আফজাল তৌসিফ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আফজাল তৌসিফ
আফজাল তৌসিফ
জন্ম১৮ মে, ১৯৩৬
সিম্বলি, হোশিয়ারপুর, পূর্ব পাঞ্জাব
মৃত্যু৩০ ডিসেম্বর, ২০১৪
সমাধিকরিম ব্লক সিমেট্রি, ইকবাল টাউন, লাহোর
নাগরিকত্বপাকিস্তানি
শিক্ষাইংলিশ স্টাডিজ, এম এ
মাতৃশিক্ষায়তনওরিয়েন্টাল কলেজ, লাহোর গভর্নমেন্ট কলেজ, ইউনিভার্সিটি
পেশালেখিকা, কলামিস্ট
পুরস্কারপ্রাইড অব পারফরমেন্স (২০১০)

আফজাল তৌসিফ (মে ১৮, ১৯৩৬ - ডিসেম্বর ৩০, ২০১৪[১] ), একজন পাকিস্তানি পাঞ্জাবি ভাষার লেখক, কলামিস্ট এবং সাংবাদিক ছিলেন।[২][৩][৪]

তার জীবদ্দশায়, তিনি পাকিস্তানে সামরিক স্বৈরশাসনের সমালোচনা করেছিলেন এবং তাকে আটক করা হয়েছিল, পরে আইয়ুব খান এবং মুহাম্মদ জিয়া-উল-হকের মতো সেই সময়ের শাসকদের দ্বারা বহুবার বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। আফজাল পাঞ্জাবি এবং উর্দুতে ত্রিশটিরও বেশি বই লিখেছেন। ২০১০ সালে, তিনি তার সাহিত্যিক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ পাকিস্তান সরকার কর্তৃক প্রাইড অফ পারফরম্যান্স পুরস্কারে ভূষিত হন। তিনি পাকিস্তান পিপলস পার্টির সাথেও যুক্ত ছিলেন এবং পাঁচ বছর ধরে পাঞ্জাবি আদাবি বোর্ডের (পিএবি) ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আফজাল ‘দেখি তেরি দুনিয়া ’ নামে একটি বইও লিখেছেন।[১]

জীবনের প্রথমার্ধ[সম্পাদনা]

আফজাল ব্রিটিশ ভারতের হোশিয়ারপুরের সিম্বলি গ্রামে ১৮ মে, ১৯৩৬ সালে পূর্ব পাঞ্জাবে জন্মগ্রহণ করেন। ভারত বিভক্তির সময় তিনি তার পিতামাতার একমাত্র জীবিত সন্তান ছিলেন এবং তারপরে তিনি তার পিতার সাথে পাকিস্তানে চলে যান ।দেশটিকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র ঘোষণা করার পরে তাকে একজন পুলিশ অফিসার হিসাবে পোস্ট করা হয়েছিল। আফজাল প্রথমে বেলুচিস্তানে থেকে যান। তিনি কোয়েটার একটি সরকারী বালিকা বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিকুলেশন সহ তার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন এবং পরে পাঞ্জাব চলে যান যেখানে তিনি ওরিয়েন্টাল কলেজে পড়েন কিন্তু অজ্ঞাত কারণে মাঝপথেই কলেজ ছাড়েন। আফজাল তখন লাহোরের সরকারি কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। উচ্চ শিক্ষা সমাপ্ত করার পর, তিনি তখন ইউনিভার্সিটি অফ হোম ইকোনমিকসে (পূর্বে একটি কলেজ) শিক্ষক হিসাবে নিযুক্ত হন। পরবর্তীকালে, তিনি অবসর গ্রহণের আগ পর্যন্ত কলেজ অফ এডুকেশনে ইংরেজি পড়ান।[১]

সাহিত্যিক জীবন[সম্পাদনা]

আফজাল বই এবং সম্পাদকীয় কলাম লেখার সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। তার জীবদ্দশায়, তিনি সংবাদপত্রের জন্য লিখতেন এবং রাজনীতি, সামাজিক সমস্যা এবং শিল্প ও ভাষার মতো বিভিন্ন বিষয়ে ত্রিশটি বই প্রকাশ করেছিলেন।[৫]

