২৩ মুহররম
অবয়ব
২৩ মুহররম হল ইসলামি চান্দ্র বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস মুহররম ও হিজরি বছরের ২৩তম দিন এবং এরপর থেকে হিজরি বছর শেষ হতে আরো ৩৩১ বা ৩৩২ দিন বাকি থাকে।
ঘটনাবলী
[সম্পাদনা]- ৭৬৭ হিজরি - সাইপ্রাসের রাজা প্রথম পেত্রোস আলেকজান্দ্রিয়া শহরে একটি হামলা চালান। এই হামলার পেছনে পোপের সমর্থন ছিল। তিনি শহরটি লুণ্ঠন করেন ও সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে ফেলেন।
- ৮৭২ হিজরি - সুলতান জাহির খোশকাদাম আমির আজবেককে ‘নুবাতের প্রধান’ (রাআস নুবাত) পদে নিযুক্ত করে এবং আমির জানবেককে 'হাজিবুল হুজ্জাব’ বা 'আশরাফি’ নামে পরিচিত 'কালাকসিজ' পদে নিযুক্ত করেন।
- ৮৯৭ হিজরিতে -
- আন্দালুসে মুসলিমদের শেষ ঘাঁটি গ্রানাডা ঘিরে ফেলা হয় এবং এইভাবে মুসলিম শাসনের পতনের সূচনা হয়।
- নাসরি রাজবংশের শেষ রাজা দ্বাদশ আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ গ্রানাডা রাজ্যর সিংহাসন ত্যাগ করে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন, যার মাধ্যমে আন্দালুসে মুসলিম শাসনের চূড়ান্ত পরিসমাপ্তি ঘটে। [১]
- ১২১৫ হিজরি - ফরাসি সেনাপতি ক্লেবারকে হত্যা করার কারণে সোলায়মান হালাবির বিচার শুরু হয়। এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল মিশরে ফরাসি আগ্রাসনের সময়।
- ১৩০০ হিজরিতে - মিশরের আরাবি বিপ্লবের নেতাদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
- ১৩২২ হিজরিতে - ফ্রান্স ও ব্রিটেন একটি বন্ধুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষর করে, যা ফ্রান্সকে মরক্কোতে কাজ করার পূর্ণ স্বাধীনতা প্রদান করে। এই চুক্তিটি ‘সদ্ভাবনার চুক্তি’ নামে পরিচিত।
- ১৩৩৬ হিজরি -
- ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী আর্থার জেমস বেলফোর ফিলিস্তিনে ইহুদিদের জন্য একটি জাতীয় আবাসভূমি গঠনের ঘোষণা দেন।
- জেনারেল এডমন্ড অ্যালেনবির নেতৃত্বাধীন ব্রিটিশ বাহিনী ফিলিস্তিনের গাজা অঞ্চলে উসমানীয় বাহিনীকে পরাজিত করে অঞ্চলটি দখল করে।
- ১৩৩৭ হিজরি - উসমানীয় সাম্রাজ্য ‘ইত্তেহাদ ও তারাক্কি’ সরকারের আমলে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর মিত্র শক্তির সঙ্গে একটি অস্ত্রবিরতির চুক্তি স্বাক্ষর করে।
- ১৩৪৫ হিজরি - মরক্কোর রিফ অঞ্চলে আল-রাবিতা আল-মাগরিবিয়া’ বা মরক্কোর লিগ পার্টি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই দলটি স্পেনীয় ঔপনিবেশিকতার বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামের পরিবর্তে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের পথ বেছে নেওয়ার আহ্বান জানায়।
- ১৩৪৯ হিজরি: মিশরের রাজা প্রথম ফুয়াদ মিশরীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইসমাইল সিদকি পাশাকে নিযুক্ত করেন। তিনি মুস্তফা নাহহাস পাশার স্থলাভিষিক্ত হন।
- ১৩৫৪ হিজরি: আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের শায়খ মুহাম্মাদ আহমাদি আল-জাওয়াহিরি তার পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
- ১৩৬৫ হিজরিতে - শায়খ মুস্তফা আবদুর রাজ্জাক আল-আজহারের শায়খের পদ গ্রহণ করেন।
- ১৪০৮ হিজরিতে - মিশরের পুলিশ মিশরীয় বিপ্লব সংস্থার নাসেরপন্থী নেতা মাহমুদ নূরুদ্দীনের বাসায় হানা দেয় এবং তাকে গ্রেপ্তার করে। ১৯৮৭ সালে ‘রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা মামলা নং ৭১৪’ এর অধীনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, যার মধ্যে সংস্থার সদস্যদের বিরুদ্ধে কায়রোতে কয়েকজন ইসরায়েলি ও মার্কিন ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগ ছিল।
