আন্তর্জাতিক সহায়ক ভাষা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

আন্তর্জাতিক সহায়ক ভাষা (ইংরেজি: international auxiliary language [ক] বা auxlang বা IAL) হচ্ছে এমন একটি ভাষা যা বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ভাষাভাষির মানুষ, যাদের প্রথম ভাষা বা মাতৃভাষা ভিন্ন, তাদের মধ্যে যোগাযোগের সুবিধার জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে। একটি সহায়ক ভাষা প্রধাণত দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে ব্যবহার হয়।

বহু শতাব্দী ধরে প্রভাবশালী সমাজের ভাষাসমূহ আন্তর্জাতিক সহায়ক ভাষা হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে এসেছে, কখনও কখনও আন্তর্জাতিক পর্যায়েও সেগুলির ব্যবহার পৌঁছেছে। অতীতে লাতিন, গ্রীক এবং ভূমধ্যসাগরীয় মিশ্র ভাষাকে আন্তর্জাতিক সহায়ক ভাষা হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে। ইদানিংকালে আরবি, ইংরাজি, ফরাসি, রুশ, স্পেনীয় এবং প্রমিত চীনা ভাষাগুলিও এই মর্মে ব্যবহার হয়ে এসেছে।[১] এই সমস্ত ভাষাগুলি সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আধিপত্যের কারণে জনপ্রিয়তা অর্জন করলেও একই কারণে বিরোধিতার সম্মুখিন হতে হয়েছে। এই কারণে, সম্ভাব্য সমাধান হিসাবে কেউ কেউ কৃত্রিম বা নির্মিত ভাষা প্রচারের ব্রতি হয়েছেন।

এই ভাষা যে অঞ্চলে ব্যবহার হয় সেই অঞ্চলের প্রথম ভাষাগুলিকে প্রতিস্থাপন না করে একটি অতিরিক্ত ভাষা হিসাবে ব্যবহৃত হয় বলে "সহায়ক" শব্দটি ব্যবহার হয়। প্রায়শই, শব্দটি আন্তর্জাতিক যোগাযোগকে সহজতর করার জন্য প্রস্তাবিত পরিকল্পিত বা নির্মিত ভাষাগুলিকে নির্দেশ করে। এইরকম ভাষার উদাহরণ হল এসপেরান্তো, ইদো এবং ইন্টারলিঙ্গুয়া। আবার এটি এমন একটি ভাষাকেও বোঝায় যা আন্তর্জাতিক ঐক্যমত্য দ্বারা নির্ধারিত হয়েছে। এই ধারণার মধ্যে প্রমিত প্রাকৃতিক বা স্বভাবিক ভাষাকেও (যেমন আন্তর্জাতিক ইংরেজি) অন্তর্ভুক্ত করা হয়ে থাকে। আবার এটি একটি সার্বজনীন ভাষা নির্মাণ প্রকল্পের সঙ্গেও সংযুক্ত করা হয়ে থাকে।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

ভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের মধ্যে একটি মধ্যবর্তী সহায়ক ভাষার ব্যবহার, বিশেষ করে যখন সেই ভাষাটি তাদের তৃতীয় ভাষা,[২] ভাষার জন্মলগ্ন থেকেই হয়ে আসছে। লাতিন এবং গ্রীক ভাষা ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের মধ্যবর্তী ভাষা হিসাবে ব্যবহৃত হত। একইভাবে আক্কাদীয় ভাষা এবং আরামায়িক ভাষা পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলিতে বিভিন্ন সাম্রাজ্যে মধ্যবর্তী ভাষা ছিল।[৩] এই ধরনের অকৃত্রিম বা স্বাভাবিক ভাষাকে লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা বলা হয়।

আন্তর্জাতিক মিশ্র ভাষা[সম্পাদনা]

মানব ইতিহাসে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে মিশ্র ভাষা কখনও বাণিজ্যিক, কূটনৈতিক বা প্রশাসনিক উপযোগিতার জন্য, আবার কখনও বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানী এবং অন্যান্য পণ্ডিতদের মধ্যে তথ্য বিনিময়ের উপায় হিসাবে গড়ে উঠেছে। "Lingua Franca" শব্দটি এরকমই এক মিশ্র ভাষা থেকে এসেছে, ভূমধ্যসাগরীয় মিশ্র ভাষা বা "Mediterranean Lingua Franca"। এটি একটি পিজিন ভাষা, যা ১১শ শতক থেকে ১৯শ শতকের মধ্যে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে বাণিজ্যিক ভাষা হিসাবে ব্যবহার হত। ২১শ শতকে ইংরেজি, আরবি, চীনা, ফরাসি, গ্রীক, রুশ এবং স্পেনীয় ভাষা সহায়ক ভাষা হিসাবে ব্যবহার হয়।[৪]

কৃত্রিম ভাষা নির্মাণ[সম্পাদনা]

সব প্রাকৃতিক ভাষাই ব্যাকরণের দিক থেকে অনেক অনিয়ম প্রদর্শন করে। এই কারণে প্রাকৃতিক ভাষা শেখা অনেকের পক্ষে কঠিন হয়ে ওঠে। এছাড়াও এই সমস্ত ভাষা কোন এক জাতির জাতীয় ও সাংস্কৃতিক আধিপত্যের সাথেও যুক্ত থাকে। এই কারণেই কৃত্রিম বা নির্মিত ভাষা নির্মাণের দিকে মনোযোগ দেওয়া শুরু হয়। বিদ্যমান ভাষার সরলীকরণ করার ধারণাটি অষ্টাদশ শতাব্দীতেই "অঁসিক্লোপেদি" (ফরাসি: Encyclopédie) গ্রন্থে জোয়াকিম ফিগে দ্য ভিলেনভে তার "লঁঙ্গ নুভেল" (ফরাসি: Langue nouvelle) নিবন্ধে[৫] ফরাসির নিয়মিত ব্যাকরণের একটি সংক্ষিপ্ত প্রস্তাবনার মাধ্যমে দিয়েছিলেন। তবে কৃত্রিম সার্বজনীন ভাষার কথা প্রথম চিন্তা করেছিলেন দার্শনিক দেকার্তে (Descartes) খ্রীস্টীয় সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে।[৬]

সপ্তদশ-অষ্টাদশ শতাব্দীর কিছু দার্শনিক ভাষা প্রোটো-সহায়ক ভাষা হিসাবে বিবেচিত হতে পারে, কারণ এই সমস্ত ভাষার সৃষ্টিকর্তাদের লক্ষ্য ছিল এই সমস্ত ভাষাগুলি বিভিন্ন ভাষার মানুষের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসাবে কাজ করবে এবং পাশাপাশি চিন্তাভাবনার দুর্বোধ্যতাকে সরিয়ে ফেলবে। কিন্তু এই সমস্ত ভাষা সংক্রান্ত প্রকাশিত লেখা দেখে বলা যেতে পারে অধিকাংশই অসম্পূর্ণ এবং কোন রকম ব্যবহারিক উদ্দেশ্যে উন্নিত হবে না। প্রথম সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুতকৃত সহায়ক ভাষাগুলি উনবিংশ শতাব্দীতে দেখেতে পাওয়া যায়। এর মধ্যে ফ্রাঁসোয়া স্যুদার (১৭৮৭-১৮৬২) সঙ্গীতের সুরের ভিত্তিতে তৈরি সোলরেসোল ভাষাটি প্রথম ব্যপক প্রচার পেয়েছিল, কিন্তু এই ভাষায় কেউ তেমন বাকপটুতা পায়নি।

ভোলাপ্যুক[সম্পাদনা]

উনবিংশ শতাব্দীতে প্রচুর আন্তর্জাতিক সহায়ক ভাষার প্রস্তাব উত্থাপিত করা, এবং এই বিষয়ে লুই কুতুরা এবং লেওপোল্ড লো তাদের "Histoire de la langue universelle" (১৯০৩) (সার্বজনীন ভাষার ইতিহাস) বইয়ে ৩৮টি ভাষা প্রকল্পের পর্যালোচনা করেন।

১৮৭৯ খ্রিষ্টাব্দে য়োহান মারটিন শ্লেয়ের প্রথম একটি নিবন্ধে ভোলাপ্যুক সম্বন্ধে আলোচনা করেন। পরের বছর সেটি একটি বই আকারে প্রকাশিত হয় এবং এরপর এটি প্রথম ভাষা হিসাবে আন্তর্জাতিক স্তরে বক্তা সম্প্রদায় লাভ করে। ১৮৮৪, ১৮৮৭ এবং ১৮৮৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনটি ভোলাপ্যুক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়, যার মধ্যে শেষ সম্মেলনটিতে অংশগ্রহণকারীরা ভোলাপ্যুকে বক্তব্য পেশ করেন। এই সম্মেলনটি প্যারিসে অনুষ্ঠিত হয় এবং এখানে প্রায় দু'শ মানুষ অংশগ্রহণ করেন।[৭]

