অমর গোপাল বসু

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
অমর গোপাল বসু
Amar Gopal Bose
অমর গোপাল বসু
জন্ম (1929-11-02) নভেম্বর ২, ১৯২৯ (বয়স ৯৪)
মৃত্যুজুলাই ১২, ২০১৩(2013-07-12) (বয়স ৮৩)
মাতৃশিক্ষায়তনম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি
পেশাপ্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, বোস কর্পোরেশন
দাম্পত্য সঙ্গীপ্রেমা বোস (বিচ্ছেদ)
সন্তানভানু বসু, মায়া বসু
ওয়েবসাইটBose Profile

অমর গোপাল বসু (ইংরেজি: Amar Gopal Bose; জন্ম ২রা নভেম্বর, ১৯২৯ - ১২ জুলাই, ২০১৩) একজন বাঙ্গালী ভারতীয়-আমেরিকান ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার এবং বিলিয়নিয়ার উদ্যোক্তা। অমর বোস (Amar Bose) নামেই তিনি অধিক পরিচিত। বিশ্বখ্যাত অডিও ইকু্ইপমেন্ট নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান বোস কর্পোরেশন এর তিনি প্রতিষ্ঠাতা চেয়াম্যান।

২০০৭ সালে তিনি বিশ্বের ২৭১তম ধনী ব্যক্তি হিসাবে ফোর্বস এর ৪০০ শীর্ষ ধনী ব্যক্তির তালিকায় স্থান করে নেন। এ সময় তার নীট সম্পদের পরিমাণ ছিল ১.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।[১] ২০০৯ সালে তিনি এই তালিকা থেকে ছিটকে পড়েন এবং ২০১১ সালে আবার এই তালিকায় ফিরে আসেন; এবার তার নীট সম্পদের পরিমাণ ছিল ১.০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।[২]

২০১১ সালে, তিনি MIT-এর শিক্ষা ও গবেষণা মিশনকে টিকিয়ে রাখতে এবং অগ্রসর করার জন্য নন-ভোটিং শেয়ারের আকারে MIT-কে কোম্পানির বেশিরভাগ অংশ দান করেছিলেন।[৩]

পরিবার এবং শিক্ষা[সম্পাদনা]

অমর গোপাল বসুর জন্ম ও বেড়ে ওঠা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের ফিলাডেলফিয়ায়। তার বাবা একজন বাঙ্গালী এবং মা শ্বেতাঙ্গ আমেরিকান। তার বাবা ননী গোপাল বসু ছিলেন একজন বিট্রিশ বিরোধী বাঙ্গালী বিপ্লবী[৪] তিনি তার রাজনৈতিক কর্মকান্ডের জন্য কয়েকবার কারাবন্দীও হন। তাই বিট্রিশ উপনিবেশ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার এড়াতে ১৯২০ সালে তিনি কলকাতা থেকে পালিয়ে যুক্তরাষ্ট্র চলে আসেন।

অমর বসু মাত্র তের বছর বয়সেই তার উদ্যোক্তা প্রতিভার পরিচয় দেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন এ সময়ে পরিবারের জন্য বাড়তি আয়ের যোগান দিতে তিনি তার স্কুলের বন্ধুদের নিয়ে মডেল ট্রেন ও হোম রেডিও মেরামতের একটি ছোট পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করেন।[৫]

পেনসিলভানিয়ার অ্যাবিংটনে অবস্থিত অ্যাবিংটন সিনিয়র হাইস্কুল থেকে স্নাতক সম্পন্ন করার পর বোস ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজিতে ভর্তি হন এবং ১৯৫০ এর শুরুর দিকে সেখান থেকে ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ বিএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর বোস নেদারল্যান্ডের এইডোভেন এ এনভি ফিলিপস ইলেক্ট্রনিকস এর গবেষণা ল্যাবে এক বছর কাজ করেন। পরবর্তীতে তিনি ফুলব্রাইট রিসার্চ স্টুডেন্ট হিসাবে দিল্লিতে এক বছর কাটান এবং এখানেই তার হবু স্ত্রী প্রেমার সাথে পরিচয় হয় (বর্তমানে তার সাথে বিচ্ছেদ হয়ে গেছে)। তিনি এমআইটি থেকে ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ পিএইচডি সম্পন্ন করেন; তার অভিসন্দর্ভের বিষয়বস্তু ছিল নন-লিনিয়ার সিস্টেমস।

