বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(Space Research and Remote Sensing Organization থেকে পুনর্নির্দেশিত)
বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান
স্পারসো
মহাকাশ সংস্থা রূপরেখা
গঠিত১৯৮০ (1980)
যার এখতিয়ারভুক্ত বাংলাদেশ
সদর দপ্তরআগারগাঁও, ঢাকা
মহাকাশ সংস্থা নির্বাহী
  • মোঃ রাশিদুল ইসলাম[১][২], চেয়ারম্যান
ওয়েবসাইটsparrso.gov.bd

বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান (সংক্ষেপে: স্পারসো) বাংলাদেশ সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সরকারি স্বায়ত্তশাসিত গবেষণা প্রতিষ্ঠান। এটি ঢাকা শহরের আগারগাঁওয়ে অবস্থিত। ১৯৮০ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের ঘূর্ণিঝড় ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস প্রদানে এ কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সংস্থাটি ল্যান্ডস্যাটNOAA নামক কৃত্রিম উপগ্রহ ব্যবহার করে ভূমি জরিপে নিয়োজিত। বাংলাদেশের উপগ্রহ চিত্রগুলো স্পারসোর তত্ত্বাবধানে থাকে।[৩]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

১৯৬৮ সালে পূর্ব পাকিস্তানের পরমাণু শক্তি কেন্দ্রে অটোমেটিক পিকচার ট্রান্সমিশন (এপিটি) গ্রাউন্ড স্টেশন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশে মহাকাশ প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর সরকার দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ জরিপ, পরিবেশ, দুর্যোগ পর্যবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনায় এ প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশ ইআরটিএস প্রোগ্রাম নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। এ প্রকল্পের সফলতার পর ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ ল্যান্ডসেট প্রোগ্রাম (বিএলপি) পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৮০ সালে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের মহাকাশ এবং বায়ুমণ্ডল গবেষণা কেন্দ্র (এসএআরসি) এবং বিএলপি একত্রিত করে বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান গঠন করা হয়। মহাকাশ বিজ্ঞান ও দূর অনুধাবন প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার এবং এই প্রযুক্তির উপর গবেষণা, এর যথাযথ প্রয়োগ ও সম্প্রসারণের পদক্ষেপ হিসাবে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ কর্তৃক ১৯৯১ সালের ২৯ নং আইন দ্বারা বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান (স্পারসো) পুনঃগঠিত হয়।

কার্যাবলী[সম্পাদনা]

প্রতিষ্ঠানের কার্যাবলী নিম্নরূপ:[৪]

(ক) কৃষি, বন, মৎস, ভূ-তত্ত্ব, মানচিত্র অঙ্কন, পানি সম্পদ, ভূমি ব্যবহার, আবহাওয়া, পরিবেশ, ভূগোল, সমুদ্র, বিজ্ঞান, শিক্ষা এবং জ্ঞান ও বিজ্ঞানের অন্যান্য ক্ষেত্রে মহাকাশ ও দূর অনুধাবন প্রযুক্তিকে শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবহার করা এবং উক্ত প্রযুক্তির উন্নয়ন ও ব্যবহারিক প্রয়োগের জন্য গবেষণা কার্য পরিচালনা করা;
(খ) এ উল্লিখিত গবেষণা কার্যের ফলাফল সরকার ও বিভিন্ন সংস্থাকে অবহিত করা এবং তৎসক্রান্ত তথ্য বিতরণ করা;
(গ) মহাকাশ ও দূর অনুধাবন প্রযুক্তি সম্পর্কে বিভিন্ন দেশের নীতি সরকারকে অবহিত করা এবং তত্সম্পর্কে সরকারের নীতি নির্ধারণের ব্যাপারে পরামর্শ প্রদান করা;
(ঘ) মহাকাশ ও দূর অনুধাবন প্রযুক্তি সম্পর্কে সমীক্ষা, জরিপ, প্রশিক্ষণ ও কারিগরী গবেষণার ব্যবস্থা করা এবং তৎসক্রান্ত বিষয়ে অন্য কোন দেশী, বিদেশী বা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার সহিত সহযোগিতা করা;
(ঙ) মহাকাশ ও দূর অনুধাবন প্রযুক্তি সম্পর্কে গবেষণা পরিচালনার জন্য প্রকল্প প্রণয়ন করা এবং সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, উহা বাস্তবায়ন করা;
(চ) উপরিউক্ত কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় যে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা৷

বিভাগ[সম্পাদনা]

স্পারসোর নিন্মলিখিত বিভাগ ও শাখা রয়েছে:

  • কৃষি বিভাগ
  • পানি সম্পদ বিভাগ
  • বন বিভাগ
  • ভূতত্ত্ব বিভাগ
  • মৎস্য বিভাগ
  • সমুুদ্র বিজ্ঞান বিভাগ
  • যান্ত্রিক এবং উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণ বিভাগ
  • গ্রাউন্ড স্টেশন বিভাগ
  • আলোক চিত্র বিভাগ
  • মানচিত্রাংকন বিভাগ
  • বায়ুমন্ডল গবেষণা বিভাগ
  • এগ্রো এন্ড হাইড্রোমেটিওরোলজি বিভাগ

শাখা[সম্পাদনা]

  • প্রশাসন ও সংস্থাপন শাখা
  • হিসাব ও বাজেট শাখা
  • তথ্য শাখা
  • গ্রন্থাগার
  • ভাণ্ডার ও সংগ্রহ শাখা
  • নিরাপত্তা শাখা

উল্লেখযোগ্য কাজ[সম্পাদনা]

বঙ্গবন্ধু-১ বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ প্রকল্প। এর ভর ১,৩০০ কেজি (২,৯০০ পাউন্ড) এবং ক্ষমতা ১,৬০০ ওয়াট। এটি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন কর্তৃক বাস্তবায়িত হয়েছে। যার উৎক্ষেপনের খরচ ৩ হাজার ২৪৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ১ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা নিজেদের তহবিল থেকে এবং বাকি ১ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা বিদেশি সংস্থার কাছ থেকে ঋণ হিসাবে নেওয়া হয়।এক্সিম ব্যাংক যুক্তরাষ্ট্র, এইচএসবিসি ফ্রান্স, জাপান ব্যাংক অব ইন্টারন্যাশনাল, সিডব্লিউজি গালফ ইন্টারন্যাশনাল অব ইউকে এবং চায়ন গ্রেটওয়াল ইন্ড্রাস্ট্রি করপোরেশন এ প্রকল্পে ঋণ দিয়েছে। ডিপিপিতে এ প্রকল্পের মেয়াদ ছিল জুন ২০১৬। এর জন্য কাজ করেছে মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন কেন্দ্র (স্পারসো) ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন

আরো পড়ুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান (স্পারসো)"www.sparrso.gov.bd (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০৯ 
  2. প্রতিবেদক, জ্যেষ্ঠ। "স্পারসোর চেয়ারম্যান হলেন আরেক অতিরিক্ত সচিব রাশেদুল"bdnews24। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০৯ 
  3. "স্পারসো - বাংলাপিডিয়া"bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-২৫ 
  4. "বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯১"bdlaws.minlaw.gov.bd। ২০ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ অক্টোবর ২০১৮ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]