প্রথম সফল কৃত্রিম ভাষা সম্প্রদায়ের চাহিদার উত্তরে সাড়া দিয়ে ভোলাপ্যুকিওরা ১৮৮৭ খ্রিষ্টাব্দে মিউনিখের দ্বিতীয় ভোলাপ্যুক কংগ্রেসে তাদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আন্তর্জাতিক ভোলাপ্যুক একাডেমীর (Kadem bevünetik volapüka) প্রতিষ্ঠা করেন।[৮][৯] একাডেমিটি প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল ভোলাপ্যুককে সংরক্ষিত আর সুসঙ্গঠিত করার জন্য। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই রক্ষণশীল এবং সংস্কারক ভোলাপ্যুকিওদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাজে। সংস্কারকরা চেয়েছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন ভাষার ব্যাকরণ এবং শব্দভান্ডারের ভিত্তিতে ভোলাপ্যুককে আরো বেশি স্বাভাবিক ভাষার মত করতে। শ্লেয়ের নিজে ১৮৯০ এই একাডেমি ছেড়ে বেড়িয়ে আসেন এবং নতুন ভোলাপ্যুক একাডেমির প্রতিষ্ঠা করেন, যেটি এখনও বর্তমান।

"আকাদেমিয়া প্রো ইন্তেরলিঙ্গুয়া"[সম্পাদনা]

১৮৯২ খ্রিষ্টাব্দে ভ্লাদিমির কার্লোভিচ রোজেনবের্গের মূল ভোলাপ্যুক একাডেমির পরিচালক হন। এরপর থেকে ভোলাপ্যুকের ব্যাকরণ এবং শব্দভান্ডারে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয় এবং এমন সমস্ত ব্যাকরণগত দিককে সরিয়ে ফেলা হয় যেগুলি পশ্চিম ইউরোপীয়দের কাছে অচেনা। এর ফলে সৃষ্টি হয় একটি নতুন ভাষার, যার নাম রাখা হয়েছিল "ইদিয়ম নেউত্রাল"। ১৮৯৮ খ্রিষ্টাব্দে একাডেমির নাম পালটে রাখা হয় "আকাদেমি ইন্তের্নাসিওনাল দে লিঙ্গু উনিভেরসাল" এবং সেই বছর থেকেই আকাদেমির সমস্ত বিজ্ঞপ্তি নতুন ভাষায় লেখা শুরু হয়।

১৯০৩ খ্রিষ্টাব্দে গণিতজ্ঞ জুসেপে পেয়ানো, দার্শনিক গট্‌ফ্রীট ফিলহেল্ম লাইবনিৎসের ভাবধারা দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে ভাষা নির্মানের এক নতুন সুত্র প্রকাশিত করেন। এক্ষেত্রে ভাষা নির্মানের নতুন পরিকল্পিত কাঠামো উদ্ভাবন না করে তিনি একটি স্বাভাবিক ভাষা লাতিনের সরলিকরণ করেন। এই সরলীকৃত লাতিনের নাম দেন "পেয়ানো'র ইন্তের্লিঙ্গুয়া", কিন্তু এটি "লাতিনো সিনে ইনফ্লেক্সিওন" নামে বেশি পরিচিত।

পেয়ানো'র ইন্তের্লিঙ্গুয়ায় প্রভাবিত হয়ে "আকাদেমি ইন্তের্নাসিওনাল দে লিঙ্গু উনিভেরসাল" ইদিয়ম নেউত্রালকে পরিত্যাগ করে পেয়ানো'র ইন্তার্লিঙ্গুয়াকে বেছে নেয় এবং পেয়ানোকে আধিকারিক হিসাবে নির্বাচিত করে। এরপর এই একাডেমির নামটি পরিবর্তিত করে রাখা হয় "আকাদেমিয়া প্রো ইন্তেরলিঙ্গুয়া"। এই একাডেমির অস্তিত্ব ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দ অবধি ছিল। প্রসঙ্গত, পেয়ানো'র ইন্তের্লিঙ্গুয়া ১৯৫১ খৃষ্টাবে আন্তর্জাতিক সহায়ক ভাষা সংস্থা দ্বারা উপস্থাপিত ইন্তের্লিঙ্গুয়াকে আংশিকভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল।

এসপেরান্তো[সম্পাদনা]

ভোলাপ্যুকের উত্থানের পর, ১৮৮০-১৯০০ সালের মধ্যে বিভিন্ন সহায়ক ভাষা তৈরি ও প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু এসপেরান্তো ছাড়া আর কোন ভাষাই তেমন পরিমানে বক্তা সম্প্রদায় একত্রিত করতে পারেনি। ১৮৭৩ থেকে ১৮৮৭ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে লুডউইক লাজার জামেনহফ এসপেরান্তোর খসড়া তৈরি করেন এবং ১৮৮৭ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত করেন। ভাষাটি প্রধানত একটি বিন্যাসিত বা পরিকল্পিত ভাষা, এবং ভাষাটির শব্দ প্রত্যয়গুলি রোমান্স, পশ্চিম জার্মানীয় এবং স্লাভিক ভাষাসমূহ থেকে নেওয়া হয়েছে। এসপেরান্তোর আপেক্ষিক সাফল্যের কারণ খুব সম্ভবত এর অত্যন্ত উত্পাদনশীল এবং নমনীয় শব্দ গঠন প্রক্রিয়া যার ফলে একজন বক্তা একটি শব্দ প্রত্যয় থেকেই শতাধিক শব্দ তৈরি করতে পারেন। শুরু থেকেই এসপেরান্তো ব্যবহারকারীরা নিজেদের এক আলাদা সংস্কৃতি তৈরি করেছেন, আর এর ফলস্বরুপ এসপেরান্তো ভাষা সম্প্রদায় সৃষ্টি হয়েছে।

কয়েক বছরের মধ্যেই এই ভাষায় অনর্গল কথা বলতে পারে এমন বক্তার সংখ্যা কয়েক হাজার ছাড়িয়ে যায়, এর মধ্যে বেশিরভাগই পূর্ব ইউরোপে। ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম বিশ্ব সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় বুলঞঁ-সুর-মেরে। তারপর থেকে দুটি বিশ্বযুদ্ধের সময় ছাড়া প্রত্যেক বছর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এই সম্মেলন হয়ে এসেছে। নির্মিত ভাষার দিক থেকে এসপেরান্তো "অদ্ভুতভাবে সফল" এবং সব থেকে বেশি ব্যবহৃত আন্তর্জাতিক সহায়ক ভাষা।[১০] এসপেরান্তো খুব সম্ভবত পৃথিবীর প্রথম পঞ্চাশ বহুল ব্যবহৃত ভাষার মধ্যে একটি।[১১]

১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে ইরান এবং জাতিসংঘের আরও বেশ কিছু দেশের স্কুলে এসপেরান্তো শেখানোর প্রস্তাব ব্যর্থ হয়।[১২][১৩] স্তালিনের শাসনকালে এসপেরান্তো ভাষার বক্তাদের নির্যাতনের সম্মুখিন হতে হয়েছিল। হিটলারের জার্মানিতে, ফ্রাঙ্কোর সময় স্পেনে, সালাজারের সময় পর্তুগালে, চাউশেস্কুর রোমানিয়ায় এবং পূর্ব ইউরোপের আরও ৬টির মত দেশে বিভিন্ন সময় এসপেরান্তো ক্রিয়াকলাপ এবং এসপেরান্তো সংগঠন করা নিষিদ্ধ ছিল।[১৪] এই সমস্ত কঠিনতা সত্ত্বেও আরও সংখ্যক মানুষ এসপেরান্তো শেখা থেকে বিরত থাকেনি এবং দুই বিশ্বযুদ্ধের মধ্যেকার সময় এবং তার পরেও এসপেরান্তো ভাষায় গুরুত্বপূর্ণ কবিতা এবং উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছিল।[১৫] বর্তমানে এসপেরান্তোর ব্যবহার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ছে, যদিও তা মূলত দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে। চিনে এসপেরান্তো ভাষায় দৈনিক সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়।[১৬]

ইদো এবং এসপেরান্তো-জাত ভাষা[সম্পাদনা]

আন্তর্জাতিক একাডেমি সঙ্ঘকে আন্তর্জাতিক সহায়ক ভাষা নিয়ে প্রশ্ন করা, বিদ্যমান ভাষাগুলিকে নিয়ে অধ্যয়ন করা এবং নতুন ভাষা নির্মান করার উদ্দেশ্যে ১৯০০ খ্রিষ্টাব্দে লুই কুতুরা এবং অন্যান্যরা আন্তর্জাতিক সহায়ক ভাষা গ্রহণ প্রতিনিধিদল প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু এই সঙ্ঘ এই ব্যপারে গুরুত্ব না দেওয়ায় প্রতিনিধিদলটি নিজেই কাজটি করার কথা ঠিক করলেন।[১৭] এসপেরান্তো বক্তাদের মধ্যে বদ্ধমূল ধারণা ছিল যে প্রতিনিধিদলটি তাদের ভাষাকেই বেছে নেবে। কিন্তু তা না ঘটায় ১৯০৭ খ্রিষ্টাব্দে এসপেরান্তো সম্প্রদায় এসপেরান্তোর একটি সংশোধিত রূপ প্রকাশ করে এবং সেই ভাষার নাম দেয় ইদো।[১৮] অল্প সময়ের মধ্যেই ইদো অনেক এসপেরান্তো বক্তাকে নিজের দিকে টেনে নেয়। কিন্তু তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি, আস্তে আস্তে বেশিরভাগ ইদো ব্যবহারকারী হয় এসপেরান্তো ভাষা ব্যবহারে ফিরে যান অথবা অন্য নতুন কোন ভাষার দিকে ঝুঁকে পরেন। ইদো ছাড়াও এসপেরান্তোর আরও অনেক সরলীকৃত সংস্করণ, যে ভাষাগুলিকে "এসপেরান্তিদো" এসপেরান্তো-জাত ভাষা বলা হয়, প্রকাশ করা হয়। কিন্তু ইদো আজ অবধি তিনটি সব থেকে বহূল ব্যবহৃত সহায়ক নির্মিত সহায়ক ভাষা।

