নরেন তামানে

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(Naren Tamhane থেকে পুনর্নির্দেশিত)
নরেন তামানে
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামনরেন্দ্র শঙ্কর তামানে
জন্ম(১৯৩১-০৮-০৪)৪ আগস্ট ১৯৩১
বোম্বে (বর্তমানে: মুম্বই), মহারাষ্ট্র, ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যু১৯ মার্চ ২০০২(2002-03-19) (বয়স ৭০)
মুম্বই, মহারাষ্ট্র, ভারত
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
ভূমিকাউইকেট-রক্ষক, প্রশাসক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৭২)
১ জানুয়ারি ১৯৫৫ বনাম পাকিস্তান
শেষ টেস্ট৩০ ডিসেম্বর ১৯৬০ বনাম পাকিস্তান
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ২১ ৯৩
রানের সংখ্যা ২২৫ ১৪৫৯
ব্যাটিং গড় ১০.২২ ১৮.২৩
১০০/৫০ -/১ ১/৫
সর্বোচ্চ রান ৫৪* ১০৯*
বল করেছে - ৬৬
উইকেট -
বোলিং গড় - ২১.৫০
ইনিংসে ৫ উইকেট - -
ম্যাচে ১০ উইকেট - -
সেরা বোলিং - ২/৪৩
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৩৫/১৬ ১৭৪/৭৯
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৪ জানুয়ারি ২০২০

নরেন্দ্র শঙ্কর তামানে (উচ্চারণ; মারাঠি: नरेन ताम्हणे; জন্ম: ৪ আগস্ট, ১৯৩১ - মৃত্যু: ১৯ মার্চ, ২০০২) তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের মহারাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণাধীন বোম্বে এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ভারতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও ক্রিকেট প্রশাসক ছিলেন। ভারত ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি।[১][২][৩] ১৯৫৫ থেকে ১৯৬০ সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে মুম্বই দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ উইকেট-রক্ষকের দায়িত্ব পালন করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে কার্যকরী ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন করেছেন নরেন তামহানে নামে পরিচিত নরেন তামানে

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

১৯৫১-৫২ মৌসুম থেকে ১৯৬৮-৬৯ মৌসুম পর্যন্ত নরেন তামানে’র প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। বোম্বে দলের পক্ষে ১৯৫৩-৫৪ মৌসুম থেকে ১৯৬৩-৬৪ মৌসুম পর্যন্ত রঞ্জী ট্রফিতে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

আকস্মিকভাবে উইকেট-রক্ষণের দিকে ধাবিত হয়েছিলেন। প্রকৃতপক্ষে খেলোয়াড়ী জীবনের সূচনাকালে ধীরগতিসম্পন্ন বোলার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। ক্লাব দলে খেলাকালীন নিয়মিত উইকেট-রক্ষকের অনুপস্থিতিতে তাকে উইকেট-রক্ষণের দিকে অগ্রসর হতে সহায়তা করেছিল। ২২ বছর বয়সে বোম্বে দলের পক্ষে রঞ্জী ট্রফিতে প্রথম খেলেন।

সর্বমোট ৯৩টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ১৭৫ ক্যাচ ও ৭৮ স্ট্যাম্পিং করেছিলেন তিনি। বোম্বে ট্রফিতে প্রথম উইকেট-রক্ষক হিসেবে ১০০ ডিসমিসালের রেকর্ড গড়েন। ১৮.২৩ গড়ে ও এক সেঞ্চুরি সহযোগে ১,৪৫৯ রান সংগ্রহ করেন। তন্মধ্যে, ১৯৫৮-৫৯ মৌসুমে বোম্বের সদস্যরূপে বরোদার বিপক্ষে অপরাজিত ১০৯ রানের ইনিংস খেলেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে একুশটি টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন নরেন তামানে। ১ জানুয়ারি, ১৯৫৫ তারিখে ঢাকায় স্বাগতিক পাকিস্তান দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ৩০ ডিসেম্বর, ১৯৬০ তারিখে কলকাতায় একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

