শাহ জালাল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(হযরত শাহজালাল (র.) থেকে পুনর্নির্দেশিত)
শায়খুল মাশায়েখ মখদুম

শাহ জালাল
হযরত শাহজালালের দরগাহ
উপাধিআল-মুজাররাদ
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম(১২৭১-০৫-২৫)২৫ মে ১২৭১
মৃত্যু১৩৪৬ (বয়স ৭৪–৭৫)
সমাধিস্থলশাহ জালালের দরগাহ
ধর্মসুন্নি ইসলাম
সঙ্গী৩৬০ আউলিয়া, শাহ পরান, সৈয়দ হাতিম আলী
পিতামাতা
  • সৈয়দ মাহমুদ ইবনে মুহাম্মদ ইবনে ইব্রাহিম (পিতা)
  • সৈয়দা হাসেনাহ ফাতিমাহ (মাতা)
আখ্যাসুফি
তরিকাসোহরাওয়ার্দীয়া
আত্মীয়জালালউদ্দিন সুরখ-পশ বুখারি (মাতামহ)
ঊর্ধ্বতন পদ
ভিত্তিকসিলেট
পূর্বসূরীসৈয়দ আহমেদ কবির সোহরাওয়ার্দী
উত্তরসূরীশাহ পরান
পদসূফী সাধক, আধ্যাত্মিক নেতা ও মরমী
হযরত শাহজালালের মাজার

শাহজালাল (আরবি: شاه جلال; ১২৭১ – ১৩৪১) ভারতীয় উপমহাদেশের বিখ্যাত সুফি দরবেশ। তার পুরো নাম শেখ শাহ জালাল কুনিয়াত মুজাররদ। ৭০৩ হিজরী মোতাবেক ১৩০৩ খ্রিষ্টীয় সালে ৩২ বছর বয়সে ইসলাম ধর্ম প্রচারের লক্ষ্যে অধুনা বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলে এসেছিলেন বলে ধারণা করা হয়। তার সিলেট আগমনের সময়কাল নিয়ে যদিও বিভিন্ন অভিমত রয়েছে, তদুপরি শাহ জালালের সমাধির খাদিমগণের প্রাপ্ত ফার্সি ভাষার একটি ফলক-লিপি থেকে উল্লেখিত সন-তারিখই সঠিক বলে ধরা হয়।[১] ফার্সি ভাষায় লিখিত ফলক-লিপি বর্তমানে ঢাকা যাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।[২] সিলেটে তার মাধ্যমেই ইসলামের বহুল প্রচার ঘটে।[১][২][৩][৪] সিলেট বিজয়ের পরে শাহ জালালের সঙ্গী-অনুসারীদের মধ্য হতে অনেক পীর-দরবেশ এবং তাদের পরে তাদের বংশধরগণ সিলেট সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে বসবাস করেন।[১][৫] শাহজালালের সফরসঙ্গী ৩৬০ জন আউলিয়ার সিলেট আগমন ইতিহাসের একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। তার মৃত্যুর পর তাকে সিলেটেই কবর দেয়া হয়।[৬][৭]

জন্মস্থান ও বংশ[সম্পাদনা]

বলা হয়ে থাকে যে শাহ জালাল ২৫ মে ১২৭১ খ্রীষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। বিভিন্ন ঐতিহ্য এবং ঐতিহাসিক নথিতে তার জন্মস্থানের তফাৎ পাওয়া যায় এবং তার জীবন ও লিখিত জীবনির মধ্যে দুই শতাব্দীর ব্যবধান পাওয়া যায়। স্থানীয় গাথা এবং অনুসারীরা তাকে "শাহ জালাল ইয়ামেনি" বলে উল্লেখ করত। ইয়ামেনি থেকে ধারণা করা হয় তিনি ইয়েমেন থেকে এসেছেন। ১৫১৫ খ্রীষ্টাব্দে সা্লার সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ-এর আমলে প্রাপ্ত একটি শিলালিপিতে জালালের নামের শেষে کنیائی কুনয়াই শব্দটি পাওয়া যায়।[৮] একই শতাব্দীর শেষের দিকে, ১৫৭১ খ্রীষ্টাব্দে, শেখ আলী শের বাঙ্গালীর ফার্সী কিতাব শরহে নুজহতুল আরওয়াহ-এর ভূমিকায় শাহ জালাল জীবনী নিয়ে লেখা হয়। কিতাবের লেখক আলী শের বাঙ্গালী নিজেই ছিলেন শাহ জালালের ঊর্ধ্বতন শিষ্য নূরুল হুদা আবুল কারামাতের বংশধর, এবং ১৬১৩ খ্রীষ্টাব্দে তাঁর শিক্ষক মুহম্মদ গৌছ শত্তারীর লিখিত গুলজর-ই-আবরার কিতাবে তাঁর এই বর্ণনা ব্যবহার হয়েছিল। এই বর্ণনায়, শাহ জালালকে একজন "ترکستان زات بنگالی" (তুর্কিস্তান-জন্মা বাঙ্গালী) বলে ডাকা হ​য় এবং শাহ জালালকে তুর্কেস্তানের আহমদ ইয়াসাভীর মুরীদ বলা হয়।[৯] কুমিল্লার মুহম্মদ নাসিরউদ্দীন হায়দর যখন সিলেটে চাকরীরত ছিলেন, তখন তিনি ফার্সি ভাষায় সুহেল-ই-ইয়ামন তারীখ-ই-জলালী নামক পূর্ণাঙ্গ একটি জীবনী রচনা করেছিলেন। ১৮৫৯ খ্রীষ্টাব্দের এই রচনা শাহ জালালকে ইয়েমেনী বলা হয়। রচনাটি শাহ জালালের মৃত্যুর ৫ শতাব্দীর পরে লেখা হলেও, নাসিরউদ্দীন হায়দর বর্তমানে অপ্রাপ্য দুটি গ্রন্থসূত্র ব্যবহার করেছিলেন। গ্রন্থসূত্র দুইটি হল মহিউদ্দীন খাদেমের রিসালা (১৭১১) এবং ১৭২১ খ্রীষ্টাব্দের রৌজাতুস সলাতীন[১০]

