বিষয়বস্তুতে চলুন

২৮ মুহররম

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

২৮ মুহররম হল ইসলামি চান্দ্র বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস মুহররমহিজরি বছরের ২৮তম দিন এবং এরপর থেকে হিজরি বছর শেষ হতে আরো ৩২৬ বা ৩২৭ দিন বাকি থাকে।

ঘটনাবলী

[সম্পাদনা]
  • ৪৭৮ হিজরি: আন্দালুসের তোলাইতোলা ( বর্তমান স্পেনের টলেডো) শহর খ্রিস্টান কাস্তিলীয়দের হাতে পতিত হয়। এ ঘটনা ইসলামি আন্দালুসের পতনের সূচনা ছিল, যার ধারাবাহিকতায় একের পর এক ইসলামি দুর্গ ও নগর খ্রিস্টানদের অধীনে চলে যায়। অবশেষে ৮৯৭ হিজরিতে গ্রানাডা শহরের পতনের মাধ্যমে আন্দালুসে প্রায় আট শতাব্দী ধরে চলা ইসলামি শাসনের অবসান ঘটে।
  • ৬৪৮ হিজরি: আইয়ুবি বংশের শাসক তুরান শাহকে হত্যা করা হয়, যার ফলে মিশরে আইয়ুবি শাসনের সমাপ্তি ঘটে। এই হত্যাকাণ্ডের পরই মামলুকদের উত্থান শুরু হয়।
  • ১০৭৪ হিজরি: উসমানীয় সাম্রাজ্যের বিজয়ী সৈন্যবাহিনী ইউরোপের কেন্দ্রে অগ্রসর হয়ে চেকোস্লোভাকিয়া দখল করে ফেলে। এই অভিযান ‘উইভার অভিযান’ নামে পরিচিত ছিল।
  • ১১০৮ হিজরি: উসমানীয় সেনাবাহিনী ও জার্মান সেনাবাহিনীর মধ্যে এক ভয়াবহ যুদ্ধ সংঘটিত হয়, যা ‘উলাজের যুদ্ধ’ নামে পরিচিত। এ যুদ্ধে ১৬,০০০ জার্মান সৈন্য এবং ১,৫০০ উসমানীয় সৈন্য নিহত হয়।
  • ১২১৫ হিজরি: মিশরে নিযুক্ত ফরাসি সেনাপ্রধান জেনারেল ক্লেবারকে সিরিয়ার আলেপ্পো শহরের বাসিন্দা সুলেমান হালাবি কর্তৃক হত্যা করা হলে এর প্রতিক্রিয়ায় ফরাসিরা কায়রোর বিখ্যাত আল-আজহার মসজিদ বন্ধ করে দেয় এবং মসজিদটি ফরাসিদের মিশর ত্যাগের পর পুনরায় খুলে দেওয়া হয়।
  • ১২১৯ হিজরি: বিখ্যাত সামরিক নেতা ও কূটনীতিক নেপোলিয়ন বোনাপার্টকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফ্রান্সের সম্রাট হিসেবে অভিষিক্ত করা হয়।
  • ১২৭৪ হিজরি: ব্রিটিশরা ভারতীয় উপমহাদেশে ঘটে যাওয়া মহা বিদ্রোহ বা ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিপ্লব দমন করতে সক্ষম হয়। এটি ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে সবচেয়ে গুরুতর হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছিল।
  • ১২৯৯ হিজরি: উসমানীয় সাম্রাজ্যে ‘ঋণ কমিশন’ গঠিত হয়। এই সংস্থা সাম্রাজ্যের মূল রাজস্ব আয়ের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে, যার উদ্দেশ্য ছিল সাম্রাজ্যের বিপুল পরিমাণ ঋণ পরিশোধ করা। তখন সাম্রাজ্যের প্রায় ২৫২ মিলিয়ন স্বর্ণমুদ্রা ঋণ ছিল এবং সেখান থেকে ১৪৬ মিলিয়ন মাফ করা হয়। এই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বিশেষ করে সুলতান দ্বিতীয় আব্দুল হামিদের শাসনামলে ঋণ পরিশোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • ১৩৪৫ হিজরি: স্পেন ও ইতালি মরক্কোর তাঞ্জিয়ার বন্দরের মালিকানা নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষর করে। কারণ বন্দরটি জিব্রাল্টার প্রণালীর মুখে অবস্থিত ছিল এবং কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
  • ১৩৫১ হিজরি: মিশরের রাজা প্রথম ফুয়াদ দেশটির ‘আলমাজা বিমানবন্দর’ উদ্বোধন করেন এবং এই উপলক্ষে একটি বিশাল জনসমাবেশ হয়। সেখানে প্রথমবারের মত তিনজন মিশরীয় পাইলট মিশরের তৈরি বিমান উড্ডয়ন করেন।
  • ১৩৭৪ হিজরি: সৌদি আরবের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠিত ‘উনাইযা বিমানবন্দর’ আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হয়।
  • ১৪০০ হিজরি: সৌদি সরকারের সমালোচক ও ভিন্নমতাবলম্বী নাসের আল-সাঈদকে লেবাননে ফিলিস্তিনি গোয়েন্দাদের মাধ্যমে অপহরণ করা হয়। এটি সৌদি শাসনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য বিরোধিতার একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা ছিল।
  • ১৪১০ হিজরি: চাদ ও লিবিয়ার মধ্যে একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষের মূল কারণ ছিল ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ ‘ওউজু অঞ্চল’ নিয়ে বিরোধ।
  • ১৪১২ হিজরি: প্রায় চার বছর পর লেবাননের পশ্চিম বৈরুত শহর থেকে অপহৃত ব্রিটিশ সাংবাদিক ও চিত্রগ্রাহক জন ম্যাকার্থিকে মুক্তি দেওয়া হয়।
  • ১৪১৫ হিজরি: ইয়েমেনে দীর্ঘদিন চলা গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটে, যখন উত্তর ইয়েমেনের সেনাবাহিনী দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর এডেনে প্রবেশ করে।
  • ১৪১৬ হিজরি: মিশরের রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ হোসনি মোবারক একটি হত্যাচেষ্টার শিকার হন। ঘটনাটি ঘটে ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায়, যেখানে তিনি একটি আফ্রিকীয় সম্মেলনে অংশ নিতে গিয়েছিলেন। সেখানে পৌঁছানোর পরপরই তাঁর ওপর এই হামলা চালানো হয়। এই ঘটনা মিশর ও ইথিওপিয়ার মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েন সৃষ্টি করে এবং আফ্রিকীয় মহাদেশে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে ভাবনার উদ্রেক করে।
  • ১৪২৬ হিজরি: লেবাননে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। এরা ছিল সিরীয় সরকারের সমর্থক। তারা লেবাননের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রফিক হারিরির হত্যাকাণ্ডের তদন্তে বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। একইসঙ্গে তারা লেবাননে সিরিয়ার অবদানের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে। এই বিক্ষোভ সিরিয়া-লেবানন সম্পর্ক ও মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।
  • ১৪২৭ হিজরি: সৌদি আরবের পুঁজিবাজারে ভয়াবহ ধস নামে। এই ধসের ফলে হাজার হাজার বিনিয়োগকারী বিশাল পরিমাণ ক্ষতির সম্মুখীন হন। শুধু সৌদি আরবেই নয়; এই ধসের প্রতিক্রিয়া স্বরূপ আরব বিশ্বের অন্যান্য পুঁজিবাজারেও ধস নামে।
  • ১৪৪৪ হিজরি: পাকিস্তানে প্রবল বন্যার কারণে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রায় ১২০০ জন প্রাণ হারান এবং ১৭০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হন। লক্ষাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং বহু সড়কপথ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এই বন্যা পাকিস্তানের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় হিসেবে বিবেচিত হয়।
  • ১৩১২ হিজরি: আবদুল ওহাব আজ্‌যাম, একজন খ্যাতনামা মিশরীয় কূটনীতিক।
  • ১৩৬৪ হিজরি: আমাল ইব্রাহিম, একজন মিশরীয় অভিনেত্রী।
  • ১৩৭৮ হিজরি: রাশিদ আসসাফ, একজন সিরীয় অভিনেতা।
  • ১৩৮৫ হিজরি: নিদাল সিজরি, একজন সিরীয় অভিনেতা।
  • ১৩৯৪ হিজরি: সাফা জালাল, একজন মিশরীয় অভিনেত্রী।
  • ১৩৯৭ হিজরি: মুবারক আবদুল আজিজ, একজন কুয়েতি ফুটবলার।
  • ১৪০৬ হিজরি: ইয়াসমিন নিয়াজি, একজন মিশরীয় সংগীতশিল্পী।

