গ্লোব কর্মসূচি
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৯৯৫ |
---|---|
ধরন | আন্তর্জাতিক সংস্থা |
আলোকপাত | পরিবেশ শিক্ষা, বৈজ্ঞানিক গবেষণা |
অবস্থান |
|
এলাকাগত সেবা | বৈশ্বিক |
ওয়েবসাইট | www |
পরিবেশের কল্যাণের জন্য বৈশ্বিক শিক্ষা ও পর্যবেক্ষণ কর্মসূচি বা সংক্ষেপে গ্লোব কর্মসূচি (ইংরেজি: Global Learning and Observations to Benefit the Environment Program, GLOBE) হলো পরিবেশকেন্দ্রিক একটি বৈশ্বিক বিজ্ঞান ও শিক্ষা কর্মসূচি। বর্তমানে বিশ্বের ১২০টি দেশে এটি সক্রিয় আছে।[১] এটি বিজ্ঞানের শিক্ষার প্রচার, পরিবেশ শিক্ষা ও দায়িত্বশীলতা বৃদ্ধিকরণ এবং বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের প্রসারে কাজ করে। অসংখ্য আন্তর্জাতিক সংস্থার বিজ্ঞানীদের সাথে সহযোগিতামূলক উপায়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা উপাত্ত সংগ্রহ করেন এবং তা দিয়ে গবেষণাকার্য সম্পাদন করেন। তাদের কাজ গ্লোবের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।[২]
প্রেক্ষাপট[সম্পাদনা]
গ্লোব কর্মসূচি প্রকৃত গবেষণা ও উপকরণের মাধ্যমে তরুণ শিক্ষার্থীদের গবেষণার দক্ষতা বৃদ্ধির শিক্ষা দেয়। শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও বিজ্ঞানীরা একটি অনন্য বৈশ্বিক শিক্ষা কার্যক্রমে একত্রে কাজ করেন।[৩]
১৯৯৮ সালে স্বাক্ষরিত একটি আন্তঃসংস্থা চুক্তির মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো অঙ্গরাজ্যের বুলডার শহরের বায়ুমণ্ডলবিষয়ক গবেষণার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় নিগম-এ (ইউনিভার্সিটি কর্পোরেশন ফর অ্যাটমস্ফেরিক রিসার্চ; ইউসিএআর) গ্লোবের কার্যক্রম চলে এবং নাসা (ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন),[৪] এনওএএ (জাতীয় মহাসাগরীয় ও বায়ুমণ্ডলীয় প্রশাসন)[৫] ও ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন[৬] গ্লোব কর্মসূচির পৃষ্ঠপোষকতা করে।[৭] মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর আন্তর্জাতিকভাবে গ্লোব কর্মসূচিকে সমর্থন করে (মেক্সিকোর সাথে চুক্তি দ্রষ্টব্য)।[৮] এছাড়াও আরও অন্যান্য সংগঠন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বের অন্যান্য দেশে গ্লোব কর্মসূচির কাজে সহায়তা করে।
উদ্দেশ্য[সম্পাদনা]
গ্লোব কর্মসূচির উদ্দেশ্য হলো বিজ্ঞানের শিক্ষার প্রচার, পরিবেশ শিক্ষা ও দায়িত্বশীলতা বৃদ্ধিকরণ এবং বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের প্রসার।[৯]
এছাড়া অন্যান্য নির্দিষ্ট লক্ষ্যের মধ্যে রয়েছে:
- পরিবেশ ও ধরিত্রীবিজ্ঞানকেন্দ্রিক শিক্ষাক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিখনফলে উন্নয়ন;
- পরিবেশের কল্যাণের জন্য বিশ্বব্যাপী সচেতনতা বৃদ্ধি এবং পরিবেশকর্মীদের সমর্থন দান;
- পরিবেশের একটি তন্ত্র হিসেবে ধরিত্রীর বৈজ্ঞানিক জ্ঞানান্বেষণে অবদান রাখা;
- বিশ্বব্যাপী পরবর্তী প্রজন্মের বিজ্ঞানীদের মধ্যে সংযোগ সাধন এবং উৎসাহ দান; এবং
- নতুন বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য তরুণ মেধাকে বের করে আনা।
ইতিহাস[সম্পাদনা]
- ২২ এপ্রিল ১৯৯৫: ধরিত্রী দিবসে সাবেক মার্কিন উপরাষ্ট্রপতি আল গোর কর্তৃক গ্লোব কর্মসূচির উদ্বোধন[১০]
