮৬ সালে, গোয়াংজু জল্লানাম-দো থেকে আলাদা হয়ে যায় এবং ১৯৯৫ সালে মেট্রোপলিটন শহর হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।[৩]

প্রশাসনিক অঞ্চল[সম্পাদনা]

গোয়াংজু পাঁচটি অঞ্চলে বিভক্ত।

মানচিত্র নাম কোরীয় হাঞ্জা

অঞ্চল
বুক অঞ্চল 북구 北區
দোং অঞ্চল 동구 東區
গোয়াংসান অঞ্চল 광산구 光山區
নাম অঞ্চল 남구 南區
সঅ অঞ্চল 서구 西區

শিক্ষা[সম্পাদনা]

চন্নাম জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, গোয়াংজু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইনস্টিটিউট, গোয়াংজু শিক্ষা বিশ্ববিদ্যালয় গোয়াংজু শহরের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়

চন্নাম ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বংজি ঝর্ণার সম্মুখভাগ

গোয়াংজু ৫৯৩ টি বিদ্যালয় রয়েছে। এর মাঝে আছে  ২৩৪টি কিন্ডারগার্টেন, ১৪৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৮৪টি মাধ্যমিক স্কুল ও ৬৫টি উচ্চ বিদ্যালয়। এছাড়াও একটি বিজ্ঞান উচ্চ বিদ্যালয়, ৭টি জুনিয়র কলেজ, ৯টি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তালিকায় (পহেলা মে,২০০৯) রয়েছে।  সমগ্র শহরের ২৮.৫% জনগোষ্ঠী শিক্ষার্থী। 

জনসংখ্যা ও ধর্ম[সম্পাদনা]

২০০৭ সালের সমীক্ষা অনুসারে, গোয়াংজু শহরের ৩০.২% জনুণ খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত। এর মাঝে ২১.৬% পোটেস্ট্যান্ট এবং ৮.৬% ক্যাথোলিক। মোট জনসংখ্যার ১৬.৭% বৌদ্ধ ধর্মে বিশ্বাসী। প্রায় ৫০.৯ শতাংশ জনগণ কোন ধর্মে বিশ্বাসী নয়। গোয়াংজু শহরের জনসংখ্যা নিচের তালিকায় লিপিবদ্ধ করা হয়েছে [৪]

বছর জনসংখ্যা
১৯৬০ ৪০৯,২৮৩
১৯৬৬ ৫৩২,২৩৫
১৯৭০ ৬২২,৭৫৫
১৯৭৫ ৭৩৭,২৮৩
১৯৮০ ৮৫৬,৫৪৫
১৯৮৫ ১,০৪২,৫০৮
১৯৯০ ১,১৩৯,০০৩
১৯৯৫ ১,২৫৭,৬৩৬
২০০০ ১,৩৫২,৭৯৭
২০০৫ ১,৪১৭,৭১৬
২০১০ ১,৪৭৫,৭৪৫

গোয়াংজুবাসীর ধর্ম (২০০৫)

  অধার্মিক (৫২.৯%)
  প্রটেস্ট্যান্ট (১৯.৭%)
  বৌদ্ধ (১৪.৪%)
  ক্যাথলিক (১৩%)

যোগাযোগ ব্যবস্থা[সম্পাদনা]

সমগ্র গোয়াংজু শহর গোয়াংজু সাবওয়ে দ্বারা ভ্রমণ করা সম্ভবব। ২০০৮ সালের এপ্রিলে সাবওয়ের পরিসর বাড়ানোর কাজ শুরু হয় যা ২০১২ পূর্ণতা পায়। গোয়াংজুতে দুইটি উচ্চগতিসম্পন্ন রেলগাড়ীগামী রেল স্টেশন আছে। এগুলো হলঃ গোয়াংজু স্টেশন এবং গোয়াংজু সোংজং স্টেশন। বর্তমানে সোংজং স্টেশনই বহুল ব্যবহৃত হয় কেননা এই স্টেশনের সাথে সাবওয়ে এবং স্থানীয় বাসের সরাসরি সংযোগ রয়েছে। গোয়াংজুতে অত্যাধুনিক পাবলিক বাসের ব্যস্থা রয়েছে যা শহরের ভিতরে চলাচল করে। [৫] স্থানীয় বাস ও বাসস্টপগুলোতে কোরিয়ান ও ইংরেজি উভয় ভাষায় তথ্য প্রদানের সেবা রয়েছে। স্থানীয় বাস শহরের বাইরেগামী ইন্টারসিটি বাসের রুটের সাথে যুক্ত হয় গোয়াংজু বাস টার্মিনালে যা ইউ-স্কয়ার নামেই বহুল পরিচিত।[৬]