১৫১৫ খ্রীষ্টাব্দে প্রাপ্ত হোসেন শাহী শিলালিপির کنیائی কুনয়াই শব্দটি নিয়ে অনেক অভিমত রয়েছে। কিছু গবেষক মনে করেন যে এই শব্দটি তুরস্কের কূ়নিয়া (قونیه) শহরকে নির্দেশ করে, এবং ধারণা করেন যে শাহ জালাল সম্ভবত পরবর্তীতে ইয়েমেনে হেজরত করেছিলেন। অন্য গবেষকরা ধারণা করেন যে এই শব্দ​ ইয়েমেনের হাজরামাউত অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী কনিনাহ গ্রামকে নির্দেশ করে,[১১] এবং কিছু পণ্ডিতরা এটি সম্ভবত পূর্ব আফ্রিকার কেনিয়া দেশকে নির্দেশ করছে বলে মত দিয়েছেন।[১২][১৩]

প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]

হিজরী ষষ্ঠ শতকের শেষাংশে মক্কার কোরায়েশ বংশের একটি শাখা মক্কা শহর হতে হেজাজ ভূমির দক্ষিণ পশ্চিম সীমান্তে ইয়েমেন প্রদেশে গিয়ে বসবাস করেন। ঐ শাখার মোহাম্মদ বা মাহমুদ শাহজালালের পিতা। মাহমুদের পিতা ছিলেন ইব্রাহিম[৩][১৪]

হযরত শাহ জালালের রওজায় প্রাপ্ত ফলক-লিপি সুহেলি ইয়্যামনি অনুসারে, শাহ জালাল ৩২ বছর বয়সে ৭০৩ হিজরী মোতাবেক ১৩০৩ খ্রিষ্টাব্দে সিলেট আগমন করেন। সুহেলি ইয়্যামনিতে উল্লেখিত তথ্য হতে জানা যায় যে, ৬৭১ হিজরী (১২৭১ খ্রিষ্টাব্দে) শাহজালাল জন্মগ্রহণ করেছেন। তার জন্মভূমি ছিল প্রাচীন আরবে আযমের হেজাজ ভূমির তৎকালীন প্রদেশ ইয়্যামন দেশের কুনিয়া নামক শহর। শাহ জালাল যখন তিন মাসের শিশুবালক, তখনই তার মাতার মৃত্যু হয়। [১৪]

শাহ জালাল শিশুকালেই মাতৃহীন হন এবং পাঁচ বছর বয়সে পিতাকে হারান। মামা আহমদ কবির তাকে দত্তক নেন। আহমদ কবির আরবী ভাষায় কোরআন হাদিস শিক্ষা দেয়া সহ ইসলাম ধর্মের প্রাথমিক বিষয়ে (নামাজ, রোজায়) অভ্যস্ততার গুরুত্ব প্রদান করেন। পরবর্তিতে আহমদ কবীর শাহ জালালকে ইয়েমেন থেকে মক্কায় নিয়ে যান। মক্কা শহরে আহমদ কবীরের একটি আস্তানা (হোজরা) ছিল। সেখানে অন্যান্য শিষ্যদের সাথে শাহ জালালকেও উপযুক্ত শিক্ষা দিয়ে গড়ে তুলতে সচেষ্ট ছিলেন বলে জানা যায়। [২][১৪]

