এডওয়ার্ড টাইলকোট

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(Edmund Tylecote থেকে পুনর্নির্দেশিত)
এডওয়ার্ড টাইলকোট
আনুমানিক ১৮৭০-এর দশকের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে এডওয়ার্ড টাইলকোট
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামএডওয়ার্ড ফার্দিনান্দো সাটন টাইলকোট
জন্ম(১৮৪৯-০৬-২৩)২৩ জুন ১৮৪৯
মার্সটন মোরটেইন, বেডফোর্ডশায়ার, ইংল্যান্ড
মৃত্যু১৫ মার্চ ১৯৩৮(1938-03-15) (বয়স ৮৮)
হানস্ট্যানটন, নরফোক, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
ভূমিকাউইকেট-রক্ষক
সম্পর্কহেনরি টাইলকোট (ভ্রাতা)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৪২)
৩০ ডিসেম্বর ১৮৮২ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টেস্ট১৪ আগস্ট ১৮৮৬ বনাম অস্ট্রেলিয়া
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৯৩
রানের সংখ্যা ১৫২ ৩,০৬৫
ব্যাটিং গড় ১৯.০০ ২০.৭০
১০০/৫০ ০/১ ৩/১০
সর্বোচ্চ রান ৬৬ ১০৭
বল করেছে ২৪
উইকেট
বোলিং গড় - -
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং - -
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৫/৫ ১২৭/৫৮
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১ নভেম্বর ২০১৯

এডওয়ার্ড ফার্দিনান্দো সাটন টাইলকোট (ইংরেজি: Edward Tylecote; জন্ম: ২৩ জুন, ১৮৪৯ - মৃত্যু: ১৫ মার্চ, ১৯৩৮) বেডফোর্ডশায়ারের মার্সটন মোরটেইন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৮৮২ থেকে ১৮৮৬ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।[১]

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে কেন্ট দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলতেন। পাশাপাশি, ডানহাতে কার্যকরী ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন করতেন এডমন্ড টাইলকোট নামে পরিচিত এডওয়ার্ড টাইলকোট

শৈশবকাল[সম্পাদনা]

ক্লিফটন কলেজে পড়াশোনা করেছেন তিনি। ক্লিফটন কলেজে পাঁচ বছর দূর্দান্তভাবে প্রথম একাদশে খেলেছেন। ১৮৬৮ সালের শেষ বছরে নেতৃত্ব দেন। ঐ বছরের গ্রীষ্মে ১৯ বছর বয়সে এডওয়ার্ড টাইলকোট তৎকালীন সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েন। ক্লিফটন কলেজে অনুষ্ঠিত বিদ্যালয়ের খেলায় ক্লাসিক্যালস দলের সদস্যরূপে মডার্নসের বিপক্ষে খেলেন। মডার্নসের সংগৃহীত ১০০ রানে তিনি তিন উইকেট পান। এরপর, ক্লাসিক্যালসের পক্ষে ব্যাটিং উদ্বোধনে নামেন। খেলাটি একটিমাত্র ইনিংস নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তিনটি বিকাল ও ছয় ঘণ্টায় ৪০৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। এটিই কোন খেলায় চতুঃশতক ছিল। পরবর্তী সর্বোচ্চ রান ছিল ৫২। তার এ রানটিতে একটি সাত, পাঁচটি পাঁচ, একুশটি চার, ঊনচল্লিশটি তিন, বিয়াল্লিশটি দুই, সাতাশিটি এক রান ছিল। তবে, কোন বাউন্ডারি মাঠের বাইরে ফেলতে পারেননি। পরবর্তীতে তার এ রেকর্ডটি আরেক ক্লিফটন কলেজের ছাত্র ও তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের হাজারীবাগে জন্মগ্রহণকারী এইজে কলিন্স অপরাজিত ৬২৮ রান নিয়ে নিজের করে নেন।

বিশ্ববিদ্যালয় জীবন[সম্পাদনা]

বিদ্যালয় জীবন শেষ করে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে পাড়ি জমান। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালীন প্রথম একাদশের পক্ষে খেলার সুযোগ লাভ করেছিলেন। ফ্রেশম্যান হিসেবে ১৮৬৯, ১৮৭০, ১৮৭১ ও ১৮৭২ সালে ব্লুধারী হন। তন্মধ্যে, শেষ দুই বছর দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

কবডেনের খেলায় দ্বিতীয়বারের মতো কেমব্রিজের বিপক্ষে অভিজ্ঞতা লাভ করেন। পরের বছর আট উইকেটের ব্যবধানে ডার্ক ব্লুকে জয় এনে দেন। তবে, অধিনায়ক হিসেবে দ্বিতীয় বছরে কেমব্রিজ দল ইনিংস ও ১৬৬ রানে জয় পেয়েছিল। এ পর্যায়ে উইলিয়াম ইয়ার্ডলি বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলায় দ্বিতীয় শতরান করে নতুন রেকর্ড গড়েন। টাইলকোট বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলায় বয়োজ্যেষ্ঠ অধিনায়ক ছিলেন।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

