সুরেন্দ্র বিক্রম শাহ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সুরেন্দ্র বিক্রম শাহ
নেপালের রাজা
রাজত্ব১২ মে ১৮৪৭ – ১৭ মে ১৮৮১
রাজ্যাভিষেক১২ মে ১৮৪৭
পূর্বসূরিরাজেন্দ্র বিক্রম শাহ
উত্তরসূরিপৃথ্বী বীর বিক্রম শাহ
জন্ম২০ অক্টোবর ১৮২৯
বসন্তপুর, নেপাল
মৃত্যু১৭ মে ১৮৮১ (৫১ বছর)
বসন্তপুর, নেপাল
দাম্পত্য সঙ্গীসুর রাজ্য লক্ষ্মী দেবী
ত্রৈলোক্য রাজ্য লক্ষ্মী দেবী
দেব রাজ্য লক্ষ্মী দেবী
বংশধরজ্যেষ্ঠ যুবরাজ ত্রৈলোক্য বিক্রম শাহ
যুবরাজ নরেন্দ্র বিক্রম শাহ
যুবরাজ টিকা
(অন্যদের মধ্যে)
রাজবংশশাহ রাজবংশ
পিতারাজেন্দ্র বিক্রম শাহ
মাতাসাম্রাজ্য লক্ষ্মী দেবী
ধর্মহিন্দু

সুরেন্দ্র বিক্রম শাহ (নেপালি: सुरेन्द्र बिक्रम शाह) (১৮২৯–১৮৮১) ছিলেন নেপালের রাজা, যিনি ১৮৪৭ থেকে ১৮৮১ সাল পর্যন্ত রাজত্ব করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী জঙ্গবাহাদুর রানা সুরেন্দ্রর বাবা রাজেন্দ্র বিক্রম শাহকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করার পরে তিনি রাজা হয়েছিলেন। সুরেন্দ্র সত্যিকার অর্থে অল্প ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পেরেছিলেন, বস্তুত সুর বাহিনীর রাজত্বকালে জঙ্গবাহাদুর রানাই কার্যকরভাবে দেশটিতে রাজত্ব করেছিলেন।

প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]

সুরেন্দ্র ছিলেন রাজা রাজেন্দ্র বিক্রম শাহ এবং তার প্রথম স্ত্রী রাণী সাম্রাজ্য লক্ষ্মী দেবীর জ্যেষ্ঠ পুত্র। তিনি ছিলেন নেপালের রাজপরিবারের জ্যেষ্ঠ যুবরাজ এবং তুলনামূলকভাবে অপ্রিয় ছিলেন। তার নাম সুরেন্দ্র শব্দটির অর্থ হলো "দেবতাদের প্রধান"।

রাজপ্রতিনিধি[সম্পাদনা]

সুরেন্দ্রর সৎ মা রানী রাজ্য লক্ষ্মী দেবী তার পুত্র যুবরাজ রণেন্দ্রকে সিংহাসনে বসানোর জন্য উচ্চাকাঙ্ক্ষী ছিলেন। তবে উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং ক্ষমতালিপ্সু জঙ্গবাহাদুরও নিজের স্বার্থ হাসিলের লক্ষ্যে রাজ্য লক্ষ্মীর এই কাজে সহযোগিতা করেছিলেন। কোট গণহত্যার পরে জঙ্গবাহাদুর বিপুলসংখ্যক আভিজাত্যদের নির্মূল করেছিলেন, এমনকি তিনি রানীর বিরুদ্ধেও দাঁড়িয়েছিলেন, যিনি পরিবর্তে তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিলেন (যদিও সেই চক্রান্ত ব্যর্থ হয়েছিল)। জঙ্গবাহাদুর ভেবেছিলেন রানী রাজ্য লক্ষ্মী তার জন্য হুমকির কারণ হতে পারে। যে কারণে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে তিনি রাজ্য লক্ষ্মীকে বারাণসীতে নির্বাসিত করেছিলেন। রাজা রাজেন্দ্রও রাণীর সঙ্গে বারাণসীতে গিয়েছিলেন। যাওয়ার আগে তিনি সুরেন্দ্রকে যুবরাজ বানিয়েছিলেন। যাইহোক, পরবর্তীতে জঙ্গবাহাদুর রানা রাজা রাজেন্দ্রকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছিলো এবং তার পরে সুরেন্দ্রকে রাজা করা হয়েছিলো।[১]