গুরু পরিচিতি[সম্পাদনা]

শাহ জালাল-এর মামা ও শিক্ষাগুরু শায়েখ সৈয়দ আহমদ কবির সোহরাওয়ার্দি, সাধারণত; আহমদ কবির নামে তিনি বহুল পরিচিত। সৈয়দ আহমদ কবিরের পিতা নাম সৈয়দ জালাল সুরুখ বোখারী। সৈয়দ জালাল সুরুখ বোখারী শাহ জালালের জন্মের আগে ভারতবর্ষে ইসলাম প্রচারের লক্ষে মোলতানের নিকট আউচে এসে বসবাস করেন এবং সেখানেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন [২] সৈয়দ আহমদ কবির সোহরাওয়ার্দির পিতা সৈয়দ জালাল সুরুখ বোখারী ছিলেন তার মুরশীদ।

শাহ জালাল এর পীরদের ঊর্ধ্বতন আধ্যাত্মিক সাধকদের তালিকা নিম্নরূপঃ

আধ্যাত্মিকতা[সম্পাদনা]

শাহ জালালকে সুফি মতবাদে দীক্ষিত করাই আহমদ কবিরের মূল উদ্দেশ্য ছিল বলে জানা যায়; যে কারণে আহমদ কবিরের শাহ জালালকে নিয়ে মক্কায় আসা। মক্কা শহরে সোহরাওয়ার্দি তরিকার প্রবর্তক সিহাবুদ্দীনের প্রতিষ্ঠিত খানকায় (মরমী স্কুল) তত্কালে আহমদ কবির ছিলেন প্রধান তত্ত্বাবধায়ক। আহমদ কবির শাহ জালালকে ইসলামের শরীয়তমারিফত উভয়ধারায় শিক্ষাদানে দীক্ষিত করেন। [২][১৫]

দরবেশী জীবন[সম্পাদনা]

জন্মগতভাবে শাহ জালাল দরবেশ পরিবারে জন্ম নিয়েছেন। জানা যায়, তার পিতা ছিলেন একজন ধর্মানুরাগী মোজাহিদ, ইয়েমেনে ধর্মযুদ্ধে তিনি নিহত হন এবং তার মাতার দিক দিয়ে তিনি সৈয়দ বংশের প্রখ্যাত দরবেশ সৈয়দ জালাল সুরুখ বোখারীর দৌহিত্র ছিলেন।[১৫] তদুপরি দরবেশ আহমদ কবির তার মামা, যাকে শাহ জালালের শিক্ষাগুরু হিসেবে পাওয়া যায়, তিনিও তৎকালীন একজন বিখ্যাত দরবেশ ছিলেন বলে উল্লেখ রয়েছে। আহমদ কবির যখন শাহ জালালের লালন-পালনের ভার গ্রহণ করেন সেই ছোটবেলা থেকেই তাকে দরবেশী তর-তরিকায় জীবনযাপনের প্রণালী শিক্ষা দিয়েছেন বলেও পাওয়া যায়।

সিলেট আগমন পর্ব[সম্পাদনা]

শাহ জালাল মুজাররদ তার মামা ও গুরু সৈয়দ আহমদ কবিরের আস্তানায় আরব দেশে ছিলেন। শাহজালাল ভারতবর্ষে ধর্ম প্রচারের স্বপ্ন দেখার পরে সৈয়দ আহমদ কবির-এর কাছে ব্যক্ত করেন। মামা ও মুর্শিদ সৈয়দ আহমদ কবিরকে তা জানান। কবির এই স্বপ্নের ব্যাখ্যা দিয়ে শাহজালালকে ভারতবর্ষে যাবার পরামর্শ দেন। যাত্রাকালে কবির শাহ জালালেরর হাতে এক মুঠো মাটি তুলে দিয়ে বললেনঃ যে স্থানে এই মাটির "স্বাদ" "গন্ধ" ও "বর্ণের" মিল এক হবে, সেখানেই ধর্ম প্রচারের জন্য আস্তানা গড়বে। মুর্শিদ সৈয়দ আহমদ কবির (রহ) এর দোয়া নিয়ে শাহ জালাল (রহ) ধর্মপ্রচার অভিযানে আরবের মক্কা শরিফ হতে একা-একাই যাত্রা শুরু করেন[১৬][১৭]

হিন্দুস্থানে প্রবেশ[সম্পাদনা]