তার ছেলে ভানু বসু Vanu, Inc. এর প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। এ প্রতিষ্ঠানটি সফটওয়্যার ভিত্তিক রেডিও টেকনোলজি সরবরাহ করে যার মাধ্যমে একটি বেজ স্টেশন একই সাথে GSM, CDMA, এবং iDEN পরিচালনা করতে পারে। অমর বসুর মেয়ে, মায়া বসু একজন পেশাদার কিরোপ্রাকটর

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

স্নাতক সম্পন্ন করার পর অমর বসু এমআইটিতে সহকারী অধ্যাপক হিসাবে যোগদেন। ১৯৫৬ সালে এই প্রতিষ্ঠানে অধ্যাপনার কাজে যোগ দিয়ে ২০০১ সাল পর্যন্ত অধ্যাপনা করেন তিনি। অমর গোপাল বসু লক্ষ্য করেছিলেন যে, একটা বিরাট হলঘরে মঞ্চ থেকে নির্গত শব্দের মাত্র ২০ শতাংশ শুনতে পান একজন শ্রোতা আর বাকি ৮০ শতাংশই আসে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়ে। এই ধারণা থেকেই ‘সাইকো-অ্যাকোয়াস্টিক’ নামে শব্দবিজ্ঞানের নতুন এক শাখার জন্ম হয়। এই তত্ত্বের উপর নির্মিত ২২০১ স্পিকারই ছিল প্রথম ডিরেক্ট বা রিফ্লেক্টিং স্পিকার। এই স্পিকারের বাণিজ্যিক বিপণনের জন্য অমর গোপাল বসু নিজের একটি সংস্থা খোলেন ‘বোস কর্পোরেশন’ নামে।

সম্মাননা এবং পুরস্কার[সম্পাদনা]

  • লাউড স্পীকার ডিজাইন, টু-স্টেট এমপ্লিফায়ার-মডুলেটর এবং নন-লিনিয়ার সিস্টেমস এ অবদানের জন্য ১৯৭২ সালে IEEE এর ফেলো নির্বাচিত হন।
  • অনারারি সদস্য, অডিও ইঞ্জিনিয়ারিং সোসাইটি , ১৯৮৫।
  • বার্কলি কলেজ অফ মিউজিক থেকে অনারারি ডক্টরেট অফ মিউজিক , ১৯৯৪
  • বোস ২০০৮ সালে জাতীয় উদ্ভাবক হল অফ ফেমে অন্তর্ভুক্ত হন।
  • ২০১০ IEEE/RSE উলফসন জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল পুরস্কার , "শব্দ প্রজনন, শিল্প নেতৃত্ব এবং প্রকৌশল শিক্ষায় ভোক্তা ইলেকট্রনিক্সে অসামান্য অবদানের জন্য"।
  • ২০১১ সালে, তিনি এমআইটি থেকে শীর্ষ ১৫০ উদ্ভাবক এবং ধারণাগুলির MIT150 তালিকায় #৯-এ তালিকাভুক্ত হন ।
  • বেরিলিয়াম লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড, অ্যাসোসিয়েশন অফ লাউডস্পিকার ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যান্ড অ্যাকোস্টিক্স ইন্টারন্যাশনাল, ২০১৪।
  • দ্য এশিয়ান অ্যাওয়ার্ডস ২০১৫ -এ প্রতিষ্ঠাতা পুরস্কার ।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Four Indian Americans make it to Forbes list"। www.expressindia। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ 
  2. "Amar Bose's profile"। www.forbes.com। সংগ্রহের তারিখ ২ এপ্রিল ২০১১ 
  3. "Amar Bose '51 makes stock donation to MIT"MIT News | Massachusetts Institute of Technology (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-০৭ 
  4. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৭ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ জুলাই ২০১১ 
  5. Siliconeer: January 2005

বহি:সংযোগ[সম্পাদনা]