অক্সিডেন্টাল (ইন্তেরলিঙ্গুয়ে) এবং নোভিয়াল[সম্পাদনা]

বিভিন্ন সহায়ক ভাষার কৃত্তিমতার প্রতিক্রিয়া স্বরুপ ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে এডগার ফন ভাল অক্সিডেন্টাল বা ইন্তের্লিঙ্গুয়ে ভাষাটি তৈরি করেন। ইদিয়ম নেউত্রাল এবং পেয়ানোর ইন্তের্লিঙ্গুয়ার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে ফন ভাল এমন একটি ভাষা সৃষ্টি করেন যে ভাষার শব্দগুলি রোমান্স ভাষাসমূহের একটি ভাষার বক্তার কাছে খুব সহজেই বোধগম্য হবে। কিন্তু এই ভাষায় তাৎক্ষনিক ভাবে নতুন শব্দ, বিশেষত যৌগিক শব্দ, সৃষ্টি করার ক্ষেত্রে অসুবিধার সম্মুখিন হতে হয়। ১৯২০ থেকে ১৯৩০ এর দশকের মধ্যে এই ভাষা কিছু সংখ্যক অনুগামী লাভ করে, কিন্তু ১৯৮০র আগেই এই ভাষার ব্যবহার প্রায় শেষ হয়ে যায়।[১৮] সম্প্রতি ইন্টারনেটে এই ভাষাটি আবার পুনরূজ্জীবন লাভ করেছে।

১৯২৪ খ্রিষ্টাব্দে ইদোর প্রধান বুদ্ধিজীবী সমর্থক ডেনিয় ভাষাবিদ অটো ইয়েসপার্সেন ইদোকে পরিত্যাগ করেন, এবং নিজের পরিকল্পিত ভাষা নোভিয়াল প্রকাশ করেন।[১৯] এটি মূলত ইদিয়ম নেউত্রাল এবং অক্সিডেন্টাল দ্বারা অনুপ্রাণিত ছিল, তবে এটি এসপেরান্তো ও ইদো কর্তৃক প্রদত্ত ব্যুৎপত্তিগত রীতি এবং পরিকল্পিতকরণের চেষ্টা করেছিল। ইয়েসপার্সেনের খ্যাতি এই ভাষার খ্যাতির কারণ ছিল। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই অক্সিডেন্টাল এবং নোভিয়ালকে ছেড়ে সবাই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা প্রথম সহায়ক ভাষা ইন্টার্লিঙ্গুয়ার দিকে ঝুঁকে পরে।

ইন্টারলিঙ্গুয়া[সম্পাদনা]

১৯২৪ খ্রিষ্টাব্দে অ্যালিস ভ্যান্ডার্বিল্ট মরিস আন্তর্জাতিক সহায়ক ভাষা সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। আন্তর্জাতিক সহায়ক ভাষা গ্রহণ প্রতিনিধিদলের মতই এই সংস্থার উদ্দেশ্য ছিল ভাষাগত সমস্যাগুলিকে এবং বিদ্যমান সহায়ক ভাষাগুলিকে অধ্যয়ন করা, নতুন সহায়ক ভাষার প্রস্তাবনা করা এবং বিভিন্ন সহায়ক ভাষার সমর্থকদের ঐক্যমত্যের বিষয় আলোচনা করা। কিন্তু প্রতিনিধিদলের মতই অবশেষে এরাও নিজেদের সহায়ক ভাষা সৃষ্টি করার কথা ভাবলেন। ১৯৫১ খ্রিষ্টাব্দে ইন্টারলিঙ্গুয়া প্রকাশিত হয়। এটা প্রধানত আলেকজান্ডার গোডের সৃষ্টি, কিন্তু তিনি অঁদ্রে মারতিনের মত আন্তর্জাতিক সহায়ক ভাষা সংস্থার ভাষাবিদদের প্রাথমিক কাজের উপর ভিত্তি করে এবং লাতিনো সিনে ফ্লেক্সিওন, নোভিয়াল, অক্সিডেন্টালের মতো সহায়ক ভাষার বিভিন্ন উপাদানের উপর নির্ভর করে এই ভাষাটি তৈরি করেছিলেন। অক্সিডেন্টালের মতো, ইন্টারলিঙ্গুয়াকে এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে ষে যারা রোমান্স ভাষাসমূহের কোনো ভাষা জানেন তারা এই ভাষাটির শব্দ খুব সহজেই চিন্তে পারবেন। এই মর্মে সহায়ক ভাষা সংস্থা ব্যাকরণগত এবং লিপিগত দিক দিয়ে এমন পন্থা বাছলেন যা কৃত্রিম ভাষাগুলির থেকে জটিল হবে কিন্তু স্বাভাবিক ভাষাগুলির থেকে কম জটিল।

ইন্টারলিঙ্গুয়ার মূল তাত্ত্বিক দিক হল একটি "আন্তর্জাতিক শব্দভান্ডার", যেখানে বেশিরভাগ শব্দ এবং প্রত্যয় পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষা থেকে নেওয়া হয়েছে। এই আগে থেকেই উপস্থিত আন্তর্জাতিক শব্দভান্ডার সামাজিক শক্তি, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পরেছিল। আন্তর্জাতিক সহায়ক ভাষা সংস্থা উদ্দেশ্য ছিল ইন্টারলিঙ্গুয়াতে আন্তর্জাতিক পর্যায় ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত শব্দগুলিকে নিয়ে আসা, তা সে যে ভাষাতেই থাকুক না কেন।[২০] সংস্থাটি ভাষাটির ঐক্য বজায় রেখেও "সর্বোপরি সম্ভাব্য আন্তর্জাতিক শব্দভান্ডার" নির্দিষ্ট করার জন্য গবেষণার পরিচালনা করে। নির্বাচিত উৎস ভাষা থেকে নতুন ভাষা সৃষ্টি করার এই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ফলে যে শব্দভান্ডার এবং ব্যাকরণ পাওয়া যাবে তা ইউরোপের প্রধান ভাষাগুলির সর্বাধিক সর্বজনীন উপাদান হবে।

ইন্টারলিঙ্গুয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ বক্তা সম্প্রদায় লাভ করেছে। ইন্টারলিঙ্গুয়ার সাফল্যের প্রসঙ্গে বলা যেতে পারে যে এটির প্রকৃতিগত (পরিকল্পিত নয় এমন) ব্যাকরণ এবং শব্দভান্ডারের কারণে এটি সবথেকে বেশি বোধগম্য সহায়ক ভাষা, এবং এর ফলে যারা রোম্যান্স ভাষায় এবং ইংরেজিতে স্বাক্ষর, তারা এই ভাষার পূর্ব জ্ঞান ছাড়াই এটি পড়তে এবং বুঝত পারবেন।[২১] বর্তমানে সব মহাদেশেই ইন্টারলিঙ্গুয়ার কিছু সক্রিয় বক্তা রয়েছে এবং এই ভাষাটি উনিয়ন মুন্দিয়াল প্রো ইন্তেরলিঙ্গুয়া দ্বারা প্রচারিত হয়। এবং ভাষাটি সিডি, রেডিও এবং টেলিভিশনেও উপস্থাপিত হয়।[২২]

ইন্টারলিঙ্গুয়ার পরে আর সেইভাবে সমর্থক আকৃষ্ট করার মতো কোন আন্তর্জাতিক সহায়ক ভাষা তৈরি করার চেষ্টা সফল হয়নি, এবং ১৯৬০ থেকে ১৯৯০ এর মধ্যে নির্মিত ভাষা তৈরি করার উৎসাহ হ্রাস পায়।

ইন্টারনেট যুগ[সম্পাদনা]

যে সমস্ত সহায়ক ভাষার বক্তা সম্প্রদায় রয়েছে, ইন্টারনেটের আবির্ভাবের ফলে সেগুলি উপকৃত হয়েছে, সব থেকে বেশি হয়েছে এসপেরান্তো। ১৯৯২ খ্রীষ্টাব্দে কনল্যাঙ মেইলিং লিস্ট স্থাপন করা হয়, প্রথমদিকে এখানে আলোচনা প্রধাণত সহায়ক ভাষা নিয়ে হত। ক্রমশ বেশিরভাগ সদস্য নান্দনিক নির্মিত ভাষাকৌশলি নির্মিত ভাষার দিকে ঝুঁকে পরাতে এবং বিভিন্ন সহায়ক ভাষার সমর্থকদের মধ্যে বাকবিতন্ডা বেড়ে যাওয়াতে, একটি আলাদা অক্সল্যাঙ মেইলিং লিস্ট-এর স্থাপন করা হয়। তখন থেকে এইটাই সহায়ক ভাষা সংক্রান্ত আলোচনার প্রধান ক্ষেত্রে হয়ে ওঠে। বিদ্যমান সহায়ক ভাষার সমর্থকদের অনলাইনে যোগাযোগের মাধ্যম হয়ে ওঠা ছাড়াও নতুন সহায়ক ভাষার প্রাচারের স্থানও হয়ে ওঠে অক্সল্যাঙ মেইলিং লিস্ট। এই নতুন সহায়ক ভাষাগুলির মধ্যে কিছু প্রসিদ্ধি লাভ করে, যেমন কোটাভা, লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা নোভা এবং সর্বোপরি টোকি পোনা[খ]

