অরুন্ধতী ভট্টাচার্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
অরুন্ধতী ভট্টাচার্য
ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্কের চতুর্বিংশ চেয়ারপার্সন]]
কাজের মেয়াদ
৭ অক্টোবর ২০১৩ – ৬ অক্টোবর ২০১৭
পূর্বসূরীপ্রতীপ চৌধুরী
উত্তরসূরীরজনীশ কুমার
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম (1956-03-18) ১৮ মার্চ ১৯৫৬ (বয়স ৬৮)
কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত
জাতীয়তাভারতীয়
দাম্পত্য সঙ্গীপ্রীতিময় ভট্টাচার্য
বাসস্থানমুম্বই, ভারত[১]
প্রাক্তন শিক্ষার্থীযাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়[১]
লেডি ব্র্যাবোর্ন কলেজ, কলকাতা

অরুন্ধতী ভট্টাচার্য হলেন একজন অবসরপ্রাপ্ত ভারতীয় ব্যাংকার এবং ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্কের প্রাক্তন চেয়ার পার্সন।[২] তিনি ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্ক গ্রুপের প্রথম মহিলা চেয়ার পার্সন ছিলেন। ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে ফোর্বস সংস্থার সমীক্ষায় তিনি বিশ্বের ২৫তম অতি শক্তিশালী মহিলা হিসেবে বিবেচিত হয়েছিলেন। ফরচুন নামে এক প্রখ্যাত সংস্থার বিশ্বের মহান নেতৃত্বের তালিকায় ২৬ নম্বর অর্জন করা তিনি একমাত্র ভারতীয় ছিলেন।

২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে তার এক সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়; যার শিরোনাম ছিল: "অরুন্ধতী ভট্টাচর্য: দ্য মেকিং অফ এসবিআইজ ফার্স্ট ওম্যান চেয়ার পার্সন", যেটা হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ অ্যাসেন্ডএ প্রকাশিত হয়েছিল।[৩]

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

অরুন্ধতী ভট্টাচার্য কলকাতা শহরে এক বাঙালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি তার শৈশবকাল অতিবাহিত করেছিলেন ভিলাই শহরে। তার পিতা প্রদ্যোৎ কুমার মুখার্জি বোকারো স্টিল প্ল্যান্টএ কাজ করতেন। তার মা কল্যাণী মুখার্জি বোকারোতে একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক ছিলেন। তিনি বোকারো সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল থেকে তার স্কুল জীবনের পড়াশোনা সম্পূর্ণ করেন।[৪]

প্রথমে কলকাতার লেডি ব্র্যাবোর্ন কলেজ এবং পরবর্তীতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ইংরেজি সাহিত্যে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন। তার স্বামী প্রীতিময় ভট্টাচার্য ,[৫] হলেন আইআইটি খড়গপুরএর একজন প্রাক্তন প্রফেসর।

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

অরুন্ধতী ভট্টাচার্য ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্কে যোগদান করেন। তিনি হলেন ভারত-কেন্দ্রিক ফরচুন ইন্ডিয়া ৫০০ কোম্পানিকে নেতৃত্বদানকারী প্রথম মহিলা। ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে তার ২২ বছর বয়সে তিনি একজন প্রোবেশনারি অফিসার হিসেবে ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্কের কাজে যোগ দিয়েছিলেন।[৬] ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্কে ৩৬ বছরের কর্মজীবনে তিনি বিভিন্ন রকম পদ অলংকৃত করেছিলেন; তার মধ্যে আছে: ফরেন এক্সচেঞ্জ, ট্রেজারি, রিটেইল অপারেশন্স, হিউম্যান রিসোর্সেস এবং ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকিং। এছাড়াও অন্যান্য যেসব পদমর্যাদায় তিনি কাজ করেছেন, সেগুলো হল: ব্যাংকের বাণিজ্যিক শাখা - স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া ক্যাপিটাল মার্কেটস; চিফ জেনারেল ম্যানেজার ইনচার্জ অফ নিউ প্রোজেক্টস। তিনি ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্কের নিউ ইয়র্ক কার্যালয়েও কাজ করেছেন। ব্যাংকের নতুন সব বাণিজ্যিক প্রকল্প চালু করার কাজের সঙ্গেও তিনি ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন; যেমন, এসবিআই জেনারেল ইন্সুরেন্স, এসবিআই কাস্টোডিয়ল সার্ভিসেস, এসবিআই পেনশন ফান্ডস প্রা. লি., এবং এসবিআই ম্যাকয়ারি ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফান্ড।[৬] প্রতীপ চৌধুরী ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ সেপ্টেম্বর ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান পদ থেকে অবসর গ্রহণ করলে অরুন্ধতী ভট্টাচার্য তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন।[৭] ব্যাংকের মহিলা কর্মীদের জন্যে তিনি দু-বছর বিশ্রামকালীন ছুটির নিয়ম চালু করেছিলেন, যাতে তারা মাতৃত্বকালীন অথবা বয়স্কদের দেখভালের সুবিধে পান। বিশ্ব নারী দিবসে তিনি ব্যাংকের সকল মহিলা কর্মীকে সার্ভিকাল ক্যান্সার বিরোধী টীকা দেওয়ার ঘোষণা করেছিলেন।

