বিষয়বস্তুতে চলুন

সোর্ড-অ্যান্ড-স্যান্ডল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কার্লো ক্যাম্পোগ্যালিয়ানি নির্মিত গলিয়াৎ অ্যান্ড দ্য বার্বেরিয়ানস (১৯৫৯) ছবির এই পোস্টারটি এই বর্গের চলচ্চিত্রগুলি থেকে দর্শক-সাধারণের প্রত্যাশার বিষয়টি জানান দেয়।

সোর্ড-অ্যান্ড-স্যান্ডল (ইংরেজি: Sword-and-sandal) হল প্রধানত ইতালিতে নির্মিত এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে গ্রিকো-রোমান প্রাচীন যুগ বা মধ্যযুগের পটভূমিতে নির্মিত ঐতিহাসিক, পৌরাণিক বা বাইবেলীয় মহাকাব্যিক চলচ্চিত্রের একটি উপবর্গ। এই চলচ্চিত্র-ধারা পেপলাম (লাতিন: peplum) বা বহুবচনে পেপলা (লাতিন: pepla) নামেও পরিচিত। স্যামসন অ্যান্ড ড্যালিলা (১৯৪৯), কুয়ো ভাদিস (১৯৫১), দ্য রোব (১৯৫৩), দ্য টেন কম্যান্ডমেন্টস (১৯৫৬), বেন-হার (১৯৫৯), স্পার্টাকাস (১৯৬০) ও ক্লিওপেট্রা (১৯৬৩) প্রভৃতি সমকালীন বড়ো বাজেটের হলিউডের ঐতিহাসিক মহাকাব্যিক চলচ্চিত্রগুলির সমকক্ষ হয়ে ওঠার এক প্রচেষ্টায় এই ছবিগুলি নির্মিত হয়।[] ১৯৫৮ থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত এই ছবিগুলি ইতালীয় চলচ্চিত্র জগতে আধিপত্য করে গিয়েছে। এরপর ক্রমে স্প্যাগেটি ওয়েস্টার্নইউরোস্পাই উপবর্গের ছবিগুলির দ্বারা এগুলি প্রতিস্থাপিত হয়।[][]

১৯৬০-এর দশকে ফরাসি চলচ্চিত্র সমালোচকেরা "পেপলাম" শব্দটি (প্রাচীন গ্রিক পেপলোস নামক পোষাক নির্দেশকারী একটি লাতিন শব্দ) প্রবর্তন করেন।[][] "পেপলাম" ও "সোর্ড-অ্যান্ড-স্যান্ডল" শব্দবন্ধ দু’টি চলচ্চিত্র সমালোচকেরা একপ্রকার নিজস্ব চলচ্চিত্র ধারার শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কে পূর্ণ সচেতন থেকে এই জাতীয় ছবিগুলির প্রতি সৌজন্য প্রদর্শনের ভঙ্গিতে ব্যবহার করতেন। পরে এই ছবিগুলির অনুরাগীরা শব্দবন্ধগুলিকে সাদরে গ্রহণ করে নেয়, ঠিক তারা যেমন করেছিল "স্প্যাগেটি ওয়েস্টার্ন" বা "শ্যুট-‘এম-আপস" শব্দবন্ধগুলির ক্ষেত্রে। ইংরেজি সংস্করণে পেপলাম ছবিগুলিকে ইংরেজি ভাষায় "অমার্জিত ও অপর্যাপ্ত" ডাবিং-এর জন্য তৎক্ষণাৎ সেগুলির হলিউড প্রতিরূপগুলির থেকে পৃথক করা যায়।[] ১৯৭৭ সালে ইতালির পেপলাম বর্গের চলিচ্চিত্রের ইতিহাস নিয়ে আন্টোনিও আভাটি কোলোসাল: ই ম্যাগনিফিকো মাচিসটি (নামান্তরে কিনো কোলোসাল) নামে ১০০ মিনিটের একটি তথ্যচিত্র প্রযোজনা ও পরিচালনা করেন।[][][][][][১০][১১][১২]

সাধারণ বৈশিষ্ট্য

[সম্পাদনা]
মারিও ক্যামেরিনি পরিচালিত ইউলিসিস ছবির শ্যুটিং চলাকালীন একটি বিশ্রামমুহূর্তে কার্ক ডগলাসসিলভানা ম্যাংগানো

