স্তোত্রবিদ্যা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
"হিনোমোলজির প্রথম অভিধান" এর পৃষ্ঠা

গ্রীক ὕμνος (হিমনস — hymnos) এবং -λογία (লগিয়া — logia) থেকে hymnology শব্দটি এসেছে।[১][২] হিমনস অর্থ স্তুতিবাচক সঙ্গীত এবং লগিয়া অর্থ কোন বিষয়ে অধ্যয়ন। hymnology শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ দাড়ায় স্তব-স্তুতি প্রকাশক গীতি সম্পর্কিত বিদ্যা বা স্তোত্রবিদ্যা।

সুনির্দিষ্টভাবে বলা যায়, অনেকগুলো পরিপ্রেক্ষিতের মধ্যে ধর্মীয় সঙ্গীত বিশেষকরে সম্মিলিত সঙ্গীত তথা বৃন্দগান এবং ধর্মীয় সভা বা মণ্ডলীতে গাওয়া সঙ্গীতসমূহের পাণ্ডিত্যপূর্ণ অধ্যয়ন-গবেষণাই হল স্তোত্রবিদ্যা। অন্যভাবে স্তোত্র রচনা-অনুশীলন-পর্যালোচনা সম্পর্কিত বিজ্ঞান বা স্তোত্র ও স্তোত্র রচয়িতা সম্পর্কে দার্শনিক-ঐতিহাসিক অনুসন্ধান ও নান্দনিক অনুমানকে স্তোত্রবিদ্যা বলা যায়।[৩] স্তোত্রবিদ্যা বলতে স্তোত্র রচনা এবং অনুশীলন অপেক্ষা স্তোত্র সংক্রান্ত বিচার বিশ্লেষণকেই কমবেশি বোঝানো হয়ে থাকে। স্তোত্রবিদরা স্তোত্রের উৎপত্তির ইতিহাস, সঙ্গীতোপসনার ঐতিহ্য, কোরাস বা সমবেত সঙ্গীতের উদ্দেশ্যে স্তবগান রচয়িতা নর-নারীর জীবন গাঁথা এবং রচনা ও সুরের আন্তঃসম্পর্ক নিয়ে অধ্যয়ন-অনুসন্ধান করে থাকেন। এছাড়াও স্তোত্রাবলীর লোকজ ও পরিমার্জিত উভয় ধারার ঐতিহাসিক অগ্রযাত্রা যা স্তোত্র রচনাবলী ও এগুলোর সুরের মধ্যে পরিবর্তন এনেছে এবং সঙ্গীতোপসনার বিভিন্ন ধরন-ধারণ বা রকমফের সংক্রান্ত সামাজিক-রাজনৈতিক, ধর্মতাত্ত্বিক ও নান্দনিক যুক্তি-তর্ক নিয়েও স্তোত্রবিদরা কাজ করেন। ইউনাইটেড রিফর্মড চার্চ অব ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস এর মিনিস্টার (খৃস্ট ধর্মীয় পুরোহিত বিশেষ)[৪], সঙ্গীততাত্ত্বিক ও সঙ্গীত রচয়িতা এরিক রাউটলি (১৯১৭-১৯৮২) একজন উল্লেখযোগ্য স্তোত্রবিদ যিনি তার কংগ্রেগেশনাল প্রেইস (১৯৫১) এবং দ্য ইউনিভার্সিটি ক্যারল বুক (১৯৬১) এর জন্য পরিচিত।

স্তোত্রবিদ্যাকে কখনো কখনো কঠোর দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে ব্যাখা করা হয়ে থাকে। যেমন— খ্রীস্টীয় স্তোত্র নিয়ে রচিত জন ডি. জুলিয়ানের অ্য ডিকশনারি অব হিমনলোজি[৫]-তে এমনটা করা হয়েছে। জুলিয়ানের এ গ্রন্থে স্তোত্রাবলীর ইতিহাস, পুঁথিগত পরিবর্তন, অনুবাদ এবং স্তোত্র রচয়িতাগণের জীবনবৃত্তান্ত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশিত হয়েছে। এগুলি ছাড়াও এই গ্রন্থে স্তবসমূহের কাব্যিক মাত্রা বা সুর নিয়েও কিছুটা উৎকণ্ঠা পরিলক্ষিত হয়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]