বিষয়বস্তুতে চলুন

হরপ্পা জাদুঘর

হরপ্পা জাদুঘর
عجائب گھر ہڑپہ
মানচিত্র
স্থাপিত১৯২৬; ৯৯ বছর আগে (1926) (প্রতিষ্ঠিত)
২৬ মার্চ ১৯৬৭; ৫৮ বছর আগে (1967-03-26) (বর্তমান ভবন)
অবস্থানচিচাওয়াটনি-হরপ্পা রোড, হরপ্পা, সাহিওয়াল জেলা, পাঞ্জাব, পাকিস্তান
স্থানাঙ্ক৩০°৩৭′৩১″ উত্তর ৭২°৫১′৫৮″ পূর্ব / ৩০.৬২৫২৩২° উত্তর ৭২.৮৬৬১৮১° পূর্ব / 30.625232; 72.866181
ধরনপ্রত্নতত্ত্ব জাদুঘর

হরপ্পা জাদুঘর একটি প্রত্নতত্ত্ব জাদুঘর, যা পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের হরপ্পা শহরে অবস্থিত।[] এটি হরপ্পা রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে,[] এবং সাহিওয়াল থেকে প্রায় ১৭ কিমি (১১ মা) পশ্চিমে অবস্থিত।[]

এই জাদুঘরটি ১৯২৬ সালে একটি ছোট সাইট জাদুঘর হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে ১৯৬৭ সালে এটি তার বর্তমান ভবনে স্থানান্তরিত হয়,[] যা পাকিস্তান সরকার দ্বারা নির্মিত।[][]

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

সিন্ধু সভ্যতা

[সম্পাদনা]

সিন্ধু সভ্যতা একটি ব্রোঞ্জ যুগের সভ্যতা ছিল, যা ৩৩০০ খ্রিস্টপূর্ব থেকে ১৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। এই সভ্যতা সিন্ধু নদ এবং এর উপনদী বিতস্তা, চন্দ্রভাগা, ইরাবতী, শতদ্রু এবং বিপাশা দ্বারা সিঞ্চিত এলাকাগুলিতে বিস্তৃত ছিল। এ পর্যন্ত এর চার শতাধিক স্থানের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর প্রধান নগর কেন্দ্র ছিল হরপ্পা এবং মহেঞ্জোদাড়ো। এটি হাষরপ্পার নাম অনুসারে হারপ্পা সভ্যতা নামেও পরিচিত, কারণ হারপ্পা ছিল এর প্রতিনিধিত্বকারী স্থান[]

প্রাথমিক আবিষ্কার

[সম্পাদনা]

প্রাচীন মাউন্ড বা ঢিবিগুলি প্রথম ১৮২৬ সালে চার্লস ম্যাসন দ্বারা পরিদর্শিত হয়। তিনি এই স্থানগুলো সম্পর্কে তার বই ন্যারিটিভ অফ ভ্যারিওস জার্নিস ইন বালুচিস্তান, আফগানিস্তান এন্ড দ্য পাঞ্জাব-এ বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছিলেন।[] এরপর আলেকজান্ডার বার্নস ১৮৩১ সালে এই স্থান পরিদর্শন করেন। আলেকজান্ডার কানিংহাম, যিনি ১৮৬১ সালে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের প্রতিষ্ঠাতা এবং মহাপরিচালক হয়েছিলেন,[] ১৮৫৩ এবং ১৮৫৬ সালে এই স্থান দু'বার পরিদর্শন করেন। তিনি পুরো এলাকাটির পরিধি প্রায় ৩ কিলোমিটার (সংলগ্ন ক্ষেত্রসমূহ ধরলে ৫ কিলোমিটার) বলে অনুমান করেছিলেন।[] তিনি লক্ষ্য করেন যে কিছু মাউন্ড খনন করা হয়েছে এবং সেখানকার ইটগুলো লাহোর–মুলতান রেলপথ নির্মাণে ব্যবহৃত হচ্ছে।