আঞ্চলিক নির্মিত ভাষা[সম্পাদনা]

সব সহায়ক ভাষাই বিশ্বস্তরে ব্যবহারের জন্য সৃষ্টি করা হয় না। কিছু ভাষা আছে যেগুলি একই গোত্রীয় ভাষার বক্তাদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য তৈরি করা হয়। এর মধ্যে সব থেকে প্রাচীন হচ্ছে একটি নিখিল-স্লাভীয় ভাষা, যেটি ক্রোয়েশিয় যাজক ইউরায় ক্রিজানিচ ১৬৬৫ খ্রীষ্টাব্দে সৃষ্টি করেন। তিনি এটার নাম দেন "রুস্কি" ("রুশিয়"), কিন্তু আদতে এটি চার্চ স্লাভনিয়ের রুশ সংস্করণ, ক্রিজানিচের নিজস্ব ভাষা দক্ষিণ চাকাভিয় (সার্বো-ক্রোয়েশিয়র একটি উপভাষা) এবং কিছুটা পোলীয় ভাষার সংমিশ্রণ ছিল।[২৩]

বেশিরভাগ আঞ্চলিক নির্মিত ভাষা উনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে রোমান্টিক জাতিয়তাবাদের সময় সৃষ্টি হয়েছিল। বিশেষত স্লাভিয় ভাষাগুলি।[২৪] এছাড়াও অন্যান্য ভাষা পরিবারের আরও কিছু ভাষা সৃষ্টি হয়েছিল: জার্মানীয় ভাষা পরিবারের টিউটোনিশ (১৯০২) এবং ফোকসপ্রাক (১৯৯৫), রোমান্স ভাষা পরিবারের রোমানিড (১৯৫৬), এবং আফ্রিকার আফ্রিহিলি (১৯৭৩)।

বর্তমানে শুধুমাত্র বিশেষজ্ঞরাই পুরানো আঞ্চলিক নির্মিত ভাষাগুলি জানেন। নতুন ভাষাগুলির মধ্যে সবথেকে উল্লেখযোগ্য হল আন্তঃস্লাভীয় (Interslavic), একটি ভাষা প্রকল্প যা ২০১১ সালে বিভিন্ন ভাষা প্রকল্পের সংযোজনের মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছিল। সূত্র অনুযায়ী ২০১২ সালে এই ভাষার বক্তার সংখ্যা অনেক।[২৫]

অধ্যয়ণ[সম্পাদনা]

উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম থেকেই সহায়ক ভাষাগুলি গবেষণার বিষয় হয়ে উঠছিল। লুই কুতুরা এবং অন্যান্যরা[২৬] তাদের বই ইন্টারন্যাশনাল ল্যাঙ্গুয়েজ এন্ড সায়েন্স-এ লিখেছেন:

The question of a so-called world-language, or better expressed, an international auxiliary language, was during the now past Volapük period, and is still in the present Esperanto movement, so much in the hands of Utopians, fanatics and enthusiasts, that it is difficult to form an unbiased opinion concerning it, although a good idea lies at its basis.

লেওপোল্ড ফাউন্ডলার লিখেছেন যে বিজ্ঞানীদের মধ্যে আরও কার্যকর যোগাযোগের জন্য একটি সহায়ক ভাষার প্রয়োজন:

All who are occupied with the reading or writing of scientific literature have assuredly very often felt the want of a common scientific language, and regretted the great loss of time and trouble caused by the multiplicity of languages employed in scientific literature.'

কুতুরা এবং অন্যান্যদের মতে, ভোলাপ্যুকীয়রা এবং এসপেরান্তীয়রা বহু পার্শ্ব সমস্যার মাধ্যমে প্রশ্নটির ভাষাগত দৃষ্টিভঙ্গি বিস্মৃত করেছে এবং তারা এই ব্যপারটাকে আন্তর্জাতিক সহায়ক ভাষা ধারণা সম্পর্কে আলোচনা অবাস্তব মনে হওয়ার মূল কারণ বলে বিবেচনা করেছেন।

কুতুরার কিছু সমসাময়িকরা, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন এডওয়ার্ড সাপির[২৭][২৮], সহায়ক ভাষার চ্যালেঞ্জকে যোগাযোগের জরুরি রাষ্ট্রশাসনসংক্রান্ত সমস্যার একটি নির্দিষ্ট ভাষাগত (ব্যাকরণ এবং শব্দভান্ডারগত) উত্তর সনাক্তকরণের থেকেও দীর্ঘস্থায়ী আন্তর্জাতিক বোঝাপরার জন্য একটি ভাষাগত নীতির প্রচার বলে মনে করেছেন। যদিও অধ্যয়ন বিষয়ক গবেষণার আগ্রহ বিংশ শতাব্দীর বেশিরভাগ সময় ধরেই ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছিল, তবুও এই মতপার্থক্যগুলি আজকের দিনগুলিতেও অব্যাহত। একদিকে যেমন কিছু পণ্ডিত ও আগ্রহী অবিশেষজ্ঞরা[২৯] মূর্ত ভাষা প্রস্তাবগুলি তৈরি করে থাকেন, অন্যদিকে পেই[৩০] এবং অন্যান্যরা[৩১] বৃহত্তর সামাজিক সমস্যাগুলিকে প্রাধাণ্য দেন। আবার কেউ কেউ কোন বিশেষ একটি ভাষার পক্ষে যুক্তি দিয়ে তার সামাজিক সংহতি স্থাপন করার চেষ্টা করেন।[৩২]

লিখন পদ্ধতি[সম্পাদনা]

বেশকিছু সহায়ক ভাষা রোমান লিপি, আবার লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা নোভার মতো কিছু ভাষা বিকল্প হিসাবে সিরিলীয় লিপি ব্যবহার করে।

লাতিন লিপি[সম্পাদনা]

বিভিন্ন ভাষায় রোমান লিপিকে আন্তর্জাতিক ধ্বনিমূলক বর্ণমালার উচ্চারণ অনুযায়ী ব্যবহার করা হয়, যেমন /n/, /m/, /t/, /f/। রোমান লিপিতে লিখিত বিভিন্ন সহায়ক ভাষার ব্যঞ্জনধ্বনি আন্তর্জাতিক ধ্বনিমূলক বর্ণমালায় আইএসও ৬৪৬ অক্ষর দ্বারা উপস্থাপিত হয় না। এর মধ্যে তিনটে ধ্বনির জন্য আধ্ববতে একটা করে বর্ণ আছে, আর একটা আইএসও ৬৪৬-এর বহুলব্যবহৃত বিকল্প থেকে নেওয়া হয়েছে:

  • /ʃ/ (U+0283, আধ্বব সংখ্যা ১৩৪)
  • /ʒ/ (U+0292, আধ্বব সংখ্যা ১৩৫)
  • /ɡ/ (U+0261, আধ্বব সংখ্যা ১১০, একতলা g) = g (U+0067, দ্বিতল g)

এছাড়াও চারটে ঘৃষ্টধ্বনি আছে যেগুলির প্রত্যেকটিকে আধ্ববতে দুটো বর্ণ এবং উর্ধবন্ধনি দিয়ে চিহ্নিত করা হয়। এই বর্ণদ্বয়গুলো প্রায়শই আলাদাভাবেও লেখা হয়:

  • /t͡s/ = /ts/
  • /t͡ʃ/ = /tʃ/ (পোলীয় ভাষায় এই দুটোকে প্রভেদ করা হয়)
  • /d͡z/ = /dz/
  • /d͡ʒ/ = /dʒ/

এর অর্থ হল দুটো এমন ধ্বনি ব্যবহার করা হয় যেগুলি আধ্ববতে একটাই বর্ণ, কিন্তু আইএসও ৬৪৬-তে নয়, আর আইএসও ৬৪৬-তে এদের কোন বিকল্প বর্ণও নেই: ʃ, ʒ।

