গণপতি চক্রবর্তী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
Ganapati Chakraborty
গণপতি চক্রবর্তী
গণপতি চক্রবর্তী তাসের খেলা দেখাচ্ছেন।
জন্ম১৮৫৮
মৃত্যু২০ নভেম্বর ১৯৩৯
জাতীয়তাব্রিটিশ ভারত
পেশাজাদুকর
পরিচিতির কারণবাংলায় আধুনিক জাদুবিদ্যার পথিকৃৎ

গণপতি চক্রবর্তী (ইংরেজি: Ganapati Chakraborty) (১৮৫৮ - ২০ নভেম্বর ১৯৩৯) ছিলেন একজন বিখ্যাত জাদুকর। তিনি তার চিত্তাকর্ষক জাদুবিদ্যার কৌশলগুলির জন্য বিখ্যাত ছিলেন। তাকে বাংলার আধুনিক জাদুবিদ্যার পথিকৃৎ বলে গণ্য করা হয়। [১] তিনি পি সি সরকার এবং কে লালের পরামর্শদাতা ছিলেন।

প্রথম জীবন[সম্পাদনা]

গণপতির জন্ম হয় হুগলি জেলার শ্রীরামপুরের কাছে ছাতরা গ্রামে একটি জমিদার পরিবারে। তার ছেলেবেলায় তিনি লেখাপড়ায় তেমন একটা উৎসাহী ছিলেন না। তিনি বরং গান-বাজনা প্রতি বেশি উৎসাহী ছিলেন। সতেরো বা আঠারো বছর বয়েসে তিনি গৃহত্যাগ করেন হিন্দু সাধুদের থেকে গুপ্ত মন্ত্রতন্ত্র, ভবিষ্যৎ ও অদৃষ্ট গণনা, ঝাড়ফুঁক এবং নানা রোগের অলৌকিক চিকিৎসাবিদ্যা শেখার জন্য। তিনি দু-একজন যাদুকরের সংস্পর্শেও এসেছিলেন।[১]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

গ্রেট বেঙ্গল সার্কাসের সদস্যদের সাথে গণপতি চক্রবর্তী (উপবিষ্ট অবস্থায় বামদিক থেকে তৃতীয়

গণপতি প্রিয়নাথ বসুর গ্রেট বেঙ্গল সার্কাসে যোগ দেন এবং কৌতুক অভিনয় এবং মজাদার খেলা দেখিয়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। "ইলিউশন বক্স" এবং "ইলিউশন ট্রি" তার প্রযোজিত বিখ্যাত ও চমকপ্রদ দুটি খেলা ছিল। এই দুটি খেলা দেখানোর সাথে সাথেই তিনি তিনি গ্রেট বেঙ্গল সার্কাসের সেরা শিল্পীর মর্যাদা পান।[১]

১৯০৮ সালে প্রফেসর বোসের সার্কাসের সাথে সিঙ্গাপুর সফরের সময় তার তাসের খেলা এবং তার অদৃশ্য হওয়ার খেলা সফলতা লাভ করে। [২] এরপর তার খেলার তালিকায় যুক্ত হয় "কংস-কারাগার"। তিনি ভৌতিক ক্ষমতা সিদ্ধ এই ধারণা দর্শকদের মনে দৃঢ়মূল হয়েছিল। [১]

তার "ইলিউশন বক্স", "ইলিউশন ট্রি" এবং "কংস কারাগার" এই তিনটি খেলাতেই তিনি অতি কঠিন ও জটিল বন্ধন দশা থেকে অবলীলায় এবং ক্ষিপ্রতার সাথে মুক্ত হয়ে আসতেন এবং আবার সেই পূর্বাবস্থাতে ফিরে যেতেন। এই রকমের পলায়নী খেলাতে তিনি পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ জাদুকর আমেরিকার হ্যারি হুডিনির (১৮৭৩ - ১৯২৬) সঙ্গে তুলনীয়। [৩]

খুব কড়া মেজাজ এবং রুক্ষ কথাবার্তার জন্য সার্কাসের সহকর্মিরা তাকে "দুর্বাসা মুনি" আখ্যা দিয়েছিল। [১]

তিনি পরে গ্রেট বেঙ্গল সার্কাসের কয়েকজন শিল্পীকে নিয়ে আলাদা দল গড়ে তোলেন। এই দল সারা ভারতের বিভিন্ন জায়গায় খেলা দেখিয়ে সুনাম ও অনেক অর্থ উপার্জন করে।[১]

পরবর্তী জীবন[সম্পাদনা]

শেষ জীবনে কলকাতার কাছে বরাহনগরে বাড়ি ও মন্দির তৈরি করে সাধনভজনে দিন কাটান। [১]

তার রচিত গ্রন্থ ছিল "যাদুবিদ্যা" যা ১৩৩৯ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত হয়েছিল।[৩]

অকৃতদার গণপতির অনেক গোপন দান ছিল। তিনি তার সম্পত্তি শ্রী ভূপেন্দ্রনাথ রায় চৌধুরীকে দান করেন। [১]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. সেনগুপ্ত, সুবোধ চন্দ্র; বসু, অঞ্জলি, সম্পাদকগণ (জানুয়ারি ২০০২)। "গণপতি চক্রবর্তী" [Ganapati Chakraborty]। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান (Bibliographical Dictionary) (Bengali ভাষায়)। Volume 1 (4th সংস্করণ)। কলকাতা: শিশু সাহিত্য সংসদ। পৃষ্ঠা 127। আইএসবিএন 81-85626-65-0 
  2. "Bose's Circus"The Singapore Free Press and Mercantile Advertiser। Singapore। ১৫ অক্টোবর ১৯০৮। সংগ্রহের তারিখ ৫ মার্চ ২০১৫ 
  3. ভারতকোষ - তৃতীয় খণ্ড