- ১৯৯৭: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গ্লোব শিক্ষক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
- ১৯৯৮: ফিনল্যান্ডে ১ম গ্লোব লার্নিং এক্সপেডিশন (জিএলই) অনুষ্ঠিত
- ২০০০: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২য় জিএলই অনুষ্ঠিত
- ২০০৩: ক্রোয়েশিয়ায় ৩য় জিএলই অনুষ্ঠিত
- ২০০৩: বায়ুমণ্ডল, জীবমণ্ডল, বারিমণ্ডল ও মৃত্তিকামণ্ডল ঘিরে ৫৩ দফা কর্মসূচি
- ২০০৩: গ্লোব কর্মসূচির দপ্তর পরিচালনার জন্য নাসা কর্তৃক বায়ুমণ্ডলীয় গবেষণার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় নিগমকে (ইউসিএআর) নির্বাচন
- ধরিত্রী দিবস, ২০০৫: ১০৬টি দেশে ১৫,০০০ বিদ্যালয়ে গ্লোব কর্মসূচির ১০ম জন্মদিন পালিত
- ২০০৮: দক্ষিণ আফ্রিকায় ৪র্থ জিএলই অনুষ্ঠিত
- ২০০৯: গ্লোবের বৈশ্বিক ডাটাবেজে ২০ মিলিয়ন যুক্ত
- ২০১১: শিক্ষার্থীদের জন্য জলবায়ু গবেষণা ক্যাম্পেইন শুরু[১১]
- ২০১৪: ইউরোপ ও ইউরেশিয়া অঞ্চলের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীদের জন্য ১ম আঞ্চলিক অ্যারোসল গবেষণা কার্যক্রম অনুষ্ঠিত; নাসার সাথে বৈশ্বিক বারিপাত পরিমাপ (গ্লোবাল প্রেসিপিটেশন মিজারমেন্ট - জিপিএম), সক্রিয় নিষ্ক্রিয় মৃত্তিকার আর্দ্রতা (সয়েল ময়েশ্চার অ্যাক্টিভ প্যাসিভ - এসএমএপি), শিক্ষার্থী গবেষণা ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত
- ২০১৪: ভারতে ৫ম জিএলই অনুষ্ঠিত
- ২০১৪: গ্লোবের বাস্তবায়ন দপ্তরের (গ্লোব ইম্প্লিমেন্টেশন অফিস) জন্য নাসা কর্তৃক ইউসিএআরকে নির্বাচন
- ধরিত্রী দিবস, ২০১৫: গ্লোবের ২০তম জন্মদিন পালন; গ্লোব বিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষায়িত অ্যাপ, উন্নত ওয়েবসাইট এবং শিক্ষকদের জন্য হালনাগাদকৃত নির্দেশিকা প্রকাশ করে; ৫১ দফা কর্মসূচি প্রকাশ; আন্তর্জাতিক ডাটাবেসে ১২৮ মিলিয়ন উপাত্ত অন্তর্ভুক্ত[১২]
- ২০১৬: গ্লোবের অনলাইন ই-প্রশিক্ষণ প্রদান শুরু; আন্তর্জাতিক ভার্চুয়াল বিজ্ঞান মেলা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ছয়টি আঞ্চলিক বিজ্ঞান মেলা এবং বিভিন্ন বিজ্ঞানভিত্তিক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত
- ২০১৬: গ্লোব অবজারভার অ্যাপ প্রকাশিত[১৩]
- ২০১৭: ১৪০ মিলিয়নের পরিমাপের উপাত্ত অন্তর্ভুক্ত; আন্তর্জাতিক ভার্চুয়াল বিজ্ঞান সিম্পোজিয়ামের মাধ্যমে দাখিলকৃত প্রকল্প ও বৈশ্বিক প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি এবং নতুন মশা প্রটোকল চালু
- ২০১৮: আয়ারল্যান্ডে ৬ষ্ঠ জিএলই অনুষ্ঠিত
শিক্ষণ কার্যক্রম[সম্পাদনা]
গ্লোব কর্মসূচি স্থানীয় শিক্ষাক্রমের ভিত্তিতে বায়ুমণ্ডল, পানি, মাটি, ভূ-আবরণ এবং পরিবেশের ওপর জলবায়ুর প্রভাব সম্পর্কিত বৈজ্ঞানিকভাবে বৈধ পরিমাপ নিতে শিক্ষার্থীদের সুযোগ দেয়। শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে তাদের উপাত্তের প্রতিবেদন জমা দেয়, মানচিত্র ও ডাটাসেট বিশ্লেষণের জন্য ছক তৈরি করে এবং বৈজ্ঞানিক ও বিশ্বব্যাপী গ্লোবের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সাথে কাজ করে। গ্লোবের সকল উপাত্ত এবং পর্যবেক্ষণ পাবলিক ডোমেইনে অবমুক্ত।
বিজ্ঞানীদের অবদান[সম্পাদনা]