শাহ জালাল মক্কা হতে বিদায় কালে যে কয়েক জন সঙ্গী তার সাথে যাত্রা করেন তাদের মধ্যে প্রধান ছিলেন হাজী ইউসুফ, হাজী খলীল, হাজী দরিয়া এবং আরেকজন সঙ্গী চাশনী পীর ছিলেন মৃত্তিকার তহবিলদার। হিন্দুস্থানে আসার পূর্ব পর্যন্ত সমরকন্দ থেকে সৈয়দ ওমর, রোম থেকে করিমদাদ, বাগদাদ থেকে নিজাম উদ্দীন, ইরান, জাকারিয়া ও শাহ দাউদ এবং সৈয়দ মুহম্মদ প্রমুখ তার অনুগামী হলেন। তাদের নিয়ে তিনি হিন্দুস্থানে প্রবেশ করলেন। এরপর পাঞ্জাবের মুলতান থেকে আরিফ, গুজরাত থেকে জুনায়েদ, আজমীর শরীফ থেকে মুহম্মদ শরীফ, দাক্ষিণাত্য থেকে সৈয়দ কাসিম, মধ্যপ্রদেশের হেলিম উদ্দীন প্রমুখ তার মুরীদ হয়ে তার সঙ্গে সঙ্গে চললেন। এভাবে দিল্লী পর্যন্ত এসে পৌঁছালেন তখন শিষ্যদের সংখ্যা ২৪০ জন বলে ধারণা পাওয়া যায়।

নিজামুদ্দীন আউলিয়ার সাথে সাক্ষাৎ[সম্পাদনা]

দিল্লিতে আসার পর নিজামুদ্দিন আউলিয়ার জনৈক শিষ্য গুরুর কাছে শাহ জালালের কুৎসা প্রচার করে। সঙ্গে সঙ্গে নিজামুদ্দীন অন্যের কুৎসা রটনাকারী এ শিষ্যকে উপযুক্ত শাস্তিস্বরূপ দরবার থেকে তাড়িয়ে দেন এবং অন্য দুই শিষ্যকে ডেকে তাদের মারফতে শাহ জালালের কাছে সালাম পাঠান। শাহ জালাল সালামের উত্তরে উপটৌকনস্বরূপ ছোট একটি বাক্সে প্রজ্জলিত অঙ্গারের মধ্যে কিছু তুলা ভরে নিজামুদ্দীন আউলিয়ার নিকট পাঠান। নিজামুদ্দিন আউলিয়া হযরত শাহ্ জালালের আধ্যাত্মিক শক্তির পরিচয় পেয়ে তাকে সাদরে সাক্ষাতের আমন্ত্রণ জানান। বিদায়কালে প্রীতির নিদর্শনস্বরূপ নিজামুদ্দিন আউলিয়া তাকে এক জোড়া সুরমা রঙের কবুতর উপহার দেন। মাজার সংলগ্ন এলাকায় সুরমা রঙের যে কবুতর দেখা যায় তা ঐ কবুতরের বংশধর। যা জালালি কবুতর নামে খ্যাত।[২]

শেখ্ বুরহান উদ্দীনের দেখা ও দুঃখ প্রকাশ[সম্পাদনা]

