৭ মুহররম
অবয়ব
৭ মহররম হলো ইসলামি চান্দ্র বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস মুহররম ও হিজরি বছরের ৭ম দিন। এর পর হিজরি বছর শেষ হতে আরো ৩৪৭ বা ৩৪৮ দিন বাকি থাকে।
ঘটনাবলী
[সম্পাদনা]- ৬১ হিজরি: কারবালার যুদ্ধে অংশ নেওয়ার আগে হুসাইন ইবনে আলীর ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। শাম (সিরিয়া) থেকে পাঠানো উমাইয়া শাসক ইয়াজিদের সেনাপতি উবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদ নির্দেশ দেওয়ান হয় যে, ইমাম হুসাইন, তাঁর পরিবার ও অনুসারীদের জন্য ফোরাত নদীর পানি সরবরাহ যেন বন্ধ করে দেওয়া হয়। [১]
- ৩৫৮ হিজরি: আন্দালুসিয়ার প্রসিদ্ধ শাসক ও সেনাপতি আল-মানসুর ইবনে আবি আমিরকে উত্তরাধিকার ও সম্পত্তি সংক্রান্ত দায়িত্ব "খাতা আল-মাওয়ারীস" অর্পণ করা হয়।
- ৮৩৫ হিজরি: আন্দালুস অঞ্চলে মুসলিম ও খ্রিষ্টান কাস্তিলীয়দের মধ্যে ফখরীয় সন্ধিচুক্তি সম্পাদিত হয় এবং এই সন্ধির মাধ্যমে খ্রিষ্টান কাস্তিল রাজ্য স্পেনে মুসলিম উপস্থিতিকে ধ্বংস করার পথে এক ধাপ এগিয়ে যায়।
- ১১৪৫ হিজরি: স্পেনীয় বাহিনী উত্তর আফ্রিকার গুরুত্বপূর্ণ শহর ও সমুদ্রবন্দর ওহরান পুনরুদ্ধার করে। এই শহরটি ২৪ বছর পূর্বে উসমানীয় বাহিনী দখল করে স্পেনীয়দের থেকে মুক্ত করেছিল। কিন্তু এই দিন স্পেনীয়রা উসমানীয়দের পরাজিত করে পুনরায় শহরটি দখলে নেয়।
- ১৩২৮ হিজরি: উসমানীয় সাম্রাজ্যের অন্যতম বৃহৎ রাজপ্রাসাদ "সারায়ে জারাগান" ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যায়। প্রাসাদটি ১৮৬৫ সালে নির্মিত হয়েছিল এবং ১৯০৯ সাল থেকে তা সংসদ ভবন হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল।
- ১৩৬২ হিজরি: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল মরক্কোর কাসাব্লাঙ্কা শহরে পৌঁছান। এটি তার যুদ্ধ-পরিকল্পনার অংশ ছিল এবং তিনি বিভিন্ন সামরিক ও কূটনৈতিক আলোচনার উদ্দেশ্যে সফর করেছিলেন।
- ১৩৭১ হিজরি:
- মিশরের রাজনৈতিক দল ও জাতীয়তাবাদী সংগঠন "হিজবুল ওয়াফদ" ১৯৩৬ সালের বৃটেন-মিশর চুক্তি বাতিল করে। এই চুক্তি অনুযায়ী ব্রিটেন সুয়েজ খালের আশেপাশে সামরিক ঘাঁটি রাখার অধিকার পেয়েছিল, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
- ইখওয়ানুল মুসলিমিনের নতুন সাধারণ গাইড (মুরশিদ আম) হিসেবে বিচারক হাসান আল-হুদাইবি নির্বাচিত হন। তিনি ইমাম হাসান আল বান্নার স্থলাভিষিক্ত হন।
- ১৩৮০ হিজরি: ইতালি শাসিত সোমালিয়া ও ব্রিটিশ শাসিত সোমালিল্যান্ড একত্রিত হয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র "গণতান্ত্রিক সোমালি প্রজাতন্ত্র" গঠনের ঘোষণা দেয়। এটি আফ্রিকার উপনিবেশ-মুক্ত স্বাধীনতার ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিল।