মৃত্যু

[সম্পাদনা]
  • ৩৬৬ হিজরি: রুকন আদ-দাওলা বুয়াইহি, যিনি বুয়াইহি বংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন এবং ইরানের ইস্পাহান ও রায় শহরের উপর তাঁর কর্তৃত্ব ছিল।
  • ৬৪৮ হিজরি: তুরান শাহ, মিশরের সর্বশেষ আইয়ুবি সুলতান।
  • ৬৭৬ হিজরি: সুলতান আল-জাহির বাইবার্স, মিশর ও শামে মামলুক সালতানাতের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা। []
  • ৯২৩ হিজরি: বুরহানুদ্দীন ইবনে আবি শরিফ, শামী আলেম ও বিচারক।
  • ১৩৫২ হিজরি: আব্বাস কপ্তান, ওসমানীয় যুগের একজন খ্যাতনামা ইরাকি কবি।
  • ১৩৬৭ হিজরি: হুদা শারাওয়ী, মিশরীয় নারীবাদী।
  • ১৩৯২ হিজরি: শাযলি খইরুল্লা, একজন তিউনিশীয় চিন্তাবিদ ও সাংবাদিক।
  • ১৪০০ হিজরি: আওয়াদ দোখি, একজন কুয়েতী গায়ক।
  • ১৪২৮ হিজরি: ফাতেন ফরিদ, একজন মিশরীয় গায়িকা ও অভিনেত্রী।
  • ১৪৩৩ হিজরি: মাহমুদ হাফিজ, মিশরীয় কীটতত্ত্ব বিজ্ঞানী।

গ্রন্থপঞ্জী

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Ibn Taghri, al-Nujum al-Zahirah Fi Milook Misr wa al-Qahirah, Year 675H /vol.7 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]