১৮৬৯ সাল থেকে ১৮৮৬ সাল পর্যন্ত এডওয়ার্ড টাইলকোটের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ১৮৭৫ সাল থেকে কেন্টের পক্ষে খেলতে শুরু করেন। এ দলের পক্ষে ১৮৮৩ সাল পর্যন্ত খেলেন। এছাড়াও, কিছু সময়ের জন্যে নিউ কাউন্টি বেডফোর্ডশায়ারের পক্ষে খেলেন। ১৮৭০ থেকে ১৮৭৭ সাল পর্যন্ত অংশগ্রহণকৃত খেলাগুলো অবশ্য প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের মর্যাদা লাভ করেনি।

জেন্টলম্যানের সদস্যরূপে ষোল বছরে বেশ কয়েকবার প্লেয়ার্সের বিপক্ষে খেলেন। ১৮৮৩ সালে লর্ডসে প্লেয়ার্সের বিপক্ষে ধ্রুপদীশৈলীতে চমৎকার ১০৭ রানের ইনিংস নিখুঁততার সাথে আড়াই ঘণ্টায় সংগ্রহ করেন। অফের দিকেই অধিক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। লর্ডসে মাত্র ছয়জনের একজন হিসেবে সেঞ্চুরি করার গৌরব অর্জন করেন। প্রথম সেঞ্চুরিটি ১৮২৫ সালে উইলিয়াম ওয়ার্ড করেছিলেন। ১৮৮৬ সালে ৩৭ বছর বয়সে তার খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপ্তি ঘটে। তবে, স্ট্যাম্পের পিছনেই স্মরণীয় ভূমিকা রাখেন।

উইকেট-রক্ষণকালে খুব কাছে অবস্থান করতেন। কেবলমাত্র দ্রুতগতিসম্পন্ন বোলিংয়ের ক্ষেত্রে দূরে অবস্থান করতেন। ক্যাচ গ্লাভসবন্দী ও স্ট্যাম্পিংয়ের ক্ষেত্রে তিনি অদ্বিতীয় ছিলেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ছয়টিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন এডওয়ার্ড টাইলকোট। ৩০ ডিসেম্বর, ১৮৮২ তারিখে মেলবোর্নে ডব্লিউ. এল. মারডকের নেতৃত্বাধীন স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১২ আগস্ট, ১৮৮৬ তারিখে ওভালে একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

১৮৮২-৮৩ মৌসুমে সম্মানীয় ইভো ব্লাইয়ের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের সদস্যরূপে অ্যাশেজ ট্রফি লাভের উদ্দেশ্যে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। ইংল্যান্ডের পক্ষে সম্মানীয় আইএফডব্লিউ ব্লাই, সিএফএইচ লেসলি, ডব্লিউডব্লিউ রিড, জিবি স্টাড, ইএফএস টাইলকোট ও জিএফ ভার্ননের একযোগে টেস্ট অভিষেক ঘটে। ৩০ ডিসেম্বর, ১৮৮২ তারিখে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম টেস্টের উভয় ইনিংসে ৩৩ ও ৩৮ রান তুলে শীর্ষ রান সংগ্রহকারী ছিলেন। ঐ টেস্টে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ৯ উইকেটে বিজয়ী হয়।

তবে, ঐ সিরিজে পূর্ণাঙ্গ শক্তিধর ইংরেজ দল প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়া দলকে পরাজিত করে। এ সিরিজে সফরকারী দল ২-১ ব্যবধানে জয়ী হয়। নিষ্পত্তিসূচক খেলায় ৬৬ রান তুলে ইংরেজদের রাবার জয়ে ভূমিকা রাখেন। ১৮৮৬ সালের খেলাগুলোয় উইকেট-রক্ষণে নিয়োজিত ছিলেন। লর্ডস ও ওভালের দুইটি খেলায় ইনিংস ব্যবধানকে দলকে জয় এনে দেন।

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

ক্রিকেটের বাইরে এডওয়ার্ড টাইলকোট উলউইচের রয়্যাল মিলিটারি একাডেমিতে গণিত বিষয়ে শিক্ষা প্রদান করতেন। পাশাপাশি কয়েকটি প্রিপারেটরি স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন। প্রজাপতি সংগ্রহ তার অন্যতম শখের বিষয় ছিল। পরবর্তীতে অক্সফোর্ডের যাদুঘরে তার এ সংগ্রহটি তুলে দেন।

১৫ মার্চ, ১৯৩৮ তারিখে ৮৮ বছর বয়সে নরফোকের হানস্ট্যানটন এলাকায় এডওয়ার্ড টাইলকোটের দেহাবসান ঘটে। সি. বি. এল. ও এইচ. জি. নামীয় দুই ভাই ক্রিকেট খেলতেন। মাত্র কয়েদিনের ব্যবধানে মার্চ, ১৯৩৫ সালে যথাক্রমে ৮৮ ও ৮২ বছর বয়সে দেহাবসান ঘটে তাদের। ই. এফ. এস. টাইলকোটের ন্যায় তারাও ক্লিফটন একাদশের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। অন্যদিকে, ১৮৭৪ থেকে ১৮৭৭ সাল পর্যন্ত এইচ. জি. অক্সফোর্ড একাদশে খেলেন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. [১] ESPNcricinfo, ESPN, সংগ্রহের তারিখ: ১৭ অক্টোবর ২০১৯

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]