উল্লেখ্য যে, শ্রীহট্টে ইসলাম জ্যোতি সহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক গ্রন্থের বর্ণনা অনুসারে তুর্কি বিজয়ের মধ্য দিয়ে শ্রীহট্টে মুসলমান জনবসতি গড়ে ওঠে ছিল। সিলেটের টুলটিকর মহল্লায় ও হবিগঞ্জের তরফে তত্কালে মুসলমানরা বসতি গড়েছিলেন। এ সময় শ্রীহট্টের গৌড় রাজ্যে গৌড়-গোবিন্দ নামে এক রাজা ছিল। গৌড় রাজ্যের অধিবাসী বুরহান উদ্দীন নামক জনৈক মুসলমান (হিন্দুরাজ্যে বসবাসকালে) নিজ ছেলের আকিকা উপলক্ষে গরু জবাই করে গৌড়ের হিন্দু রাজা গৌড় গোবিন্দের কাছে অপরাধী সাব্যস্ত হন। এ কারণে, গোবিন্দ বুরহান উদ্দীনের শিশু ছেলেকে ধরে নিয়ে হত্যা করে এরূপ মত প্রচলিত আছে।[৬][১৮] বুরহান উদ্দীন বাংলার তৎকালীন রাজা শামস উদ্দীন ফিরুজ শাহের নিকট গিয়ে এই নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ করলে রাজা তার ভাগিনেয় সিকান্দর গাজীকে প্রকাণ্ড সৈন্যবাহিনীর সঙ্গে শ্রীহট্টের গৌড় রাজ্যে প্রেরণ করেন। শাহী সৈন্য যখন ব্রহ্মপুত্র নদী পার হতে চেষ্টা করে তখনই রাজা গোবিন্দের সেনারা বীরত্বের সাথে মুসলিম সৈন্যের উপর অগ্নিবাণ নিক্ষেপ করে সমস্ত চেষ্টাকে বিফল করে ফেলে। গোবিন্দের শক্তির প্রভাবে সিকান্দর গাজীর প্রতিহত ও বিফল মনোরথের সংবাদ দিল্লীর সম্রাট আলাউদ্দিন খিলজির নিকট পৌঁছলে সম্রাট এ সংবাদে মর্মাহত হন। পরবর্তিতে সম্রাট তার রাজদরবারী আলেম-উলামা সহ জ্যোতিষিদের সাথে আলোচনায় এই মর্মে অবহিত হন যে, গৌড়গোবিন্দ জাদুশক্তির সাহায্যে যুদ্ধে জয়লাভ করেছে। জ্যোতিষিদের মতে সুলতানের সেনাবাহিনীতে আধ্যাত্মিক শক্তিসম্পন্ন এক ব্যক্তি রয়েছে, তার নেতৃত্বে অভিযান প্রেরণ করা হলে গৌড়গোবিন্দের যাদু বিদ্যার মোকাবেলা করে সিলেট বা শ্রীহট্ট জয় সম্ভব হবে। জ্যোতিষিরা উক্ত আধ্যাত্মিক শক্তিসম্পন্ন ব্যক্তির পরিচয়ের পন্থা হিসেবে এও বলে ছিল, আগামী দুই/এক রাত্রের মধ্যে দিল্লী নগরীতে প্রচণ্ড ঝড় বৃষ্টিতে সমস্ত নগরী ভেসে যাবে, প্রতিটি ঘর বাড়ির বিষম ক্ষতি লক্ষিত হবে, কোথায় কোন প্রদীপ থাকবে না; একটি মাত্র তাবু ব্যতীত। সম্রাট জ্যোতিষিদের কথামত অনুসন্ধান করে সেই ঝড় বৃষ্টির রাতে দেখতে ফেলেন একজন সাধারণ সৈনিক একটি তাঁবুতে একাগ্র মনে বসে কোরান পড়ছেন। সম্রাট সেখানে উপস্থিত হয়ে তার সব বিষয় অবগত হয়ে সিলেট অভিযানের নেতৃত্ব দেয়ার অনুরোধ জানান। তিনি সৈয়দ নাসির উদ্দীন, সম্রাটের আদেশে সম্মত হলে সম্রাট তাকে সিপাহসালার সনদের সাথে সিকান্দর গাজীর কাছে প্রেরণ করেন। এদিকে গাজী বুরহান উদ্দীন তখন দিল্লীতে অবস্থান করছিলেন। এসময় শাহ জালালও তার সঙ্গীদের নিয়ে দিল্লীতে আসেন। ঐতিহাসিক আজহার উদ্দীন ধারণা করে দিল্লীতেই বুরহান উদ্দীনের সাথে শাহ জালালের সাক্ষাৎ হয় এবং এখানেই বুরহান উদ্দীন নিজের দুঃখময় কাহিনী তার নিকট বর্ণনা করেন।[২][৩]

সিপাহশালার নাসির উদ্দীনের দেখা[সম্পাদনা]

শাহ জালাল দিল্লী হতে বুরহান উদ্দীনকে সহ ২৪০ জন সঙ্গীসহচর সিলেটের উদ্দেশ্য রওয়ানা হলেন। শাহ জালাল সাতগাঁও এসে ত্রিবেণীর নিকট দিল্লীর সম্রাট প্রেরিত অগ্রবাহিনী সিপাহসালার সৈয়দ নাসির উদ্দীনের সাথে মিলিত হন। সৈয়দ নাসির উদ্দীন শাহ জালাল সম্পর্কে অবগত হয়ে তদীয় শিষ্যত্ব গ্রহণের অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। পথে পথে শাহ জালালের শিষ্য বর্ধিত হতে লাগল । ত্রিবেণী থেকে বিহার প্রদেশে আসার পর আরো কয়েকজন ধর্মযোদ্ধা অনুষঙ্গী হলেন। যাদের মধ্যে হিসাম উদ্দীন, আবু মোজাফর উল্লেখযোগ্য। এখান থেকে সিপাহসালার সৈয়দ নাসির উদ্দীনের আনিত এক হাজার অশ্বারোহী ও তিন হাজার পদাতিক সৈন্যসহ শাহ জালাল নিজ সঙ্গীদের নিয়ে সোনারগাঁ অভিমুখে সিকান্দর গাজীর সাথে মিলিত হওয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন।[৩]

সিকান্দর গাজীর দেখা ও ব্রহ্মপুত্র পার[সম্পাদনা]