আইএসও ৬৩৯-৩ কোড বর্ণের নাম অ-আইএসও ৬৪৬ বর্ণ বিশেষক ধ্বনিচিহ্ন বহুবর্ণ ধ্বনি, যা আধ্বব থেকে আলাদা বর্ণ ব্যবহার করে চিহ্নিত করা হয়,
এবং আধ্ববতে আইএসও ৬৪৬ বর্ণ দিয়ে চিহ্নিত করা হয়
ধ্বনি, যা আধ্বব থেকে আলাদা বর্ণ ব্যবহার করে চিহ্নিত করা হয়,
এবং আধ্ববতে অ-আইএসও ৬৪৬ বর্ণ দিয়ে চিহ্নিত করা হয়
lfn লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা নোভা না না না হ্যাঁ (c /k/) হ্যাঁ (j /ʒ/, x /ʃ/)
rmv রোমানোভা না না না হ্যাঁ (c /k/) হ্যাঁ (j /ʃ/)
ina ইন্টারলিঙ্গুয়া না না হ্যাঁ (qu /kw/ or /k/) হ্যাঁ (c /k/) না
ido ইদো না না হ্যাঁ (ch /tʃ/, qu /kw/, sh /ʃ/) হ্যাঁ (c /ts/, q /k/, x /ks/ or /ɡz/) হ্যাঁ (j /ʒ/, sh /ʃ/)
nov নোভিয়াল না না হ্যাঁ (ch /tʃ/, sh /ʃ/, y /j/) হ্যাঁ (q /k/, x /ks/) হ্যাঁ (j /ʒ/, sh /ʃ/)
igs ইন্টারগ্লসা না না হ্যাঁ (ph, th, ch, rh -> /f/, /t/, /k/, /r/) হ্যাঁ (c /k/, q /k/, x /ks/, z /ts/) না
epo এসপেরান্তো না হ্যাঁ (ĉ, ĝ, ĥ, ĵ, ŝ, ŭ) না হ্যাঁ (c /ts/) না
- মুন্ডোলিঙ্কো না না না হ্যাঁ (c /k/) না
- গ্লসা না না হ্যাঁ (sc /ʃ/) হ্যাঁ (q /kw/, x /ks/) হ্যাঁ (c /tʃ/, sc /ʃ/)
- সামবাহসা[৩৩] না না হ্যাঁ (ch /tʃ/, sh /ʃ/, এবং আরও) হ্যাঁ (y, অর্ধস্বর হিসাবে /j/, x /ks, gz/ এবং আরও) হ্যাঁ (j /ʒ/, ch /tʃ/, sh /ʃ/, sh /ç/ এবং আরও)
- ইদিয়ম নেউত্রাল না না হ্যাঁ (sh /ʃ/) হ্যাঁ (y /j/) হ্যাঁ (c /tʃ/, j /ʒ/, sh /ʃ/)
- লিঙ্গোয়া দে প্লানেতা না না হ্যাঁ (ch /tʃ/, sh /ʃ/) হ্যাঁ (x /gs/, z /dz/) হ্যাঁ (c in ch /tʃ/, j /dʒ/)
- আন্ত্যস্লাভীয় না হ্যাঁ (č /tʃ/, ń /nj ~ nʲ ~ ɲ/, š /ʃ/, ž /ʒ/ ) dž, কিন্তু d+ž-এর সমতুল্য হ্যাঁ (c /ts/, y /i ~ ɪ ~ ɨ/) হ্যাঁ (č /tʃ/, š /ʃ/, ž /ʒ/)
- উরোপি হ্যাঁ (ʒ /ʒ/) না না না হ্যাঁ (c [ʃ])

শ্রেণিবিন্যাস[সম্পাদনা]

এই শ্রেণিবিন্যাসটি পিয়ের জানতন ১৯৯৩ সালে প্রকাশ করেছিলেন:[৩৪]

  • পূর্বতসিদ্ধ ভাষা': এই ধরনের ভাষার বিশেষত্তগুলি হল কৃত্রিম মূলরূপ, পরিকল্পিত প্রকৃতিপ্রত্যয়, সরল ধ্বনিতত্ত্ব, ব্যাকরণ এবং রূপমূলতত্ত্ব। এই ধরনের কিছু ভাষাকে দার্শনিক ভাষা বলা হয়, যেগুলি ভাষা এবং চিন্তনের দর্শনের উপর ভিত্তি করে সৃষ্টি করা হয়ে থাকে। প্রথমদিকের "পূর্বতসিদ্ধ" ভাষাগুলি প্রধাণত দার্শনিক ভাষা ছিল। "পূর্বতসিদ্ধ" ভাষার উপশ্রেণীগুলি হল:
    • স্বল্পসমবায়ী বা স্বল্প-অসমবায়ী ভাষা: এই ভাষাগুলিতে কয়েক শ'র বেশি মূলরূপ থাকে না। শব্দভান্ডারের অধিকাংশই সমাসবদ্ধ পদ অথবা মূলরূপগুলি থেকে তৈরি পদগুচ্ছ। সোনা ভাষা এবং টোকি পোনা এই ধরনের ভাষার উদাহরণ।
    • শ্রেণিবিন্যাসগত ভাষা: এই ধরনের ভাষায় শ্রেণ্যানুক্রমে শব্দ গঠন করা হয়, এবং প্রত্যেকটি স্বনিম শব্দটির অর্থ এবং পদ পরিবর্তনে ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ সোলরেসোল এবং রো ভাষা
    • সর্বলিখন (Parsigraphy: প্রাচীন গ্রীক πᾶσι পাসি "সবাইকে/সবেতে" and γράφω গ্রাফো "লেখা" (ক্রিয়া))": এই ধরনের ভাষা সম্পূর্ণরূপে লিখিত ভাষা এবং এর উচ্চারণ পাঠকের বিবেচনার উপর ছেড়ে দেওয়া হয়। ১৭শ-১৮শ শতাব্দীর দার্শনিক ভাষা এবং সহায়ক ভাষাগুলি এই প্রকারের ভাষা ছিল। সবক্ষেত্রে না হলেও এই ধরনের ভাষা আংশিকভাবে শ্রেণিবিন্যাসগত ভাষার অন্তর্গত হয়।
    • যৌক্তিক ভাষা: এই ধরনের ভাষার প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে ভাষার দ্ব্যর্থতা দূর করা। লোগলান এবং লোজবান এই ভাষার উদাহরণ।
  • পরতসিদ্ধ ভাষা: এই ধরনের ভাষা বিভিন্ন প্রাকৃতিক ভাষার উপর ভিত্তি করে গঠিত হয়। যে সমস্ত সহায়ক ভাষায় বক্তা আছে তার মধ্যে অধিকাংশই ইউরোপীয় ভাষার দ্বারা প্রাভাবিত, যেমন ইন্টারলিঙ্গুয়া লাতিন এবং গ্রীক ভাষার দ্বারা প্রাভাবিত, গ্লসা ভাষা গ্রীক ভাষার দ্বারা, এবং এসপেরান্তো এবং ইদো বিভিন্ন রোমান্স ভাষাসমূহ দ্বারা প্রভাবিত।[৩৫]
    • সুবিন্যস্ত ভাষা: এই ধরনের ভাষাগুলির পূর্বতসিদ্ধ ভাষার কিছু কিছু বৈশিষ্ট্য থাকতে পারে। এই ভাষাগুলিতে সাধারণ ভাষার রূপমূল ব্যবহার হয়ে থাকে, কিন্তু পদ পরিবর্তন বা যৌগিক শব্দ সৃষ্টি করার সময় এই ভাষার সরলীকৃত ধ্বনিসংযোগ ধাঁচের তারতম্য রাখার জন্য রূপমূলের গঠনে পরিবর্তন আনা হয়। এই ধরনের ভাষায় আংশিক পরিকল্পিত আংশিক প্রাকৃতিক ব্যুৎপত্তি হয়, এবং এর ফলে কিছু ক্ষেত্রে রূপমূলের স্বাভাবিক রূপ পরিবর্তন হয়।
    • প্রাকৃতিকপ্রায় ভাষা: এই ভাষাগুলি প্রাকৃতিক ভাষার মতোই হয়, এবং ধাতু এবং সাধিত শব্দ উভয়ই অনেকেই চিনতে পারে। উদাহরণস্বরূপ অক্সিডেন্টাল, ইন্টারলিঙ্গুয়া ও লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা নোভা। এই শ্রেণীর কিছু ভাষায় কৃত্রিম রূপমূল বা ব্যাকরণগত প্রক্রীয়া থাকতে পারে, যেমন নোভিয়াল।
    • সরলীকৃত প্রাকৃতিক ভাষা: "বেসিক ইংলিশ" বা "স্পেশাল ইংলিশ"-এর মতো কিছু ভাষা আছে যেগুলি প্রাকৃতিক ভাষার সরলীকৃত সংস্করণ, যেখানে শব্দভান্ডারের এবং ব্যাকরণের সরলীকরণ এবং নিয়মিতকরণ করা হয়।

প্রচারের পদ্ধতি[সম্পাদনা]

আন্তর্জাতিক ভাষার ব্যাপার যতটা "কোনটা" তার থেকে বেশি "কী ভাবে"।[৩৬] একটি আন্তর্জাতিক সহায়ক ভাষার চূড়ান্ত পূর্ণ সম্প্রসারণ এবং একত্রীকরণের দিকে অনেকগুলি দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে।

  1. অবাধনীতি, যে পদ্ধতি অবলম্বন করা হয় এই বিশ্বাসে যে এক ভাষা কোন রকম হস্তক্ষেপ ছাড়াই অবশেষে এবং অনিবার্যভাবে একটি বিশ্ব সহায়ক ভাষা হিসাবে "জয়" করবে।
  2. সাংগঠনিক পৃষ্ঠপোষকতা এবং তৃণমূল স্তরে ভাষা কার্যক্রমের প্রচার, যে পদ্ধতিটি ভাষা এবং ভাষা প্রকারের উপর নির্ভর করে নির্দিষ্ট ভাষার সরকারী প্রচার থেকে শুরু করে ভাষা শিখতে একযোগে উৎসাহ প্রদান করবে বা শিক্ষামূলক বা বিপণনমূলক কার্যক্রমের মতো বিভিন্ন ধরনের আকার গ্রহণ করবে।
  3. জাতীয় আইন প্রণয়ন, যার মাধ্যমে কোন বিশেষ দেশে (বা অঞ্চলে) ক্রমান্বয়ে একটি প্রদত্ত ভাষাকে সরকারি ভাষা হিসাবে অনুমোদন করবে (বা আন্তর্জাতিক স্তরে আইন প্রণয়নের ধারণাকে প্রচার করবে)।
  4. আন্তর্জাতিক আইন প্রণয়ন, যার মাধ্যমে জাতিসংঘ বা আন্ত্যসংসদীয় ইউনিয়নের মতো কোন আন্তর্জাতিক সংস্থার সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি সহায়ক ভাষাকে সরকারি ভাষা করা হবে, যে ভাষা পরবর্তি সময়ে বিশ্বজুড়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতেও পড়ানো হবে। এই নীতির মাধ্যমে নির্বাচিত ভাষাটি সমর্থনে আন্তর্জাতিক মতামত, ভাষাগত দক্ষতা, এবং আইনের একটি সংমিশ্রণ সন্ধান করা হবে, এবং তার ফলে সেই ভাষাকে আঞ্চলিক ভাষার সাথে সরকারি বিশ্ব ভাষা হিসাবে ব্যবহার করার জন্য প্রসারিত করা হবে। এই পন্থাটি হয় বিদ্যমান কোন ভাষাকে এই ব্যপারে আরও বিশ্বাসযোগ্যতা প্রদান করবে (যেমন ইংরেজি) বা কোন নির্মিত ভাষাকে এই পর্যায় নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে।