তার বিশিষ্ট বইয়ের মধ্যে রয়েছেঃ

  • পাঞ্জাব কে'দা না পাঞ্জাব (পাঞ্জাব কী)[৬]
  • তাহলি মেরে বাছরে (আমার শিশুরা, হে শীশম গাছ)
  • পাঞ্জীবান ঘণ্টা (২৫তম ঘণ্টা)[৬]
  • ভেইলায় দে পিছে পিছে (অতীতের অনুসরণ)
  • আম্মান ভাইলায় মিলান গে (শান্তির সময়ে দেখা হবে)[৬]
  • Lahu BhijjiaN BatkhaaN (রক্তের-জবজবে হাঁস)[৬] – তার এই বই বর্ণনা করে ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের সময় তার বাড়িতে রক্তে ভেজা মেঝেয় তার হাঁসগুলোর স্খলনের কথা[৬]

তার কিছু বই পরে গুরুমুখী ভাষায় অনুবাদ করা হয় এবং ভারতে প্রকাশিত হয়। তিনি বাংলাদেশ এবং বেলুচ পতনের উপর একটি বই লিখেছেন, এর ফলে তিনি সামরিক বিচার এবং আটকের মুখোমুখি হয়েছেন।[৬] তার বইগুলোর মধ্যে মাই বিলাভড ট্রীস, মাই চিলড্রেন ছিল দেশভাগ নিয়ে।[৭] আফজালের মূল বিষয় ছিল প্রগতিশীল লেখা।[৮]

পুরস্কার এবং স্বীকৃতি[সম্পাদনা]

জীবদ্দশায় আফজাল তৌসিফ তার সাহিত্যকর্মের জন্য অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছিলেন:

মৃত্যু[সম্পাদনা]

তার মৃত্যুর একদিন আগে তিনি স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগেন এবং এর ফলে তাকে আলশাফি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয় । পরের দিন, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৪ সালে, তিনি পাকিস্তানের লাহোরে মারা যান। তাকে ইকবাল টাউনের করিম ব্লক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় পাঞ্জাবি আদাবি বোর্ডের সদস্যরা এবং লেখক কানওয়াল ফিরোজ, পারভীন মালিক, বাবা নাজমি এবং সাংবাদিক সহ পাকিস্তান একাডেমি অফ লেটারের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।[১]

ভারতের একজন সহ-প্রগতিশীল লেখক, অমৃতা প্রীতম তার সম্পর্কে হিন্দি ভাষায় দুসরে আদম কি বেটি নামে একটি বই সংকলন করেছিলেন এবং তাকে "সুচি ধী পাঞ্জাব দি" (পাঞ্জাবের সত্যিকারের কন্যা) বলে উল্লেখ করেন তার লড়াই করা যুদ্ধের জন্য যখন তিনি বিশ্বাসঘাতকার মুখোমুখি হয়েছেন কিন্তু কখনো আত্মসমর্পণ করেননি।[৬]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Ahmed, Shoaib (৩১ ডিসেম্বর ২০১৪)। "Luminary Afzal Tauseef is no more"Dawn (newspaper)। সংগ্রহের তারিখ ২৮ এপ্রিল ২০২০ 
  2. Virdee, Pippa (১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮)। From the Ashes of 1947। Cambridge University Press। আইএসবিএন 9781108428118 – Google Books-এর মাধ্যমে। 
  3. Jacobsen, Knut A. (১১ আগস্ট ২০১৫)। Routledge Handbook of Contemporary India। Routledge। আইএসবিএন 9781317403579 – Google Books-এর মাধ্যমে। 
  4. "Crossed Swords launch attracts scholarly circles"The Nation (newspaper)। ৫ আগস্ট ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ২৮ এপ্রিল ২০২০ 
  5. "Literate, NOS, The News International"jang.com.pk 
  6. Mahmood Awan (১১ জানুয়ারি ২০১৫)। "True daughter of the Punjab (profile of Afzal Tauseef)"The News International (newspaper)। সংগ্রহের তারিখ ২৮ এপ্রিল ২০২০ 
  7. Singh, Paramjeet (৭ এপ্রিল ২০১৮)। Legacies of the Homeland: 100 Must Read Books by Punjabi Authors। Notion Press। আইএসবিএন 9781642494242 – Google Books-এর মাধ্যমে। 
  8. "Bhagat Singh: Martyr of Lahore | India News - Times of India"The Times of India 
  9. "The Tribune, Chandigarh, India - Jalandhar"www.tribuneindia.com 
  10. "Interview: Afzal Tauseef"। নভেম্বর ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২৭ এপ্রিল ২০২০ 
  11. "Pride of Performance, Tamgha-e-Imtiaz, Sitara-e-Imtiaz awards conferred"Business Recorder (newspaper)। ২৪ মার্চ ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ২৭ এপ্রিল ২০২০