প্রথম খননকাজ

[সম্পাদনা]

২০ শতকের শুরুর দিকে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্নতাত্ত্বিকদের এই স্থান (এবং মোহেঞ্জোদারো স্থান) অনুসন্ধানের জন্য পাঠায়। দয়া রাম সাহনি ১৯২১ থেকে ১৯২৫ সাল পর্যন্ত এই স্থানে প্রথম খননকাজ পরিচালনা করেন। এরপর ১৯২৬ থেকে ১৯৩৪ সালের মধ্যে মাধো সরূপ ভাটস এর তত্ত্বাবধানে আরেক দফা খননকাজ হয়। ১৯৩৭ সালে কে. এ. নীলকান্ত শাস্ত্রী আরেকটি খনন অভিযান পরিচালনা করেন। ১৯৪৪ থেকে ১৯৪৬ সালের মধ্যে মর্টিমার হুইলার এই স্থানে ট্রেঞ্চ স্থাপন করে খননকাজ চালান।[]

স্বাধীনতার পর

[সম্পাদনা]
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের একটি স্মারক ফলক

ভারত বিভাজনের পর, প্রত্নতত্ত্ববিদ মোহাম্মদ রফিক মোগল ১৯৬৬ সালে হরপ্পায় খনন কার্য পরিচালনা করেন, যা এর সম্পর্কে আরও তথ্য উন্মোচনে সহায়তা করে। ১৯৬৭ সালের ২৬ মার্চ, জাদুঘরটি বর্তমান ভবনে স্থানান্তরিত হয় এবং এটি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শ্রম ও সামাজিক কল্যাণ মন্ত্রী কাজী আনোয়ারুল হক কর্তৃক উদ্বোধন করা হয়। ১৯৮৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত, আমেরিকান প্রত্নতাত্ত্বিক মিশন হরপ্পা প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা প্রকল্প পরিচালনা করে। এই প্রকল্পটি পাকিস্তান সরকারের প্রত্নতত্ত্ব ও জাদুঘর বিভাগ-এর সহযোগিতায় সম্পন্ন হয়। এতে জর্জ এফ. ডেলস সহ-পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[]

সংগ্রহ

[সম্পাদনা]

জাদুঘরটিতে দুটি গ্যালারি রয়েছে, যেখানে বিভিন্ন নিদর্শন প্রদর্শিত হয়। এগুলো সিন্ধু উপত্যকা সভ্যতার শিল্প, হস্তশিল্প এবং প্রযুক্তির বিকাশ ও উন্নয়নের গল্প তুলে ধরে। বর্তমানে সেখানে ত্রিশটি প্রদর্শনী কেস রয়েছে। প্রদর্শিত কিছু বস্তুর মধ্যে রয়েছে তামা ও ব্রোঞ্জ দিয়ে তৈরি জিনিসপত্র, টেরাকোটার মূর্তি, খেলনা, কঙ্কাল এবং হাতির দাঁত, শাঁখ ও মাটির তৈরি দৈনন্দিন ব্যবহার্য সামগ্রী।[]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. 1 2 3 4 5 6 7 "Harappa Museum | Directorate General of Archaeology"archaeology.punjab.gov.pk। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০২২
  2. 1 2 "The Historical Museum Harappa"YouTubeDawn News। ২ মার্চ ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০২২
  3. Khalti, Sher Ali (১৬ মে ২০২১)। "Harappa: an ancient archaeological site of Pakistan"The News International। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০২২
  4. "Museum in Harappa"। Pakistanica। ২৪ নভেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৮ মার্চ ২০১২
  5. "Narrative of various journeys in Balochistan, Afghanistan, the Panjab, & Kalât, during a residence in those countries : to which is added an account of the insurrection at Kalat, and a memoir on Eastern Balochistan"Library of Congress, Washington, D.C. 20540 USA। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০২২
  6. Cariappa, Devika (১৩ অক্টোবর ২০১১)। "Dead men tell no tales, or do they?"Deccan Herald (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০২২