শাহ জালাল সোনারগাঁ আসা মাত্রই শাহ সিকান্দর গাজীর সাথে সাক্ষাৎ ঘটিল। সিকান্দর গাজী শাহ জালালকে সসম্মানে গ্রহণ করলেন। শাহ জালাল তার সঙ্গী অনুচর ও সৈন্যসহ শাহ সিকান্দরের শিবিরে সমাগত হয়ে সিকান্দর হতে যুদ্ধ বিষয়ে সব বিষয় অবগত হন। সিকান্দর শাহ জালালের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে শিষ্যগ্রহণপূর্বক সিলেট অভিমুখে যাত্রা করলেন। এভাবে শাহ জালালের শিষ্য সংখ্যা বেড়ে ৩৬০ জনে পৌঁছায়। এদিকে গৌড় গৌবিন্দ নিজস্ব চর দ্বারা শাহ জালালের সমাগম সংবাদ পেয়ে; নতুন এ দল যাতে ব্রহ্মপুত্র নদী পার না হতে পারেন, সে জন্য নদীর সমস্ত নৌ-চলাচল বন্ধ করে দেয়। শাহ জালালের ভক্তরা বিশ্বাস করেন যে, তিনি তার শিষ্যদের নিয়ে বিনা বাধায় জায়নামাজের সাহায্যে ব্রহ্মপুত্র নদী অতিক্রম করেন।[৩]

সিলেটে প্রবেশ[সম্পাদনা]

খ্রিস্টিয় দশম শতকে শ্রীহট্টভূমি লাউড়, জয়ন্তীয়া ও গৌড় নামে তিনটি স্বাধীন রাজ্যে বিভক্ত ছিল। উক্ত রাজ্য গুলোর মধ্যে গৌড় অন্যতম রাজ্য হিসেবে বিবেচিত ছিল। এ রাজ্যে প্রাচীন সীমা রেখা বর্তমান মৌলভীবাজার জেলা সহ হবিগঞ্জ জেলার কিয়দংশ নিয়ে বিস্তৃত থাকায় গৌড় রাজ্যের দক্ষিণ সীমাভূমি নবীগঞ্জের দিনারপুর পরগণার পাশে রাজা গোবিন্দের চৌকি ছিল। শাহ জালাল তার সঙ্গীদের নিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদী পার হয়ে প্রথমত সেখানে অবস্থান করেন। এখানে গৌড়ের সীমান্ত রক্ষীরা অগ্নিবাণ প্রয়োগ করে তাদেরকে প্রতিহত করতে চায়; কিন্তু মুসলমান সৈন্যের কোন ক্ষতি করতে পারেনি। গোবিন্দ সমস্ত বিষয় অবগত হয়ে উপায়ান্তর না পেয়ে বরাক নদীতে নৌকা চলাচল নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করে। শাহ জালাল পূর্বের মতো জায়নামাজের সাহায্যে বরাক নদী পার হন। বরাক নদী পারাপারে বাহাদুরপুর হয়ে বর্তমান সিলেট জেলার বালাগঞ্জ উপজেলায় ফতেহপুর নামক স্থানে রাত্রিযাপন করেন। উল্লিখিত তথ্য-সংবলিত প্রাচীন গ্রন্থ তোয়ারিখে জালালীতে উল্লেখ আছেঃ

চৌকি নামে ছিল যেই পরগণা দিনারপুর
ছিলটের হর্দ্দ ছিল সাবেক মসুর
সেখানে আসিয়া তিনি পৌছিলা যখন
খবর পাইলা রাজা গৌবিন্দ তখন।
এপারে হজরত তার লস্কর সহিতে
আসিয়া পৌছিলা এক নদীর পারেতে
বরাক নামে নদী ছিল যে মসুর
যাহার নিকট গ্রাম নাম বাহাদুরপুর।
যখন পৌছিলা তিনি নদীর কেনার
নৌকা বিনা সে নদীও হইলেন পার।[৩]

সর্ব প্রকার কলাকৌশল অবলম্বন করে রাজা গৌড়গোবিন্দ যখন দেখলেন সকল প্রয়াসই বিফলে হচ্ছে, তখন শেষ চেষ্টা করার লক্ষে যাদুমন্ত্রসহ এক প্রকাণ্ড লৌহধনুক শাহ জালালের কাছে প্রেরণ করে; যার শর্ত ছিল যদি কেহ একা উক্ত ধনুকের জ্যা ছিন্ন করতে পারে তখন গোবিন্দ রাজ্য ছেড়ে চলে যাবে। শাহ জালাল তার দলের লোকদের ডেকে বললেন, যে ব্যক্তির সমস্ত জীবনে কখনও ফজরের নামাজ কাযা হয়নি বা বাদ পড়েনি একমাত্র সেই পারবে গোবিন্দের লৌহ ধনুক "জ্যা" করতে। অতপর মুসলিম সৈন্যদলের ভেতর অনুসন্ধান করে সিপাহসালার সৈয়দ নাসির উদ্দীনকে উপযুক্ত পাওয়া গেল এবং তিনিই ধনুক জ্যা করলেন।[২][৩]