বিজ্ঞানীদের আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গ্লোব কর্মসূচির পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের সাথে সম্পৃক্ত। গ্লোবের পরিবেশ সংক্রান্ত পরিমাপ, পরিমাপের কার্যপ্রণালীর উন্নয়ন এবং সংগৃহীত উপাত্তের মান নিয়ন্ত্রণে বিজ্ঞানীরা যুক্ত হন। গবেষণায় প্রাপ্ত পর্যবেক্ষণ ও ফলাফল সঠিক কিনা, তা নির্ধারণের জন্য বিজ্ঞানীদের সম্পৃক্তি গুরুত্বপূর্ণ। বিজ্ঞানীদের নিরন্তর সমর্থন ও নির্দেশনা গ্লোবের পরিবেশ সংক্রান্ত পরিমাপ বৈশ্বিক ডাটাবেজে অবদান রাখতে সহায়তা করে।
আরও দেখুন[সম্পাদনা]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
উৎস[সম্পাদনা]
- ↑ "About"। GLOBE.gov। ২০১২-০৬-২৮। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৩-২০।
- ↑ globe.gov
- ↑ Baker, Amanda (১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭)। "The GLOBE Program: Making the Case for K–12 Citizen Scientists"। Scientific American Blog Network (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মার্চ ২০২১।
- ↑ "Global Learning & Observations to Benefit the Environment"। Education.ssc.nasa.gov। ২০১২-০১-৩০। ২০১৩-০৩-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৩-২০।
- ↑ [১] ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১০ তারিখে
- ↑ "Funding - Global Learning and Observations to Benefit the Environment - US National Science Foundation (NSF)"। nsf.gov। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৩-২০।
- ↑ "Interagency Agreement" (পিডিএফ)। ২০১৬-০৩-০৪ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৩-২০।
- ↑ United States Department of State
- ↑ [২] ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত মে ১৮, ২০১১ তারিখে
- ↑ Nussbaum, Debra (জুন ৪, ১৯৯৮)। "Global Weather Project Unites Students on Web"। New York Times।
- ↑ "SCRC"। GLOBE.gov। ২০১২-০৬-২৮। ২০১২-০৭-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৩-২০।
- ↑ Howell, Elizabeth (২২ এপ্রিল ২০১৫)। "How to Celebrate Earth Day 2015 with NASA"। Space.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মার্চ ২০২১।
- ↑ Shepherd, Marshall। "How You And The Kids Can Use A Cellphone To Help NASA Study Clouds"। Forbes (ইংরেজি ভাষায়) (28 March 2018)। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মার্চ ২০২১।
অন্যান্য উৎস[সম্পাদনা]
- NASA Selects Colorado Organization to Operate Globe Program ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৪ জুলাই ২০২১ তারিখে
- What is the GLOBE program
বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]
- আঞ্চলিক সাইট
- আফ্রিকা অঞ্চল
- এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২২ অক্টোবর ২০১১ তারিখে
- ইউরোপ-ইউরেশিয়া অঞ্চল
- লাতিন আমেরিকা-ক্যারিবিয়া অঞ্চল
- নিকটপ্রাচ্য-উত্তর আফ্রিকা অঞ্চল
- উত্তর আমেরিকা অঞ্চল
- অস্ট্রেলিয়া
- জাপান ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১১ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে