কেন ম্যাকে

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(Ken Mackay থেকে পুনর্নির্দেশিত)
কেন ম্যাকে
১৯৫৬ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে কেন ম্যাকে
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামকেনেথ ডোনাল্ড ম্যাকে
জন্ম(১৯২৫-১০-২৪)২৪ অক্টোবর ১৯২৫
উইন্ডসর, কুইন্সল্যান্ড
মৃত্যু১৩ জুন ১৯৮২(1982-06-13) (বয়স ৫৬)
পয়েন্ট লুকআউট, কুইন্সল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২০৩)
২১ জুন ১৯৫৬ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট২৫ জানুয়ারি ১৯৬৩ বনাম ইংল্যান্ড
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৩৭ ২০১
রানের সংখ্যা ১৫০৭ ১০৮২৩
ব্যাটিং গড় ৩৩.৪৮ ৪৩.৬৪
১০০/৫০ ০/১৩ ২৩/৫৯
সর্বোচ্চ রান ৮৯ ২২৩
বল করেছে ৫৭৯২
উইকেট ৫০ ২৫১
বোলিং গড় ৩৪.৪২ ৩৩.৩১
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৬/৪২ ৬/৪২
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১৬/০ ৮৪/০
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৬ জানুয়ারি ২০১৮

কেনেথ ডোনাল্ড কেন ম্যাকে (ইংরেজি: Ken Mackay; জন্ম: ২৪ অক্টোবর, ১৯২৫ - মৃত্যু: ১৩ জুন, ১৯৮২) কুইন্সল্যান্ডের উইন্ডসর এলাকায় জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫৬ থেকে ১৯৬৩ সময়কালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ৩৭ টেস্টে অংশগ্রহণ করেন। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে তিনি কুইন্সল্যান্ডের পক্ষে খেলতেন।[১] দলে তিনি অল-রাউন্ডারের দায়িত্ব পালন করতেন। বামহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম বোলিং করতেন 'স্ল্যাশার' ডাকনামে পরিচিত কেন ম্যাকে

খেলোয়াড়ী জীবন[সম্পাদনা]

২১ জুন, ১৯৫৬ তারিখে লর্ডসে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক ঘটে কেন ম্যাকের। প্রথম টেস্টের উভয় ইনিংসেই চার ঘণ্টারও বেশি সময় নিয়ে ব্যাটিং করেন। অত্যন্ত রক্ষণশীল ও অবিচল থেকে ব্যাটিংয়ে মনোনিবেশ ঘটাতেন।

রিচি বেনো’র দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন। পঞ্চাশের দশকের শেষদিকে ভেঙ্গে পড়া অস্ট্রেলিয়া দলের সদস্যরূপে দুইটি স্মরণীয় সিরিজে অংশ নেন। ১৯৬০-৬১ মৌসুমে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ১৯৬১ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত সিরিজটি অন্যতম। অ্যাডিলেড ওভালে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে লিন্ডসে ক্লাইনকে সাথে নিয়ে শেষ উইকেট জুটিতে ১০০ মিনিট ব্যাটিং করে সুনাম কুড়ান। তাদের অসামান্য অবদানের প্রেক্ষিতে খেলাটি স্মরণীয় ড্রয়ে পরিণত হয়েছিল।

