সোকোল্লু মেহমেদ পাশা মসজিদ, কাদিরগা
সোকল্লু মেহমেদ পাশা মসজিদ | |
---|---|
Sokollu Mehmet Paşa Camii | |
![]() সোকল্লু মেহমেদ পাশা মসজিদের দৃশ্য | |
ধর্ম | |
অন্তর্ভুক্তি | ইসলাম |
অবস্থান | |
অবস্থান | ইস্তানবুল, তুরস্ক |
স্থাপত্য | |
স্থপতি | মিমার সিনান |
ধরন | মসজিদ |
ভূমি খনন | আনুমানিক ১৫৬৮ |
সম্পূর্ণ হয় | ১৫৭১/২ |
বিনির্দেশ | |
গম্বুজের উচ্চতা (বাহিরে) | ২২.৮ মি (৭৫ ফু) |
গম্বুজের ব্যাস (বাহিরে) | ১৩ মি (৪৩ ফু) |
মিনার | ১ |
উপাদানসমূহ | গ্রানাইট, মার্বেল |


সোকল্লু মেহমেদ পাশা মসজিদ (তুর্কি: Sokollu Mehmet Paşa Camii) হল ১৬শ শতাব্দীর অটোমান মসজিদ, যা ইস্তানবুলের ফাতিহ জেলার কাদিরগা এলাকায় অবস্থিত। এটি প্রধান উজির সোকল্লু মেহমেদ পাশা এবং তার স্ত্রী ইসমিহান সুলতান (সুলতান সেলিম দ্বিতীয়-এর কন্যা ও সুলেমান দ্য ম্যাগনিফিসেন্ট-এর নাতনি) যৌথভাবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এটি সম্রাটের প্রধান স্থপতি মিমার সিনান দ্বারা ডিজাইন করা হয় এবং ১৫৭১/২ সালে সম্পন্ন হয়। মসজিদটি এর অভ্যন্তরীণ দেয়ালে থাকা উন্নত মানের ইজনিক টাইলসের নকশার জন্য প্রসিদ্ধ।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]এই মসজিদটি অটোমান সাম্রাজ্যের প্রধান স্থপতি মিমার সিনান কর্তৃক ডিজাইন করা হয়, যা প্রধান উজির সোকল্লু মেহমেদ পাশা এবং তার স্ত্রী ইসমিহান সুলতান দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি ১৫৭১/৭২ সালে সম্পন্ন হয়, যা মসজিদের উত্তরের প্রবেশপথের ওপরে তুর্কি ভাষায় লিখিত ভিত্তিপ্রস্তর শিলালিপি অনুযায়ী ৯৭৯ হিজরিতে নির্মিত। যদিও ইসমিহান সুলতান এবং তার স্বামী যৌথভাবে মসজিদটির জন্য দান করেছিলেন, তবে ভিত্তিপ্রস্তর শিলালিপিতে শুধুমাত্র সোকল্লু মেহমেদ পাশার নাম উল্লেখ করা হয়েছে।[১] [২]
স্থাপত্য
[সম্পাদনা]বহির্ভাগ
[সম্পাদনা]মসজিদটি একটি খাড়া ঢালের উপর স্থাপত্যগতভাবে চ্যালেঞ্জিং অবস্থানে অবস্থিত। মিমার সিনান এই সমস্যার সমাধান করেন মসজিদের সম্মুখভাগে দুটি তলাবিশিষ্ট একটি প্রাঙ্গণ নির্মাণের মাধ্যমে। নিচের তলাটি দোকানে বিভক্ত করা হয়, যেগুলোর ভাড়া মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বরাদ্দ ছিল। উপরের তলা একটি খোলা স্তম্ভবেষ্টিত আঙ্গিনা হিসেবে গড়ে তোলা হয়, যেখানে তিন পাশে কলামগুলোর মধ্যবর্তী স্থান দেয়াল দিয়ে আবদ্ধ করে ছোট ছোট কক্ষ তৈরি করা হয়। প্রতিটি কক্ষে একটি ছোট জানালা, অগ্নিকুণ্ড এবং বিছানার জন্য সংরক্ষণস্থল ছিল, যা মাদ্রাসার আবাসিক এলাকা হিসেবে ব্যবহৃত হতো। চতুর্থ দিকে মসজিদটি নিজেই অবস্থিত, যা একটি ষড়ভুজাকৃতির কাঠামো যা একটি আয়তক্ষেত্রের মধ্যে সংযুক্ত এবং একটি প্রধান গম্বুজ দ্বারা আচ্ছাদিত। গম্বুজের চার কোণে ছোট চারটি অর্ধ-গম্বুজ রয়েছে।[৩]
মসজিদের প্রধান গম্বুজের ব্যাস ১৩ মিটার (৪৩ ফুট) এবং উচ্চতা ২২.৮ মিটার (৭৫ ফুট)।[৪] প্রাঙ্গণের অভ্যন্তরে অবস্থিত ওজু ফোয়ারা (অজুখানা) বারোটি স্তম্ভের উপর দাঁড়ানো একটি পেঁয়াজ-আকৃতির গম্বুজ দ্বারা আচ্ছাদিত।[৫] মসজিদের একমাত্র মিনারটি উত্তর-পূর্ব কোণে অবস্থিত।[৬]