রাজ্যাভিষেক[সম্পাদনা]

১৮৬২-১৮৬৫ সালের দিকে তৎকালীন ব্রিটিশ সহকারী রেসিডেন্ট ক্লারেন্স কমিন টেইলারের তোলা দুজন দেহরক্ষীসহ রাজা সুরেন্দ্র বিক্রম শাহের ছবি

রাজা সুরেন্দ্র তার নিজের প্রাসাদে বন্দীর মতো ছিলেন: তার নিকটতম পরিবারবর্গ ব্যতীত কেউ জঙ্গবাহাদুর রানার অনুমতি ছাড়া তাকে দেখতে যেতে পারতোনা। তাকে কেবল সাহিত্য পড়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এই সমস্ত দেখে হতাশ হয়ে রাজা তার বড় ছেলে ত্রৈলোক্যের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী রানা তাতেও সম্মতি দেননি।

সুরেন্দ্রকে প্রতি মাসে একবার তার বাবা প্রাক্তন রাজা রাজেন্দ্রের সাথে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। রাজেন্দ্র মৃত্যুর আগ পর্যন্ত গৃহবন্দি অবস্থায় ছিলেন।

১৮৫৬ সালে, রাজা সুরেন্দ্র একটি সনদ জারি করেছিলেন— যা জঙ্গবাহাদুর রানার পরিবার অর্থাৎ কুনবার পরিবারের আধিপত্য ও রাজনৈতিক নেতৃত্বকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়। রাজা এবং তার বংশধররা সম্মানজনক 'শ্রী' উপাধিটি তাদের নামের শুরুতে পাঁচবার ব্যবহার করতে পারতেন, এবং কুনবার পরিবারের সদস্যরা তিনবার উপাধিটি ব্যবহার করতে পারতেন। রাজা সুরেন্দ্র বিক্রম শাহ এ সনদের মাধ্যমে কুনবার পরিবারকে রাজপরিবারের পরেই দ্বিতীয় স্থানে রেখেছিলেন। সুরেন্দ্র রাজা (মহারাজধিরাজ) থাকাকালীন প্রকৃতপক্ষে তার কোনো ক্ষমতা ছিল না; বস্তুতঃ জঙ্গবাহাদুর রানা তখন দেশ শাসন করেছিলেন। [২]

সুরেন্দ্রের পুত্র জেনারেল এবং জ্যেষ্ঠ যুবরাজ ত্রৈলোক্য বীর বিক্রম শাহ দেব জঙ্গবাহাদুর রানার তিন মেয়ে তারা রাজ্য লক্ষ্মী দেবী, ললিত রাজেশ্বরী রাজ্য লক্ষ্মী দেবী এবং হিরণ্যগর্ভা কুমারী দেবীকে বিয়ে করেছিলেন। ত্রৈলোক্য ১৮৭৮ সালে মৃত্যুবরণ করেন এবং ত্রৈলোক্যের পুত্র পৃথ্বী বীর বিক্রম শাহ সিংহাসনের উত্তরাধিকারী হন।

মৃত্যু[সম্পাদনা]

রাজা সুরেন্দ্র ১৮৮১ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর পর উত্তরসূরী হিসেবে নাতি পৃথ্বী বীর বিক্রম শাহ নেপালের রাজা হিসাবে সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

সুরেন্দ্র বিক্রম শাহ
জন্ম: ২০ অক্টোবর ১৮২৯ মৃত্যু: ১৭ মে ১৮৮১
শাসনতান্ত্রিক খেতাব
পূর্বসূরী
রাজেন্দ্র বিক্রম শাহ
নেপালের রাজা
১৮৪৭–১৮৮১
উত্তরসূরী
পৃথ্বী বীর বিক্রম শাহ