হালিল বে
হালিল বে | |
---|---|
জন্ম | ১৩৪৭ উসমানীয় বেয়লিক |
মৃত্যু | ১৩৬২ (বয়স ১৪–১৫) উসমানীয় বেয়লিক |
দাম্পত্য সঙ্গী | ইরিনি পালাইওলোগিনা |
বংশধর | গুন্দুজ বে ওমের বে |
রাজবংশ | উসমানীয় |
পিতা | প্রথম ওরহান |
মাতা | থিওডোরা কান্তাকুজিন |
ধর্ম | ইসলাম |
হালিল বে (১৩৪৭ - ১৩৬২; উসমানীয় তুর্কি: شاھزادہ خلیل ) একজন উসমানীয় রাজপুত্র ছিলেন। তিনি উসমানীয় বেইলিকের দ্বিতীয় বে ওরহান এবং বাইজেন্টাইন সম্রাট জন ষষ্ঠ কান্তাকুজেনোস এবং আইরিন আসানিনার কন্যা থিওডোরা কান্তাকুজেনের পুত্র। তার অপহরণ ১৪ শতকের উসমানীয় - বাইজেন্টাইন সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিল। তার সৎ ভাই প্রথম মুরাদ তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
অপহরণ
[সম্পাদনা]চতুর্দশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে, এজিয়ান সাগর এবং মারমারা সমুদ্র উপকূলে জলদস্যুতা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। জলদস্যুরা সাধারণত মুক্তিপণের জন্য মানুষকে অপহরণ করত। ১৩৫৭ সালে, তারা মারমারা উপকূলে ইজমিতের (প্রাচীন নিকোমিডিয়া) কাছে হালিলকে অপহরণ করে। তারা হালিলকে আগে থেকেই জানত কিনা তা জানা যায়নি। তবে তার পরিচয় জানার পর জানার পর তারা এজিয়ান উপকূলের ফোকিয়ায় (আধুনিক ফোকা) পালিয়ে যায়। ফোকিয়া ছিল একটি বাইজেন্টাইন দুর্গ। দুর্গটি সম্প্রতি জেনোয়া প্রজাতন্ত্র থেকে দখল করা হয়েছিল এবং লিও ক্যালোথেটোসের নেতৃত্বে ছিল। ওরহান তার ছেলেকে উদ্ধারের জন্য বাইজেন্টাইন সম্রাট আন্দ্রোনিকোস চতুর্থ প্যালাইওলোগোসের কাছে আবেদন করেন। তিনি বাইজেন্টাইনদের কর মওকুফের প্রস্তাব দেন এবং বাইজেন্টাইন সিংহাসনে কান্তাকৌজেনোস পরিবারের দাবিকে সমর্থন না করার প্রতিশ্রুতি দেন। আন্দ্রোনিকোস রাজি হন এবং হালিলকে উদ্ধার করার চেষ্টা করেন। কিন্তু লিও অনিচ্ছুক ছিলেন। ১৩৫৮ সালে অ্যান্ড্রোনিকোস তিনটি জাহাজের একটি ছোট নৌবহর নিয়ে ফোকিয়া অবরোধ করেন। এই অভিযানের খরচ ওরহান বহন করেন।[১] অ্যান্ড্রোনিকোস সারুহানের (পশ্চিম আনাতোলিয়ায় অবস্থিত একটি ছোট তুর্কমেন বেইলিক, যা রুম সালতানাতের পতনের পর গঠিত হয়েছিল) শাসক ইলিয়াস বে-কে ফোকিয়ার বিরুদ্ধে যৌথ অভিযানের জন্য আহ্বান জানান। তবে ইলিয়াস উভয় পক্ষের সাথেই খেলছিল। তিনি একটি শিকারের সময় অ্যান্ড্রোনিকোসকে অপহরণের পরিকল্পনা করেন। তবুও আন্দ্রোনিকোস তাকে গ্রেপ্তার করে তার পরিকল্পনা নস্যাৎ করতে সক্ষম হন। সারুহানের সহযোগিতা ছাড়াই অ্যান্ড্রোনিকোস অবরোধ তুলে নেন। ১৩৫৮ সালের অভিযান ব্যর্থ হওয়ার পর, ওরহান আলোচনার জন্য বসফরাসের এশীয় তীরে স্কুটারিতে (আধুনিক উস্কুদার) আসেন এবং মুক্তিপণ হিসেবে ৩০,০০০ ডুকাট দিতে সম্মত হন। ১৩৫৯ সালে হালিল মুক্তি পান।
পরিণতি
[সম্পাদনা]চুক্তির অংশ হিসেবে হালিলের সাথে তার প্রথম চাচাতো বোন ইরিনা পালাইওলোগিনার বাগদান হয়। ইরিনা ছিলেন পঞ্চম জন পালাইওলোগোসের ১০ বছর বয়সী কন্যা।[২][৩] উসমানীয় রাজপুত্র এবং বাইজেন্টাইন রাজকন্যা পরে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং তাদের দুটি পুত্র সন্তান হয়। যেহেতু হালিলের বড় ভাই সুলেমান পাশা ইতিমধ্যেই মারা গেছেন, তাই পালাইওলোগোস পরিবার তাকে উসমানীয় বেইলিকের নতুন শাসক হিসেবে দেখার আশা করেছিল। কিন্তু তাদের হতাশার হতে হয়। ওরহানের মৃত্যুর পর হালিলের ভাই মুরাদ প্রথমকে নতুন রাজা হিসেবে সিংহাসনে বসানো হয়।[৪] হালিল সিংহাসনের জন্য লড়াই করার চেষ্টা করেন। কিন্তু ১৩৬২ সালে তার ভাই মুরাদ তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
সন্তান
[সম্পাদনা]তার স্ত্রীর গর্ভে তার দুটি পুত্র ছিল:
- গুন্দুজ বে (১৩৬১-১৩৬২), প্রথম মুরাদ তাকে মৃত্যুদন্ড দেন;
- ওমর বে (১৩৬২–১৩৬২), প্রথম মুরাদ কর্তৃক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Halil İnalcık: Kuruluş Dönemi Osmanlı Sultanları, İsam, İstanbul, 2010, আইএসবিএন ৯৭৮-৬০৫-৫৫-৮৬০৬-৫ pp. 66–69
- ↑ Nicolae Jorga: Geschiste des Osmanichen Reiches vol I, (trans: Nilüfer Epçeli) Yeditepe Yayınları, 2009, আইএসবিএন ৯৭৫-৬৪৮০-১৮-১, p. 196
- ↑ জন পঞ্চম পালাইয়োলগোসের কয়েকজন কন্যা ও নাতনি ওসমানী রাজপরিবারে বিয়ে করেন। তাঁর কন্যা মারিয়া প্রথম মুরাদকে বিয়ে করেন। আরও দুজন কন্যা বিয়ে করেন তাঁর দুই পুত্র প্রথম বায়েজিদ এবং ইয়াকুব চেলেবিকে। আরেক কন্যা, ইরিনি বিয়ে করেন মুরাদের সৎ ভাই হালিলকে। তাঁর দুই নাতনি, থিওডোর প্রথম এবং জামপিয়া পালাইয়োলগিনার কন্যারা, বিয়ে করেন বায়েজিদের এক পুত্র সুলাইমান চেলেবি ও এক নাতি কুচুক মুস্তফাকে।
- ↑ Halil İnalcık: Kuruluş Dönemi Osmanlı Sultanları, İsam, İstanbul, 2010, আইএসবিএন ৯৭৮-৬০৫-৫৫-৮৬০৬-৫ISBN 978-605-55-8606-5 pp. 66–69