২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে ফোর্বস সংস্থার দ্বারা অরুন্ধতী ভট্টাচার্য বিশ্বের ২৫তম অতি শক্তিশালী মহিলা হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছিলেন, যেটা ছিল এই তালিকায় তার প্রথম নাম অন্তর্ভুক্তি।[২] ওই একই বছরে ফরেন পলিসি ম্যাগাজিন দ্বারা এফপি শীর্ষ বিশ্ব চিন্তাবিদগণএর তালিকায় তার নাম নথিমুক্ত হয়েছিল।[৮] ফরচুনের সমীক্ষায় তাকে এশিয়া প্রশান্ত মহাসগরীয় অঞ্চলের ৪র্থ অতি শক্তিশালী মহিলা নামে নথিভুক্ত করা হয়েছিল।[৯] ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে ইন্ডিয়া টুডে পত্রিকা ২০১৭ বর্ষের ভারতের ৫০ জন অতি শক্তিশালী মানুষের তালিকায় তাকে ১৯তম স্থান দেওয়া হয়েছিল।[১০]

২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবরে তার অবসর গ্রহণের সময় নির্ধারিত ছিল, কিন্তু তার কার্যকালের মেয়াদ অক্টোবর ২০১৭ পর্যন্ত বৃদ্ধি মঞ্জুর করা হয়, অভিযুক্তভাবে এসবিআইয়ের পাঁচটা সহযোগী ব্যাংক এবং ভারতীয় মহিলা ব্যাংকের একসঙ্গে মিলিত হওয়া, স্থূল অকর্মক্ষম সম্পদ বাড়িয়ে তোলার (জিএনপিএ) পদ্ধতির ফল হয়েছিল ৭৩ শতাংশ সম্পদ বৃদ্ধি; বর্তমান সরকার ব্যাংকস বোর্ড ব্যুরোর মাধ্যমে এগোনো সঠিক বিবেচনা করেছিল, যারা তার কার্যকালের মেয়াদ বৃদ্ধি করে।[১১]

২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি দ্য এশিয়ান অ্যাওয়ার্ডসে বছরের বিজনেস লিডার নামাঙ্কিত হন।[১২] ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ অক্টোবর থেকে পাঁচ বছরের জন্যে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের অ্যাডিশনাল ডাইরেক্টর, 'ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডাইরেক্টর' হিসেবে যোগদান করেছেন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "অরুন্ধতী ভট্টাচার্য"  Forbes
  2. "The World's 100 Most Powerful Women"Forbes। Forbes। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুন ২০১৬ 
  3. "Arundhati Bhattacharya: The Making of SBI's First Woman Chairperson"। hbrascend। ১২ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মার্চ ২০১৯ 
  4. "All you need to know about Arundhati Bhattacharya, SBIs first woman chief"। FirstPost। 
  5. "Steady climb to the top"। telegraphindia। 
  6. Mayur Shetty (৮ অক্টোবর ২০১৩)। "SBI gets its first woman chair in 206 years"। The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ১৪ অক্টোবর ২০১৩ 
  7. "Arundhati Bhattacharya is new chief of SBI" 
  8. "Narendra Modi named top decision maker, BJP's Amit Shah, SBI's Arundhati Bhattacharya too in 'Global Thinkers' list"। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ মার্চ ২০১৯ 
  9. "Fortune's List of Most Powerful Women in Asia-Pacific Has 8 Indians" 
  10. "India's 50 powerful people"India Today। এপ্রিল ১৪, ২০১৭। 
  11. [১][২]Arundhati Bhattacharya term as SBI Chairman extended till October 2017
  12. "Asian Awards 2018: Recognition with Lots of Glitz and Glamour"। Desiblitz। ২৯ এপ্রিল ২০১৮।