সোর্ড-অ্যান্ড-স্যান্ডল চলচ্চিত্রগুলি ইতালীয় অ্যাডভেঞ্চার চলচ্চিত্রের একটি নির্দিষ্ট শ্রেণি। এগুলির প্রেক্ষাপট বাইবেলীয় বা ধ্রুপদি প্রাচীন যুগ। কাহিনি মোটামুটি গ্রিকো-রোমান ইতিহাস অথবা মিশরীয়, আসিরীয়এট্রুস্কান প্রভৃতি অন্যান্য সমসাময়িক সংস্কৃতি, এবং সেই সঙ্গে মধ্যযুগের কথাও। সব ছবিই সার্বিকভাবে কল্পকাহিনি-মূলক নয়। অনেক ছবির কাহিনিতেই জুলিয়াস সিজার, ক্লিওপেট্রাহ্যানিবলের মতো ঐতিহাসিক চরিত্রদের চিত্রিত করা হয়েছে, যদিও আখ্যানবস্তুতে অনেক স্বাধীনতাও গ্রহণ করা হয়েছে। স্বৈরশাসক, জলদস্যু ও অত্যাচারীর বিরুদ্ধে গ্ল্যাডিয়েটরক্রীতদাসেদের বিদ্রোহও জনপ্রিয় বিষয়।

রবার্ট রাশিং-এর সংজ্ঞা অনুযায়ী, পেপলাম "এই বর্গের গৎবাঁধা রূপটিতে […] প্রদর্শন করে পৌরাণিক অতীতের পেশীবহুল যোদ্ধাদের (পেশাদার বডিবিল্ডার, খেলোয়াড়, মল্লযোদ্ধা অথবা বলিষ্ঠ চেহারার অভিনেতারা), তাঁরা কাল্পনিক দৈত্যদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন এবং স্বল্পবসনা সুন্দরীদের উদ্ধার করেন। এগুলি ধ্রুপদী জগতের প্রেক্ষাপটে নির্মিত বর্ণাঢ্য মহাকাব্যিক চলচ্চিত্র নয়, বরং এমন কিছু স্বল্প-বাজেটের ছবি যেগুলিতে নায়কের অনিন্দ্যসুন্দর শরীরের দৃষ্টি আকর্ষণের প্রয়াস করা হয়।[১৩][১৪] এই কারণে অধিকাংশ সোর্ড-অ্যান্ড-স্যান্ডল চলচ্চিত্রে হারকিউলিস, স্যামসন, গলিয়াৎ, আরসাস বা ইতালির নিজস্ব লোকনায়ক মাচিস্তের মতো কোনও না কোনও অতিমানবিক শক্তিশালী পুরুষকে প্রধান চরিত্র রূপে দেখা যায়। সেই সঙ্গে কাহিনিবৃত্তে দুই নারীকে সেই বলিষ্ঠ নায়কের প্রেমাকর্ষণের জন্য প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হতে দেখা যায়: একজন কল্যাণময়ী প্রেমিকা (উদ্ধার হওয়ার অপেক্ষায় থাকা এক দুর্দশাগ্রস্থ যুবতী) এবং এক অমঙ্গলকারিনী ভয়ংকরী রানি, যিনি নায়ককে দমন করতে চান।

তাছাড়াও এই ছবিগুলিতে সচরাচর এক উচ্চাকাঙ্ক্ষী শাসককে দেখা যায়, যিনি তাঁর সিংহাসনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ানো সকলকে হত্যা করে সিংহাসন দখল করতে চান এবং প্রায়শই দেখা যায় যে, সেই বলিষ্ঠ নায়কই একমাত্র তাঁকে পরাভূত করতে সক্ষম হচ্ছেন। এই কারণে নায়কের প্রায়শই এক রাজনৈতিক লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায় এক দুষ্ট স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে ন্যায়সঙ্গত সার্বভৌম শাসনব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা।[১৫]

অনেক পেপলাম চলচ্চিত্রেই দুই জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ দেখানো হয়: একটি সভ্য ও অপরটি বর্বর। এই সংঘর্ষের মধ্যে দেখা যায় হামলাকারীরা কোনও শহর বা গ্রামকে পুড়িয়ে ধ্বংস করে দিচ্ছে। সংগীতের দিক থেকে অনেক চলচ্চিত্রেই নৃত্যরতা মেয়েদের বর্ণাঢ্য দৃশ্যের প্রয়োগ ঘটানো হয়েছে, যার উদ্দেশ্য পৌত্তলিক অবক্ষয়টি চিহ্নিত করা।

সোর্ড-অ্যান্ড-স্যান্ডল তরঙ্গের পূর্বসূরি (প্রাক্-১৯৫৮)