সচিত্র ভাষা[সম্পাদনা]

আন্তর্জাতিক যোগাযোগের জন্য ছবি, ভাবলিপি, রেখাচিত্র এবং অন্যান্য সচিত্র উপস্থাপনার জন্য বেশ কিছু প্রস্তাব করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ দার্শনিক গটফ্রিড উইলহেল্ম লাইবনিৎসের প্রস্তাবিত মূল কারেক্টারিস্টিকা ইউনিভার্সালিস, চীনা লিখন পদ্ধতিকে গ্রহণ করার পরামর্শ, বা সাম্প্রতিককালে আবিষ্কৃত ব্লিসিম্বল[৩৭]

বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ের মধ্যে, ইতিমধ্যে বর্তনী রেখাচিত্র, রাসায়নিক প্রতীক, গাণিতিক প্রতীক এবং শক্তি প্রণালী ভাষার বিন্যাস চিত্র ব্যবহার করার উল্লেখযোগ্য সম্মতি রয়েছে। এছাড়া ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ, পর্যটকদের জন্য সম্পদ নির্দেশক এবং মানচিত্রের জন্য ব্যবহৃত নিয়ামক চিহ্নের ব্যবহারকে নিয়মিত করার আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টাও আমরা দেখতা পাই। কিছু প্রতীক কম্পিউটার এবং ইন্টারনেটে তাদের সুসংগত ব্যবহারের মাধ্যমে প্রায় সর্বজনীন হয়ে উঠেছে।

প্রতীকি ভাষা[সম্পাদনা]

বধিরদের দ্বারা একটি আন্তর্জাতিক সহায়ক প্রতীকি ভাষা তৈরি করা হয়েছে, যেটি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরাম যেমন ক্রীড়া সম্মেলন বা রাজনৈতিক সংস্থায় ব্যবহৃত হয়। পূর্বে এটি গেস্টুনো হিসাবে পরিচিত ছিল[৩৮], এখন শুধু আন্তর্জাতিক প্রতীক হিসাবে পরিচিত। ১৯৭৩ সালে প্রাথমিক প্রতীকগুলি প্রমিতায়িত করার পর ভাষাটি অনেক উন্নিত হয়েছে, এবং এখন ব্যাপকভাবে ব্যবহার হয়। কথিত সহায়ক ভাষার থেকে অনেক ক্ষেত্রে ভাষাটি ভিন্ন। অনেক প্রতীকই আইকনিক, এবং ব্যবহারকারীরা তাদের নিজেদের প্রতীকি ভাষায় এই ভঙ্গিমাগুলি ব্যবহার করা থাকেন, বিশেষ জোর দেওয়া হয় দৃশ্যত স্বজ্ঞাত অঙ্গভঙ্গি এবং মুখভঙ্গির উপর। উত্তর আমেরিকার আদিবাসীরা একটি প্রতীকি ভাষা ব্যবহার করতেন যার নাম ছিল সমতলীয় প্রতীকি ভাষা

সমালোচনা[সম্পাদনা]

আন্তর্জাতিক সহায়ক ভাষাগুলির যথেষ্ট সমালোচনা করা হয়েছে, তা সে হোক পৃথক প্রস্তাবে, প্রস্তাবের প্রকারে, এবং আরো সাধারণভাবে।

১৯শ শতকের শেষের দিকে এসপেরান্তো এবং অন্যান্য সহায়ক ভাষাগুলির বিরুদ্ধে যে সমালোচনাগুলি ছিল তার মধ্যে অন্যতম হল এই যে বিভিন্ন জাতির বাগিন্দ্রীয়ের যেভাবে ব্যবহার হয়ে থাকে তার ফলে একটি সহায়ক ভাষা ইউরোপে স্থানীয়ভাবে কার্যকরী হবে, কিন্তু বিশ্বদরবারে তা হবে না এবং এও ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল যে যদি কোন সহায়ক ভাষা গ্রহণ করা হয়, তাহলে এই ধরনের ভাষা দ্রুত তা বিভিন্ন উপভাষায় ভাগ হয়ে যাবে।[৩৯] ভাষাতত্ত্বের অগ্রগতির ফলে এই সমালোচনার মধ্যে প্রথমটি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে, এবং একটি আন্তর্জাতিক পর্যায় এসপেরান্তো, ইদো এবং ইন্টারলিঙ্গুয়া উপভাষায় বিভক্ত না হয়েও সীমিত কিন্তু উল্লেখযোগ্য ব্যবহারের মাধ্যমে দেখিয়েছে যে, অদূর ভবিষ্যতে সহায়ক ভাষাগুলির উপভাষায় বিভাজন ঘটবে না, অথবা ভাষাটির বৈচিত্র্য কমানোর জন্য যথেষ্ট পরিমানে "প্রমিতিকরণ" করা হয়েছে। পরবর্তীকালে, এই সহায়ক ভাষাগুলির কৃত্রিমতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে,[১২] আবার এদের সমর্থকদের যুক্তিবাদীতা এবং কোন একটি ভাষায় সম্মত হওয়ার ব্যর্থতা বা এই ভাষাগুলিকে বিচার করার জন্য আদর্শ মানদণ্ডের উপরেও বহু সমালোচনা করা হয়েছে।[৪০] তবে, সম্ভবত সবচেয়ে বেশি সমালোচনা করা হয়েছে যে বিষয় তা হল একটি নির্মিত সহায়ক ভাষা অপ্রয়োজনীয় কারণ ইংরেজির মতো প্রাকৃতিক ভাষাগুলি ইতিমধ্যেই সহায়ক ভাষা হিসাবে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয় এবং সহায়ক ভাষার উদ্দেশ্য সাধণের জন্য যথেষ্ট পরিমাণে কৃতকার্য হয়েছে।

১৯শ শতাব্দীর শেষের দিকে, এবং কখনও কখনও বর্তমানেও, একটি সমালোচনা শোনা যায় যে একটি আন্তর্জাতিক ভাষা সংখ্যালঘু ভাষার বিলুপ্তিকে তরান্বিত করতে পারে। এর একটি প্রতিক্রিয়া শোনা যায় যে যদি এমন কিছু হয়ও ক্ষতির থেকে উপকারিতা বেশি হবে।

আন্তর্জাতিক ভাষা হিসাবে উল্লেখ করা হলেও, এইসব ভাষার অধিকাংশই ঐতিহাসিকভাবে পশ্চিম ইউরোপীয় ভাষার ভিত্তিতে নির্মিত হয়েছে। ১৯শ শতকের শেষের দিকে এবং ২০শ শতকের প্রথম দিকে ভোলাপ্যুক এবং এসপেরান্তোকে, এবং কিছুটা ইদোকেও, যথেষ্ট পরিমানে পশ্চিম ইউরোপীয় না বলে সমালোচনা করা সাধারণ ছিল। অক্সিডেন্টাল এবং ইন্টারলিঙ্গুয়া (অন্যান্য কারণ ছাড়াও) এই ধরনের সমালোচনাগুলির বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া হিসাবে তৈরি করা হয়েছিল। সম্প্রতি এই সমস্ত প্রধান সহায়ক ভাষাগুলি অতি-ইউরোপীয় এবং যথেষ্ট বৈশ্বিক না হওয়ার জন্য সমালোচিত হয়েছে।[৪১] একটি প্রতিক্রিয়া, প্রাথমিকভাবে এসপেরান্তো বক্তাদের পক্ষ থেকে যা করা হয়ে থাকে তা হল একটি ভাষার আন্তর্জাতিকতা সেই ভাষার ভাষাগত বৈশিষ্ট্যের থেকেও তার বক্তার সংস্কৃতির উপর আরও বেশিভাবে নির্ভর করে। খোদ এসপেরান্তো ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগুলি থেকে শব্দ ব্যবহার করে, কিন্তু ব্যাকরণের দিক থেকে চিনা ভাষা বা গ্রীক ভাষার কাছাকাছি (যদিও ব্যাকরণ এবং বাক্য গঠন যথেষ্ট নমনীয় হওয়ার ফলে জাপানি, ইন্দোনেশিয় এবং ইংরাজির বাক্য গঠনও অনুসরণ করতে পারে)। এই কারণে এসপেরান্তো কতটা ইন্দো-ইউরোপীয় তা বিচার করাও কঠিন।[৩৫] এখানে উল্লেখ্য যে "ইউরোক্লোন" শব্দটি উদ্ভাবন করা হয়েছিল যে সমস্ত ভাষা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষা থেকে শব্দ নিয়ে শব্দভান্ডার তৈরি করে, অর্থাৎ "বিশ্বভাষা"-গুলিকে সূচিত করার জন্য; শব্দটি কখনও কখনও শুধুমাত্র অক্সিডেন্টাল এবং ইন্টারলিঙ্গুয়ার মত স্ব-ঘোষিত "প্রকৃতিগত" সহায়ক ভাষার জন্য প্রয়োগ করা হয়, কখনও কখনও সেই সমস্ত সহায়ক ভাষার জন্য যেগুলি প্রধানত ইউরোপীয় শব্দভান্ডার ব্যবহার করে। এসপেরান্তো এবং লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা নোভা এই ধরনের ভাষা।