- ১৩৮১হিজরি: মিশর ও সিরিয়া সম্মিলিতভাবে গঠিত সংযুক্ত আরব প্রজাতন্ত্রে জাতীয়করণ আইন প্রণয়ন করা হয়। এতে দেশের ব্যাংক, শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও বীমা কোম্পানিগুলোর ৫০% থেকে ১০০% পর্যন্ত জাতীয়করণ করা হয়।
- ১৩৮৯হিজরি: পাকিস্তানে সংঘটিত সরকারবিরোধী আন্দোলনের ফলে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আইয়ুব খান পদত্যাগে বাধ্য হন। এই রাজনৈতিক পরিবর্তন পাকিস্তানের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় তৈরি করে।
- ১৩৯৫ হিজরি: কাশ্মীর ও তিব্বত সীমান্তে এক ভয়াবহ ভূমিকম্প সংঘটিত হয়, যার মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৬.৮। এই দুর্যোগে ৪২ জন নিহত, ৪০ জন আহত এবং ২৫০০ জন মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। এছাড়া ভূমিকম্পের প্রভাব দিল্লি, লাহোর ও রাওয়ালপিন্ডিতেও অনুভূত হয়।
জন্ম
[সম্পাদনা]- ১২৭৩ হিজরি - মুহাম্মাদ হাদি আল-মিলানি, একজন ইরানি-ইরাকি শিয়া ফকিহ।
- ১৩৪১ হিজরি - আব্দুল্লাহ বিন আলী আল-খলিলি, একজন ওমানি কবি।
- ১৩৫৩ হিজরি - ফারুক সুবহি আল-কিলানি, একজন জর্ডানী আইনজীবী।
- ১৩৫৮ হিজরি - শুশু, একজন লেবাননি অভিনেতা।
- ১৩৬৯ হিজরি - আব্দুল্লাহ কাসিম আল-ওয়াশলি, একজন ইয়েমেনি ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব।
- ১৩৮১ হিজরি - সাহার রামি, একজন মিশরীয় অভিনেত্রী।
- ১৩৯৮ হিজরি - তারেক আল-কানদারি, একজন কুয়েতি অভিনেতা ও উপস্থাপক।
- ১৪০৭ হিজরি - ইসমাইল আবদুল লতিফ, একজন বাহরাইনি ফুটবল খেলোয়াড়।
মৃত্যু
[সম্পাদনা]- ১২১ হিজরি - মুসাইলামা ইবনে আবদুল মালিক ইবনে মারওয়ান, উমাইয়া রাজবংশের একজন সেনাপতি ও বিজয়ী।
- ৫৩১ হিজরি - আব্দুল মুনইম আল-জুলিয়ানি, আন্দালুসীয় চিকিৎসক ও সাহিত্যিক।
- ১২৯৬ হিজরি - খলিল আল-হিল, একজন ফিলিস্তিনি (গাজা) ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব।
- ১৩৫৭ হিজরি - মুহাম্মাদ তাওফিক নাসিম পাশা, মিশরের প্রধানমন্ত্রী।
- ১৩৮৭ হিজরি - কাজিম আল-খাত্তাত, একজন ইরাকি চারুলিপিকার ও কবি।
- ১৩৮৮ হিজরি - আমিরা আমির, একজন মিশরীয় অভিনেত্রী।
- ১৩৯৯ হিজরি - আল-জিলালি বিনানি, একজন মরোক্কীয় রাজনীতিবিদ।
- ১৪০৯ হিজরি - হুসেইন ফাওজি, একজন মিশরীয় সাহিত্যিক, ডাক্তার ও সমুদ্রবিজ্ঞানী।
- ১৪২৯ হিজরি - ইউনান লাবিব রিজক, একজন মিশরীয় ঐতিহাসিক।
- ১৪৩৩ হিজরি - আব্দুল করিম আল-জুহাইমান, একজন সৌদি সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও গবেষক।
- ১৪৩৫ হিজরি - হিতলার তানতাবি, মিশরীয় সেনাবাহিনীর একজন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অস্ত্রবিভাগ প্রধান)।
গ্রন্থপঞ্জি
[সম্পাদনা]- ইবনে কাসির, মুহাম্মদ (২০১৩)। আল বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ (বাংলা ভাষায়)। ঢাকা: ইসলামিক ফাউন্ডেশন। আইএসবিএন 984-06-0565-8।
