বহেড়া

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(Terminalia bellirica থেকে পুনর্নির্দেশিত)

বহেড়া
Terminalia bellirica
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: উদ্ভিদ
বিভাগ: Tracheophyta
শ্রেণী: Magnoliopsida
বর্গ: Myrtales
পরিবার: Combretaceae
গণ: Terminalia
প্রজাতি: Terminalia bellirica
দ্বিপদী নাম
Terminalia bellirica
(Gaertn.) Roxb.
প্রতিশব্দ

Terminalia punctata Roth
Terminalia moluccana Roxb.
Terminalia laurinoides Teijsm. & Binn.
Terminalia gella Dalz.
Terminalia eglandulosa Roxb. ex C. B. Clarke
Terminalia biticaria Roxb.
Terminalia belirica (Gaertn.) Wall.
Terminalia attenuata Edgew.
Myrobalanus laurinoides Kuntze
Myrobalanus bellirica Gaertn.
Buceras bellirica (Gaertn.) Lyons

শুকনো বহেড়া ফল

বহেড়া (বৈজ্ঞানিক নাম: Terminalia bellirica) (ইংরেজি: bahera or beleric or bastard myrobalan) বা বিভীতকী Combretaceae পরিবারের Terminalia গণের একটি বৃক্ষ।

বিবরণ[সম্পাদনা]

বহেড়া গাছ উচ্চতায় ৬০-১০০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয় অর্থাৎ খুবই বড় গাছ। গাছের গুড়িও অনেক লম্বা। শীত কালে এর ফল পুষ্ট হয়, তারপর নিজ থেকেই গাছ থেকে খসে পড়ে।

এ গাছের ফল দু’রকমের হয়-এক প্রকার গোল, আরেকটি ডিম্বাকৃতির। এর ফল ও ফলের শাঁস ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ভারতীয় উপমহাদেশের লোধা আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকেরা তাদের মনের প্রফুল্লতা আনার জন্য এই ফলের শাঁস খায়।[১]

প্রাপ্তিস্থান[সম্পাদনা]

বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলেই বহেড়া গাছ জন্মে। যেমন ভাওায়ালের অঞ্চল মধুপুর গড়, গাজীপুর, বগুড়া, দিনাজপুর, রামগড়, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং ভারতের ছোটনাগপুর, বিহার, হিমাচল প্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশে প্রধানত এ গাছ বেশি দেখা যায়। পশ্চিমবঙ্গের বীরভুম, বাঁকুড়া ও বর্ধমানের শালবনেও এ গাছ প্রচুর জন্মে। উত্তোলণের সময়: শীতের প্রাক্কালে ফল সংগ্রহ করা হয়।

আবাদী/অনাবাদী/বনজ: এই গাছটি সাধারনতঃ বনজ জাতীয় গাছ।

চাষাবাদের ধরণ[সম্পাদনা]

গ্রীষ্মকালে এই গাছে ফুল আসে। তারপর হয় ফল। সেই ফল পুষ্ট হয় শীতের প্রাক্কালে। তারপর আপনা আপনি ঝরে পড়ে। এই গাছ রোপনের দরকার হয়না। পতিত জমির ধারে, জমির আইলে এটি আপনা আপনি জন্মে।

ঔষধি গুণাগুণ[২][সম্পাদনা]

  • আমাশয়: সাদা বা রক্ত যে কোনও আমাশয়ে প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস পানির সাথে এক চামচ বহেড়া গুঁড়া খেলে উপকার পাওয়া যায়।
  • অকালে চুল পাকলে: বহেড়ার বিচি বাদ দিয়ে ১০ গ্রাম ছাল নিয়ে পানি দিয়ে বাটুন। এক কাপ পানিতে গুলে পানি ছেঁকে নিন, এবার সে পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এর ফলে চুল ওঠা বন্ধ হয়।
  • শ্লেস্মায়: আধা চা-চামচ বহেড়া গুঁড়া, ঘি গরম করে তার সাথে মিশিয়ে আবার গরম করে মধু মিশিয়ে চেটে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
  • ইন্দ্রিয়-দৌর্বল্যে: এ রোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে রোজ দু’টি করে বহেড়া বিচির শাঁস খেতে হবে। এর ফলে এই রোগ ভাল হয়।
  • শ্বেতী রোগে: বহেড়া বিচির শাঁসের তেল বের করে শ্বেতীর ওপর লাগালে গায়ের রং অল্পদিনের মধ্যেই স্বাভাবিক হবে।
  • অকালে টাক পড়লে: বহেড়া বিচির শাঁস অল্প পানিতে মিহি করে বেটে চন্দনের মতো টাকে লাগালে, টাক সেরে যায়।
  • ফুলা কমানোর জন্য: বহেড়ার বিচি বাদ দিয়ে ছাল বেটে একটু গরম করে ফুলায় প্রলেপ দিলে ফুলা কমে যায়।
  • কৃমি রোগ : বহেড়া বিচি বাদ দিয়ে শাঁসের গুঁড়া ডালিম পাতার রসের সাথে মিশিয়ে খেলে কৃমি দূর হয়।
  •  আমলকী, হরিতকী ও বহেড়া এই তিন ফলের মিশ্রণকে ত্রিফলা বলে। আয়ুর্বেদিক ওষুধ হিসেবে ত্রিফলা স্বাস্থ্যের জন্য বহুমাত্রিক উপকারী। [৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. D. C. Pal, S. K. Jain, "Notes on Lodha medicine in Midnapur District, West Bengal, India", Economic Botany, October–December 1989, Volume 43, Issue 4, pp 464-470
  2. "অকালে চুলপাকা কমায় বহেড়া, ইত্তেফাক, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০"। ২ নভেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ জানুয়ারি ২০২১ 
  3. "স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ত্রিফলা, ইত্তেফাক, ১৫ জুলাই ২০১৫"। ২৯ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০২০