- ১৪১৫ হিজরি - দীর্ঘ ২৭ বছর নির্বাসনে থাকার পর ফিলিস্তিনি নেতা ইয়াসির আরাফাত গাজা অঞ্চলে ফিরে আসেন।
- ১৪২৪ হিজরি: কুয়েত শহরের একটি বিখ্যাত বাণিজ্যিক কেন্দ্র 'সৌক শারকে' ইরাক কর্তৃক একটি রকেট হামলা চালানো হয়। এই আক্রমণটি ঘটে তৃতীয় উপসাগরীয় যুদ্ধ বা ইরাক আগ্রাসনের সময়। তবে এ হামলায় কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি; শুধুমাত্র বস্তুগত ক্ষয়ক্ষতি হয়।
- ১৪২৫ হিজরি: কমোরোস দ্বীপপুঞ্জে প্রথমবারের মতো জাতীয় আইনসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে আনুমানিক ২,৫৫,১৬০ জন নাগরিক অংশগ্রহণ করেন। নির্বাচনের লক্ষ্য ছিলো তিনটি স্বায়ত্তশাসিত দ্বীপ - আনজুয়ান, গ্র্যান্ড কোমোর ও মোহেলিতে সংসদীয় প্রতিনিধিদের নির্বাচন করা।
- ১৪২৬ হিজরি: বাইতুল মুকাদ্দাসে (জেরুজালেমে) অবস্থিত হায়েতুল বুরাকের (পশ্চিম ওয়াল) দক্ষিণে একটি নতুন ইহুদি উপাসনালয় উদ্বোধন করা হয়। উপাসনালয়টি ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের একটি বিশেষ ধারার জন্য নির্মিত হয় এবং অনেকেই এটিকে আল আকসা মসজিদের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার প্রয়াস হিসেবে বিবেচনা করেন।
- ১৪২৭ হিজরি: ইরাকের সামররা শহরে অবস্থিত দুইজন শিয়া ইমামের মাজারে একটি পরিকল্পিত বোমা হামলা সংঘটিত হয়। এই হামলা ইমাম আলী আল-হাদি ও ইমাম হাসান আসকারীর মাজারকে লক্ষ্য করে করা হয়। বিস্ফোরণের ফলে মাজারটির বিশাল সোনালী গম্বুজ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়, যা ইসলামি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ গম্বুজগুলোর মধ্যে ছিল।
- ১৪৩০ হিজরি: কুয়েতের আমির শেখ সাবাহ আল-আহমাদ আল-জাবের আল-সাবাহ কুয়েতে অনুষ্ঠিত প্রথম আরব অর্থনৈতিক, উন্নয়নমূলক ও সামাজিক শীর্ষ সম্মেলন উদ্বোধন করেন। এই সম্মেলনে ১৭ জন আরব রাষ্ট্রপতি, জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন এবং তৎকালীন ওআইসির (ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা) সভাপতি হিসেবে সেনেগালের রাষ্ট্রপতি আবদুল্লাহ ওয়াদ উপস্থিত ছিলেন। একই বছর কুয়েতে আরব নেতাদের মধ্যে একটি ঐক্যমূলক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন সৌদি আরবের বাদশাহ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজ, সিরিয়ার রাষ্ট্রপতি বাশার আল-আসাদ, মিশরের রাষ্ট্রপতি হুসনি মুবারক, কাতারের আমির শেখ হামাদ বিন খলিফা, বাহরাইনের রাজা হামাদ বিন ঈসা, এবং জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আব্দুল্লাহ। এই বৈঠকে কুয়েতের আমিরও উপস্থিত ছিলেন। সৌদি বাদশা তার ভাষণে আরব রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তির আহ্বান জানান।
- ১৪৩৩ হিজরি: হামাস আন্দোলনের সাথে পরিচিত শালিত বিনিময় চুক্তির অংশ হিসেবে ১০২৭ জনের বিনিময় চুক্তি সম্পন্ন করার অংশ হিসেবে ইসরায়েল ৫৫০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয়।
জন্ম
[সম্পাদনা]- ১৩৩০ হিজরি - ইব্রাহীম হামুদাহ, মিশরীয় অভিনেতা ও গায়ক।
- ১৩৪৫ হিজরি - রুশদি আবাজাহ, মিশরীয় অভিনেতা।
- ১৩৫৯ হিজরি - গাজি আব্দুর রহমান কুসাইবি: সৌদি কবি, সাহিত্যিক, রাষ্ট্রদূত ও মন্ত্রী।
- ১৩৬০ হিজরি - মাহমুদ ইয়াসিন, মিশরীয় অভিনেতা।
- ১৩৭৩ হিজরি - হিলাল আমিরি, ওমানি কবি।