- আল-যাহাবী, শামসুদ্দীন (২০১৫)। তারিখুল ইসলাম (আরবি ভাষায়)। বৈরুত: দারুল-কুতুব আল-ইলমিয়্যাহ। আইএসবিএন 27-45143-53-0।
- আল-যাহাবী, শামসুদ্দীন (২০১৪)। সিয়ারু আলামিন নুবালা (আরবি ভাষায়)। বৈরুত: আল-রিসালা প্রকাশনী। আইএসবিএন 978-9-933-44665-9।
- খতিব বাগদাদী (২০১১)। তারিখে বাগদাদ (আরবি ভাষায়)। বৈরুত: দারুল কুতুব ইলমিয়্যা। আইএসবিএন 978-274510-466-3।
- তাবারি, মুহাম্মদ ইবনে জারির (২০১১)। তারিখে তাবারি: তারিখুর রুসুল ওয়াল মুলুক (আরবি ভাষায়)। বৈরুত: দারুল কুতুব ইলমিয়া। আইএসবিএন 978-27451-3263-5।
- হামাবি, ইয়াকুত (২০১১)। মু'জামুল বুলদান (আরবি ভাষায়)। বৈরুত: দারুল কুতুব ইলমিয়া। আইএসবিএন 978-27451-1432-7।
- সুয়ুতী, জালালুদ্দীন (২০১০)। তারিখ আল-খুলাফা (আরবি ভাষায়)। সৌদি আরব: দারুল মিনহাজ। আইএসবিএন 978-99534-9819-5।
- ইলমাজ উজতুনা (২০১০)। তারিখ আল-দাওলাহ আল-উসমানিয়া (আরবি ভাষায়)। বৈরুত: দারুল কুতুব আরাবি। আইএসবিএন 978-61441-5031-3।
- ইয়াগি, ইসমাইল আহমদ (২০১৪)। আল-দাওলাহ আল-উসমানিয়া, ফিত তারিখিল ইসলামি আল-হাদিস (আরবি ভাষায়)। মাকতাবাতুল আবিকান। আইএসবিএন 978-60350-3695-5।
- বারদি, ইবনে তাগরি (২০১৬)। আল-নুজুম আল-যাহিরাহ ফি মুলুক মিসর ওয়াল কাহিরাহ (আরবি ভাষায়)। কায়রো: দারুল কুতুব আল-মিসরিয়া। আইএসবিএন 978-97781-2018-9।
- ইবনে ইয়াস (২০১৮)। বাদায়ি' আল-জুহুর ফি ওয়াকায়ি' আল-দুহুর (আরবি ভাষায়)। নিল ওয়াফুরাত।
- আল-মাকদিসি, আবু শামা (২০১৮)। আল-রওজাতাইন ফি আখবার আল-দাওলাতাইন আল-নুরিয়া ওয়াস সালাহিয়া (আরবি ভাষায়)। কায়রো: মুয়াসসাসাতুর রিসালা। আইএসবিএন 978-191264-335-6।
- আল মাকরিজি, আলি ইবনে আহমদ (২০০৮)। আস-সুলুক লিমারিফা দুয়াল আল-মুলুক (আরবি ভাষায়)। দার আল-জামান।
- ড. আব্দুর রহিম, আল-হাজ্জি (২০০৫)। তারিখুল আন্দালুস আল-ইসলামি। দাম্মাম (সৌদি আরব): দার ইবনুল জাওযি।
- রহমান, ড. আতাউর (২০২৩)। ইতিহাসে ইসলাম: নবী থেকে খেলাফত। ঢাকা: ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
- ডেভিড, ফ্রমকিন (১৯৮৯)। অ্য পিচ টু ইন্ড অল পিচ: দ্য ফ্যাল অফ দ্য অটোমান অ্যাম্পায়ার (A Peace to End All Peace: The Fall of the Ottoman Empire)। আইএসবিএন 0-8050-0857-8।
- Harvey, Leonard Patrick (১৯৯২)। Islamic Spain, 1250 to 1500। Chicago: University of Chicago Press। আইএসবিএন 0-226-31962-8।
আরো দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ al-Tabari, Muhammad ibn Jarir, History of the Prophets and Kings; Volume XIX The Caliphate of Yazid b. Muawiyah, translated by I.K.A Howard, SUNY Press, 1991। পৃষ্ঠা Part of Karbala war।