অভ্যন্তরীণ নকশা
[সম্পাদনা]সোকল্লু মেহমেদ পাশা মসজিদের অভ্যন্তরীণ অংশ এর ইজনিক টাইলসের জন্য বিখ্যাত। এই টাইলস নীল, লাল এবং সবুজ ফুলের নকশার বৈচিত্র্যময় অলংকরণ দ্বারা সজ্জিত, যেখানে নীল পটভূমিতে সাদা থুলুথ শৈলীতে ক্যালিগ্রাফি খোদাই করা হয়েছে।[৭] অভ্যন্তরের স্তম্ভগুলোতে বহুরঙা মার্বেল ব্যবহার করা হয়েছে।
মসজিদের মিম্বার সাদা মার্বেল দ্বারা নির্মিত এবং এর উপরের অংশ শঙ্কুযুক্ত, যা ইজনিক টাইলস দিয়ে আবৃত। মিহরাবের উপরের জানালাগুলো রঙিন কাঁচের তৈরি। মসজিদের প্রধান প্রবেশপথের উপরে একটি সোনালী ব্রাস কাঠামোর মধ্যে আবদ্ধ অবস্থায় মক্কার কাবা থেকে আনা একটি পাথরের টুকরা সংরক্ষিত রয়েছে। এছাড়া এই কালো পাথরের অন্যান্য অংশ মিম্বার এবং মিহরাব-এর উপরের অংশেও রয়েছে।[৮]
টাইলস ছাড়াও মসজিদের কিছু অংশ রঙিন চিত্রকর্ম দ্বারা সজ্জিত ছিল। অধিকাংশ চিত্রকর্ম পরবর্তীকালে পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। তবে কিছু আসল চিত্রকর্ম এখনো বিদ্যমান রয়েছে (বিশেষত উত্তর প্রবেশপথের ভেস্টিবিউলের ওপরে, প্রবেশপথের উপরের বারান্দাকে সমর্থনকারী স্তম্ভের নিচে, এবং পাশের গ্যালারির ছাদের নিচে)।[৯]
গ্যালারি
[সম্পাদনা]-
সোকোল্লু মেহমেত পাশা মসজিদের সামনে
-
সোকোল্লু মেহমেত পাশা মসজিদ প্রাঙ্গণ
-
সোকোল্লু মেহমেত পাশা মসজিদ প্রাঙ্গণ
-
সোকোল্লু মেহমেত পাশা মসজিদ
-
সোকোল্লু মেহমেত পাশা মসজিদ মিহরাব ও মিম্বার
-
সোকোল্লু মেহমেত পাশা মসজিদ মিহরাব ও মিম্বার
-
সোকোল্লু মেহমেত পাশা মসজিদের মিহরাব ও মিম্বারের বিস্তারিত
-
সোকোল্লু মেহমেত পাশা মসজিদের ক্যালিগ্রাফিক টাইলস
-
সোকোল্লু মেহমেত পাশা মসজিদের ক্যালিগ্রাফিক টাইলস
-
সোকোল্লু মেহমেত পাশা মসজিদ ইজনিক টাইলস
-
সোকোল্লু মেহমেত পাশা মসজিদ ইজনিক টাইলস
-
সোকোল্লু মেহমেত পাশা মসজিদ ইজনিক টাইলস
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Necipoğlu 2005, পৃ. 331-335।
- ↑ Necipoğlu 2005, পৃ. 335-337।
- ↑ Goodwin 2003, পৃ. 272-275।
- ↑ Necipoğlu 2005, পৃ. 340।
- ↑ Necipoğlu 2005, পৃ. 339।
- ↑ Goodwin 2003, পৃ. 276।
- ↑ Denny 2004, পৃ. 101-107।
- ↑ Denny 2004, পৃ. 105।
- ↑ Necipoğlu 2005, পৃ. 341, figs 333-34।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- Denny, Walter B. (২০০৪)। Iznik: The Artistry of Ottoman Ceramics। Thames & Hudson। আইএসবিএন 978-0-500-51192-3।
- Goodwin, Godfrey (২০০৩)। A History of Ottoman Architecture। Thames & Hudson। আইএসবিএন 978-0-500-27429-3।
- Necipoğlu, Gülru (২০০৫)। The Age of Sinan: Architectural Culture in the Ottoman Empire। Reaktion Books। আইএসবিএন 978-1-86189-253-9।
আরও পড়ুন
[সম্পাদনা]- Faroqhi, Suraiyah (২০০৫)। Subjects of the Sultan: Culture and Daily Life in the Ottoman Empire। I.B. Tauris। আইএসবিএন 1-85043-760-2।
- Rogers, J.M. (২০০৭)। Sinan: Makers of Islamic Civilization। I.B. Tauris। আইএসবিএন 978-1-84511-096-3।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]