[সম্পাদনা]

নির্বাক যুগের ইতালীয় চলচ্চিত্র

[সম্পাদনা]

ইতালীয় চলচ্চিত্রকারেরা সেই দেশের চলচ্চিত্রের একেবারে আদিযুগে একই ধরনের বিষয় নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করে পেপলাম বর্গের পথ প্রস্তুত করে যান। এই ছবিগুলির মধ্যে অন্যতম: [১৬]

নির্বাক মাচিস্তে চলচ্চিত্রসমূহ (১৯১-১৯২৭)

[সম্পাদনা]

১৯১৪ সালে নির্মিত ইতালীয় নির্বাক ছবি ক্যাবিরিয়া ছিল প্রাচীন যুগের প্রেক্ষাপটে নির্মিত সেই প্রথম ছবিগুলির একটি যেগুলিতে মাচিস্তে নামে এক প্রকাণ্ড পেশীবহুল চরিত্রকে (অভিনয়ে ছিলেন অভিনেতা বারতোলোমেও পাগানো) দেখা যায়, যিনি এই প্রথম ছবিটিতে নায়কের ক্রীতদাসতুল্য বিশ্বস্ত পার্শ্বচরের ভূমিকায় অভিনয় করেন। মাচিস্তে অবসশ্য ছবিটিতে দর্শকের প্রিয় চরিত্র হয়ে ওঠেন এবং পাগানোকে বহু বার এই চরিত্রে অভিনয়ের জন্য আহ্বান করা হয়। ১৯১৪ থেকে ১৯২৬ সালের মধ্যে নির্মিত অন্তত দুই ডজন ইতালীয় নির্বাক ছবিতে মাচিস্তে চরিত্রটিকে দেখা যায়। প্রতিটি ছবিতেই মাচিস্তে নামে ছবির প্রধান চরিত্রের নামকরণ করা হয়েছিল; যদিও ছবিগুলির কালগত ও ভৌগোলিক প্রেক্ষাপট প্রতিটি ছবিতে ছিল আলাদা আলাদা।

নিচে নির্বাক মাচিস্তে ছবিগুলির একটি কালানুক্রমিক পূর্ণাঙ্গ তালিকা দেওয়া হল:

  • ক্যাবিরিয়া (১৯১৪, এই ছবিতেই মাচিস্তে চরিত্রটি প্রথম আবির্ভূত হয়)
  • মাচিস্তে ("দ্য মার্ভেলাস মাচিস্তে", ১৯১৫)
  • মাচিস্তে বেরসাগলিয়েরে ("মাচিস্তে দ্য রেঞ্জার", ১৯১৬)
  • মাচিস্তে আলপিনো ("মাচিস্তে দ্য ওয়ারিয়র", ১৯১৬)
  • মাচিস্তে আতলেতা ("মাচিস্তে দি অ্যাথলেট", ১৯১৭)
  • মাচিস্তে মেদিয়াম ("মাচিস্তে দ্য ক্লেয়ারভয়েন্ট", ১৯১৭)
  • মাচিস্তে পলিজিওতো ("মাচিস্তে দ্য ডিটেকটিভ", ১৯১৭)
  • মাচিস্তে তুরিস্তা ("মাচিস্তে দ্য ট্যুরিস্ট", ১৯১৭)
  • মাচিস্তে সনামবুলো ("মাচিস্তে দ্য স্লিপওয়াকার", ১৯১৮)
  • লা রিভিনচিতা দি মাচিস্তে ("দ্য রিভেঞ্জ অফ মাচিস্তে", ১৯১৯)
  • ইল তেস্তামেন্তো দি মাচিস্তে ("মাচিস্তে’জ উইল", ১৯১৯)
  • ইল ভিয়াগিও দি মাচিস্তে ("মাচিস্তে’জ জার্নি", ১৯১৯)
  • মাচিস্তে ১ ("মাচিস্তে দ্য ফার্স্ট", ১৯১৯)
  • মাচিস্তে কনট্রো লা মরতে ("মাচিস্তে ভার্সাস ডেথ", ১৯১৯)
  • মাচিস্তে ইনামোরাতো ("মাচিস্তে ইন লাভ", ১৯১৯)
  • মাচিস্তে ইন ভাকানজা ("মাচিস্তে অন ভ্যাকেশন", ১৯২০)
  • মাচিস্তে সালভাতো দালে আক্যু ("মাচিস্তে রেসকিউড ফ্রম দ্য ওয়াটার্স", ১৯২০)
  • মাচিস্তে এ লা ফিগলিয়া দেল রে দেলা প্লাতা ("মাচিস্তে অ্যান্ড দ্য সিলভার কিং’স ডটার", ১৯২২)
  • মাচিস্তে আন্দ দিয়ে জাপানেরিন ("মাচিস্তে অ্যান্ড দ্য জাপানিজ", ১৯২২)
  • মাচিস্তে কনত্রো মাচিস্তে ("মাচিস্তে ভার্সাস মাচিস্তে", ১৯২৩)
  • মাচিস্তে আন্দ দিয়ে চিনেসিসচে ত্রুহে ("মাচিস্তে অ্যান্ড দ্য চাইনিজ ট্রাঙ্ক", ১৯২৩)
  • মাচিস্তে এ ইল নিপোতে দি আমেরিকা ("মাচিস্তে’জ আমেরিকান নেফিউ", ১৯২৪)
  • মাচিস্তে ইমপেরাতোরে ("এমপারার মাচিস্তে", ১৯২৪)
  • মাচিস্তে কনত্রো লো সেইকো ("মাচিস্তে ভার্সাস দ্য শেখ", ১৯২৫)
  • মাচিস্তে আল’ইনফারনো ("মাচিস্তে ইন হেল", ১৯২৫)
  • মাচিস্তে নেলা গাবিয়া দেই লিওনি ("মাচিস্তে ইন দ্য লায়নস’ ডেন", ১৯২৬)
  • ইন জিগান্তে দেলে দোলেমিতে ("দ্য জায়ান্ট ফ্রম দ্য ডলোমাইট", ১৯২৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত)

