হ্যারল্ড রোডস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(Harold Rhodes (cricketer) থেকে পুনর্নির্দেশিত)
হ্যারল্ড রোডস
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামহ্যারল্ড জেমস রোডস
জন্ম (1936-07-22) ২২ জুলাই ১৯৩৬ (বয়স ৮৭)
হ্যাডফিল্ড, ডার্বিশায়ার, ইংল্যান্ড
ডাকনামডাস্টি
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট
ভূমিকাবোলার
সম্পর্কআলবার্ট রোডস
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৩৯৭)
২ জুলাই ১৯৫৯ বনাম ভারত
শেষ টেস্ট২৩ জুলাই ১৯৫৯ বনাম ভারত
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৫৩ - ১৯৭৫ডার্বিশায়ার
১৯৭০ - ১৯৭৩নটিংহ্যামশায়ার
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৩২২ ৫৭
রানের সংখ্যা ২৪২৭ ১২৪
ব্যাটিং গড় ৯.৪৮ ৯.৫৩
১০০/৫০ –/– –/– –/–
সর্বোচ্চ রান ৪৮ ২৬*
বল করেছে ৪৪৯ ৫৫৫৩৬ ৩০৮৬
উইকেট ১০৭৩ ৭১
বোলিং গড় ২৭.১১ ১৯.৭০ ২৩.৫২
ইনিংসে ৫ উইকেট ৪২
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৪/৫০ ৭/৩৮ ৪/১৮
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং –/– ৮৬/– ৪/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯

হ্যারল্ড জেমস রোডস (ইংরেজি: Harold Rhodes; জন্ম: ২২ জুলাই, ১৯৩৬) ডার্বিশায়ারের হ্যাডফিল্ড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা ও সাবেক ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫৯ সালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ডার্বিশায়ারনটিংহ্যামশায়ার দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে ডানহাতে ব্যাটিং করতেন ‘ডাস্টি’ ডাকনামে পরিচিত হ্যারল্ড রোডস

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

ডার্বিশায়ারের হ্যাডফিল্ডে জন্মগ্রহণকারী হ্যারল্ড রোডসের পিতা আলবার্ট ডাস্টি রোডস ডার্বিশায়ারের অল-রাউন্ডার ছিলেন। ১৯৫১ সালে ডার্বিশায়ার ক্লাব ও গ্রাউন্ডের পক্ষে প্রথমবারের মতো খেলায় অংশ নেন হ্যারল্ড রোডস। ১৯৫২ সালে ডার্বিশায়ার দ্বিতীয় একাদশের পক্ষে একটি খেলায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি। ১৯৫৩ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত হ্যারল্ড রোডসের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ১৯৬০-এর দশকের শুরুরদিকে অন্যতম বিতর্কিত বোলার হিসেবে পরিচয় পেয়েছেন হ্যারল্ড রোডস।

১৯৫৩ সালে ডার্বিশায়ারের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এ পর্যায়ে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে একটি খেলায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি। দ্বিতীয় একাদশের সদস্যরূপে নিয়মিতভাবে খেলতেন। পাশাপাশি ১৯৫৩ সালে তার পিতাও ডার্বিশায়ারের পক্ষে খেলেছিলেন। তবে, তারা কখনো একই প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেননি। শুরুতে তিনি অফ স্পিন বোলার হিসেবে খেলায় অংশ নিতেন। ১৯৫৪ সালে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে একটিমাত্র প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশগ্রহণ করেছিলেন।

১৯৫৫ সালে ডার্বিশায়ারের পক্ষে চারটি খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ হয়। এরপর ১৯৫৬ সালে আরও চারটি খেলায় অংশ নেন। ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো পাঁচ-উইকেটের সন্ধান পান। ১৯৫৭ সালে তিনটি খেলায় অংশ নেন। এ পর্যায়ে সিম বোলিংয়ের দিকে ধাবিত হন তিনি। ১৯৫৮ সালে ডার্বিশায়ারের পক্ষে পূর্ণাঙ্গ মৌসুম খেলেন। দুইবার পাঁচ-উইকেটসহ ৬৭ উইকেট দখল করেন। ক্লিফ গ্ল্যাডউইনের অবসর গ্রহণের ফলে ১৯৫৯ সাল থেকে লেস জ্যাকসনের সাথে বোলিং উদ্বোধনে নামেন। ঐ মৌসুমে ডার্বিশায়ারের পক্ষে ৬০ উইকেট পেলেও মাত্র একবারই পাঁচ-উইকেটের সন্ধান পান।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে দুইটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন হ্যারল্ড রোডস। ২ জুলাই, ১৯৫৯ তারিখে লিডসে সফরকারী ভারতের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম খেলতে নামেন। ইংল্যান্ডের জিওফ পুলার ও ভারতের অরবিন্দ আপ্তের একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ঐ খেলায় তার দল ইনিংস ও ১৭৩ রানে পরাভূত হয়।[১]