- ১৩৯৪ হিজরি - ফয়সাল বাজি, আলজেরীয় ফুটবল খেলোয়াড়।
মৃত্যু
[সম্পাদনা]- ২৪০ হিজরি: আহমদ ইবনে আবি দুয়াদ, আব্বাসীয় খিলাফতের একজন বিচারক ও চিন্তাবিদ।
- ৪২৭ হিজরি: আবু ইসহাক সাউলাবি, নিশাপুরী মুফাসসির ।
- ১৩২০ হিজরি: আয়েশা আল-তৈমুরিয়া, লেখিকা ও সাহিত্যিক।
- ১৩৭৭ হিজরি: হাদি আস-সায়িগ, ইরাকি ধর্মবিদ, শিক্ষক ও লেখক।
- ১৪১৩ হিজরি: সুলায়মান ফারাঞ্জিয়া, লেবাননের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি।
- ১৪১৭ হিজরি: আব্দুল আজিজ হুসাইন, কুয়েতি সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদ।
- ১৪২৯ হিজরি -
- মুস্তাফা সাঈদ আল-খান, একজন শামী ফিকহ ও উসূলে ফিকহ বিশেষজ্ঞ ইসলামি আলেম।
- খলিল ইসমাইল, কুয়েতি অভিনেতা।
- ১৪৩১ হিজরি - মাহমুদ শুকরি, মুসলিম ব্রাদারহুডের একজন নেতা।
আরো দেখুন
[সম্পাদনা]গ্রন্থপঞ্জী
[সম্পাদনা]- ইবনে কাসির, মুহাম্মদ (২০১৩)। আল বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ (বাংলা ভাষায়)। ঢাকা: ইসলামিক ফাউন্ডেশন। আইএসবিএন 984-06-0565-8।
- আল-যাহাবী, শামসুদ্দীন (২০১৫)। তারিখুল ইসলাম (আরবি ভাষায়)। বৈরুত: দারুল-কুতুব আল-ইলমিয়্যাহ। আইএসবিএন 27-45143-53-0।
- আল-যাহাবী, শামসুদ্দীন (২০১৪)। সিয়ারু আলামিন নুবালা (আরবি ভাষায়)। বৈরুত: আল-রিসালা প্রকাশনী। আইএসবিএন 978-9-933-44665-9।
- খতিব বাগদাদী (২০১১)। তারিখে বাগদাদ (আরবি ভাষায়)। বৈরুত: দারুল কুতুব ইলমিয়্যা। আইএসবিএন 978-274510-466-3।
- তাবারি, মুহাম্মদ ইবনে জারির (২০১১)। তারিখে তাবারি: তারিখুর রুসুল ওয়াল মুলুক (আরবি ভাষায়)। বৈরুত: দারুল কুতুব ইলমিয়া। আইএসবিএন 978-27451-3263-5।
- হামাবি, ইয়াকুত (২০১১)। মু'জামুল বুলদান (আরবি ভাষায়)। বৈরুত: দারুল কুতুব ইলমিয়া। আইএসবিএন 978-27451-1432-7।
- সুয়ুতী, জালালুদ্দীন (২০১০)। তারিখ আল-খুলাফা (আরবি ভাষায়)। সৌদি আরব: দারুল মিনহাজ। আইএসবিএন 978-99534-9819-5।
- ইলমাজ উজতুনা (২০১০)। তারিখ আল-দাওলাহ আল-উসমানিয়া (আরবি ভাষায়)। বৈরুত: দারুল কুতুব আরাবি। আইএসবিএন 978-61441-5031-3।
- ইয়াগি, ইসমাইল আহমদ (২০১৪)। আল-দাওলাহ আল-উসমানিয়া, ফিত তারিখিল ইসলামি আল-হাদিস (আরবি ভাষায়)। মাকতাবাতুল আবিকান। আইএসবিএন 978-60350-3695-5।
- বারদি, ইবনে তাগরি (২০১৬)। আল-নুজুম আল-যাহিরাহ ফি মুলুক মিসর ওয়াল কাহিরাহ (আরবি ভাষায়)। কায়রো: দারুল কুতুব আল-মিসরিয়া। আইএসবিএন 978-97781-2018-9।
- ইবনে ইয়াস (২০১৮)। বাদায়ি' আল-জুহুর ফি ওয়াকায়ি' আল-দুহুর (আরবি ভাষায়)। নিল ওয়াফুরাত।
- আল-মাকদিসি, আবু শামা (২০১৮)। আল-রওজাতাইন ফি আখবার আল-দাওলাতাইন আল-নুরিয়া ওয়াস সালাহিয়া (আরবি ভাষায়)। কায়রো: মুয়াসসাসাতুর রিসালা। আইএসবিএন 978-191264-335-6।
- আল মাকরিজি, আলি ইবনে আহমদ (২০০৮)। আস-সুলুক লিমারিফা দুয়াল আল-মুলুক (আরবি ভাষায়)। দার আল-জামান।
- ড. আব্দুর রহিম, আল-হাজ্জি (২০০৫)। তারিখুল আন্দালুস আল-ইসলামি। দাম্মাম (সৌদি আরব): দার ইবনুল জাওযি।
- রহমান, ড. আতাউর (২০২৩)। ইতিহাসে ইসলাম: নবী থেকে খেলাফত। ঢাকা: ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
- ডেভিড, ফ্রমকিন (১৯৮৯)। অ্য পিচ টু ইন্ড অল পিচ: দ্য ফ্যাল অফ দ্য অটোমান অ্যাম্পায়ার (A Peace to End All Peace: The Fall of the Ottoman Empire)। আইএসবিএন 0-8050-0857-8।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "نفح الطيب من غصن الاندلس الرطيب" . احمد المقري المغربي المالكي الاشعري। পৃষ্ঠা 1317।