ইতালীয় ফ্যাসিবাদী ও বিশ্বযুদ্ধ-উত্তরকালীন ঐতিহাসিক মহাকাব্যিক চলচ্চিত্র (১৯৩৭-১৯৫৬)

[সম্পাদনা]
রিকার্ডো ফ্রেডা পরিচালিত থিওডোরা, স্লেভ ইমপ্রেস (১৯৫৪)

সবাক চলচ্চিত্রের প্রথম যুগে ইতালীয় চলচ্চিত্র জগতে বেশ কয়েকটি ঐতিহাসিক চলচ্চিত্র মুক্ত পেয়েছিল। এগুলির অন্যতম ১৯৩৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বড়ো-বাজেটের ছবি সিপিওনে এল’আফ্রিকানো (সিপিও আফ্রিকানাস: দ্য ডিফিট অফ হ্যানিবল)। এই ছবির কাহিনিকার ছিলেন বেনিটো মুসোলিনির ছেলে ভিত্তিরিও। মুসোলিনির ফ্যাসিবাদী সরকার এই নির্মাণে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করেছিল।[১৭] ১৯৪৯ সালে বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী ইতালীয় চলচ্চিত্র জগতে ফ্যাবিওলা ছবিটি পুনর্নির্মিত হয়। এই ছবিটি ইতিপূর্বে নির্বাক যুগে দু’বার নির্মিত হয়েছিল। ছবিটির একটি সম্পাদিত ইংরেজি ভাষায় ডাবিং-কৃত সংস্করণ ১৯৫১ সালে যুক্তরাজ্যে ও যুক্তরাষ্ট্রেও মুক্তিলাভ করেছিল। ফ্যাবিওলা ছবিটি নির্মিত হয়েছিল একটি ইতালীয়-ফরাসি সহ-প্রযোজনায়। এরপর দ্য লাস্ট ডেজ অফ পম্পেই (১৯৫০) ও মেসালিনা (১৯৫১) ছবি দু’টিও একইভাবে ইতালীয়-ফরাসি সহ-প্রযোজনায় নির্মিত হয়েছিল।

