জেলিফিশ
জেলিফিশ এক ধরনের অমেরুদণ্ডী প্রাণী যাদের পৃথিবীর সব মহাসাগরে দেখতে পাওয়া যায়। নামে "ফিশ" হলেও এটি মাছ নয়; এর মেরুদণ্ড নেই। ঘণ্টাকৃতি জেলীসদৃশ প্রাণীটি প্রাণীজগতের নিডারিয়া পর্বের সিফোজোয়া শ্রেণীর অন্তর্গত। জেলিটিন সমৃদ্ধ ছাতার মত অংশ এবং ঝুলে পড়া কর্ষিকা - এ দুই অংশে প্রাণীটির দেহ গঠিত। অন্তত ৫০ কোটি বছর ধরে সাগরে এদের বাস।[১]
প্রজনন
[সম্পাদনা]অযৌন এবং যৌন উভয় পদ্ধতিতেই এরা বংশবিস্তার করে থাকে। এদের অযৌন জনন প্রক্রিয়া দুই প্রকারে সম্পন্ন হতে পারে। যথাঃ
- ১। পুনরুৎপত্তি (Regeneration)
- ২। মুকুলোদগম (Buddin)
জীবনকাল
[সম্পাদনা]জেলিফিশের জীবনকাল কয়েক ঘণ্টা (ছোট আকারের কিছু হাইড্রোমিউডিসি (hydromedusae) থেকে কয়েক মাস পর্যন্ত হতে পারে। প্রজাতিভেদে জীবনকাল ও দোহবয়ব ভিন্ন হতে পারে।
বাসস্থান
[সম্পাদনা]বেশিরভাগ জেলিফিশ সামুদ্রিক জীব হলেও স্বাদুপানিতেও কিছু (যেমন ;হাইড্রোমিউডিসি (hydromedusae)) দেখা যায়। কিছু জেলিফিশ আবার শুধু লেকেই বাস করে। যেমন পালাউ (Palau) এর জেলিফিশ হৃদে এমনটি দেখা যায়। দৈহিক গঠন জেলিফিশের দেহের মধ্যে একটি মাত্র নালী, সিলেনটেরন বা গ্যাস্ট্রোভাসকুলার গহ্বর থাকে, যা একটিমাত্র মুখছিদ্রের মাধ্যমে দেহের বাইরে উন্মুক্ত হয়। মুখছিদ্র পায়ুছিদ্রের কাজ করে। মুখছিদ্রকে ঘিরে ফাঁপা কর্ষিকা থাকে। কর্ষিকায় নির্ভোক্লাস্ট কোষ (নিমাটোসিস্ট) থাকে যা জেলিফিশকে শিকার ধরা ও আত্মরক্ষার কাজে সাহায্য করে থাকে।
জেলিফিশ বহুকোষী প্রাণী। এর অনেক প্রজাতি আছে। কোনও প্রজাতির জেলিফিশের আকৃতি ওলটানো বাটির মতো, আবার কারো গঠন ঘণ্টার মতো। শরীরের কিনারা খাঁজকাটা। খাঁজকাটা অংশ থেকে বের হয়ে আসে সরু-সরু কর্ষিকা। কর্ষিকাকে বলা হয় 'টেনট্যাকল'। জেলিফিশের মুখ চারকোণা বা চতুষ্কোণ। চারকোণে থাকে চারটি বাহু। যে সমস্ত জেলিফিশের আকৃতি মাঝারি ধরনের তাদের শরীর স্বচ্ছ। এই ধরনের জেলিফিশের নাম 'আরেলিয়া'। খুব সুন্দর দেখতে লাগে এই প্রজাতির জেলিফিশদের। একটি বৃত্ত বা বোঁটার উপর এদের মুখ বসানো থাকে। মুখমণ্ডলের পরেই অবস্থান পাকস্থলীর। পাকস্থলীর নাম— 'গ্যাষ্ট্রিক পাউচ'। গা থেকে বের হয়েছে একটি নালিকাতন্ত্র, যাকে বলা হয় ক্যানাল সিস্টেম। নালিকাগুলি শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন শাখা-প্রশাখায়।
এদের শিকার ধরার কৌশল একটু অন্য ধরনের। শিকার ধরার জন্য এদের নানা ফন্দি আছে। জলের ওপর ভেসে থাকার জন্য বেলুনের মতো গোলাকার দেহ, পাতলা স্বচ্ছ আঠামত পদার্থ বের করে থাকে। এমনভাবে থাকে, যাতে মনে হয়, মাছ ধরার জাল ছড়ানো আছে। শিকড়ের মতন লম্বা বাহুকে প্রসারিত করে। কোনও কোনও জেলিফিশের জাল ৩০ থেকে ৪০ ফুট পর্যন্ত ঝুলে থাকে। মাঝারি আকারের জাল ১০ থেকে ১১ ফুট হয়। মেরুসাগর অঞ্চলের জায়ান্ট জেলিফিশ ৮ ফুট চওড়া হয় এবং তাদের জাল জলের নিচে নেমে যায় ১০০ ফুট পর্যন্ত। শিকড়ের মতো কর্ষিকায় আছে সুঁচের মতো মিহি বিষাক্ত কাটা। এই বিষাক্ত কাটার আঘাতে মাছ অবশ হয়ে পড়ে। এরপর জেলিফিশ সেই মাছ খায়। মানুষের গায়ে এই বিষাক্ত কাঁটা লাগলে ফোস্কা পড়ে যায়। এবং অসম্ভব জ্বালা করে।
প্রকারভেদ
[সম্পাদনা]বাক্স জেলিফিশ
[সম্পাদনা]একে অনেক সময় সামুদ্রিক ভীমরুল বলেও আখ্যায়িত করা হয়। এছাড়াও একে মৃত্যুর বাক্সও বলা হয় (box of death)। এর আছে লম্বা কর্ষিকা যা নেমাটোসিস্ট ও বিষ বহন করে। এর হুলের আঘাত প্রাণঘাতী হতে পারে এবং মাত্র চার মিনিটেই শিকারকে মেরেও ফেলতে পারে অর্থ্যাৎ সাপের বিষকেও হার মানিয়ে দেয়। এগুলোর বিষ-রোধক এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। বাস উত্তর অষ্ট্রেলিয়ায়।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Public Library of Science. "Fossil Record Reveals Elusive Jellyfish More Than 500 Million Years Old." ScienceDaily, 2 Nov. 2007. Web. 16 Apr. 2011
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |