দ্বিতীয় ক্রুসেড
এই নিবন্ধটি ইংরেজি উইকিপিডিয়া হতে অনুবাদের মাধ্যমে অমর একুশে নিবন্ধ প্রতিযোগিতা ২০২৩ উপলক্ষ্যে মানোন্নয়ন করা হচ্ছে। নিবন্ধটিকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই নিবন্ধকার কর্তৃক সম্প্রসারণ করে অনুবাদ শেষ করা হবে; আপনার যেকোন প্রয়োজনে এই নিবন্ধের আলাপ পাতাটি ব্যবহার করুন। আপনার আগ্রহের জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। |
দ্বিতীয় ক্রুসেড (১১৪৫ - ১১৪৯) ইউরোপ থেকে ঘোষিত দ্বিতীয় প্রধান ধর্মযুদ্ধ । ১১৪৪ খ্রিষ্টাব্দে জেংগি বাহিনীর নিকট এডিসা অঙ্গরাজ্যের পতনের সূত্র ধরে শুরু হয় ২য় ধর্মযুদ্ধ । ১০৯৮ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম ধর্মযুদ্ধ চলাকালে এডিসা অঙ্গরাজ্যের গোড়াপত্তন করেন জেরুজালেমের রাজা প্রথম বাল্ডুইন । রাজ্যটির প্রতিষ্ঠা সবার শুরুতে হলেও এটির পতনও হয় সবার শুরুতেই ।
দ্বিতীয় ধর্মযুদ্ধের ঘোষণা দেন পোপ ইউজিন ( তৃতীয় ) । এটিই প্রথম ধর্মযুদ্ধ যেখানে ফ্রান্সের রাজা সপ্তম লুই এবং জার্মানির রাজা তৃতীয় কনরাড একাধিক অভিজাত ইউরোপীয়দের সহায়তা নিয়ে যুদ্ধ পরিচালনা করেন । ইউরোপের এই দুই পরাক্রমশালী রাজ্যের বাহিনী আলাদাভাবে যুদ্ধক্ষেত্রে অগ্রসর হতে থাকে । কিন্তু, আনাতোলিয়া রাজ্যের বাইজেন্টাইন অংশ অতিক্রমের সাথে সাথে তারা সেলজুক তুর্কদের কাছে আলাদাভাবে পরাজিত হয়। পশ্চিমা খ্রিষ্টানদের প্রধান উৎস , ডেউলির ইউডেস এবং সিরিয়াক খ্রিষ্টানদের ভাষ্যমতে , বাইজেন্টাইন সম্রাট প্রথম ম্যানুয়েল কমনেনস-ই আনাতোলিয়ার নিকটে যোদ্ধাদের গতিরথ করেন এবং ইচ্ছাকৃতভাবে তুর্কদের লেলিয়ে দেন । অবশ্য , ইউডেসের এই মন্তব্যকে অনেকেই বানোয়াট মনে করেন । প্রথমত, তিনি রাজ্যকে একটি বাধা মনে করতেন এবং দ্বিতীয়ত সেই সময়ে সম্রাট ম্যানুয়েলের কাছে এরকম কোন আক্রমণ করার মতো রাজনৈতিক কারণও ছিলো না । রাজা লুই এবং রাজা কনরাডের অবশিষ্ট সম্মিলিত বাহিনী জেরুজালেমে পৌছায় ১১৪৮ খ্রিষ্টাব্দে । তবে , যুদ্ধের অবস্থা সম্পর্কে ভুল ধারণা এবং
ব্যর্থ পরিকল্পনা তাদের কে পিছু হটতে বাধ্য করে । অবশেষে , যুদ্ধে মুসলমানদের জয় হয় ।
তবে , এই যুদ্ধ দ্বাদশ শতাব্দীতে জেরুজালেমের পতন এবং তৃতীয় ধর্মযুদ্ধের বীজ রোপন করে যায় ।