১৯৫০-এর দশকে ইতালিতে শ্যুটিং-কৃত একাধিক মার্কিনি ঐতিহাসিক মহাকাব্যিক চলচ্চিত্র মুক্তিলাভ করে। ১৯৫১ সালে এমজিএম প্রযোজক স্যাম জিম্বালিস্ট ইতালীয় চলচ্চিত্র জগতের বিশেষজ্ঞদের ব্যবহার করে রোমে কুয়ো ভাদিস ছবির শ্যুটিং চালিয়ে সুচতুরভাবে বড়ো আকারে টেকনিকালার মহাকাব্যিক চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছিলেন। এই ছবিতে রোমের অগ্নিকাণ্ড, রোমান সাম্রাজ্যে খ্রিস্টান নিপীড়ন ও সম্রাট নিরোর চিত্রণের সঙ্গে আখ্যানের কাল্পনিক যোগসূত্রের সঙ্গে সঙ্গেই পোলিশ লেখক হেনরিক সিয়েনকিউইকজ রচিত কুয়ো ভাদিস উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত এই ছবিতে দেখা গিয়েছিল আরসাস নামে এক বলবান নায়ককেও। ১৯৬০-এর দশকে ইতালীয় চলচ্চিত্রকারেরা এই চরিত্রটিকে নিয়ে একাধিক পেপলা চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন। এছাড়াও এমজিএম ১৯৫২ সালেই ইতালিতে বেন-হার ছবিটির চলচ্চিত্রায়ণের পরিকল্পনা করেছিল।[১৮]

রিকার্ডো ফ্রেডার সিনস অফ রোম ১৯৫৩ সালে চলচ্চিত্রায়িত হয় এবং পরের বছর ছবিটির একটি সম্পাদিত ও ইংরেজিতে ডাবিং-কৃত সংস্করণ আরকেও কর্তৃক মুক্তিলাভ করে। কুয়ো ভাদিস ছবিতে মার্কিনি অভিনেতা বা প্রযোজনা-কর্মী থাকলেও এই ছবিটিতে তা ছিল না। অ্যান্টনি কুইনের ছবি অ্যাটিলা (পিয়েত্রো ফ্রান্সিসকি পরিচালিত, ১৯৫৪), কার্ক ডগলাসের মহাকাব্যিক চলচ্চিত্র ইউলিসিস (অনুল্লিখিত সহ-পরিচালক মারিও বাভা, ১৯৫৪) এবং হেলেন অফ ট্রয় (রবার্ট ওয়াইজ পরিচালিত, অনুল্লিখিত সেকেন্ড ইউনিট পরিচালক সারজিও লিওনি, ১৯৫৫) ছিল ১৯৫০-এর দশকের প্রথম প্রধান পেপলাম চলচ্চিত্রগুলির অন্যতম। ১৯৫৪ সালে থিওডোরা, স্লেভ এমপ্রেস নামে আরেকটি পেপলাম পরিচালনা করেন রিকার্ডো ফ্রেডা; এই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তাঁর স্ত্রী জিয়ানা মারিয়া কানালে। ১৯৫৫ সালে ইতালি ও মিশরে চলচ্চিত্রায়িত ল্যান্ড অফ দ্য ফ্যারাওজ ছবিটি পরিচালনা করেন হাওয়ার্ড হকস। ১৯৫৬ সালে রবার্ট রোসেন তাঁর আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট ছবিটি চলচ্চিত্রায়িত করেন মিশরে; এই ছবির সংগীতকার ছিলেন ইতালীয় সুরকার মারিও নাস্কিমবেনে

