বিষয়বস্তুতে চলুন

সৈয়দ আজিজুল হক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সৈয়দ আজিজুল হক
বরিশাল-২ আসনের সাংসদ
কাজের মেয়াদ
১৯৮৬  ১৯৯০
পূর্বসূরীআব্দুল ওয়াদুদ সরদার
উত্তরসূরীরাশেদ খান মেনন
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম১ অক্টোবর ১৯১২
বরিশাল জেলা
মৃত্যু১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৯২
ঢাকা
রাজনৈতিক দলজাতীয় পার্টি
প্রাক্তন শিক্ষার্থীমৌলানা আজাদ কলেজ
ব্রজমোহন কলেজ
ডাকনামনান্না মিঞা

সৈয়দ আজিজুল হক (১ অক্টোবর ১৯১২-১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৯২), যিনি নান্না মিঞা নামেও পরিচিত,[] হলেন একজন বাংলাদেশী আইনজীবী, রাজনীতিবিদ ও বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য[][] তিনি পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য, বাণিজ্যমন্ত্রী ও শিল্পমন্ত্রী ছিলেন।[]

জন্ম ও বংশ

[সম্পাদনা]

সৈয়দ আজিজুল হক ১ অক্টোবর ১৯১২ খ্রীষ্টাব্দে বাকেরগঞ্জ জেলার বানারীপাড়া থানার চাখার গ্রামের শরিফ বাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সৈয়দ মোতাহার হোসেন এবং মায়ের নাম সৈয়দা আফতাবুন্নেছা খাঁতুন। তার পূর্বপুরুষ সৈয়দ আতাউল্লাহ চাখারের মীর কুতুব সাহেবের কন্যা দুলালবিবিকে বিবাহ করার পর এই অঞ্চলে জায়গীরদারী প্রাপ্ত হন এবং চাখারের সৈয়দ বংশ প্রতিষ্ঠা করেন।[]

শিক্ষা

[সম্পাদনা]

তিনি ১৯২৮ সালে খলিসাকোটা স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন, ব্রজমোহন কলেজ (বিএম কলেজ) থেকে আইএসসি এবং ১৯৩২ সালে মৌলানা আজাদ কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। এর পর বিএল ডিগ্রি লাভ করেন।

রাজনৈতিক ও কর্মজীবন

[সম্পাদনা]

আজিজুল হক কলকাতা করপোরেশনে চাকরি করেন। আবুল কাশেম ফজলুল হক মন্ত্রী থাকা কালে তার ব্যক্তিগত সহকারী নিযুক্ত হন। এরপর ইন্ডাস্ট্রিয়াল মিউজিয়ামে অ্যাসিস্ট্যান্ট ডাইরেক্টর হিসেবে তিনি সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন। তিনি ১৯৫১ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসর নিয়ে ঢাকায় আইনপেশা শুরু করেন। তিনি চার মেয়াদে ঢাকা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ছিলেন।

তিনি ছাত্রজীবনে বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য সম্মেলনের উদ্যোক্তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। আবুল কাশেম ফজলুল হকের সঙ্গে বঙ্গীয় প্রজা সম্মেলনে তিনি যোগ দেন। তিনি ছিলেন কৃষক প্রজা পার্টির কার্যনির্বাহী সদস্য।

তিনি ১৯৫৪ সালে পূর্ব পাকিস্তানের আইন পরিষদ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে বরিশালের নির্বাচনী এলাকা ঝালকাঠি-উজিরপুর থেকে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়ে শেরে বাংলার মন্ত্রিসভায় শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৫ সালে তিনি আবু হোসেনের মন্ত্রিসভার বাণিজ্যমন্ত্রী ও শিল্পমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৫৬ সালে গণপরিষদের মনোনীত সদস্য হিসেবে পাকিস্তানের সংবিধান রচনায় অংশগ্রহণ করেন।

১৯৬৯ সালে আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে প্রথম প্রকাশিত বিবৃতি দাতা নয় নেতাদের অন্যতম ছিলেন তিনি। ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট এবং পরবর্তীতে পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টি গঠন করেন তিনি এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও মহাপ্লাবনের পর ১৯৭০ সালের তার দলসহ আরও কিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করে।

মুক্তিযুদ্ধের সময় পরিবার নিয়ে তিনি ঢাকায় অবস্থান করছিলেন এবং তিনি শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন।

তিনি ১৯৭১ সালের পর রাজনীতি থেকে দূরে থাকলেও ১৯৭৫ সালের পর আবার রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ১৯৮৬ সালের তৃতীয়১৯৮৮ সালের চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মনোনয়নে বাকেরগঞ্জ-২ (বর্তমান বরিশাল-২) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।[][]

মৃত্যু

[সম্পাদনা]

সৈয়দ আজিজুল হক ১৯৯২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. রুসেলি রহমান চৌধুরী (২০০৬)। বরিশালের প্রয়াত গুণীজনঢাকা, বাংলাদেশ: ইউনিভার্সিটি বুক পাবলিশার্স।{{বই উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: ইউআরএল-অবস্থা (লিঙ্ক)
  2. 1 2 "৩য় জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে (পিডিএফ) আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১২ এপ্রিল ২০২০
  3. 1 2 "৪র্থ জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ৮ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে (পিডিএফ) আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১২ এপ্রিল ২০২০
  4. সৈয়দ মাঈনুল হক (২৫ মার্চ ২০১৫)। "হক, সৈয়দ আজিজুল"বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মে ২০২০{{ওয়েব উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: ইউআরএল-অবস্থা (লিঙ্ক)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  5. সিরাজ উদদীন আহমেদ (২০১০)। "চাখারের মজুমদার ও সৈয়দ পরিবার"। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস। খণ্ড ১। ঢাকা: ভাস্কর প্রকাশনী।