বেনোর সাথে অ্যালান ডেভিডসনকে নিয়ে দলের কঠিন পরিস্থিতিতে উচ্চ মানসম্পন্ন অল-রাউন্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন। ডেভিডসনের বামহাতি ফাস্ট সুইং বোলিংয়ের পাশে লেগ স্পিনার বেনো কিংবা তার মিতব্যয়ী ডানহাতি মিডিয়াম পেস বোলিং প্রায়শঃই কৌশলগত দিক থেকে কার্যকরী হতো। মাঝে-মধ্যে বিশেষতঃ পাকিস্তানভারতের বিপক্ষে ধ্বংসাত্মক বোলিং করেছেন। আর্থার মেইলি’র পর দ্বিতীয় মিতব্যয়ী অস্ট্রেলীয় বোলারের মর্যাদা লাভ করেছেন। ১৯৬১ সালের অ্যাশেজ সিরিজে পরিবর্তিত বোলার হিসেবে খেলেন। কেন ব্যারিংটন, এম. জে. কে. স্মিথরমন সুব্বা রাওকে চার বলের ব্যবধানে প্যাভিলিয়নে ফেরৎ পাঠান। এরফলে অস্ট্রেলিয়া দল প্রথম ইনিংসে ৩২১ রানে এগিয়ে যায়।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে নিয়মিতভাবে রান সংগ্রহকারী ছিলেন। সম্মুখসারির ব্যাটসম্যানের তুলনায় বেশ পিছিয়ে থাকলেও আদর্শ অল-রাউন্ডারের গুণাবলী তার মাঝে বিরাজমান ছিল। গড়ের দিক দিয়ে বেশ ভালো অবস্থানে ছিলেন। পরবর্তীতে শেন ওয়ার্ন এতে ভাগ বসান যিনি অনেকগুলো টেস্টে অংশ নিলেও ম্যাকের ন্যায় কোন সেঞ্চুরির দেখা পাননি। দলের কঠিন অবস্থায়ও ১৩টি অর্ধ-শতক তুলেছেন; যার অনেকগুলোই নিচেরসারিতে ব্যাটিং করে পেয়েছেন। ১৯৬২-৬৩ মৌসুমের অ্যাশেজ সিরিজে সর্বশেষ অংশ নেন। অপরাজিত ৮৬ রান তুললেও অনেকগুলো বল খরচ করে ফেলেন। দর্শকদের দাবীর প্রেক্ষিতে দলের বাইরে রাখা হয়। কিন্তু, অ্যালান ডেভিডসন আহত হলে পুনরায় চতুর্থ টেস্টে তার অংশগ্রহণ ঘটে। বল হাতে ৩/৮০ ও ১/১৩ পেলেও ব্যাটিংয়ে ১ ও ৩ রান তুলেন। ফলে তাকে আবারও দলের বাইরে চলে যেতে হয়।

সম্মাননা[সম্পাদনা]

দলীয় সঙ্গী ও প্রতিপক্ষের কাছে বেশ সম্মানীয় ছিলেন তিনি। খেলোয়াড়ী জীবনের শেষদিকে বিশেষ করে অ্যাডিলেড টেস্টের পর সমর্থকদের কাছে জনপ্রিয়তা তুলে ধরেন। শৌখিন খেলোয়াড় ছিলেন। 'এ বব ইন ফর দ্য স্ল্যাশার' শিরোনামে পাঁচ হাজার পাউন্ড-স্টার্লিংয়ের তহবিল গড়েন। একটি রাস্তা ও টুম্বাল ডিস্ট্রিক্ট ক্রিকেট ক্লাবের প্রধান ওভাল তার সম্মানার্থে নামাঙ্কিত হয়। 'স্ল্যাশার ওপেন্স আপ' শীর্ষক আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ প্রকাশ করেন। ১৯৬২ সালে ক্রিকেটে সবিশেষ অবদান রাখার প্রেক্ষিতে ওবিই পদবীতে ভূষিত হন।

১৩ জুন, ১৯৮২ তারিখে কুইন্সল্যান্ডের পয়েন্ট লুকআউট এলাকায় ৫৭ বছর বয়সে তার দেহাবসান ঘটে। অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট, খেলা ও খেলোয়াড়দের সাথে কেন ম্যাকের ভূমিকা নিয়ে সংক্ষিপ্ত আকারে জ্যাক পোলার্ড লিখেছেন। তবে, অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট উত্তরণে কেন ম্যাকে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন নিঃসন্দেহে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]