এই তর্কের উত্তর দিয়েছিলেন আলেকজান্ডার গোডে[৪২] এবং মারিও পেই[৪৩] সেটাকে পুনর্ব্যক্ত করেছিলেন: বিভিন্ন ধরনের ভাষা থেকে নির্বাচিত শব্দভান্ডার কোন বিশেষ একটি ভাষার বক্তার পক্ষে শেখা সহজ হবে না। গোডের উদাহরণে ইন্টারলিঙ্গুয়ার একটি অনুচ্ছেদের সঙ্গে একই অনুচ্ছেদে চীনা, জাপানি, মালয় এবং অন্যান্য অ-ইউরোপীয় ভাষার শব্দ ব্যবহার করে তুলনা করা হয়েছে। প্রথম ক্ষেত্রে তিনি যুক্তি দেন যে এই অনুচ্ছেদটি রোমান্স ভাষাসমূহের সঙ্গে পরিচিত যারা তারা বুঝতে পারবেন এবং অধিকাংশ ইংরেজির বক্তাদের পক্ষে বুঝতে খুব একটা অসুবিধা হবে না:

La sol dice: "io me appella sol. Io es multo brillante. Io me leva al est, e cuando io me leva, il es die. Io reguarda per tu fenestra con mi oculo brillante como le auro, e io te dice quando il es tempore a levar te. E io te dice: 'Pigro, leva te. Io non brilla a fin que tu resta al lecto a dormir, sed que tu lege e que tu te promena.'"
(লা সোল দিসে: "ইয়ো মে আপ্পেল্লা সোল। লো এস মুলতো ব্রিলান্তে। ইয়ো মে লেভা আল এস্ত, এ কুয়ান্দো ইয়ো মে লেভা, ইল এস দিয়ে। ইয়ো রেগুয়ারদা পের তু ফেনেস্ত্রা কন মি ওকুলো ব্রিলান্তে কোমো লে আউরো, এ ইয়ো তে দিসে কুয়ান্দো ইল এস তেম্পোরে আ লেভার তে। এ ইয়ো তে দিসে: 'পিগ্রো, লেভা তে। ইয়ো নন ব্রিল্লা আ ফিন কে তু রেস্তা আল লেকতো আ দোরমির, সেদ কে তু লেগে এ কে তু তে প্রোমেনা।")

অপর দিকে দ্বিতীয় ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ইউরোপীয়দের কাছেই অনুচ্ছেদটি কঠিন হবে তা নয়, মালয় ভাষাভাষীরা সম্ভবত চীনা শব্দ বুঝতে পারবে না, চীনারা সম্ভবত জাপানি শব্দ বুঝতে পারবে না এবং জাপানিরা সম্ভবত মালয় শব্দ বুঝতে পারবে না:

Mata-hari yu: "Wo-ti nama mata-hari. Wo taihen brillante. Wo leva wo a est, dan toki wo leva wo, ada hari. Wo miru per ni-ti fenestra sama wo-ti mata brillante como kin, dan wo yu ni toki ada tempo a levar ni. Dan wo yu ni: 'Sust, leva ni. Wo non brilla sam-rap ni tomaru a toko a nemuru, sed wo brilla sam-rap ni leva ni, dan que ni suru kam, ni yomu, dan ni aruku.'"
(মাতা-হারি ইউ: "উও-তি নামা মাতা-হারি। উও তাইহেন ব্রিলান্তে। উও লেভা উও আ এস্ত, দান টোকি উও লেভা উও, আদা হারি। উও মিরু পের নি-তি ফেনেস্ত্রা সামা উও-তি মাতা ব্রিলান্তে কোমো কিন, দান উও ইউ নি টোকি আদা তেম্পো আ লেভার নি। দান উও ইউ নি: 'সুস্ত, লেভা নি। উও নন ব্রিল্লা সাম-রাপ নি তোমারু আ টোকো আ নেমুরু, সেদ উও ব্রিলা সাম-রাপ নি লেভা নি, দান কে নি সুরু কাম, নি ইয়োমু, দান নি আরুকু।")

স্পোকিল বা কোটাভার মতো পূর্বতসিদ্ধ শব্দভান্ডার যে ভাষার, অথবা লোগলান বা লোজবানের মত গাণিতিকভাবে তৈরি শব্দভাণ্ডার যে ভাষার, সেগুলি সম্ভবত একইরকম বোধগম্য হবে।

গোডে আরও যুক্তি দেন যে, পশ্চিমা ভাষাগুলি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান, চিকিতৎসাবিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির অননুমোদিত ভাষা, এবং সেইজন্য তাদের উপর ভিত্তি করে তৈরি আন্তর্জাতিক সহায়ক ভাষা সেই সমস্ত ভাষার সাহিত্যের অধিগম্যতা প্রদান করে। যাইহোক, এটা বলা আবশ্যক যে, একটি আরও নিরপেক্ষ শব্দভান্ডার বা একটি পূর্বতসিদ্ধ ভাষা, কিছু অ-ইউরোপীয়দের জন্য কম আপত্তিকর হতে হবে।

১৯৯০-এর দশকে এবং ২০০০-এর দশকের শেষের দিকে, বৈশ্বিক শব্দভান্ডার এবং ব্যাকরণের উপর ভিত্তি করে সহায়ক ভাষার অনেক প্রস্তাব করা হয়েছে, কিন্তু অধিকাংশ (পূর্ববর্তী কয়েক দশকের ইউরোপ ভিত্তিক সহায়ক ভাষাগুলির মতো) কথোপকথনের মত সম্পূর্ণতা পায়নি, এবং যেগুলি তুলনামূলকভাবে সম্পূর্ণতা পেয়েছে, সেগুলি তেমনভাবে বক্তা অর্জন করতে পারেনি। আরও সম্প্রতি একটি প্রবণতা দেখা গেছে, অক্সল্যাঙ মেইলিং লিস্টে এবং আরও সম্প্রতি প্রতিষ্ঠিত ওয়ার্ল্ডল্যাং মেইলিং লিস্টে, একটি আরও বৈশ্বিক সহায়ক ভাষা তৈরি করার জন্য বিভিন্ন সহায়ক ভাষার সমর্থকদের মধ্যে বৃহত্তর সহযোগিতা দেখা যাচ্ছে।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

টিকা[সম্পাদনা]

  1. এই নামটি প্রথম ব্যবহার করেছিলেন অটো ইয়েসপার্সেন, ১৯০৮ খৃষ্টাব্দে
  2. যদিও টোকি পোনাকে সহায়ক ভাষা হিসাবে প্রাচার করার কোন অভিপ্রায় এর সৃষ্টিকর্তার ছিল না, তবুও বিভিন্ন ভাষাভাষির মানুষ নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য এর ব্যবহার করেন, এবং অন্য অনেক সহায়ক ভাষার থেকে এর ব্যবহার অনেক বেশি।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. বোডমের, ফ্রেডেরিক দ্য লুম অফ দ্য ল্যাঙ্গুয়েজ;। পেই, মারিও। ওয়ান ল্যাঙ্গুয়েজ ফর দ্য ওয়ার্ল্ড
  2. ভিয়াচেস্লাভ এ. চিরিকবা, "দ্য প্রবলেম অফ দ্য ককেশিয়ান স্প্রাখবুন্ড" পীটার মুইস্কেনের সম্পাদিত ফ্রম লিঙ্গুইস্টিক এরিয়াজ টু এরিয়াল লিঙ্গুইস্টিকস, ২০০৮, পৃ: ৩১। আইএসবিএন ৯০-২৭২-৩১০০-১
  3. ওস্টলার, ২০০৫, পৃ: ৩৮-৪০
  4. "বেস্ট ল্যাঙগুয়েজেস দ্যাট ইনফ্লুয়েন্স দ্য ওয়ার্ল্ড" 
  5. "ফরাসি উইকিসংকলনে জোয়াকিম ফিগে দ্য ভিলেনভের পাতা" 
  6. শ', ডঃ রামেশ্বর (২০১২)। সাধারণ ভাষাবিজ্ঞান ও বাংলা ভাষা। কলকাতা: পুস্তক বিপনি। পৃষ্ঠা ১৮০। আইএসবিএন 81-85471-12-6 
  7. Konciza Gramatiko de Volapuko-এর ভূমিকায়, অঁদ্রে শেরপিলো, কুরগেনার্দ, ১৯৯৫।
  8. য়োহান শ্মিড, ১৯৬৪। Jenotem valemapüka Volapük। অ্যাম্স্টার্ডাম: ভোলাপ্যুকাগাসেদ।
  9. য়োহান শ্মিড, ১৯৯৬। হিস্তোরিয়া দে লা উনিভেরসালা লিঙভো ভোলাপুকো. অনুবাদক: ফিলিপ কোম্বোত. কুরগেনার্দ: লা ব্লাঁশেতিয়ের। আইএসবিএন ২-৯০৬১৩৪-৩০-৯
  10. জাসকি, জেসন (২০-০৭-২০০৯), "ডিস্কারেজিং ওয়ার্ডস", ফেইলিয়ার পত্রিকা, ১৯-১১-২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, But in terms of invented languages, it’s the most outlandishly successful invented language ever. It has thousands of speakers—even native speakers—and that’s a major accomplishment as compared to the 900 or so other languages that have no speakers. – আরিকা ওক্রেন্ট  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ=, |আর্কাইভের-তারিখ= (সাহায্য)
  11. পড়ুন: গ্রেগরি গ্রেফেনস্টেট, জুলিয়েন নিওশ। এস্টিমেশান অফ ইংলিশ অ্যান্ড নন-ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ ইউজ অন দ্য ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব। ২০০০ (লাতিন লিপি ব্যবহার করা হয় এমন ভাষার মধ্যে এসপেরান্তোর স্থান ২৭তম)। উইকিপিডিয়াতে এসপেরান্তো উইকিপিডিয়ার স্থান ৩২তম।
  12. ক্লডে পিরনের Le Défi des Langues, ল'আর্মাতাঁ ১৯৯৪।
  13. ডন হার্লোর দ্য এসপেরান্তো বুক, অধ্যায় ৭: হিস্ট্রি ইজ ফাইন ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে। ১৯৯৫।
  14. উলরিখ লিন্স, La Danĝera Lingvo, গেরলিঙ্গেন, জার্মানি: ব্লাইখার এল্ডোনেয়ো, ১৯৮৮।
  15. ডন হার্লোর দ্য এসপেরান্তো বুক, অধ্যায় ৯:"দ্য লিটারারি সিন" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৮ তারিখে। ১৯৯৫.
  16. china.org.cn
  17. অটো ইয়েসপার্সেন, অ্যান ইন্টার্ন্যাশানাল ল্যাংগুয়েজ, "দ্য ডেলিগেশন। ইদো।" ১৯২৮।
  18. ডন হার্লোর দ্য এসপেরান্তো বুক, অধ্যায় ৩: হাউ টু বিল্ড আ ল্যাংগুয়েজ ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে।
  19. হার্লো, ডোনাল্ড জে. (৪ঠা জুলাই, ২০০৬)। "নোভিয়াল"হাউ টু বিল্ড আ ল্যাংগুয়েজ। 4 February 2012 তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ই মার্চ ২০১৮  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ=, |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  20. দেখুন: আলেক্জান্ডার গোদে, ইন্টারলিঙ্গুয়া: আ ডিকশানারি অফ দ্য ইন্টার্ন্যাশনাল ল্যাঙ্গুয়েজ (ভূমিকা), ১৯৭১, নিউ ইয়র্ক: ফ্রেডেরিক উঙ্গার পাবলিশিং কোম্পানি।
  21. ব্লানদিনো, জিওভান্নি, "Le problema del linguas international auxiliari", "Philosophia del Cognoscentia e del Scientia", রোম, ইতালি: পন্টিফিসিয়া উনিভেরসিতাস লাতেরানেনসিস, পন্টিফিসিয়া উনিভেরসিতাস উর্বানিয়ানা, ১৯৮৯।
  22. "Radioemissiones in e re Interlingua", প্যানোরামা ইন ইন্টারলিঙ্গুয়া, সংখ্যা ৩, ২০০৬।
  23. "ИЗ ИСТОРИИ ИНТЕРЛИНГВИСТИЧЕСКОЙ МЫСЛИ В РОССИИ (রাশিয়ার আন্তঃভাষাবিজ্ঞান চিন্তাধারা থেকে )"। মিরএসপেরান্তো.কম। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ 
  24. ইয়ান ফান স্টীনবেরগেন। "কনস্ট্রাকটেড স্লাভিক ল্যাঙ্গুয়েজ"। Steen.free.fr। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ 
  25. ইভান ইলিয়েভ, শর্ট হিস্ট্রী অফ সিরিলিক অ্যালফাবেট (প্লোভদিভ, ২০১২), পৃ: ৬৭, ওয়েব সংস্করণ
  26. লুই কুতুরা; অটো ইয়েসপার্সেন; লেওপোল্ড ফাউন্ডলার; আর. লরেঞ্জ; ডব্লিউ. অস্টওয়াল্ড (১৯০৯)। "কন্সিডারেশানস অন দ্য ইন্ট্রোডাকশান অফ অ্যান ইন্টারন্যাশনাল ল্যাঙ্গুয়েজ ইন্টু সায়েন্স"। ইন্টারন্যাশানাল ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড সায়েন্স (ইংরেজি ভাষায়)। লন্ডন: কন্স্টেবেল এবং কোম্পানি লিমিটেড। পৃষ্ঠা -v-। সংগ্রহের তারিখ ২৬শে ফেব্রুয়ারি ২০১৮  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  27. সাপির, এডওয়ার্ড (১৯৩১), "দ্য ফাংশান অফ অ্যান ইন্টারন্যাশনাল অক্সিলিয়ারি ল্যাঙ্গুয়েজ", রোমানিক রিভ্যিউ (১১): ৪–১৫।
  28. সাপির, এডওয়ার্ড (১৯২৫), "মেমোর‍্যান্ডাম অন দ্য প্রবলেম অফ অ্যান ইন্টারন্যাশনাল অক্সিলিয়ারি ল্যাঙ্গুয়েজ", রোমানিক রিভ্যিউ (১৬): ২৪৪-২৫৬।
  29. ক্রেগ, রবার্ট এবং এনটনি আলেক্সান্ডার, Lango, a fully democratic approach towards an international auxiliary language based on reformed English, আইল অব ম্যান: ১৯৯৬
  30. মারিও পেই, ১৯৬১। ওয়ান ল্যাঙ্গুয়েজ ফর দ্য ওয়ার্ল্ড। নিউ ইয়র্ক: ডেভিন-আডেয়ার
  31. গ্রেগরি পল পি. মেয়েস (২০০৬), ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড ওয়ার্ল্ড অর্ডার ইন বাহাই পার্সপেক্টিভ: আ নিউ প্যারাডাইম রিভীল্ড। টি. ওমোনিয়ি এবং জে. এ. ফিশম্যান এক্সপ্লোরেশানস ইন দ্য সোশিওলজি অফ ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড রিলীজিয়ন, ডিসকোর্স অ্যাপ্রোচেস টু পলিটিক্স, সোসায়টি, অ্যান্ড কালচার খণ্ড ২০, আমস্টার্ডাম: জন বেনজামিনস, পৃ: ২৬-৪১। আইএসবিএন ৯৭৮৯০২৭২২৭১০২
  32. মার্ক ফেটেস (১৯৯৭), এসপেরান্তো অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ পলিসি: এক্সপ্লোরিঙ দ্য ইশুস, ভাষা সমস্যা এবং ভাষা পরিকল্পনা জার্নাল ২১, ৬৬-৭৭
  33. সামবাহসা উচ্চারণ (ইংরেজিতে)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  34. পিয়ের জানতন, এসপেরান্তু: ল্যাঙ্গুয়েজ, লিটারেচার, অ্যান্ড কমিউনিটি অনুবাদক হামফ্রে টোনকিন এবং অন্যান্য। স্টেট ইউনিভার্সিটি অফ নিউ ইয়র্ক প্রেস, ১৯৯৩। আইএসবিএন ০-৭৯১৪-১২৫৪-৭
  35. হার্লো, ডন (জানুয়ারি ৭, ২০০৬)। "এসে (হোপফুলি লঙ"অক্সল্যাঙ মেইলিঙ লিস্ট। মে ২৩, ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ২২, ২০১৮ 
  36. মারিও পেই, ওয়ান ল্যাঙ্গুয়েজ ফর দ্য ওয়ার্ল্ড (১৯৫৮)
  37. চার্লস কাইসেল ব্লিস। সেমান্টোগ্রাফি (ব্লিসিম্বলিক্স)। সিডনী: সেমান্টোগ্রাফি প্রেস, ১৯৬৫।
  38. রুবিনো, এফ., হায়হুর্স্ট, এ., এবং গুয়েইলমান, জে., জেস্টুনো: ইন্টারন্যাশানাল সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ অফ দ্য ডেফ
  39. Esenco kaj Estonteco de la Ideo de Lingvo Internacia, এল. এল. জামেনহফ, ১৯০০। Fundamenta Krestomatio-এ পুণর্মূদ্রণ, ১৯৯২ [১৯০৩]।
  40. রিচার্ড কে. হ্যারিসনের ফেয়ারওয়েল টু অক্সিলিয়ারি ল্যাঙ্গুয়েজেস ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৬ জুলাই ২০১২ তারিখে। ১৯৯৭।
  41. "টাইপস অফ নিউট্রালিটি, অ্যান্ড সেন্ট্রাল কন্সার্নস ফর অ্যান আইএএল"। অক্সল্যাঙ মেইলিঙ লিস্টে রিস্টো কুপসালা, ২রা ডিসেম্বর, ২০০৫।
  42. আলেক্জান্ডার গোদে, ইন্টারলিঙ্গুয়া: আ ডিকশানারি অফ দ্য ইন্টারন্যাশানাল ল্যাঙ্গুয়েজ (ভূমিকা), ১৯৭১, নিউ ইয়র্ক: ফ্রেডেরিক উঙ্গার পাবলিশিং কোম্পানি।
  43. মারিও পেই, ১৯৫৮। ওয়ান ল্যাঙ্গুয়েজ ফর দ্য ওয়ার্ল্ড। নিউ ইয়র্ক: ডেভিন-আডেয়ার

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]