সুরমা নদী পারাপার[সম্পাদনা]

সিলেটের ঐতিহাসিক সুরমা নদী

উত্তর-পূর্ব ভারতের বরাক নদী বাংলাদেশে প্রবেশ করার সময় সুরমাকুশিয়ারা নদীতে বিভক্ত হয়ে যায়। সিলেট বিভাগের বেষ্টনী হিসেবে ধর্তব্য এ নদীগুলো প্রাচীন কালে প্রবল স্রোতে প্রবাহিত হত। বর্ষাকালের দৃশ্য প্রায় সাগরের মত দেখাতো। ঐতিহাসিক পর্যটক ইবন বতুতা সুরমা নদীকে নহরি আজরফ বলে আখ্যায়িত করেছেন। শাহ জালাল ফতেপুর হতে যাত্রা করে যখন সুরমা তীরে অবস্থান নিলেন, এ নদী পার হয়েই গৌড়ের রাজধানী। শাহ জালাল আউলিয়ার কেরামতি ও আলৌকিক বিভিন্ন ঘটনায় রাজা গোবিন্দ বীতশ্রদ্ধ হন। গোবিন্দ শক্রবাহিনীকে কিছু সময় ঠেকিয়ে রাখার জন্য সুরমা নদীতে নৌকা চলাচল নিষিদ্ধ করেন। তা সত্ত্বেও শাহ জালাল নদী পার হন।

শাহ্‌ জালাল বিসমিল্লাহ বলে সকল মুরিদকে নিয়ে জায়নামাজে করে, অনায়াসে গেলেন চলে নদীর ওপারে।[১৯]

গোবিন্দ গড়দুয়ারস্থিত রাজবাড়ি পরিত্যাগ করে পেচাগড়ের গুপ্তগিরি দুর্গে আশ্রয় নেন। এরপর থেকে তার আর কোন হদিস মেলেনি। শাহ জালাল তিন দিন সিলেটে অবস্থান করার পর, মিনারের টিলায় অবস্থিত রাজবাড়ি প্রথমে দখল নিলেন। [৩]

সিলেট প্রথম আজান ধ্বনি[সম্পাদনা]

সিলেট শহরে সর্বপ্রথম হযরত শাহজালাল এর আদেশে সৈয়দ নাসিরুদ্দিন সিপাহসালার আজান দেন।

গৌড় গোবিন্দের আত্মগোপন[সম্পাদনা]

গৌরগোবিন্দের মুসলিম নির্যাতনের কথা জানতে পেরে বাংলার তৎকালীন সুলতান ফিরজ শাহ গৌরগোবিন্দের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী প্রেরণ করেন, কিন্তু প্রথম অভিযান ব্যর্থ হলে ফিরজ শাহ সিকান্দার শাহের সহযোগিতা নিয়ে নাসির উদ্দীন নামের একজন সেনাপতিকে তার বিরুদ্ধে প্রেরণ করেন। এই সময় শাহজালাল তার সেনাবাহিনীসহ সোনারগাঁওয়ে অবস্থান করছিলেন; এই উভয় বাহিনী শাহজালালের নেতৃত্বে গৌরগোবিন্দের বিরুদ্ধে অভিযান করেন এই খবর শুনে গৌরগোবিন্দ পলায়ন করেন।

মৃত্যু[সম্পাদনা]

তার মৃত্যুর সঠিক তারিখ নিয়ে বিতর্ক আছে, তবে ৭৪৬ হিজরিতে (১৫ মার্চ ১৩৪৬ খ্রিস্টাব্দ) মারা গিয়েছিলেন বলে ইবনে বতুতা বর্ণনা করেছেন।[২০] তাকে সিলেটে তার দরগায় দাফন করা হয়, তিনি তার নিকটতম সহচর হাজী মুহাম্মদ ইউসুফকে তার দরগার খাদিম (অভিভাবক) নিযুক্ত করেন এবং ইউসুফের বংশধর, সারেকাউম পরিবার এই ভূমিকা অব্যাহত রেখেছেন।