রঞ্জী ট্রফি প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার এক মৌসুম পর ১৯৫৪-৫৫ মৌসুমে ভারত দল প্রথমবারের মতো পাকিস্তান গমন করে। সুভাষ গুপ্তের লেগ স্পিন ও বিনু মানকড়ের ধীরগতিসম্পন্ন বামহাতি বোলিং সহজাত ভঙ্গীমায় গ্লাভস বন্দী করেছিলেন। সাত স্ট্যাম্পিংসহ ১৯টি ডিসমিসাল ঘটিয়ে ক্রীড়ামোদীদের কাছে বিস্ময়ের পাত্রে পরিণত হন। এছাড়াও, নিজস্ব দ্বিতীয় টেস্টে ৫৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। ১০.২২ গড়ে রান সংগ্রহ করেছিলেন। ঐ পর্যায়ের ক্রিকেটে তিনি কখনো ব্যাট হাতে দক্ষতার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে পারেননি। ভারতের পক্ষে দুই টেস্ট বাদে পরবর্তী ১৩ টেস্টে অংশগ্রহণ করেন। এরপর থেকেই দল নির্বাচকমণ্ডলী নানা জোশীবুধি কুন্দরনকে তাদের শ্রেয়তর ব্যাটিংশৈলীর কারণে প্রাধান্য দেয় ও তাকে দলে আসা-যাওয়ার পালনায় থাকতে হয়েছিল।

১৯৫৯ সালে হেডিংলি ও ওভাল টেস্টে দর্শকদের কাছে ব্যাপক বাহ্বা কুড়ান। এর এক বছর পর কানপুরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পুনরায় তাকে দলে নেয়া হয়। নবনির্মিত পিচে স্পিনের প্রত্যাশা করা হলেও তিনি মাত্র একটি ডিসমিসাল ঘটিয়েছিলেন। তবে, দ্বিতীয় ইনিংসে জসু প্যাটেলের বলে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান কলিন ম্যাকডোনাল্ডের স্ট্যাম্পিংটি খেলার উল্লেখযোগ্য দিক ছিল। স্বল্পসংখ্যক অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যানদের অন্যতম হিসেবে তিনি জসু প্যাটেলের অফ স্পিন বোলিং আত্মবিশ্বাসের সাথে মোকাবেলা করতে পেরেছিলেন। প্যাটেল ১৪ উইকেট নিয়ে ঐ টেস্টে স্বাগতিক দলকে ১১৯ রানে জয় এনে দেন। এরপর ১৯৬০-৬১ মৌসুমে পাকিস্তানের বিপক্ষে আর মাত্র দুই টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ লাভ করেছিলেন নরেন তামানে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে প্রত্যাখ্যাত হবার পর আরও তিন মৌসুম ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেন।

মূল্যায়ন[সম্পাদনা]

অংশগ্রহণকৃত ২১ টেস্টেই তিনি উইকেট-রক্ষণের সাথে নিজেকে যুক্ত রাখেন। ৩৫ ক্যাচ ও ১৬ স্ট্যাম্পিং করেছিলেন তিনি। অস্ট্রেলীয় উইকেট-রক্ষক ওয়ালি গ্রাউট তার পরিচ্ছন্ন উইকেট-রক্ষণ ও সম্যক দক্ষতার কারণে জনপ্রিয় উইকেট-রক্ষক ডন টলনের সাথে তাকে তুলনা করেছিলেন।

অবসর[সম্পাদনা]

খেলোয়াড়ী জীবন থেকে অবসর গ্রহণের পরও ক্রিকেট খেলার সাথে জড়িত থাকেন। এ পর্যায়ে মুম্বই ও ভারত দলের নির্বাচকমণ্ডলীর সদস্যরূপে দায়িত্ব পালন করেন। বিখ্যাত ক্রিকেটার শচীন তেন্ডুলকরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অন্তর্ভূক্তি তারই মাধ্যমে হয়েছিল। ১৯৮০-এর দশকে জাতীয় দল নির্বাচক হিসেবে মনোনীত হন। ১৯৯১-৯২ মৌসুমে নির্বাচকমণ্ডলীর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

১৯ মার্চ, ২০০২ তারিখে ৭০ বছর বয়সে মহারাষ্ট্রের মুম্বই এলাকায় নরেন তামানে’র দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. List of India Test Cricketers
  2. "India – Test Batting Averages"। ESPNCricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১ জানুয়ারি ২০২০ 
  3. "India – Test Bowling Averages"। ESPNCricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]