এরপর, ২৩ জুলাই, ১৯৫৯ তারিখে ম্যানচেস্টারে একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি। দুই টেস্টে তিনি নয় উইকেট পান।[২] তন্মধ্যে, টেস্ট ক্রিকেট অভিষেকে নিজস্ব প্রথম দুই ওভারে দুই উইকেট তুলে নিয়েছিলেন তিনি।

বিতর্কিত ভূমিকা[সম্পাদনা]

ব্রায়ান স্ট্যাদামফ্রেড ট্রুম্যানের সাথে বেশ শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হলেও ক্রিকেটবোদ্ধাদের অনেকেই তার মাঝে অনেকগুলো টেস্ট খেলার আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন। তবে, তার নতুন বোলিং ভঙ্গীমা নিয়ে অনেকেই সন্দিহান ছিলেন। ১৯৬০ সালে ইংল্যান্ডে সফররত দক্ষিণ আফ্রিকা একাদশের বিপক্ষে ডার্বিশায়ারের সদস্যরূপে বোলিংকালে আম্পায়ার কর্তৃক বল ছোঁড়ার অভিযোগ আনা হয়। স্বাভাবিকভাবে বল ডেলিভারি না করে যথেষ্ট বাঁকা করে রাখার বিষয়টি আম্পায়ারসহ সাবেক টেস্ট ব্যাটসম্যান পল গিবের নজরে পড়ে।[২]

১৯৬০ সালের শেষদিকে আবারও পল গিব ও সিড বুলারের কাছ থেকে নো-বলের ডাক শুনেন। ঐ মৌসুমে ৭৮টি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট লাভকালে দুইবার ইনিংসে পাঁচ-উইকেট পেয়েছিলেন। এ ধরনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এমসিসি কমিটি তার বোলিং ভঙ্গীমা পর্যবেক্ষণে অগ্রসর হয়। এরপর ১৯৬৮ সালে অতিবিস্তৃত বাহুর কারণে তিনি এ অভিযোগ থেকে মুক্তি লাভ করেন।[২]

তবে, এরপর থেকে অবশ্য তার টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবন দীর্ঘকাল স্থায়ীত্ব পায়নি। তাসত্ত্বেও, ১৯৬০-এর দশক পর্যন্ত সফলতার সাথে ডার্বিশায়ারের পক্ষে বোলিং করে যাচ্ছিলেন। ১৯৬১ সালে ১০১ উইকেট লাভ করে ডার্বিশায়ারের বোলিং গড়ে শীর্ষস্থানে ছিলেন। তন্মধ্যে, ছয়বার ইনিংসে পাঁচ-উইকেট পেয়েছিলেন তিনি। ঐ বছরে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে হ্যাট্রিক করেছিলেন। ১৯৬২ সালে ৬৮ উইকেট পান। পাঁচবার পাঁচ-উইকেট পেয়েছেন। ১৯৬৫ সালে ডার্বিশায়ারের পক্ষে নিজস্ব সেরা মৌসুম অতিবাহিত করেন। ১১.০৪ গড়ে ১১৯ উইকেট লাভ করেন। ঐ মৌসুমে বোলিং গড়ে ইংল্যান্ডে জাতীয় পর্যায়ে শীর্ষস্থান অধিকার করেছিলেন তিনি।

অবসর[সম্পাদনা]

১৯৬৯ সালে লিগ ক্রিকেট থেকে আলফ্রেড রোডস অবসর গ্রহণ করেন।[২] এরপর ১৯৭০ থেকেও ১৯৭৩ সময়কালে নটিংহ্যামশায়ারের পক্ষে কয়েকটি লিস্ট এ ক্রিকেট খেলায় অংশ নেন। পরবর্তীতে ১৯৭৫ সালে ডার্বিশায়ারে ফিরে কয়েকটি একদিবসীয় খেলায় অংশ নেয়ার পর অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সর্বশেষ খেলেন।

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে নয়টি টেস্ট উইকেট পান। ১৯.৫০ গড়ে ১০৭৩টি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট দখল করেন। ব্যক্তিগত সেরা বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন ৭/৩৮। ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে ৩২২টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ৩৯৯ ইনিংসে ৯.৪৮ গড়ে রান তুলেছিলেন। ব্যক্তিগত সেরা করেন ৪৮ রান। তবে, দুই টেস্টে অংশ নিলেও কোন রান সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন।[৩]

খেলোয়াড়ী জীবন শেষে কোচিং জগতের দিকে ধাবিত হন তিনি। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সময়কালে জার্মান ক্রিকেট দলে খণ্ডকালীন কোচের দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। এ সময়ে দলটি কানাডায় অনুষ্ঠিত ২০০১ সালের আইসিসি ট্রফিতে অংশ নিয়েছিল।[৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "India in England (1959): Scorecard of third Test"। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৯ 
  2. Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 137আইএসবিএন 1-869833-21-X 
  3. Harold Rhodes at Cricket Archive
  4. "Gründung des DCB bis 2008" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১১ জুন ২০১৮ তারিখে – Deutscher Cricket Bund. Retrieved 2 April 2016.

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]