গ্যালারি[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. বায়োগ্রাফিকাল এনসাইক্লোপিডিয়া অফ সুফিস। এন. হানিফ। সুরুপ অ্যান্ড সন্স, নতুন দিল্লি, ১ম সংস্করণ, পৃষ্ঠা ১৭১।
  2. শ্রীহট্টে ইসলাম জ্যোতি, মুফতি আজহারুদ্দীন সিদ্দিকি, উৎস প্রকাশন ঢাকা, প্রকাশকাল সেপ্টেম্বর ২০০২, পরিদর্শনের তারিখ: ২৮ জুন ২০১১
  3. শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পূর্বাংশ, দ্বিতীয় ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড, দ্বিতীয় অধ্যায়, দরবেশ শাহজালাল অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি; প্রকাশক: মোস্তফা সেলিম; উৎস প্রকাশন, ২০০৪।
  4. তত্ত্বনিধি, অচ্যুতচরণ চৌধুরী (২০০২)। "দরবেশ শাহজালাল"। শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত২য় (পরিমার্জিত উৎস সংস্করণ)। ঢাকা: উৎস প্রকাশনা। আইএসবিএন 9848890009ওসিএলসি 53951131 – ত-এর মাধ্যমে। 
  5. সিদ্দিকী, মুফতী আজহারুদ্দীন আহমাদ (২০০২)। শ্রীহট্টে ইসলামের জ্যোতি। ঢাকা: উৎস প্রকাশনা। আইএসবিএন 9846500025ওসিএলসি 55684552 
  6. মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন] (২০১২)। "বুরহানউদ্দীন (রঃ)"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  7. পরিষদ, সম্পাদনা (জুন ১৯৮২)। সংক্ষিপ্ত ইসলামি বিশ্বকোষ ২য় খণ্ড। শেরেবাংলা নগর, ঢাকা: ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ। পৃষ্ঠা ৩৭৬। আইএসবিএন 954-06-022-7 
  8. ব্লকম্যান, হাইনরিখ (১৮৭৩)। Geography and History of Bengalজার্নাল অফ দ্য এশিয়াটিক সোসাইটি অফ বেঙ্গল৪২এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ২৯৩। 
  9. Eaton, Richard M. (১৯৯৩)। The Rise of Islam and the Bengal Frontier, 1204–1760 (পিডিএফ)। Berkeley: University of California Press। ২১ জুন ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  10. আবদুল করিম (১৯৫৯)। "Sufis and their influence"। Social History of the Muslims in Bengal (Down to A.D. 1538)পাকিস্তান এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ১০০। 
  11. ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর, সম্পাদকগণ (২০১২)। "শাহ জালাল"বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  12. Hanif, N (২০০০)। Biographical Encyclopaedia of Sufis: South Asiaসীমিত পরীক্ষা সাপেক্ষে বিনামূল্যে প্রবেশাধিকার, সাধারণত সদস্যতা প্রয়োজন। পৃষ্ঠা 170-171। 
  13. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; mojlum নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  14. জীবনী গ্রন্থ; শাহজালাল (রহ), শাহ ওয়ালী উল্লাহ, প্রকাশনায়- ছাফা বুক করপোরেশন ঢাকা, প্রাকাশ কাল জুলাই ১৯৯৭।
  15. Metcalf, Barbara D. (২০১০)। Islam In South Asia In Practice (ইংরেজি ভাষায়)। Permanent Black। আইএসবিএন 978-81-7824-297-2 
  16. সিলেট বিভাগের ভৌগোলিক ঐতিহাসিক রুপরেখা, সৈয়দ মোস্তফা কামাল, প্রকাশক- শেখ ফারুক আহমদ, পলাশ সেবা ট্রাস্ট সিলেট, প্রকাশকাল- ফেব্রুয়ারি ২০০১১, পৃঃ ১০,
  17. হযরত বুরহান উদ্দীন জীবনী গন্থগোলজারে আলম ক্বারী মোহাম্মদ নুর উদ্দীন চিশ্তী, প্রকশনায়-মোহাম্মদ্দ আতাউর রহমান, প্রকাশ কাল নভেম্বর ২০০০
  18. Hanif, N. (২০০২)। Biographical Encyclopaedia of Sufis: Central Asia and Middle East (ইংরেজি ভাষায়)। Sarup & Sons। পৃষ্ঠা ৪৫৯। আইএসবিএন 978-81-7625-266-9 
  19. জিয়াউল হক, মো., হযরত শাহ্‌ জালাল (রা.): একটি মহাকাব্য, p. ৮৯, চৈতন্য প্রকাশনী, সিলেট, ২০১৫
  20. Rahman, M. F., Hazrat Shah Jalal and 360 Awliya, p.13, Deshkaal Publications, Sylhet, 1992

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

  • আলি শের বাঙ্গালী (১৫৭১) রচিত শারহ নুজহাত আল-আরওয়াহ
  • মুহাম্মদ গাউসি শাত্তারি (১৬১৩) রচিত গুলজার-ই-আবরার
  • নাসির উদ্দিন হায়দার (১৮৬০) রচিত সুহাইল-ই-ইয়ামান
    • মুহিউদ্দিন খাদিম রচিত রিসালাত (১৭১১)
    • রওজাত-উস-সালাতিন (১৭২১)