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. প্যাট্রিক লুসানিও, উইথ ফায়ার অ্যান্ড সোর্ড: ইটালিয়ান স্পেকট্যাকলস অন আমেরিকান স্ক্রিনস, ১৯৫৮–১৯৬৮ (স্কেয়ারক্রো প্রেস, ১৯৯৪; আইএসবিএন ০৮১০৮২৮১৬২)
  2. ও'ব্রায়ান, ডি. (২০১৪)। ক্ল্যাসিকাল ম্যাসকুলিনিটি অ্যান্ড দ্য স্পেকট্যাকুলার বডি অন ফিল্ম: দ্য মাইটি সনস অফ হারকিউলিস (ইংরেজি ভাষায়)। স্প্রিংগার। আইএসবিএন 9781137384713। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  3. কিনার্ড, রয়; ক্রিঙ্কোভিচ, টনি (২০১৭)। ইটালিয়ান সোর্ড অ্যান্ড স্যান্ডল ফিল্মস, ১৯০৮-১৯৯০ (ইংরেজি ভাষায়)। ম্যাকফারল্যান্ড। পৃষ্ঠা ১। আইএসবিএন 9781476662916। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  4. বোনডানেলা, পিটার; পাচিওনি, ফেডেরিকো (২০১৭)। আ হিস্ট্রি অফ ইটালিয়ান সিনেমা (ইংরেজি ভাষায়)। ব্লুমসবেরি পাবলিশিং যুক্তরাষ্ট্র। পৃষ্ঠা ১৬৬। আইএসবিএন 9781501307645। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  5. ডেলা কাসা, স্টিভ; গিউসটি, মাক্রো (২০১৩), "ইল গ্রান্ডে লিব্রো ডি এরকোলে", এডিজিওনি সাবিনাই, পৃ. ১৯৪। আইএসবিএন ৯৭৮-৮৮-৯৮৬২৩-০৫১
  6. কিনো কোলোসাল – হারকিউলেস, মাচিসটে অ্যান্ড কো, Eintrag letterboxd.com. ১৯ মার্চ, ২০২১
  7. "সিনেফোরাম" (ইতালীয় ভাষায়)। ২৯ (#1–6)। ফেডেরাজিওনে ইতালিয়ানা সিনেফোরাম। ১৯৮৯: ৬২। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  8. পোমেরয়, আর্থার জে. (২০০৮)। 'দেন ইট ওয়াজ ডেসট্রয়েফ বাই দ্য ভলক্যানো': দি এনশিয়েন্ট ওয়ার্ল্ড ইন ফিল্ম অ্যান্ড অন টেলিভিশন (ইংরেজি ভাষায়)। ব্লুমসবেরি অ্যাকাডেমিক। পৃষ্ঠা ৬৭। আইএসবিএন 9780715630266। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  9. নিকোলোউৎসোস, কোনস্তানতিনোস পি. (২০১৩)। এনশিয়েন্ট গ্রিক উইমেন ইন ফিল্ম (ইংরেজি ভাষায়)। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 139। আইএসবিএন 9780199678921। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  10. বেম্যান, লুই (২০১১)। ডাইরেক্টরি অফ ওয়ার্ল্ড সিনেমা: ইটালি (ইংরেজি ভাষায়)। ইনটেলেক্ট বুকস। পৃষ্ঠা ১৭৭। আইএসবিএন 9781841504001। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  11. দিয়াক, নিকোলাস (২০১৮)। দ্য নিউ পেপলাম: এসেজ অন সোর্ড অ্যান্ড স্যান্ডল ফিল্মস অ্যান্ড টেলিভিশন প্রোগ্রামস সিনস দ্য ১৯৯০জ (ইংরেজি ভাষায়)। ম্যাকফারল্যান্ড। পৃষ্ঠা ১৯৫। আইএসবিএন 9781476631509। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  12. রিতজার, আইভো; শুলজে, পিটার ডব্লিউ. (২০১৬)। জেনর হাইব্রিডাইজেশন: গ্লোবাল সিনেম্যাটিক ফ্লো (ইংরেজি ভাষায়)। শুরেন ভারল্যাগ। পৃষ্ঠা 65। আইএসবিএন 9783741000416। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  13. ক্লেইন, আমান্ডা অ্যান; পামার, আর. বার্টন (২০১৬)। সাইকেলস, সিক্যোয়েলস, স্পিন-অফস, রিমেকস, অ্যান্ড রিবুটস: মাল্টিপ্লিসিটিজ ইন ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন (ইংরেজি ভাষায়)। ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাস প্রেস। আইএসবিএন 9781477308196। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  14. উদ্ধৃতি: "in its most stereotypical form, [...] depicts muscle-bound heroes (professional bodybuilders, athletes, wrestlers, or brawny actors) in mythological antiquity, fighting fantastic monsters and saving scantily clad beauties. Rather than lavish epics set in the classical world, they are low-budget films that focus on the hero's extraordinary body."
  15. কর্নেলিয়াস, মাইকেল জি. (২০১১)। অফ মাসলস অ্যান্ড মেন: এসেজ অন দ্য সোর্ড অ্যান্ড স্যান্ডল ফিল্ম (ইংরেজি ভাষায়)। ম্যাকফারল্যান্ড। পৃষ্ঠা ১৫। আইএসবিএন 9780786489022 
  16. মিকেলাকিস, পানতেলিস; ঊইকে, মারিয়া; পুচি, গিউসেপে (২০১৩)। দি এনশিয়েন্ট ওয়ার্ল্ড ইন সাইলেন্ট সিনেমা (ইংরেজি ভাষায়)। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 247–261। আইএসবিএন 9781107016101। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  17. মেডভেড, হ্যারি ও মাইকেল (১৯৮৪)। দ্য হলিউড হল অফ শেম। অ্যাংগাস অ্যান্ড রবার্টসন। পৃষ্ঠা ৫৪। 
  18. প্রিয়র, টমাস এম. "বেন-হার টু রাইড ফর মেট্রো এগেইন", নিউ ইয়র্ক টাইমস, ৮ ডিসেম্বর, ১৯৫২

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]
চলচ্চিত্র
ছবি ও আলোচনা