পরাজয়ের চেতনা ছাড়িয়েও পবিত্র ভূমির এই ধর্মযুদ্ধ যোদ্ধাদের এক অনন্য জয়ের স্বাদ এনে দেয় । এর মধ্যে সবচাইতে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ১১৪৭ খ্রিস্টাব্দের লিসবন দখল যেখানে শুধুমাত্র ৭০০০ পর্তুগীজদের একটি ছোট সেনাদলকে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে ফ্লেমিশ , ফ্রিজিয়ান , ইংরেজ , নরম্যান , স্কটিশ , এবং জার্মানদের ১৩০০০ সৈন্য বিশিষ্ট বিশাল যৌথবাহিনী ইংল্যান্ড থেকে জাহাজে করে পবিত্র ভূমির উদ্দেশ্যে রওনা হয় ।
পটভূমিঃ এডিসার পতন , প্রস্তুতি
এডেসার পতন
মূল ঃ এডেসার দখল
প্রথম ধর্মযুদ্ধ এবং ১১০১ সালে সংঘটিত ক্ষুদ্র যুদ্ধের পরে, প্রাচ্যে তিনটি ধর্মরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা হয় : জেরুজালেম রাষ্ট্র , অ্যান্টিওকের ক্ষুদ্ররাষ্ট্র , এডেসা অঙ্গরাজ্য । চতুর্থ , ত্রিপোলি কাউন্টি, প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১১০৯ খ্রিষ্টাব্দে । এদের মধ্যে উত্তরাঞ্চলীয় , সর্বনিম্ন জনবহুল এবং সবচাইতে দুর্বল ছিল এডেসা ; এতোটাই যে ,আশেপাশের মুসলিম অধ্যুষিত অরটোকিডস, ড্যানিশমেন্ডস এবং সেলজুক তুর্কস দ্বারা শাসিত রাজ্যগুলি থেকে ঘন ঘন আক্রমণের শিকার হয়েছিল এটি । ১১০৪ খ্রিস্টাব্দে হারানের যুদ্ধে পরাজয়ের ফলে এডেসার তৎকালীন রাজা দ্বিতীয় বাল্ডউইন এবং কোর্টেনের ভবিষ্যত রাজা জোসেলিন বন্দী হন । বাল্ডউইন এবং জোসেলিন দুজনেই ১১২২ খ্রিষ্টাব্দে দ্বিতীয়বার বন্দী হয়েছিলেন । যদিও ১১২৫ খ্রিষ্টাব্দে আজাজের যুদ্ধে এডেসা কিছুটা পুনরুদ্ধার হয় কিন্তু অবশেষে ১১৩১ খ্রিষ্টাব্দের যুদ্ধে রাজা জোসেলিন নিহত হন । পরবর্তীতে তাঁর উত্তরসূরি জোসেলিন দ্বিতীয়কে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের সাথে জোট গঠনে বাধ্য করা হয়েছিল , তবে ১১৪৩ খ্রিষ্টাব্দে বাইজেন্টাইন সম্রাট জন দ্বিতীয় কমনেনাস এবং জেরুজালেমের রাজা আনজুর ফুলক মৃত্যুবরণ করেন । তবে , ত্রিপোলির রাজা এবং অ্যান্টিওকের রাজকুমারের সাথেও রাজা জোসেলিন বিরোধে জড়িয়ে পড়েন যা পরবর্তীতে এডেসা রাজ্যকে পুরোপুরিভাবে শক্তিশালী মিত্রশূন্য করে তোলে ।
ইতিমধ্যে , ১১২৮ খ্রিষ্টাব্দে মসূলের সুলতান জেংগি সিরিয়ার ক্ষমতার চাবিকাঠি আলেপ্পো শহরকে নিজের দখলে নিয়ে নেন যা দামাস্কাস এবং মসূলের মাঝে প্রতিদ্বন্দিতার সৃষ্টি করে । ১১২৯ খ্রিষ্টাব্দে এই মহান নগরীর দ্বারপ্রান্তে বালডুইন পরজিত হন । পরবর্তীতে ১১৩৯ এবং ১১৪০ খ্রিষ্টাব্দে সম্রাট জেংগি এ শহর ঘেরাও করে নিলে দামাস্কাসের বুরিদ রাজবংশ রাজা ফুকের সাথে তাদের মৈত্রী স্থাপন করেন ; এই জোটের মধ্যস্থতাকারী ছিলেন ইতিহাসবিদ
উসামা ইবনে মুনকির ।