নগদ টাকা ছাড়াও কিছু কোরিয় ব্যাংকের কার্ড, বাসকার্ড দিয়ে বাসভাড়া দেয়া যায়। হান-পে, টি-মানি এবং ক্যাশবি তিনটি কোম্পানী রিচার্জেবল বাসকার্ড বিক্রি করে, যা যেকোন কনভেনিয়েন্ট স্টোরে সহজেই রিচার্জ করা যায়। কার্ড ছাড়াও চাবির রিং আদলের এক্সেসরিজও এই কোম্পানীগুলো প্রস্তুত করে থাকে।[৭] নগদ টাকার পরিবর্তে কার্ড দিয়ে বাসভাড়া দেয়ায় ছোটখাটো ছাড় দেয়া হয়।[৭] এছাড়াও, ১৩ থেকে ১৮ বয়েসী এবং ৭ থেকে ১২ বয়েসী বাচ্চাদের জন্য বাস ভাড়ায় বিশেষ ছাড় দেয়া হয়।[৮]

দর্শনীয় স্থান[সম্পাদনা]

  • গোয়াংজু এশিয়া সাংস্কৃতিক কেন্দ্র
  • গোয়াংজু বিয়েনালে
  • গোয়াংজু জাতীয় জাদুঘর
  • মুদংসান জাতীয় উদ্যান [৯]
  • মুদং পর্বত
  • গোয়াংজু হ্রদ ইকোপার্ক [১০]

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক[সম্পাদনা]

টুইন টাউন- বন্ধু শহর[সম্পাদনা]

গোয়াংজু শহর নিম্নোক্ত শহরগুলোর সাথে সাংস্কৃতিক সম্পর্ক উন্নয়নে একে অপরকে সাহায্য করতে বদ্ধপরিকর [১১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

তথ্যাবলি[সম্পাদনা]

  1. "The History of Gwangju"। ৩০ জুন ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  2. "May 18th Democratic Uprising"। ৩০ জুন ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৭ 
  3. "The History of Gwangju"। ৩০ জুন ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৭ 
  4. National Statistical Office of South Korea
  5. "광주광역시 버스정보"bus.gjcity.net। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৭-২৯ 
  6. "U-Square (Gwangju Bus Terminal) (유스퀘어(광주종합버스터미널)) | Official Korea Tourism Organization"english.visitkorea.or.kr। ২০১৬-০৯-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৭-২৯ 
  7. "광주광역시 버스정보"bus.gjcity.net। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৭-২৯ 
  8. "광주광역시 버스정보"bus.gjcity.net। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৭-২৯ 
  9. visit Korea.com: Mudeungsan National Park
  10. ভিজিট কোরিয়া ডট কমঃ গোয়াংজু লেক ইকো পার্ক
  11. "Gwangju Sister Cities"। ৪ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৭ 
  12. Sister Cities Program. Sainternationalrelations.org. Retrieved on 2011-12-11.
  13. "Guangzhou Sister Cities[via WaybackMachine.com]"। Guangzhou Foreign Affairs Office। ২৪ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৭-২১ 
  14. http://www.pemkomedan.go.id/news_detail.php?id=106 MEDAN MENJALIN HUBUNGAN KOTA KEMBAR KEEMPAT Retrieved September 10, 2013 Archived 23 April 2007

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]